
গোপালগঞ্জে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে কিছু ব্যক্তির প্রাণনাশের ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল, যার ফলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলপ্রয়োগে বাধ্য হয় বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে, ঘটনাস্থলে প্রাণঘাতী কোনো অস্ত্র ব্যবহারের কথা অস্বীকার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকার সেনা সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির পথসভা উপলক্ষে আয়োজিত সভায় যে হট্টগোল হয়েছিল সেখানে গোপালগঞ্জে অনেকের জীবননাশের হুমকি ছিল। বাধ্য হয়েই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলপ্রয়োগ করে। তবে সেখানে প্রাণঘাতী কোনো অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়নি।
তিনি আরও জানান, ঘটনাটি নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অভিযান ছিল না; বরং সেনাবাহিনী সকল নাগরিককে সমভাবে বিবেচনা করে। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে বিশেষভাবে দেখিনি। গোপালগঞ্জে যেটা হয়েছে, সেটা একটি দলের অনেকের জীবননাশের শঙ্কা ছিল। জীবন বাঁচানোর জন্যই সেখানে তৎপর ছিল সেনাবাহিনী।
ঘটনার প্রকৃত তথ্য উদঘাটনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান কর্নেল শফিকুল। তিনি বলেন, তদন্ত শেষ হলে ঘটনার বিস্তারিত ও প্রকৃত চিত্র সামনে আসবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় সামগ্রিকভাবে সবাইকে কাজ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যেসব বাহিনী সর্বাগ্রে কাজ করে তাদের আরো কার্যকর হতে হবে। আমরা তল্লাশি শুরু করেছি এবং গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা ও অভিযান কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে কর্নেল শফিকুল বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকার কিংবা নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আমরা যেহেতু কোনো নির্দেশনা পাইনি, সেহেতু ওই সময় সেনাসংখ্যা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমাদের প্রস্তুতি আছে। সরকারের নির্দেশনা পেলেই পরিকল্পনা করব, কতটুকু ফোর্স লাগবে আমাদের।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, সার্বিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মব ভায়োলেন্স বা জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি করতে পারে এমন যেকোনো কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে দমন করা হবে।
এছাড়া, রাজধানীর দিয়াবাড়ীতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশিক্ষণ বিমানের দুর্ঘটনায় সেনাবাহিনীর তৎপর ও পেশাদার উদ্ধার অভিযান পরিচালনার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
গত চার সপ্তাহে সেনাবাহিনী ৩৭টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছে জানিয়ে কর্নেল শফিকুল আরও বলেন, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত হারানো ১২ হাজার ১১৯টি অস্ত্রের মধ্যে ৯ হাজার ৭২৯টি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৬ হাজার ৪৫৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।