
বিশ্বজুড়ে লক্ষাধিক মানুষ একযোগে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন শুক্রবার (২৫ জুলাই) স্পেসএক্সের স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা ‘স্টারলিংক’-এ এক বিরল ও বিস্তৃত বিভ্রাটের কারণে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এই সমস্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় অন্তত ৬০ লাখ ব্যবহারকারী।
বিভ্রাটের সময় স্টারলিংক ব্যবহারকারীরা কোনো রকম ইন্টারনেট সংযোগ পাননি। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে (বাংলাদেশ সময় রাত ১টা) শুরু হয় এ ঘটনা। ইন্টারনেট বিভ্রাট পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ডাউনডিটেক্টরের তথ্য অনুযায়ী, ওই সময়ে ৬১ হাজারের বেশি সমস্যা-সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা পড়ে।
স্টারলিংকের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল নিকোলস জানান, “এই বিভ্রাট প্রায় দুই ঘণ্টা ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়। ১৪০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা ৬০ লাখের বেশি ব্যবহারকারী এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।”
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, “স্টারলিংকের মূল নেটওয়ার্ক পরিচালনায় ব্যবহৃত কিছু অভ্যন্তরীণ সফটওয়্যারে ত্রুটি দেখা দেয়। যার ফলেই এ অস্বাভাবিক বিভ্রাট। আমরা এই সাময়িক সমস্যার জন্য দুঃখিত। স্টারলিংক নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ঘটনাটি পুনরায় যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
এ ঘটনার পর স্টারলিংকের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কও বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি এক্স (পূর্বের টুইটার) প্ল্যাটফর্মে বলেন, “এই বিভ্রাটের জন্য দুঃখিত। স্পেসএক্স এর মূল কারণ খুঁজে বের করে তা চিরতরে সমাধান করবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, এত বড় পরিসরে স্টারলিংকের জন্য এটি ছিল প্রথম এ ধরনের বিঘ্ন। সফটওয়্যারের কারিগরি ত্রুটি, অসম্পূর্ণ আপডেট কিংবা সাইবার হামলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
স্টারলিংক প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৮ হাজারেরও বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে স্পেসএক্স। পৃথিবীর কাছাকাছি কক্ষপথে স্থাপন করা এসব স্যাটেলাইট বিশ্বজুড়ে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখছে।
বিশেষত প্রত্যন্ত ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকায়, যেখানে প্রচলিত নেটওয়ার্ক পৌঁছায় না, সেসব অঞ্চলে স্টারলিংকের সেবা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ইন্টারনেট গতি ও ব্যান্ডউইথ আরও উন্নত করার লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত উন্নয়নেও জোর দিয়েছে।