
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ আইনিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে সদ্য পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপরও।
আইন মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর জানায় যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, যদি কারও বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হয়, তাহলে তিনি জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হওয়ার বা তাতে থাকার অধিকার হারাবেন।
এই পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে সোমবার, ৬ অক্টোবর। ওই দিন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শাখা সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি করে।
সংশোধিত আইনের আওতায় শেখ হাসিনার নির্বাচনে অংশগ্রহণের সমস্ত সম্ভাবনা কার্যত বন্ধ হয়ে গেল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকা শেখ হাসিনা বর্তমানে একটি নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের প্রধান, এবং এই নতুন বিধান তাকে জাতীয় রাজনীতির বাইরে সরিয়ে দিল।
প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি নিম্ন লিখিত অবস্থানগুলোতে থাকার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন। তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা থাকার যোগ্য হবেন না। স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত বা নিয়োগপ্রাপ্ত হতে বা থাকতে পারবেন না। প্রজাতন্ত্রের কোনও চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন না। এছাড়া অন্য কোনও সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না।”
তবে এতে একটি ব্যতিক্রমও রাখা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “উপধারা (১) এ যা কিছুই থাকুক না কেন, ট্রাইব্যুনালে কোনও ব্যক্তি অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হলে, সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না।”
এটি অর্থ করে যে, অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলে অভিযুক্ত ব্যক্তি আবারো সাংবিধানিক ও সরকারি পদে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে ততক্ষণ পর্যন্ত, এই সংশোধিত আইন কার্যকরভাবে শেখ হাসিনার রাজনীতিতে ফেরার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।