
ঢাকায় আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ ও রপ্তানি সম্ভাবনা নিয়ে উন্মুক্ত দরজা তৈরি করেছে 'গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো ২০২৫'। দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে চলমান শঙ্কা প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন স্পষ্ট করেছেন, দেশে নিরাপত্তায় কোনো তেমন ঘাটতি নেই এবং বিনিয়োগের পরিবেশও স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি এই মন্তব্য করেন সোমবার পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক্সপোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, "এবারই প্রথমবার গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপোর আয়োজন করা হচ্ছে। এ আয়োজনে আরও বেশিসংখ্যক বিদেশি ক্রেতাদের অংশগ্রহণ আশা করা হয়েছিল। তবে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগসহ নানা কারণ দেখিয়ে কিছুসংখ্যক ক্রেতা দেশে আসতে চাননি। আবার অনেকেই বলেছেন, নির্বাচনের পর আসবেন।"
মোহাম্মদ হাতেমের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টাকে আরও জানতে চাইলে তিনি বলেন, "বাংলাদেশে নিরাপত্তার তেমন কোনো ঘাটতি নেই। বিনিয়োগ পরিবেশও স্বাভাবিক রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা ছড়ানো হচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে। এই মাইলফলক আমাদের অগ্রগতি তুলে ধরার পাশাপাশি নতুন চ্যালেঞ্জও নিয়ে এসেছে। বর্তমানের অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা এবং ছাড় ধীরে ধীরে হারাতে হবে। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব বাণিজ্যে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি টেকসই করতে পণ্য বৈচিত্র্যময় করা, সরবরাহ ক্ষমতা বাড়ানো এবং ক্রেতাদের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন।"
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বক্তব্য দেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর প্রশাসক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খান।
ইপিবি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই প্রদর্শনীর মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনা তুলে ধরা এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করা। এতে মোট ১৬৫টি স্টল রয়েছে, যার মধ্যে ১১টি স্টল বিদেশি কোম্পানির।
এক্সপোতে বাংলাদেশের আটটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাতের পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। এগুলো হলো - তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, প্লাস্টিক ও কিচেনওয়্যার, হোম ডেকর ও ফার্নিচার, ওষুধ এবং তথ্যপ্রযুক্তি।