
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন কাঠামো দুই ধাপ উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রস্তাব অনুযায়ী, তাদের বর্তমান ১৩তম গ্রেড থেকে উন্নীত করে ১১তম গ্রেডে নিয়ে আসা হতে পারে। প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে সরকারের বার্ষিক ব্যয় প্রায় ৮৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা বৃদ্ধি পাবে।
মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে লিখিতভাবে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এর আগে একই প্রস্তাব অর্থ বিভাগেও প্রেরণ করা হয়।
প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সহকারী শিক্ষকদের কাজের পরিমাণ এবং মান উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তাছাড়া, প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সম্মতি থাকায় সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীত করা যৌক্তিক বিবেচিত হয়েছে।
বর্তমানে সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেড অনুযায়ী বেতন পান। প্রস্তাব কার্যকর হলে তাদের গড় বেতন কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়বে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি ও পেশাগত মর্যাদা বিবেচনায় নিয়েই প্রস্তাবটি দেওয়া হয়েছে। এখন অর্থ বিভাগ ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অনুমোদনের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নসহ তিন দফা দাবিতে “১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ”-এর ব্যানারে শিক্ষকরা গত শনিবার থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
তাদের তিনটি দাবি হলো: সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে বেতন প্রদান, উচ্চতর গ্রেডের জটিলতার স্থায়ী সমাধান, এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। কর্মবিরতির কারণে দ্বিতীয় দিনেও এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল সরকার প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে এবং ১৩তম গ্রেডের শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার পদক্ষেপ নেয়। তবে সেই সিদ্ধান্তে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে সহকারী শিক্ষকরা আবারও আন্দোলনে নেমেছেন।