ছাত্র শিবিরের টাকার উৎস জানালেন জবি সেক্রেটারি, ছাত্রদল নিয়ে রেখেছেন পাল্টা প্রশ্ন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১০:৪৩ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের এত টাকা কোথা থেকে আসে, এমন প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন। শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকেল ৩টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলার কনফারেন্স কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্ন তোলেন তিনি। ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকের এই মন্তব্যের পর এবার ছাত্রদলের টাকার উৎস জানতে চেয়েছেন জবি শিবির সেক্রেটারি মো. রিয়াজুল ইসলাম। একই সঙ্গে শিবিরের টাকার উৎস সম্পর্কেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, শিবির কর্মীরা তাদের টিউশন করা জমানো টাকা ছাত্রকল্যাণ ফান্ডে দান করে। আমাদের মায়েরা তাদের গলার হার আমাদের বিশ্বাস করে দিয়ে দেয়।
শুক্রবার (৭ মার্চ) ছাত্রদল সম্পাদকের ওই মন্তব্যের পর সন্ধ্যার দিকে জবি শিবির সেক্রেটারি রিয়াজুল ইসলাম তার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে লিখেন, আমাদের আয়ের উৎস গুলো আমাদের সংবিধানে সুস্পষ্ট করে বলা আছে।
তিনি পোস্টে লিখেন, অর্থ-ব্যবস্থা/বায়তুলমাল ধারা-৩৬ : সংগঠনের প্রত্যেক স্তরে বায়তুলমাল থাকবে। কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের দান, সংগঠন-প্রকাশনীর মুনাফা এবং শরিয়ত অনুমোদিত অন্যান্য খাতসমূহ থেকে প্রাপ্ত অর্থই হবে বায়তুলমালের আয়ের উৎস। আমাদের কর্মীরা তাদের টিউশন করা জমানো টাকা ছাত্রকল্যাণ ফান্ডে দান করে। আমাদের মায়েরা তাদের গলার হার আমাদের বিশ্বাস করে দিয়ে দেয়। আমাদের বোনেরা রান্নার মুষ্টি চাল জমা করে আমাদের দিয়ে দেয়।
তিনি সেই পোস্টে আরও লিখেন, আমাদের ভাইয়েরা তাদের বেতনের কষ্ট করা টাকা কোনো প্রকার চিন্তা ভাবনা ছাড়াই আমাদের দিয়ে দেয়। আমাদের সকল সাবেক ভাইয়েরা আমাদের টাকা দেয়, বিপদের দিনে আমাদের আশ্রয় দেয়। আমাদের কোনো ব্যক্তিগত আয় নেই কোনো ব্যক্তিগত ব্যয় নেই। আমাদের যা আয় যা ব্যয় সব সংগঠনের জন্য নিবেদিত। যারা আমাদের নিয়ে প্রশ্ন করেন তাদের অনুরোধ করবো বুকে হাত রেখে আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলেন আপনার দলের টাকা কোথা থেকে আসে?
রিয়াজুল নিজ পোস্টের বিষয় ছাড়াও আরও কিছু কথা জানিয়েছেন চ্যানেল 24 অনলাইনকে, তিনি বলেন, আমরা আমাদের যায়গা পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছি এখানে উস্কানিমূলক কোনো কিছু বলিনি, আমরা সাবলীলভাবে বিবরণ তুলে ধরেছি তারাও তুলে ধরুক কোথা থেকে টাকা তারা পায়। আমাদের যেমন প্রকাশনী রয়েছে মাসে ১২টা, পত্রিকা বের হয়, ডায়েরি, ক্যালেন্ডার বের হয়। মাসিক বই বের হয়, সেখান থেকে যে লাভ হয় সেটা আমাদের আয়ের উৎস। এছাড়া আমাদের শিবিরের সাবেক ভাইয়েরা শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে টাকা পয়সা দেয়। শরীয়ত নির্ধারিত অন্যান্য খাত যেমন রমজানে কুরআন ও ইফতার বিতরণের ক্ষেত্রে কেউ যদি ভালোবেসে ১০টা কুরআন বা ইফতার বিতরণের সহায়তা করেন সেগুলোই আমাদের উৎস। শরীয়ত নির্ধারিত অন্যান্য খাত যেগুলো ইসলাম অনুমোদন করে সেগুলো আমরা গ্রহণ করি।
ছাত্রদল সম্পাদকের এ মন্তব্য নিয়ে পরবর্তী কোনো কর্মসূচি আসবে কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা কেন্দ্রীয় কমিটি বলতে পারবে, এ নিয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না।
এর আগে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারিকে বলতে শুনেছি তারা প্রতিদিন গণ-ইফতার কর্মসূচিতে তিন লাখ টাকা ব্যয় করছেন। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, তারা এত টাকা কীভাবে উপার্জন করছেন। তাদের আয়ের উৎস কী? একটি সাধারণ ছাত্র সংগঠন মাসে ৯০ লাখ টাকা কোথায় পাচ্ছে, এই তথ্য আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে শিবিরের কাছে জানতে চাই।