বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা


Jan 2025/Boishoimmo Chatraleauge.jpg

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ সময় কয়েক দফায় ছাত্রলীগ ও সমন্বয়কদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ হামলায় দুই সমন্বয়কসহ তিনজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে । এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে দুই সাংবাদিক আক্রমণের শিকার হন।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান ও বশেমুরবিপ্রবির প্রক্টর আরিফুজ্জামান রাজিব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

বশেমুরবিপ্রবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জসিম উদ্দীন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম সোহাগ পরীক্ষা শেষে হল থেকে বের হলে সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে পুলিশের কাছে তুলে দিচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে সোহাগকে ছাড়িয়ে নেয় এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে স্লোগান দেয়া হয়। এতে সমন্বয়ক জসিম উদ্দীন ও ওমর শরীফ আহত হন। এ ছাড়া, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বশেমুরবিপ্রবি আমার দেশ পত্রিকার প্রতিনিধি রাসেল হোসেন ও সাংবাদিক আতিক ফয়সালসহ কয়েকজনের ওপর হামলা চালায় হামলাকারীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পর সমন্বয়করা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী সোহাগ ৫ আগস্টের পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে আধিপত্য দেখাতে থাকে। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিচারের দাবি জানাই। আমরা প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলছি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল বডির এক সদস্যের উপস্থিতিতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।’

হামলায় আহত ওমর শরীফ জানান, ছাত্রলীগের নেতা সোহাগকে আটক করে পুলিশের কাছে তুলে দেয়ার সময় আমার ওপর হামলা হয়েছে।’

আরিফুজ্জামান রাজিব বলেন, ‘আমি বন্ধের দিন ছুটিতে বাড়িতে আছি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফোনে ঘটনা শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি দেখব।’

মির মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ক্যাম্পাসের ভেতর না গেলেও পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে।’

প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত ছাত্রলীগের কর্মী সোহাগের বিরুদ্ধে এর আগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতনসহ একাধিক অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের একাধিক বার হেনস্তা করার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×