
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নিজের মেয়ে লামিয়া আক্তারের হত্যার বিচার দাবি করে বাবা মোশারফ হোসেন হাওলাদার আদালত চত্বরে আমরণ অনশন শুরু করেন।
রবিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ১১টায় মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের চত্বরে কাফনের কাপড় গায়ে জড়িয়ে অনশনে বসেন তিনি।
মোশারফ হোসেন মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সবুজ নগর এলাকার চান মিয়া হাওলাদারের ছেলে।
আন্দোলনের খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ রাইসুল ইসলাম অনশনরত মোশারফকে জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এ সময় তিনি সর্বাত্মক আইনি সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এর আগে, ৪ নভেম্বর স্কুলছাত্রী লামিয়া আক্তার হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনশনরত মোশারফ বলেন, ২০২৩ সালের ২০ মার্চ তার দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে লামিয়া আক্তার মুন্নি নৃশংসভাবে নিহত হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী সাহিদা আক্তার স্থানীয় দাউদখালী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের কারণে এলাকা থেকে পালিয়ে যান। লামিয়া বিষয়টি দেখে ফেলায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়।
মোশারফ হোসেন আরও অভিযোগ করেন, শহিদুল মেম্বারের বাড়ির লোকজন মুন্নির লাশ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়। ১৮ ঘণ্টা পর তিনি লাশ শনাক্ত করেন এবং নিজের খরচে ময়নাতদন্ত করান।
তিনি দাবি করেন, স্থানীয় টিকিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান রিপন জমাদ্দারের প্রভাব খাটিয়ে তখনকার প্রশাসন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পরিবর্তন করেছে।
মোশারফ জানান, এই ঘটনায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন, কিন্তু প্রভাবশালীদের কারণে এলাকায় আসতে পারেননি এবং মামলা পরিচালনা করতে পারেননি। তিনি পুনরায় মামলাটি চালু করে তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি দাবি করছেন।
মঠবাড়িয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ রাইসুল ইসলাম বলেন, “এ বিষয়টি সত্যিই হৃদয়বিদারক। আমরা মোশারফ হোসেনের মেয়ের ন্যায্য বিচার পেতে সর্বাত্মক আইনি সহযোগিতা প্রদান করব।”