
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের ১৩ মাস পেরিয়ে গেলেও জুলাই সনদে ঐকমত্য গড়ে না ওঠায় দেশ এখনও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে এগোতে পারেনি। তিনি বলেন, জনগণ একটি প্রভাবমুক্ত ও মানসম্মত নির্বাচন চায়, কিন্তু বাস্তবে তাদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণশক্তি আয়োজিত ‘জুলাই সনদ ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মান্না বলেন, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বেশ কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হলেও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে এখনও মতানৈক্য রয়ে গেছে। বিশেষ করে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা শেষ হয়নি। কমিশনের আহ্বানে মাসজুড়ে আলোচনায় সরকারসহ সব রাজনৈতিক দলের অংশ নেওয়া উচিত। আমাদের নির্বাচন হতে হবে গুণগত মানসম্পন্ন। জুলাই অভ্যুত্থানে যে সাফল্য এসেছিল, সেটি ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর আন্দোলন যদি নির্ধারিত লক্ষ্য অনুযায়ী অগ্রসর হতো, তাহলে এত প্রশ্ন তৈরি হতো না। এখনো অনেক জটিলতা রয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার সব সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও জনগণ আশা করছে জুলাই সনদের ভিত্তিতেই এগোতে হবে।
মান্নার মতে, জুলাই সনদ নিয়ে বিতর্ক এখন আর নেই। তবে কেউ বলছে সংবিধানের বাইরে যাওয়া যাবে না, আবার কেউ চাইছে সনদের নিশ্চয়তা। এই জটিলতা একা আমি সমাধান করতে পারব না। বিএনপি-জামায়াত যদি একসঙ্গে অবস্থান নিত, তা হলে গুরুত্ব পেত। কিন্তু আমি একা বললে কাজ হবে না।
সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি বলেন, অস্থির হয়ে কোনো পদক্ষেপ নিলে বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে। আজ যদি কয়েকটি দল বলে জুলাই সনদ ছাড়া ভোট নয়, আর কেউ বলে আমি এতে নেই তাহলে সংকট দেখা দেবে। সরকার কে গঠন করবে? আবারও ওয়ান-ইলেভেন হবে কি-না, সে প্রশ্ন উঠছে। অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি, তাই সবাইকে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করতে হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সাবেক সচিব ও কূটনীতিক আব্দুল্লাহ আল মামুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান ও আইনজীবী ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গণশক্তি সভার সভাপতি সাংবাদিক সাদেক রহমান।