
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিরোধকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইউনিয়নের সুলতানপুর ও বের কালোয়া এলাকায় সংঘটিত এই ঘটনায় অন্তত ১২ নেতাকর্মী ও সমর্থকের বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় এবং ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, কয়া ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি বকুল বিশ্বাস ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি রাশিদুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে পদ্মা নদী ও কালোয়া বাজার এলাকায় আধিপত্য নিয়ে উত্তেজনা থাকায় ১ নভেম্বর সংঘর্ষে দুইজন আহত হন।
ঘটনার পর পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বকুল বিশ্বাসের সমর্থকরা আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীর সঙ্গে মিলিত হয়ে রাশিদুল ইসলামের অনুসারীদের বাড়িতে হামলা চালায়। এতে ১২টি বাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং হামলাকারীরা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও গবাদিপশুসহ প্রায় ৪০ লাখ টাকার সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবদল নেতা সালমান এফ রহমান এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশিদুল ইসলাম রয়েছেন। সালমানের পরিবার জানান, হামলাকারীরা বাড়ির জানালা ও দরজা ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণ এবং দুটি গরু লুট করেছে। হামলার নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপি নেতা বকুল বিশ্বাস এবং ইউনিয়নের কিছু আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।
বকুল বিশ্বাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "রাশিদুল ও সালমান এলাকায় চাঁদাবাজি করে অশান্তি সৃষ্টি করছেন। শুক্রবার তাদেরাই প্রথমে হামলা চালায়।"
এ বিষয়ে রাশিদুল ইসলাম জানান, "বিএনপি নেতা বকুল মেম্বার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের ১২টি বাড়িতে হামলা লুটপাট করিয়েছেন। এতে প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। চাঁদা না দেওয়ার কারণে এক মাসে তিন দফায় এই হামলা চালানো হয়েছে। থানায় চার-পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।"
কুমারখালী থানার ওসি খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, "পূর্ব শত্রুতার জেরে এক পক্ষের লোকজন আরেক পক্ষের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। লুটপাটের খবরও পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ১ নভেম্বরের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছিল। তাদের প্রতিপক্ষ এজাহার দিতে দেরি করায় সেই মামলা নথিভুক্ত হয়নি। তদন্ত চলছে এবং দ্রুত তা নথিভুক্ত করা হবে।"