
যুক্তরাজ্য চলতি সপ্তাহের শেষেই ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্রিটেন সফর শেষ হওয়ার পরই লন্ডনের পক্ষ থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প তার দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য ত্যাগ করবেন। এরপরই ব্রিটেনের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই বিষয়ে মন্তব্য চাইলে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি বলে রয়টার্স জানায়।
এর আগে, চলতি বছরের জুলাই মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, “যদি ইসরায়েল গাজায় মানবিক দুর্দশা লাঘব এবং যুদ্ধবিরতির জন্য বাস্তব পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে যুক্তরাজ্য ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপ নেবে।”
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি শুধু ব্রিটেনেই সীমাবদ্ধ নয়। একই রকম অঙ্গীকার করেছে ফ্রান্স, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়াও। ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এসব দেশ একসঙ্গে এই স্বীকৃতি ঘোষণা করতে পারে।
এদিকে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। তিনি বলেছেন, “আমি বিশ্বাস করি গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি লেবার পার্টির সরকারের অবস্থানের সঙ্গে প্রকাশ্যে ভিন্নমত পোষণ করেন। গাজা ইস্যুতে লেবার পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের কারো এমন অবস্থান এই প্রথম।
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর স্কাই নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সাদিক খান বলেন, “যখন আমি শিশুদের ক্ষুধার্ত থাকার ছবি দেখি... যখন আমি গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে দেখি; যখন আমি অভাবী মানুষের কাছে ত্রাণ সরবরাহের অভাব দেখি; যখন আমি মানুষের তৈরি দুর্ভিক্ষ দেখি; যখন আমি আইসিজে-র অন্তর্বর্তীকালীন রায় পড়ি, এবং তারপর চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ কমিশনের প্রতিবেদন দেখি, তখন আমার মনে হয় গাজায় আমরা যে গণহত্যা দেখতে পাচ্ছি, তা আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে।”
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ বিশ্বব্যাপী আরও জোরালো হচ্ছে। একই দিনে মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, “গাজায় ইসরায়েলের হামলা গণহত্যার শামিল।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনিই প্রথম মার্কিন সিনেটর যিনি প্রকাশ্যে এমন অভিযোগ তুললেন। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে এই সংঘাত থেকে নিজেকে প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
সূত্র: রয়টার্স