বাস ভাঙচুরে বাধা দেয়ায় শিক্ষার্থীদের সাথে সমন্বয়কদের হাতাহাতি
- কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০২:১৯ পিএম, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের সাথে এসবি পরিবহনের একটি বাসের সুপারভাইজারের বাজে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে বাসটি আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে আটক থাকা অবস্থায় উত্তেজিত হয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী বাসে ভাঙচুর চালায়।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাত ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবির সমন্বয়করা ভাঙচুরে বাধা দিলে ভাঙচুরকারীরা সমন্বয়কদের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ভাঙচুর করা ওই বাস ছেড়ে দেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের ১৩ জন শিক্ষার্থী কুষ্টিয়া শহরের কাউন্টার থেকে কথা বলে এসবি পরিবহনের বাসে উঠেন। পরে তাদের পেছনে কাউন্টারে কথা বলা ব্যতীত বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫ জনের মতো শিক্ষার্থীও বাসে উঠেন। তারা বাসে ওঠার প্রায় ১০ মিনিট পর বাসের সুপারভাইজার কাউন্টারে কথা বলা ১৩ জনের বাইরে অন্য শিক্ষার্থীদের নেমে যাওয়ার কথা বলেন। বিষয়টি নিয়ে সুপারভাইজার ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাদের অন্য বন্ধুদের খবর দিলে তারা প্রধান ফটকের সামনে থেকে বাসটি আটক করেন। ওই বাস ছাড়াও এসবি পরিবহনের আরও একটি বাস আটক করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বাসে অসুস্থ ও বিদেশগামী যাত্রী থাকায় কিছুক্ষণ আটকে রাখার পর ছেড়ে দেয়া হয়।
এদিকে, বাস আটক করার সময় মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী আহত হয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে কুষ্টিয়া পাঠানো হয়। আহত শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুদের দাবি বাস আটক করার সময় অজ্ঞাত ব্যক্তির ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার পা কেটে যায়।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ‘বাস আটক করার সময় মোস্তাফিজ বাসের গাড়ির দরজার গ্লাসে লাথি দেয়ার ফলে তার পা কেটে যায়।’
আহতের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাক্তার রবিউল ইসলাম জানান, তেমন সিরিয়াস ইনজুরি না। সার্প কাটিং হয়েছে। এমন আঘাত গ্লাস বা ধারালো কিছুতে হয়।
এদিকে, মোস্তাফিজ আহত হওয়ায় তার বিভাগের কয়েকজন বন্ধু প্রধান ফটকে আটকে রাখা বাসটিতে ভাঙচুর চালায়। আচানক তারা ফটকের সামনে উপস্থিত হয়ে বাসের দিকে অনবরত ইট ছুঁড়তে থাকে। এতে বাসের সামনের গ্লাসটি ভেঙে যায়। এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা গাড়ি ভাঙচুরে বাধা দিলে ভাঙচুরকারীরা তাদের ওপর চড়াও হন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে রাত দেড়টার দিকে বাসটি ছেড়ে দেয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়কটি ইয়াশিরুল কবির সৌরভ বলেন, আচানক একদল শিক্ষার্থী এসে এলোপাতাড়ি বাসে ইট ছুঁড়তে থাকে। এ সময় আমরা তাদের বাধা দিলে তারা উল্টো আমাদের ওপর চড়াও হয়। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা পরিবেশ শান্ত করেন।’
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহিনুজ্জামান জানান, ঘটনা শোনার পরপরই তারা ঘটনাস্থলে আসেন।
কে বা কারা বাস ভাংচুর করেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।