আনন্দ শোভাযাত্রায় না আসায় শিক্ষার্থীদের খাবার বন্ধ করলেন ইবি প্রভোস্ট


MARCH NAEEM 2ND/Campus-eu.jpg

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বাংলা নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রায় অনুপস্থিত থাকায় খালেদা জিয়া হলের শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন এ কাজ করেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

জানা যায়, বুধবার বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হলে দুপুরে বিশেষ পান্তাভাতের আয়োজন করা হয়। এদিকে বেলা ১১টায় নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে হল থেকে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এ সময় মাত্র সাত জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাৎক্ষণিক দুপুরে পান্তাভাতের আয়োজনটি বন্ধ ঘোষণা করেন হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন। এ ছাড়া রাত ৯টায় সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশেষ মিটিংয়ের আহ্বান জানান তিনি। এদিকে হলটির ডাইনিংয়ে দুপুরের স্বাভাবিক খাবারের আয়োজনও করা হয়নি। এর ফলে হলটির আবাসিক শিক্ষার্থীরা দুপুরের খাবার নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পরে হল প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, হলের ডাইনিংয়ে খাবার রান্না হওয়ার মাঝপর্যায়ে প্রভোস্ট স্যার বন্ধ করে দেন। এর আগে নোটিশে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণও বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেননি। ফলে যার যার মতো ক্লাস পরীক্ষা থাকায় সবাই ক্যাম্পাসে চলে যান। পরে দুপুরের পর এসে জানতে পারি হলে খাবারের আয়োজন করা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার।

এ বিষয়ে হলটির আবাসিক শিক্ষার্থী মাহমুদা খাতুন বলেন, ‘প্রভোস্ট আমাদের বলেছেন বৈশাখী অনুষ্ঠানের দিন দুপুরে হলে খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। আমরা লিস্ট দিয়েছি, সেই অনুযায়ী আমাদের টোকেন দিয়েছে। আমাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর ক্লাস পরীক্ষা ছিল তাই আমরা উপস্থিত হতে পারিনি। এ কারণে স্যার রাগ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমাদের দুপুরে খেতে দেওয়া হবে না। আপাতত ডাইনিং বন্ধ থাকবে এবং রাত ৯টার সময় সেন্ট্রাল মিটিং করা হবে। আমি হলের সিনিয়র আপুর কাছে খাবারের টোকেন নিতে গেলে তিনি আমাকে জানান যে, স্যার নিষেধ করছে আজ খাবার দেওয়া হবে না।’

এদিকে এ বিষয়ে হলের ডাইনিংয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে প্রভোস্ট স্যার আমাদের অফিস কক্ষে ডাকেন এবং রান্না বন্ধ রাখতে বলেন। আমরা গতকাল রাত ২টার পর থেকে এই প্রোগ্রাম উপলক্ষে ভাত রান্না করেছি। সব কিছু প্রায় কমপ্লিট হওয়ার আগমুহূর্তে ছিল। শুধু মাছ ভাজাটা বাকি ছিল। এমন সময়ে তিনি রান্না বন্ধ রাখতে বলেন।’

হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা জাতীয় অনুষ্ঠানে সব সময় চেষ্টা করি জমকালো আয়োজন করার। আমার হলে প্রায় ৪০০ ছাত্রী থাকে। কিন্তু সকালে ৮/১০ জন শিক্ষার্থী ছাড়া আর কেউ শোভাযাত্রায় আসেনি। আমাদের ব্যান্ড পার্টি ছিল, এই কয়েকজন নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব না হওয়ায় প্ল্যান ক্যানসেল করি এবং তৎক্ষণাৎ হতাশ হয়ে আমি দুপুরের খাবারটা বন্ধ করার চিন্তা করেছি।’

এ সময় শিক্ষার্থীদের একাধিক অভিযোগ এবং পদত্যাগের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×