ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের জামাতের সময়সূচি প্রকাশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদুল ফিতরের জামাতের সময়সূচি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই কর্মসূচি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামি’আয় পবিত্র ঈদুল ফিতরের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের সিনিয়র ইমাম খতিব হাফেজ মাওলানা নাজীর মাহমুদ এবং দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন মসজিদের সিনিয়র মোয়াজ্জিন এম এ জলিল। বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মসজিদে সকাল ৮টায়, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল লনে সকাল ৮টায় এবং ফজলুল হক মুসলিম হলের পূর্ব পাশের খেলার মাঠে সকাল ৮টায় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাঙ্গণে ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন তথা ‘স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন ফর মেরিন রিমোট সেন্সিং (এসজিএসএমআরএস) প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সমুদ্র গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের জন্য একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হলো। চবির সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের সাথে চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সেকেন্ড ইন্সিটিউট অফ ওশানগ্রাফির সাথে যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়ন হচ্ছে এ প্রকল্পটি। বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন চবির প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়রিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াং দা এবং ডিএমডি মাহমুদ হুসেইন খান। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য দেন চবির ওসানোগ্রাফি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. অহিদুল আলম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ ইয়াহ্‌ইয়া আখতার বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন ফর মেরিন রিমোট সেন্সিং স্থাপনের ফলে মেরিন সায়েন্সেস এন্ড ফিশারিজ অনুষদভুক্ত সব বিভাগের শিক্ষক-গবেষক ও শিক্ষার্থীরা গভীর সমুদ্রে মহামূল্যবান সম্পদ নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ অবারিত হবে। একইসাথে মহামূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’ উপাচার্য আরো বলেন, ‘এ স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের ফলে গভীর সমুদ্রে কোন কোন জায়গায় কি ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে তা নির্ণয় করা সহজতর হবে।’ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকদের এর সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশমাতৃকার কাজে নিজেদের অবদান রাখার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের সমন্বয়ক চবির ওশানোগ্রাফি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন মুন্না প্রকল্পের আদ্যোপান্ত সবিস্তারে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিতব্য স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন ফর মেরিন রিমোট সেন্সিং একটি অত্যাধুনিক সুবিধা তৈরি করবে; যা সমুদ্র গবেষণা, জলবায়ু পর্যবেক্ষণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিপ্লব ঘটাবে।’ চীনের সেকেন্ড ওশানোগ্রাফি ইনস্টিটিউট (এসআইও) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বিভাগের যৌথ আয়োজনে নির্মিত এ প্রকল্পটি বাংলাদেশকে সমুদ্র-প্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সমুদ্র গবেষণা ও দূরবর্তী রিমোটসেন্সিং প্রযুক্তির উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা বক্তব্যে উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ডাটা প্রসেসিং সেন্টার, ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ, সমুদ্র গবেষণা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবদান, উন্নত সমুদ্র গবেষণা, সাগরের গতিবিদ্যা, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সাইক্লোন ও সুনামি পূর্বাভাস, স্টর্ম সার্জ মডেলিং, অর্থনৈতিক সুবিধা, মৎস্য খাত, ব্লু ইকোনমি, শিক্ষা ও গবেষণা, শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, নীতিনির্ধারণে সহায়তা, সাগর নীতিমালা, বাংলাদেশের জন্য সুফল, প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা, গবেষণার নতুন দিগন্ত ও আঞ্চলিক নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে।

ঢাবিতে গৌরনদী শিক্ষার্থী কল্যাণ পরিষদের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত গৌরনদী উপজেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন 'গৌরনদী শিক্ষার্থী কল্যাণ পরিষদ' এর উদ্যোগে পুনর্মিলনী ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।শনিবার (২২ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবুল বরকত মিলনায়তনে ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে তারুণ্যের পুণর্মিলনী এই প্রতিবাদ্যকে ধারন করে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, এম জহির উদ্দিন স্বপন (সাবেক সংসদ সদস্য (বরিশাল-১)।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন সংগঠনের সভাপতি মোঃ আল আমিন এবং সঞ্চলনায় ছিলেন একই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তরিকুল ইসলাম।সকলের উপস্থিতিতে সভায় ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। কমিটিতে সভাপতি পদে ফারহানা আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মেহেদী হাসান ইমন ও সহ-সভাপতি পদে সুব্রতকে নির্বাচিত করা হয় ।এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সাব্বির আহমেদ, সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম শান্ত, সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রাজা, সাবেক শিক্ষার্থী মনির স্বর্ণমত, আনিসুর রহমান, লিমাদ সহ অন্যান্য শিক্ষার্থীবৃন্দ।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম জুলাইয়ে আহতদের

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সংগঠন ওরিয়র্স অব জুলাই। এর মাঝে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা হলে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল থেকে তারা এই আল্টিমেটাম দেন। কর্মসূচি অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে শহীদ মিনারে জুলাইয়ে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে৷ বিক্ষোভ সমাবেশে কর্মসূচি ঘোষণা করে আহতরা বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয় থেকে ঘোষণা অথবা সিদ্ধান্ত আসতে হবে। এই সময়ের মধ্যে কোনো প্রতিশ্রুতি না এলে ৪৮ ঘণ্টা পর সারা দেশ থেকে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। যতদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা না হবে শহীদ মিনারে তাদের সেই অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’ আহতদের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টাসহ সব উপদেষ্টার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। কেউ যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করে তাহলে তাদের গদি থাকবে না। কোন রাজনৈতিক দল যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করে তাদেরকেও আওয়ামী লীগের মতো পরিণতি ভোগ করতে হবে

চবিতে ২০ দিনে ৪৫ হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার করালো ছাত্রশিবির

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত ২০ দিনব্যাপী দারসুল কোরআন ও গণ-ইফতার সম্পন্ন হয়েছে। ‘মিনার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’ নামক দাওয়াহ সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ কার্যক্রমে প্রতিদিন প্রায় ২০০০-২২০০ শিক্ষার্থী অংশ নেন। পুরো আয়োজনে সর্বমোট ৪০-৪৫ হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার করানো হয়েছে বলে জানান সংগঠনটির নেতারা। শুক্রবার (২১ মার্চ) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রায় ১২০০ ছাত্রের উপস্থিতিতে দারসুল কোরআনের সমাপনী অধিবেশনের মধ্য দিয়ে এ আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরের সহকারী সেক্রেটারি মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী। সমাপনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ২০ দিনব্যাপী এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কোরআনের শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে দৃঢ় করার লক্ষ্যে এ আয়োজন করা হয়। কোরআন হচ্ছে হেদায়াতের আলোকবর্তিকা। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জীবনে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনের চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। ছেলেদের জন্য কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ এবং মেয়েদের জন্য ছাত্রী হলসমূহে এ আয়োজন করা হয়। এতে সংগঠনটির দেড়শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেন। প্রথম রমজান থেকে শুরু হওয়া এ আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিকতা, ভ্রাতৃত্ব এবং রমজানের মূল্যবোধকে আরও শক্তিশালী করেছে বলে মনে করছেন আয়োজকরা। আয়োজন নিয়ে শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

মস্তিষ্কে রক্তকরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মো. আব্দুল্লাহ ওমর নাসিফ নামে এক ছাত্র মৃত্যু বরণ করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের এম.এস. শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন। শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর একটি হাসপাতালে আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্রেন স্ট্রোক করে তার মৃত্যু হয়। পরে রাত ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, নাসিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-২০১৮ সেশনের অমর একুশে হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। বর্তমানে মাস্টার্স অধ্যয়নরত ছিলেন তিনি। অত্যন্ত মেধাবী এই শিক্ষার্থী ব্রেইন স্ট্রোক করে মারা যাওয়ায় পরিবার, এলাকায় ও সহপাঠীদের মধ্যে শোক নেমে এসেছে। বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তার অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাবিতে একাধিক বিক্ষোভ মিছিল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে একাধিক বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজের পর থেকে ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। সংগঠনটি আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীক দ্রুত নিষিদ্ধের দাবি জানায়। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এসে সমাবেশ করে। এদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে ও সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের ওপর গণহত্যা চালানোর প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। জুমার নামাজের পর তারা কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে মিছিল শুরু করে রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। বিকেল সাড়ে ৩টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দে’র ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে মিছিল করে শিক্ষার্থীদের একটি দল। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিক্ষোভ মিছিলে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব জাহিদ আহসান বলেন, আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি হবে না। আওয়ামী লীগ নামে কোনো সংস্কার হবে না। বাংলাদেশকে আমরা আরও একটি গণহত্যার দিকে ঠেলে দিতে পারি না। নামে-বেনামে আওয়ামী লীগ ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে। সেটা যেখান থেকেই হোক, এর বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র আশরেফা খাতুন বলেন, আমরা আগস্টে যেভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ছিলাম, এখনও তেমনই আছি। যতদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হয়, ততদিন আমরা মাঠে থাকব। রাজু ভাস্কর্যে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, আড়াই তিন বছর বিএনপি ক্ষমতায় থাকবে। এরপর আওয়ামী লীগ ভারত ও ইসরায়েলকে সঙ্গে নিয়ে এমন ষড়যন্ত্র করবে তিন বছরের মাথায় বিএনপিকে লাথি মেরে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে। সেই আওয়ামী লীগ ভারতের সহায়তায় ক্ষমতায় এসে দুই হাজার শহিদের বাবা-মা, ভাইবোনদের কচুকাটা করবে। ৫০ হাজার আহতদের প্রত্যেককে ধরে ধরে কচুকাটা করবে। তাই শহিদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের বাঁচাতে রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করতে দেব না। সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে সমাবেশে শিক্ষার্থী শাহেদ ইমন বলেন, দুই হাজার শহিদ ভাইয়ের লাল রক্তে জুলাইয়ে কোটি জনতা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে লাল কার্ড দেখিয়েছে। আমরা বলে দিচ্ছি, আমরা জান দেব, জুলাই দেব না। শহিদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করব না। এই বাংলার মাটিতে যতক্ষণ লীগ নামক শব্দ থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।

প্রয়োজনে ফের জুলাই বিপ্লব হবে, তবুও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন মানব না

গণহত্যাকারী সংগঠন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন। আজ শুক্রবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা বলেন, ‘আবারও জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হবে, তবুও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন মেনে নেওয়া হবে না।’ মানববন্ধনে বিভিন্ন স্লোগানে প্রকম্পিত হয় ক্যাম্পাস ‘আপস নয়, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘ক্যান্টনমেন্ট নয়, রাজপথ, রাজপথ, রাজপথ’, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতেই হবে’ জাহিদ হাসান জয় বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে দিতে চাই- তাদের এই চক্রান্ত কখনোই সফল হবে না। বাংলার জমিনে এখন হাজার হাজার হাসনাত আব্দুল্লাহ তৈরি হয়েছে। মানুষ প্রস্তুত রয়েছে আবু সাঈদের মতো জীবন দিতে। জীবন দিতে প্রস্তুত কিন্তু জুলাই বিপ্লব কখনো ব্যর্থ হতে দেব না।’ আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা চাই, অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগের বিচার হোক এবং দলটি নিষিদ্ধ করা হোক। এ সরকার শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, কোনো কুচক্রী মহলের প্ররোচণায় আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা হলে আমরা ছাত্রজনতা আরও একটি জুলাই বিপ্লব সংঘটিত করব।’ শামসুর রহমান সুমন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে, তার বিচার সবার আগে নিশ্চিত করা প্রয়োজন। যতক্ষণ পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হচ্ছে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’

নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’র আত্মপ্রকাশ

জুলাইয়ের গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনীতিতে নিষিদ্ধকরণের দাবিতে ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাবির টিএসসি সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ প্ল্যাটফর্ম ঘোষণা করেন ঢাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের। এর আগে ঢাবির হল পাড়া থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ মিছিল করেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা। মিছিলে ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এ বাংলায় হবে না’, ‘জুলাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’, ‘জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘লড়াই হবে একসঙ্গে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। এবি জুবায়ের বলেন, ‘গত ১৬ বছরে সোনার বাংলাকে আওয়ামী লীগ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে তামা তামা করে দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম কাজ ছিল জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার করা, কিন্তু তারা তা করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে গণভোটের আয়োজনের আহ্বান করেন তিনি। তিনি বলেন, গণভোটের আয়োজন করলে, বাংলাদেশের মানুষ রায় দেবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি করতে পারবে না।’ বক্তব্য শেষে প্ল্যাটফর্মটির নাম ঘোষণা দেন জুবায়ের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনি যে দলের বা মতের হোন কেন যদি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক চান তাহলে আমাদের পাশে দাঁড়ান।’ জুলাই অভ্যুত্থানের অন্য এক সংগঠক মোসাদ্দেক বলেন, ‘জুলাইয়ে অভ্যুত্থান শেষ হওয়ার পর সেই প্ল্যাটফর্ম বিভিন্ন হীন রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। যার কারণে আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা করেছি, যে প্ল্যাটফর্ম আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিলুপ্ত করে দেওয়া হবে। আমাদের প্ল্যাটফর্ম গণহত্যারকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্ল্যাটফর্ম। তিনি বলেন, আপনারা যদি সত্যিকার অর্থে চান আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক তাহলে এ প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হোন।’ বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে মোসাদ্দেক প্ল্যাটফর্মের কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, ‘কাল ২২ মার্চ বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে ইফতার ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে এ মঞ্চ।’

আওয়ামী লীগকে ফেরাতে চাইলে দেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের কোন পরিকল্পনা নেই- প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল থেকে বলা হয়, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করতে চাইলে এ দেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজের পর ইনকিলাব মঞ্চের আয়োজনে ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। পরে মিছিলটি হল পাড়া-প্রশাসনিক ভবন-ভিসি চত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়৷ এ সময় তারা- আওয়ামী লীগের বিচার চাই, আওয়ামী লীগের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে, একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জেলে ভর; ইউনূস সাহেবের বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে, গণহত্যার বিচার চাই, অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে, নিষিদ্ধ করতে হবে; আওয়ামী লীগের বিষদাঁত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও; শহীদেরা দিচ্ছে ডাক, আওয়ামী লীগ নিপাত যাকসহ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। ইনকিলাব মঞ্চের মিছিলে, খুনি লীগের পুনর্বাসন, রুখে দাও জনগণ; জুলাইয়ের বাংলায়, গণহত্যাকারীদের ঠাঁই নাই, লেখা সম্বলিত প্লেকার্ডও দেখা যায়। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাইলে বাংলাদেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। দুই হাজারের অধিক শহীদ এবং হাজার হাজার আহতের রক্তের শপথ, আমাদের দেহে এক বিন্দু রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে দেব না।’ তিনি আরো বলেন, ‘এবার লীগকে সুযোগ দেওয়া হলে তারা অল্প কয়টা আসন নিয়ে বিরোধী দলে থেকে যাবে। আর তারা বিরোধী দলে থেকে কূটকচাল চালবে। তাদের কারণে বিএনপি ৩ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবে না৷ আওয়ামী লীগ- ভারত আর ইসরায়েলকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিকে লাথি দিয়ে ক্ষমতা থেকে বের করে দেবে৷ তারপর দেশে আবার নারকীয় তাণ্ডব চালাবে। আহতদের কচুকাটা করবে৷ তাই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে আমরা রাস্তা ছাড়বো না।’

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল সাধারণ শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দিবাগত রাত পোনে ২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ঢাবির হল পাড়া থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভিসি চত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় সমাবেশ থেকে শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেল তিনটায় ঢাবি রাজু ভাস্কর্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ধরি ধরি ধরি না, ধরলে কিন্তু ছাড়ি না’, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করো, করতে হবে’, সারা বাংলায় খবর দে, আওয়ামী লীগের কবর দে’, ‘আওয়ামী লীগের চামড়া, তুলে নেব আমরা’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘জুলাইয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের যারা গণহত্যার করেছিল এবং মদদ দিয়েছিল সেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য কোনো পদক্ষেপ অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে দেখিনি। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।’ এ সময় প্রধান উপদেষ্টার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ভাবনা নেই- এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। ঢাবির শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, ‘যে বাংলায় আবু সাইদ প্রাণ দিয়েছে, ওয়াসিম প্রাণ দিয়েছে সে বাংলায় আওয়ামী লীগ থাকতে পারবে না। আন্দোলনে ২ হাজারের অধিক মানুষ প্রাণ দিয়েছে, হাজার হাজার আহতরা এখনো অনেকে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যদি এই সরকার বলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারবে না এর থেকে বড় লজ্জা হতে পারে না। যে বাংলায় আওয়ামী লীগ গণহত্যা করেছে সেখানে তারা থাকতে পারবে না। আমরা তা মেনে নেব না।’ তিনি আরো বলেন, ‘শহীদের রক্তের সাথে কোনো চক্রান্ত মেনে নেওয়া হবে না। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে গণহত্যার দায় মাথায় নিয়ে নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করে জনমত নিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন।’ ঢাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, ‘এখন ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা আওয়ামী লীগকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণ দিয়ে দিয়েছে। এদেশে আওয়ামী লীগ থাকবে নাহলে ছাত্রসমাজ থাকবে। শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত এদেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার সিদ্ধান্তকে আমরা ধিক্কার জানায়। আপনারা শহীদদের এবং আহত ভাইদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। প্রধান উপদেষ্টা যদি তার বক্তব্য প্রত্যাহার না করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমাদের বলিষ্ঠ অবস্থান থাকবে।’

পরীক্ষায় নকল ধরা মাত্রই কাগজ গিলে ফেলেন ববি শিক্ষার্থী

চতুর্থ বর্ষের মিডটার্ম পরীক্ষায় দূষণীয় কাগজ (নকল) ধরা মাত্রই গিলে খেয়ে ফেলেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার দায়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশক্রমে তার সংশ্লিষ্ট থাকা কোর্সটি বাতিল করে পরবর্তী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার কথা জানানো হয়। বুধবার (১৯ মার্চ) পরীক্ষাসংক্রান্ত শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে সুপারিশ করে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। তবে অনেকের থেকে দূষণীয় কাগজ ধরা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ অস্বীকার করলে তাদের কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি বলেও জানা যায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৪৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাগজ গিলে ফেলা ওই শিক্ষার্থীর অবহিতকরণ নোটিশে বলা হয়, পরিদর্শকের (শিক্ষক) বক্তব্য অনুযায়ী পরীক্ষার্থীর নিকট দূষণীয় কাগজ ব্যবহারের দায় স্বীকার করে নেন। শিক্ষক ওই শিক্ষার্থীর নিকট দূষণীয় কাগজ (নকল) চাওয়া মাত্রই তিনি ভয়ে গিলে ফেলেন, যা পরবর্তীতে প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিলকরণ করা সম্ভব হয়নি। তদনুযায়ী ৫(বি) ২(বি) ধারায় বর্ণিত শাস্তি মোতাবেক তার সংশ্লিষ্ট কোর্সটি বাতিল এবং পরীক্ষা বিধি অনুযায়ী পরবর্তী সব কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে মর্মে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল সুপারিশ করেন। এদিকে নকল ধরা পড়েছে বলে অভিযোগ দিলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন শাস্তি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। কেউ কেউ দূষিত কাগজ রাখা ও বেঞ্চে লিখেছে বলে পরিদর্শক হাতেনাতে ধরা পড়লেও ছাড় পেয়েছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। আবার কারণ দর্শানোর নোটিশে অসদুপায় অবলম্বন করেনি উল্লেখ করলেও শাস্তি পেয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মো. আলিমউদ্দিন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, আমি কোনোভাবেই অসাধু উপায় অবলম্বন করিনি। আমার বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং আমাকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে হাইবেঞ্চের লেখার সঙ্গে আমার খাতায় লেখার মিল খুঁজে পাওয়া গেছে এবং বলা হয়েছে আমি লিখিত জবাবে স্বীকার করেছি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আমি লিখিত জবাবে স্বীকার করিনি। আমার বাবা নেই। অন্যায়ভাবে শাস্তি দিলে আমার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক শিক্ষার্থী জানান, অনেকের দূষণীয় কাগজ হাতেনাতে ধরলেও শাস্তি পায়নি। এদিকে অভিযোগ স্বীকার না করেও শাস্তি পায়। শিক্ষকদের অন্তর্কোন্দলে এমনটা হতে পারে। কারণ, শিক্ষার্থীরা তো একেকজন শিক্ষকের আস্থাভাজন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্রে জানা যায়, দূষণীয় কাগজ বা নকল ধরা পড়লে ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপর একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি দোষীদের বিরুদ্ধে অ্যাকাডেমিক শাস্তির জন্য সুপারিশ করে থাকে। পরে সেটি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপন করলে তারাও সেটি সুপারিশ করে থাকে। পরে সিন্ডিকেটে পাশ হয়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন জানান, যেসব শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ৪৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ করলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের গতকাল বুধবার অবহিত করা হয়। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সুমি রানী সাহা জানান, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করার সময়ে এক শিক্ষার্থীর থেকে দূষণীয় কাগজ বারবার চাওয়া হয়। একপর্যায়ে তার হাতে থাকা সেই কাগজ গিলে ফেলে। অন্যান্য শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি ও ঐতিহ্য প্রদর্শনী

সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের আইন বিভাগের মুট কোর্ট সোসাইটির উদ্যোগে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রথম বারের অনুষ্ঠিত হলো ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি ও ঐতিহ্য প্রদর্শনী প্রতিযোগিতা। ইসলামী শিল্প, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ এবং সৃজনশীলতা সৃষ্টিতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বুধবার (১৯ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত স্থায়ী ক্যাম্পাস চট্টগ্রািম সিটির বায়েজিদ আরেফিন নগরে এই প্রদর্শনী চলে। অনুষ্ঠানে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) ড. শরীফ আশরাফউজ্জামান, উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক সরওয়ার জাহান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইসরাত জাহান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল হক, রেজিস্ট্রার এএফএম মোদাচ্ছের আলী, আইন বিভাগের উপদেষ্টা অধ্যাপক মহিউদ্দিন খালেদ, আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সুরাইয়া মমতাজ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ নুরুন্নবী। সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় মুর্ট কোর্ট সোসাইটির মডারেটর খাদিজাতুল কুবরা ও জাহেদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের ক্যালিগ্রাফি ও ঐতিহ্য প্রদর্শনীর মাধ্যমে দক্ষতা প্রদর্শন করেন। প্রতিযোগিতায় ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সৈয়দা রোকসার এ মেহজাবিন প্রথম স্থান অর্জন করেন, আইন বিভাগের আসরিক জাহান আসা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের নাসরিন হায়দার ফাহিমা । এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা তাদের সৃজনশীলতা ও ক্যালিগ্রাফি শিল্পের প্রতি আগ্রহের পরিচয় দিয়েছেন, যা সবার মধ্যে ইসলামী সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সচেতনতা সৃষ্টি করতে সহায়ক হয়েছে বলে জানান মুট কোর্ট সোসাইটি।

ট্রাম্পবিরোধী স্লোগানে উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যাল

যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে গাজার ঘুমন্ত নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষের ওপর বর্বর হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৯ মার্চ) ইফতার শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বাহাদুর শাহ উদ্যান প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে এসে ভাস্কর্য চত্বরে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর, আমেরিকার বিরুদ্ধে গর্জে উঠো আরেকবার, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গর্জে উঠো আরেকবার, ট্রাম্পের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, নেতানিয়াহুর দুই গালে জুতা মারো তালে তালে ও ইসরায়েল নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাকসহ নানা স্লোগান দেন। এ সময় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।ফয়সাল মুরাদ বলেন, ইসরায়েল একটা অবৈধ রাষ্ট্র। লাখ লাখ শিশুদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে না। আবার তাদের ওপরই নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, আজ মানবাধিকার সংগঠনগুলো কোথায়? আজ শিশুদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো নিশ্চুপ হয়ে গেছে। তাদের চোখে কি এগুলো পড়ছে না। আজ মুসলিম বিশ্বের সব শক্তিকে একত্রিত হতে হবে। আমাদের শুধু দোয়া করলে হবে না, আমাদের জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ পথে যেতে হবে। জিহাদ নিয়ে গবেষণা, স্টাডি করতে হবে। এ সময় ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘হে মুসলিম, তোমরা জেগে উঠো। তোমাদের হারানো ঐতিহ্য আল আকসা ফিরিয়ে আনতে হবে। বর্তমান মুসলিদেরই এ যুগের খালিদ হতে হবে। মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ এ ছাড়া সমাবেশে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, জবি ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শাহীন আহমেদ খান বক্তব্য রাখেন।

চিহ্নিত হামলাকারীরা তালিকায় নেই, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১২৮ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে প্রশাসন। তবে হামলায় জড়িত থাকা চিহ্নিত অনেক ছাত্রলীগ নেতা, নারীদের হলগুলোর ছাত্রলীগের নেত্রীদের নাম নেই প্রতিবেদনে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জনের নাম উল্লেখ করে বহিষ্কার করা হয়েছে। এমন ‘ত্রুটিপূর্ণ’ প্রতিবেদনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার সিন্ডিকেট সভায় ১২৮ জনকে তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। আজ মঙ্গলবার বহিষ্কৃতদের নামের তালিকা জানা যায়। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অধিকতর তদন্তে কমিটি গঠন করেছে। ১৫ জুলাই ও ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে হামলা করে বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনূস, তিনি বর্তমানে পলাতক। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আল-আমিন রহমান, কারাগারে থাকা ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও জহুরুল হক হলের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা, ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক আকিব মুহাম্মদ ফুয়াদ কারও নাম প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই। প্রতিবেদনে ৮২ নম্বরে ইব্রাহিম সানিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ছাত্র এবং জবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, ১২১ নম্বরে মাহমুদুল হাসান আকাশ জবি ছাত্রলীগের মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি। তাদেরসহ ৭৭ নম্বরে থাকা রিজভী আহমেদ খোকাকে ‘বহিরাগত’ উল্লেখ করে বহিষ্কার দেখানো হয়েছে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ইনান এবং শয়নের ছাত্রত্ব নেই। এক্ষেত্রে তাদের সনদ বাতিল হবে কিনা জানতে চাইলে সেটি বলতে পারেননি রেজিস্ট্রার শামসউদ্দীন লিটন। আজ তালিকা জানাজানি হওয়ার পর প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীদের একটি দল। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বাংলা বিভাগের ছাত্র মোসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, হামলাকারীর যেসব স্পষ্ট ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, সেগুলো বিশ্লেষণ করলে অন্তত চিহ্নিতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে যাবে। শিক্ষার্থীরা তথ্যপ্রমাণ নিয়ে তালিকাও করেছে। তবে এগুলোর প্রতিফলন দেখা যায়নি। পাশাপাশি হামলায় ইন্ধনদাতা শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রশিদুল ইসলাম রিফাত বলেন, ছাত্রলীগের চিহ্নিত মাথাগুলোকে বাদ দিয়ে ১৯-২০, ২০-২১, ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ১২৮ জনের তালিকা করেছে তদন্ত কমিটি। তানভীর হাসান সৈকত, আবু ইউনুস, আল-আমিন রহমান, আকিব ফুয়াদ, কামাল উদ্দিন রানাসহ ছাত্রলীগের বড় বড় সন্ত্রাসীদের নাম নেই। ছাত্রলীগের একজন নারীরও নাম নেই। বিজ্ঞান অনুষদের তিন হল থেকে মাত্র একজনের নাম এসেছে। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শফিকুল ইসলাম ফেসবুকে একটি পোস্টে উল্লেখ করেন, ১৫ জুলাই ঢাকা মেডিকেলে ঢুকে যারা আহত শিক্ষার্থীদের মেরেছে তাদের নাম গণশুনানিতে বলেছিলাম। আমার হাতে থাকা কিছু ডকুমেন্টস আইন অনুষদের ডিনকে (কমিটির সদস্য) মেইল করেছিলাম। বহিষ্কারের তালিকায় তারদের নাম নেই। তদন্ত তালিকা দেখে চুপ থাকতে পারলাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সত্যানুসন্ধান কমিটি কর্তৃক চিহ্নিত ১২৮ জনের তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ নয়। ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলামকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, এই কমিটি ১২৮ জনের বিষয়টি আমলে নিয়ে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সহিংস ঘটনায় জড়িতদের তথ্য চেয়ে চিঠি দেবে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে খুব শিগগিরি তদন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করবে। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তালিকায় নাম না থাকা ছাত্রলীগ নেতাদের ফেসবুকে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট এদিকে, বহিষ্কৃতদের তালিকায় নাম না থাকায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতারা। এমনই একজন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন রহমান। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। ফেসবুকে আল-আমিন লিখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী (তাদের ভাষায়) আল-আমিন রহমানের নাম নেই যে তালিকায়, এমন তালিকা বয়কট করছি।’ পোস্টের শেষে দুইটি হাসির ইমোজিও জুড়ে দেন তিনি। এছাড়া আরও কয়েকজন নেতা ফেসবুকে পোস্ট দেন। তবে তা প্রকাশের অযোগ্য।

শিক্ষার্থীদের কুরআন উপহার দিচ্ছে জবি ইসলামী ছাত্রশিবির

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের রমজান মাস উপলক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০০ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কুরআন বিতরণ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করে সংগঠনটি। জানা যায়, মাহে রমজান উপলক্ষ্যে পবিত্র কুরআনের মোট আড়াই হাজার কপি বিতরণ করবে সংঘটনটি। শিক্ষার্থীরা এ উপহার পেতে ছাত্রশিবির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পেজে দেওয়া লিংক থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। রেজিস্ট্রেশনের শেষ সময় আগামী ২৩ মার্চ। উপহারের মজুদ শেষ হলে তাদের এ কর্মসূচি সমাপ্ত হবে বলে জানানো হয়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য উন্মুক্ত শিবিরের এ উপহার। শিবিরের এ উদ্যোগ সর্ম্পকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির অসাধারণ একটি উদ্যোগ নিয়েছে। মুসলিম হিসেবে আমাদের সবার উচিত অর্থসহ কুরআন পড়া। শিবির আমাদের এ কাজটি করতে উৎসাহ দিচ্ছে। আমরা আশা করব আগামী দিনগুলোতেও ছাত্রশিবিরের এমন কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা যাতে করে নৈতিকতা সম্পন্ন মেধাবী মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এ প্রচেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করি। তারই ধারাবাহিকতায় পবিত্র রমজান মাসে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুহাজার পাঁচশ শিক্ষার্থীর কুরআন বিতরণ করার একটি উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। আজকে প্রথম দিনেই আমরা ৫০০ জন শিক্ষার্থীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কুরআন বিতরণ করছি। বাকি কুরানগুলো আমরা দ্রুতই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পৌঁছে দেব।

জাবির ৯ শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত, সাবেক উপাচার্যের পেনশন স্থগিত

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলন চলাকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ জন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট। শিক্ষার্থীদের ওপর তারা নানাভাবে হামলায় ইন্ধন জুগিয়েছেন ও উস্কানি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের পেনশন সুবিধাও স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার রাত ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে, সোমবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ৯ শিক্ষক হলেন- সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির, সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, অধ্যাপক ইস্রাফিল আহমেদ রঙ্গন, সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী ইকবাল, অধ্যাপক হোসনে আরা, অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার ও অধ্যাপক মো. তাজউদ্দীন শিকদার। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান সমকালকে বলেন, ‘আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৯ জন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আরও ১০ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে।’ সাবেক উপাচার্যের পেনশন স্থগিত:হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম এবং রেজিস্ট্রার আবু হাসান অবসরে চলে যাওয়ায় তাদের পেনশন সুবিধা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট। শেখ পরিবারের নামে হল নয়:শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ পরিবারের কয়েকজন সদস্যের নামে থাকা স্থাপনার নাম বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেখ হাসিনা হল এবং শেখ রাসেল হলের নাম পরিবর্তন করা হবে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে একটি কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গণঅভ্যুত্থানে হামলায় অভিযুক্ত জাবির ২৮৯ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী সাময়িক বহিষ্কার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৪ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় ২৮৯ জন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানা গেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হামলা সংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট। সোমবার দিবাগত রাত ৩টায় সিন্ডিকেট সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের শিক্ষার্থীদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, বহিষ্কৃতদের তিন ক্যাটাগরিতে শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব শেষ তাদের সনদ স্থগিত করা হবে, যারা পরীক্ষা ও ভাইভা দিয়েছে তাদের ফলাফল স্থগিত করা হবে এবং নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। প্রসঙ্গত, আন্দোলন চলার সময় গত বছরের ১৪ জুলাই রাত ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ১৫ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে এবং একই দিন রাত ১২টার দিকে উপাচার্য ভবনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও ছররা গুলিবর্ষণ, ১৭ জুলাই বিকেল ৩টার সময় প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও ছররা গুলিবর্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ১৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করে।

জুলাই অভ্যুত্থানে হামলায় অভিযুক্ত ঢাবির ১২৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় জড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় হামলাসংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমাবার (১৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। জানতে চাইলে ঢাবির প্রক্টর সাহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, ১২৮ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। পরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জড়িতদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন অনুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল ইসলাম। প্রতিবেদনে অনেক সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেও হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় তাদের একাডেমিক সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। তদন্ত কমিটির দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই হামলার সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে যাওয়ার পথে আহত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা। এছাড়া জরুরি বিভাগের ভেতরে আহতদের ওপর হামলা করা হয়েছে এবং তাদের চিকিৎসায় বাধা দেওয়া হয়েছে।

‘ঢাকা সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়’ কাঠামো প্রত্যাখ্যান তিতুমীর শিক্ষার্থীদের

তিতুমীর কলেজকে ঢাকার সাতটি কলেজের সঙ্গে একীভূত করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়’ নামের প্রশাসনিক কাঠামোর প্রস্তাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিতুমীর কলেজকে কাঠামোর আওতায় আনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। রোববার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন তিতুমীর ঐক্যের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক মো. বেল্লাল হোসেনের সই করা ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে নতুন কাঠামোর প্রস্তাব করা হয়েছে সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সভায় আমাদের কলেজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও চারজন প্রতিনিধির মধ্যে তিনজনই অকুণ্ঠচিত্তে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তারা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন, শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট ও সম্মতি ব্যতীত তারা কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে রাজি নয়। একইসঙ্গে এ ধরনে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত স্বার্থান্বেষী অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের মিটিংকে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি আরও বলেন, অনুপস্থিত তিনজন শিক্ষার্থীর নাম যথাক্রমে আমিনুল ইসলাম, হাবিবুল্লাহ রনি, মো. মেহেদী হাসান। অন্যদিকে, একজন প্রতিনিধি রেজায়ে রাব্বি জায়েদ, সভায় উপস্থিত হয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সভাকক্ষ ত্যাগ করেন এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত দাবির পক্ষে অবিচল থাকার ঘোষণা দেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়ে বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে সরকারি তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি, ঐতিহ্য, আত্মপরিচয় ও মর্যাদার প্রশ্নে আপসহীন। প্রাতিষ্ঠানিক স্বকীয়তা রক্ষায় তারা সবসময় প্রস্তুত। আমরা যেকোনো অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এর আগে, গতকাল দুপুরে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নাম চূড়ান্ত করা হয়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ভবনে শিক্ষার্থীদের ৩২ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে অনুষ্ঠিত সভা শেষে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। সাতটি সরকারি কলেজ হচ্ছে— ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ।

আবরার হত্যা মামলার রায়ে সন্তুষ্ট বুয়েট শিক্ষার্থীরা

বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা দ্রুত এই রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন। রোববার (১৬ মার্চ) বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান। ৫ আগস্টের পর আবরার হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমির পালিয়ে যাওয়া বুয়েট শিক্ষার্থীদের হতভম্ব করেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, মুনতাসির আল জেমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। আবরার ফাহাদ হত্যায় তার ভূমিকার জন্য বিচারিক আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। ফাঁসির আসামির স্থান হওয়ার কথা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে আবৃত কনডেম সেলে। সেখান থেকে এত শীর্ষ সন্ত্রাসীর পলায়ন ন্যাক্কারজনক এবং আমাদের জন্য লজ্জার। এই পলায়ন শহীদ আবরার ফাহাদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি। বিবৃতিতে সরকারের কাছে দ্রুত খুনি মুনতাসির আল জেমিসহ বাকি পলাতক আসামিদের খুঁজে বের করে গ্রেফতার করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, জেমির পলায়নে সহযোগিতাকারী প্রত্যেককে শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কারা কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে নিজেদের দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নামে কোনো ধরনের সহিংসতা, অনাচার বা অপকর্মের স্থান নেই। আমরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মতো সংগঠনের বিরুদ্ধে যেমন কঠোর অবস্থান নিয়েছি, তেমনি কোনো ছাত্র সংগঠনই যেন ছাত্ররাজনীতির নামে ক্যাম্পাসে সহিংসতা বা অনিয়মের আশ্রয় না নেয়, সে বিষয়ে আমরা সজাগ থাকবো। বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নামে কোনো অপকর্মের সুযোগ দেওয়া হবে না। প্রকাশ্যে, গোপনে বা ছত্রছায়ায় কোনো ধরনের ছাত্ররাজনীতি বুয়েট ক্যাম্পাসে চান না বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেন তারা।

আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ দিনের ছুটি ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে আগামীকাল রোববার (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ে এক দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (১৫ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেওয়াজ অনুযায়ী অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে ছুটির এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একজন প্রাক্তন উপাচার্য ও অধ্যাপকের মৃত্যুতে পরিবারের সম্মতিক্রমে জানাজার সময় ও স্থান সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে মাইকিং, শোকবার্তা প্রকাশ, কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ মোনাজাতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত সব প্রথা অনুসরণ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে পরিবারের সিদ্ধান্তক্রমেই অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা ও দাফনের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিবারের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানায়। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অসুস্থ হয়ে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের নিউরোসায়েন্স ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার পরের দিন ৭ মার্চ শুক্রবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান হাসপাতালে তাকে দেখতে যান এবং তার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার পরিবার এবং পারিবারিক বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। ইন্তেকালের পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এবং প্রশাসনের অপরাপর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ মরহুমের জানাজা ও দাফন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন এবং দাফন প্রক্রিয়ায় সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন।

গণঅভ্যুত্থানে হামলা: ঢাবির ১২২ শিক্ষার্থীর জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তথ্য অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের কাছে এ তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন অনুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল ইসলাম। সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়টি পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে। তথ্য অনুসন্ধান কমিটি উল্লেখ করেছে যে, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর চিহ্নিত হামলাকারীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হবে। কমিটির আহ্বায়ক কাজী মাহফুজুল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাবি সরাসরি ফৌজদারি মামলা করতে পারে না। তবে, কর্তৃপক্ষ অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেবে।’ তদন্ত প্রতিবেদনে অনেক সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেও হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় তাদের একাডেমিক সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। কমিটি ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে বেশ কয়েকজন আক্রমণকারীকে শনাক্ত করেছে। এ ব্যাপারে কমিটির আহ্বায়ক জানান, ঢাবি কর্তৃপক্ষ তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। অনুসন্ধানে সহিংসতাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলো হলো নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সময় আহতদের ওপর হামলা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা। ক্যাম্পাস পোর্টাল, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কাছ থেকে সংগৃহীত ভিডিও প্রমাণ বিশ্লেষণ করে অনুসন্ধান করেছে কমিটি। মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘নিরপরাধ কারও বিরুদ্ধে যেন অভিযোগ না আসে তা নিশ্চিত করতে আমরা ভিডিও প্রমাণ যাচাই করার সময় বেশ কয়েকটি ডিজিটাল ফ্যাক্ট চেকিং টুল ব্যবহার করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সংগৃহীত তথ্য প্রমাণগুলো এই ইঙ্গিত দেয় যে, এগুলো পূর্বপরিকল্পিত হামলা ছিল, শুধু শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ছিল না।’ তদন্ত কমিটির দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২০২৪ সালের ১৫ জুলাই হামলার সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে যাওয়ার পথে আহত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা। এছাড়া জরুরি বিভাগের ভেতরে আহতদের ওপর হামলা করা হয়েছে এবং তাদের চিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়েছে।’ কমিটির সদস্যরা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে কোনো ফুটেজ পাননি। কারণ কোনো হার্ডড্রাইভ পাওয়া যায়নি। আন্দোলনের সময় নারী শিক্ষার্থীদের যৌর হয়রানি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কমিটির আহ্বায়ক বলেন, ‘হামলার সময় বাসের ভেতরে আশ্রয় নেয়া নারী শিক্ষার্থীদের ওপর যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে, যৌন নিপীড়নের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবুও, প্রতিবেদনে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর যৌন হয়রানির ঘটনাগুলো নথিভুক্ত করা হয়েছে।’ ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসেই নয়, পুরো দেশের ইতিহাসের জঘন্য ঘটনা।’

ধর্ষণের বিচারসহ পাঁচ দাবিতে ছয়দিন ধরে শাহবাগে অবস্থান ঢাবি শিক্ষার্থীর

ধর্ষণের বিচার, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে পাঁচ দফা দাবিতে ছয়দিন ধরে রাজধানীর শাহবাগে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শেখ তাসনীম আফরোজ ইমি। ছয়দিন ধরে অবস্থানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ সংহতি জানিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি কেউ। সরকারের কেউ দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে তিনি কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন বলে জানান। তাসনীম আফরোজ ইমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি শামসুন নাহার হল ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি। গত ৮ মার্চ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘দেশব্যাপী নারী, ধর্ষণ, নিপীড়ন এবং হেনস্তার প্রতিবাদে লাগাতার অবস্থান’ শুরু করেন ইমি। তিনি বলেন, কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি পরিচয় নয়, একেবারে সাধারণ নাগরিকের ব্যানার থেকে আমি অবস্থান করছি। তবে দুঃখের বিষয় আমি এতদিন অবস্থান করছি কিন্তু কেউ বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। এটা একটা বার্তা দেওয়া হলো-সাধারণ মানুষের কথা কেউ শোনে না। তিনি বলেন, আমার যদি কোনো ক্ষতি হয়, এটার পুরো দায় সরকারকে নিতে হবে। আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি, আমার দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস-নিশ্চয়তা যদি আসে তাহলে আমি ঘরে ফিরতে চাই। তার পাঁচ দফা দাবি হলো- ১. ধর্ষণ ও বলাৎকারের বিচার কার্যক্রম নিম্ম আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পন্ন করতে হবে, এবং দ্রুত রায় কার্যকর করতে হবে। ২. আগামী ৭২ ঘণ্টার ভেতর প্রতিটি থানায় একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার নারী ও শিশু নির্যাতন একটি ইমারজেন্সি ক্রাইসিস রেস্পন্স টিম গঠন করতে হবে। একই সাথে থানার অভ্যন্তরে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেখানে ভুক্তভোগী নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা, চিকিৎসা সহায়তা আইন সহায়তা ও মানসিক এখন সেবা দেওয়া হবে। ৩. নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা-২৪ সংশোধন পূর্বক ধর্ষণের শিকার ভিকটিমের পরিচয় প্রকাশের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের উপর যে বিধিনিষেধ আরোপ করা আছে সেই ধারায় সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। ৪. ধর্ষণের শিকার ভিক্টিমের মানসিক, শারীরিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ সরকারকে নিতে হবে। ৫. নারী ও শিশুর উপর সংঘটিত সকল নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরীর জন্য সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। এই উদ্যোগ গুলোর মাধ্যমে সমাজের প্রতিটি শ্রেণী স্তরের নারী ও শিশুদেরকে সচেতন করা যাবে। একই সাথে স্কুল-কলেজের পাঠ প্রস্তুকে নৈতিক শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা পাঠদানের বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।