
দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্হিতি ক্রমশ নেতিবাচক দিকে সরে যাচ্ছে বিনিয়োগ কমছে, অস্থিরতা বাড়ছে এবং মেধাবী তরুণ প্রজন্ম বিদেশে পাড়ি জমানোর আগ্রহ বেশি হচ্ছে। বিবর্তিত এই চিত্র এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড সাম্প্রতিক এক টকশোতে তুলে ধরেছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা।
রুমিন ফারহানা বলেন, যতো দিন যাচ্ছে ততোই কিন্তু পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও আইনশৃঙ্খলার অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপের দিকে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে বিএনপির একক বক্তব্য নয় উদাহরণ হিসেবে তিনি দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সতর্কবার্তার কথাও উল্লেখ করেন যেখানে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না হলে পরিস্থিতি অনুকূল থাকবে না বলে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল। রুমিন বলেন, মানুষের মধ্যে অধৈর্য্য দেখা দিয়েছে এবং এর পেছনে অনেক কারণ আছে তাদের মধ্যে অন্যতম বিনিয়োগের অনুপস্থিতি বিনিয়োগকারীরা স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ এবং স্থায়ী সরকার দেখতে চান।
নেপালের উদাহরণ টেনে তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন সেখানে এত সরকার বদল হয়েছে এবং পিআর পদ্ধতি কি এর কারণ এ ধরনের ব্যাপারগুলো অনুসন্ধান করা হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন। তার ভাষ্য, আমরা অন্তর্বর্তীকালিক দায়িত্বে এসেছি, কেবল একটা নির্বাচন দিয়ে আমরা চলে যাবো এ ধরনের টালবাহানাকে তিনি সমালোচনা করেন।
রুমিন ক্ষমতায় থাকা অন্তর্বর্তী কর্মকর্তাদের দায়বোধহীনতাও তীব্রভাবে তুলে ধরেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ড. আলী রিয়াজ বলেছিলেন কেবল নির্বাচন করে কোনো মূল পরিবর্তন সম্ভব নয় রুমিন এক প্রশ্ন করেন সংবিধান সংস্কার, নারী-সংস্কার কমিশন, চিকিৎসা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন ইত্যাদি যেসব প্রস্তাব এসেছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন কতটুকু হয়েছে? তিনি বলেন যে অনেকেই কেবল প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু বাস্তবে অবৈধভাবে প্রাপ্ত ক্ষমতার স্বাদ উপভোগে লিপ্ত আছেন।
পারিবারিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটেও তিনি তীক্ষ্ণ মন্তব্য করেন অনেকেই বহু আগে থেকেই বিদেশে চলে গেছেন এবং দেশের সমস্যা নিয়ে ভাবেন না, ভবিষ্যতেও এমনটাই হতে পারে। তিনি বলেন, কিছু মানুষ যারা কখনো দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করেনি, তারা এখন বড় পদের মালিক হয়ে বড় স্বাভাবিক কথা বলছেন।
দেশের অবনতি পরিমাপ করে রুমিন বলেন, গত ৩৬৫ দিনে প্রায় ৩৭০-৩৮০টি মব ঘটনা হয়েছে। যদি বছরে ৩৭০-৩৮০টি মব ঘটে, ওই দেশে কোনো বিনিয়োগকারী স্থির থাকতে চাইবে না, সেখানে পাগলও বাস করতে চাইবে না। তিনি আরো বলেন, গত ৪০ বছরে শিক্ষিত সমাজের উল্লেখযোগ্য অংশ দেশের বাইরে চলে গেছে ব্রেইন ড্রেনের মাত্রা ভয়াবহ এবং দেশের মধ্যে দমন-অবস্হার ফলে যারা এখানে রয়ে গেছে তাদের মধ্যেও প্রবাস ভাবনা বাড়ছে।
টকশোতে রুমিনের এই অভিমতগুলো দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে একটি সতর্কবার্তা হিসেবে পরিলक्षित হলো।