চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
- চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০২:৫৯ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাঙ্গণে ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন তথা ‘স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন ফর মেরিন রিমোট সেন্সিং (এসজিএসএমআরএস) প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সমুদ্র গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের জন্য একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হলো। চবির সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের সাথে চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সেকেন্ড ইন্সিটিউট অফ ওশানগ্রাফির সাথে যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়ন হচ্ছে এ প্রকল্পটি।
বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন চবির প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়রিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াং দা এবং ডিএমডি মাহমুদ হুসেইন খান।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য দেন চবির ওসানোগ্রাফি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. অহিদুল আলম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন ফর মেরিন রিমোট সেন্সিং স্থাপনের ফলে মেরিন সায়েন্সেস এন্ড ফিশারিজ অনুষদভুক্ত সব বিভাগের শিক্ষক-গবেষক ও শিক্ষার্থীরা গভীর সমুদ্রে মহামূল্যবান সম্পদ নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ অবারিত হবে। একইসাথে মহামূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’
উপাচার্য আরো বলেন, ‘এ স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের ফলে গভীর সমুদ্রে কোন কোন জায়গায় কি ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে তা নির্ণয় করা সহজতর হবে।’
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকদের এর সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশমাতৃকার কাজে নিজেদের অবদান রাখার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের সমন্বয়ক চবির ওশানোগ্রাফি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন মুন্না প্রকল্পের আদ্যোপান্ত সবিস্তারে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিতব্য স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন ফর মেরিন রিমোট সেন্সিং একটি অত্যাধুনিক সুবিধা তৈরি করবে; যা সমুদ্র গবেষণা, জলবায়ু পর্যবেক্ষণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিপ্লব ঘটাবে।’
চীনের সেকেন্ড ওশানোগ্রাফি ইনস্টিটিউট (এসআইও) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বিভাগের যৌথ আয়োজনে নির্মিত এ প্রকল্পটি বাংলাদেশকে সমুদ্র-প্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে সমুদ্র গবেষণা ও দূরবর্তী রিমোটসেন্সিং প্রযুক্তির উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ডাটা প্রসেসিং সেন্টার, ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ, সমুদ্র গবেষণা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবদান, উন্নত সমুদ্র গবেষণা, সাগরের গতিবিদ্যা, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সাইক্লোন ও সুনামি পূর্বাভাস, স্টর্ম সার্জ মডেলিং, অর্থনৈতিক সুবিধা, মৎস্য খাত, ব্লু ইকোনমি, শিক্ষা ও গবেষণা, শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, নীতিনির্ধারণে সহায়তা, সাগর নীতিমালা, বাংলাদেশের জন্য সুফল, প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা, গবেষণার নতুন দিগন্ত ও আঞ্চলিক নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে।