আমার এলাকার খবর

কুয়াকাটায় ১০ দোকানে তালা দিলেন বিএনপি নেতার ছেলেরা

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসুল্লীর দুই ছেলে ১০টি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে সৈকতের পাশে শুঁটকি মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদের আগে দোকান না খুলতে পারলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন তারা। স্থানীয় সূত্র ও ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিরা জানান, প্রায় ছয় বছর আগে বেল্লাল মোল্লার কাছ থেকে তারা দোকান ভাড়া নেন এবং অগ্রিম হিসেবে ১ থেকে ১.৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। জমির মালিকানা দাবি করেন তিন ব্যক্তি। তারা হলেন কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসুল্লী, রাশেদুল-আফতাব ও বেল্লাল মোল্লা। দোকানিরা বিষয়টি সমাধানের জন্য একাধিকবার বৈঠকের চেষ্টা করলেও কোনো সমাধান হয়নি। এ অবস্থায় কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসুল্লীর ছেলে লতাচাপলী ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মুসুল্লী দোকানিদের নতুন চুক্তিতে রাজি হতে চাপ দেন। কিন্তু জমির মালিকানা নির্ধারণ না হওয়ায় তারা এতে রাজি হননি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে রিয়াজ মুসুল্লী ও তার ভাই মহিপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন মুসুল্লী লোকজন নিয়ে দোকানগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দোকানি জানান, তারা বেল্লাল মোল্লার কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছিলেন এবং তাকে অগ্রিম টাকা দিয়েছেন। এখন তারা নতুন করে কারও সঙ্গে চুক্তি করতে চান না। তারা বলেন, আমাদের জীবিকা শুঁটকি বিক্রির ওপর নির্ভরশীল। গত এক মাস রোজায় তেমন বেচাকেনা হয়নি, ঈদের বাজার ধরতে না পারলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব। বেল্লাল মোল্লা দাবি করেন, ১৯৯৬ সালে তিনি পটুয়াখালী পৌরসভার কমিশনার মিলন মিয়ার স্ত্রী উম্মে সালমার কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেন এবং সেখানে দোকান নির্মাণ করেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন কোনো বিরোধ ছিল না, কিন্তু সম্প্রতি ক্ষমতার অপব্যবহার করে দোকান দখল করা হয়েছে। অন্যদিকে, জমির মালিকানা দাবি করা রাশেদুল ও আফতাব জানান, ১৯৭০ সালে লাল মিয়া ৫ একর ৯৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন, যা তার ওয়ারিশরা তাদের আমমোক্তারনামা দেন। এ জমির মালিকানা নিয়ে বর্তমানে দেওয়ানি মামলা চলছে। কুয়াকাটা পৌর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন ঘরামী বলেন, সভাপতির দুই ছেলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ কাজ করেছে। এটি দলের জন্য বড় ক্ষতি। এদিকে, কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসুল্লী দাবি করেন, জমির বৈধ মালিক আমি। যারা আমার সঙ্গে চুক্তি করেছে, তাদের দোকান খুলে দেওয়া হয়েছে। অন্যরা অবৈধভাবে জায়গা দখল করে আছে। তার ছেলে রিয়াজ মুসুল্লী বলেন, এ জমি আমার বাবার। আমরা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, কিন্তু সমাধান না পেয়ে তালা দিতে বাধ্য হয়েছি। মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে তারা দ্রুত তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেন এবং ঈদের আগে আর্থিক ক্ষতি এড়াতে পারেন।

পদ্মা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৩ কোটি টাকার বেশি টোল আদায়

শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ঈদের ছুটি। রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন পেশার মানুষ। দেশের দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পদ্মা সেতুতে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার দিন সকাল থেকেই ভিড় বেড়েছে টোল প্লাজা এলাকায়। একদিনে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫০ টাকা। আজ শুক্রবার ভোর থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। দুপুর থেকে এ পর্যন্ত চাপ কমে এসেছে। বিশেষত মোটরসাইকেলের ও যাত্রীবাহী বাসের চাপ বেশি দেখা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত সড়কপথে যানজট কিংবা ভোগান্তি না থাকায় স্বস্তির হাসি ফুটেছে মানুষের মুখে। পদ্মা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ জানান, ঈদকে সামনে রেখে পদ্মা সেতুতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় টোল আদায় বেড়েছে। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় টোল আদায়ও বেড়েছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫০ টাকা। এ সময় মাওয়া প্রান্ত হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েছে ১৭ হাজার ৩৩৫টি যানবাহন। জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পাড়ি দিয়েছে ১০ হাজার ৩৪৮টি যানবাহন। এছাড়া উভয় প্রান্তে চলাচল করেছে ২৭ হাজার ৬৮৩টি যানবাহন। তিনি আরও জানান, ঈদ ঘিরে পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া প্রান্তে যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। এ অবস্থায় রাজধানী থেকে দক্ষিণবঙ্গমুখী যানবাহনগুলো নির্বিঘ্নে পদ্মা সেতু পার হচ্ছে। এদিকে ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজা এলাকায় সাতটি বুথে টোল আদায় করা হচ্ছে। তবে মোটরসাইকেলের জন্য বরাবরের মতোই এবারও টোল আদায়ের পৃথক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শ্রীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, ঈদ যাত্রায় পুরো এক্সপ্রেসওয়ের বড় চ্যালেঞ্জ টোল প্লাজার সামনে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ। শুক্রবার ভোর থেকে গাড়ির চাপ শুরুর পর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও বৃদ্ধি পায়। তিনি আরও জানান, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় হাইওয়ে পুলিশের আটটি ইউনিটসহ ৪০০ পুলিশ সদস্য কাজ করছে। এখন পর্যন্ত ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে কোনো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

ফসলি জমিতে রাজহাঁস যাওয়ায় ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ, আহত ২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ফসলি জমিতে রাজহাঁস যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ঘুজিয়াখাই গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিক মিয়া সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় বিশ দিন আগে রোশেনা বেগমের কয়েকটি রাজহাঁস ঘুজিয়াখাই গ্রামের জয়দর মিয়ার ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জয়দর মিয়া রোশেনা বেগমকে বাড়িতে গিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর দুই দিন পর প্রতিশোধ নিতে রোশেনার লোকজন জয়দর মিয়াকে রাস্তায় একা পেয়ে মারধর করেন বলে আবারও অভিযোগ ওঠে। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং এক পর্যায়ে সংঘর্ষ লেগে যায়। পরবর্তী সময়ে স্থানীয়দের সহায়তায় দুই পক্ষ আপসে রাজি হয়। রোশেনার পক্ষের দাবি, আপসের পরও জয়দর মিয়ার লোকজন রোশেনার পক্ষের সাইফ মিয়াকে মারধর করেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় ও আদালতে মামলা করে। সম্প্রতি ঈদ উপলক্ষ্যে দুই পক্ষের লোকজন বাড়িতে আসতে শুরু করে। আগের বিরোধের জের ধরে তারা নির্ধারিত সময়ের আগেই এলাকায় ফিরে আসেন। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর দুই পক্ষের লোকজন ঘোষণা দিয়ে কবরস্থানের পাশে খোলা মাঠে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুপুর ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টা সংঘর্ষ চলে। এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ২৫ জন আহত হন। তবে আহতদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাতলপাড় ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিক মিয়া বলেন, জমিতে রাজহাঁস যাওয়াকে কেন্দ্র করে কিছুদিন আগেও দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। এ নিয়ে থানায় ও আদালতে মামলা রয়েছে। আজ সেই পুরোনো ঘটনার জের ধরেই আবার সংঘর্ষ হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ উঠল ৩৯.৮ ডিগ্রিতে

চুয়াডাঙ্গায় একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রার পারদ উঠেছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। শুক্রবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা প্রায় ২ ডিগ্রি কম থাকায় জনমনে জনমনে স্বস্তি ছিল। আবহাওয়ার পূর্বাভাসেও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছিল। আজ শুক্রবার বিকেল তিনটায় চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই সময়ে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। বৃহস্পতিবার একই সময়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে আজ তাপমাত্রা বেড়েছে ২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, সকাল থেকে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া ও বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া আকাশে মেঘ না থাকায় সূর্যের তাপ সরাসরি ভূপৃষ্ঠে এসে পড়ে, তাপমাত্রা বেড়ে যায়। আগামী কয়েকদিন বৃষ্টির কোনও সম্ভবনা না থাকায় তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। চুয়াডাঙ্গায় হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় রোজাদার ব্যক্তিদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া তাপপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই বাইরে বের হননি। ঈদ উপলক্ষ্যে শপিং কমপ্লেক্সগুলোও দিনের বেলায় ছিল ফাঁকা। সড়কে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, ভ্যানের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে। আলমডাঙ্গা পৌরশহরের ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যান চালক আব্দুর রহিম সমকালকে বলেন, সংসারের চাপের কারণে ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যান নিয়ে বের হতে হয়েছে তাকে। রোজা রেখে গাড়ি চালাতে কষ্ট হচ্ছে। সামনে ঈদ। বাড়িতে ছোট ছোট ছেলে মেয়ে রয়েছে। গরমের কারণে যাত্রীও কম। তাদের পোশাক কিনতে হিমশিম খেতে হবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলে তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে।

ময়মনসিংহে বহুতল ভবন থেকে ‘লাফিয়ে পড়া’ তরুণীর পরিচয় মিলেছে

ময়মনসিংহে নগরীর ১৩তলা বিশিষ্ট বনানী টাওয়ারের ছাদ থেকে পড়ে মারা যাওয়া তরুণীর পরিচয় মিলেছে। তার নাম ত্রিপলা ভদ্র একা (২০)। তিনি তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের বারুইপাড়া গ্রামের নেপাল চন্দ্র ভদ্রের মেয়ে। একা ময়মনসিংহ মুমিনুন্নিছা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান শফিক এসব তথ‍্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, একা ভদ্র নগরীর কালীবাড়ী কবরস্থান এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। লাফিয়ে পড়ে মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে বিস্তারিত পরে জানা যাবে। একার ফুপু রিতা ভদ্র জানান, ২ ভাইবোনের মধ্যে একা ছোট ছিল। সে খুব মেধাবী ছাত্রী ছিল। তবে কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা ধারণা করতে পারছি না। এদিন দুপুর ১টা ১৪মিনিটে বর্ণালী টাওয়ারের ছাদ থেকে পড়ে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

মির্জাপুরে গরু চুরির অভিযোগে গণপিটুনি, যুবকের মৃত্যু

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গরু চুরির অভিযোগে এলাকাবাসীর গণপিটুনির শিকার হয়ে মনির মোল্লা (৪০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের বাইমাইল পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত মনির মোল্লা ওরফে আবুল মোল্লা আকু (৪০) পাবনার সুজানগর থানার রায়পুর মাছপাড়া গ্রামের মৃত খবির উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১২-১৪টি মামলা রয়েছে। চুরির চেষ্টা হওয়া বাড়ির বাসিন্দা দেওয়ান মো. মিলন বলেন, রাত ৩টার দিকে ৩-৪ জন চোর আমাদের গোয়াল ঘরের টিন কেটে গরু চুরি করছিল। বিষয়টি আমার দাদা বুঝতে পেরে প্রথমে আমার মাকে ডেকে তুলেন। এরপর তারা চোর চোর বলে চিৎকার আমিও ঘর থেকে বের হই। এসময় চোরদের সবাই দৌড়ে পালিয়ে যেতে পারলেও মনির মোল্লা এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে গণপিটুনির শিকার হয়। মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

বরিশালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ২৩ জনের নামে মামলা

বরিশালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ বাদী হয়ে মামালাটি করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ জানান, সাংবাদিকরা কোনো দলের নয়, তারা তাদের কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। সে কাজে বাধা দেওয়া, সাংবদিকদের মারধর করা এবং তাদের মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া, ক্যামেরা-মোবাইল ভাঙচুর করার মতো সন্ত্রাসী কার্যক্রম কেউ করে পার পেয়ে যাবে সেটাও ঠিক নয়। তাই আমরা আইনগতভাবে যেমন বিষয়টি দেখেছি, তেমনি সন্ত্রাসীর বিচারও বিএনপির সিনিয়র নেতাদের কাছে দাবি করেছি। তিনি বলেন, ‘মামলায় সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী ছাত্রদল নেতা সোহেল রাঢ়িসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি ও ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।’ শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমনা জানান, সাংবাদিক খালিদ সাইফুল্লাহ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ)রাতে একটি লিখিত এজাহার দিয়ে গেছেন, সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। তবে মামলার কোনো আসামিকে এ পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলেও জানান তিনি। এদিকে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের দায় দল নেবে না বলে জানিয়েছেন বরিশালের বিএনপি নেতারা। পাশাপাশি তারা বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আহত দুই সাংবাদিকের খোঁজ-খবরও নিচ্ছেন। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি স্থানীয় দৈনিকের ফটো সাংবাদিক নুরুল আমিন রাসেল ও নুরুজ্জামানকে দেখতে যান বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহিন, সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু ও নুরুল আমিন। এ সময় তারা আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন এবং বলেন, সাংবাদিকরা কোনো দলের হলে তাদের পাশে এসে আমরা দাঁড়াতাম না। আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার রয়েছি। কারও ব্যক্তিগত ঝামেলার দায় দল নেবে না। আর দলের নাম ভাঙিয়ে যদি কেউ কোনো অন্যায় করে তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বরিশালের ঘটনা এরই মধ্যে কেন্দ্র অবগত হয়েছে, তারাই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। তবে আপনারা (সাংবাদিকরা) গোটা দলকে দোষী করবেন না এটা আমাদের প্রত্যাশা। কারণ বিএনপি কখনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবে না। এদিকে ঘটনার পরপরই বরিশাল মহানগর বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন আহতদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। সে সঙ্গে সাংবাদিকদের ওপর হামলার এ ঘটনায় নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বিবৃতিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে এন আমিন রাসেলসহ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা ও মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই, হামলাকারীরা ছাত্রদলের কেউ হয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বিবৃতিতে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল আদালত প্রাঙ্গণে পেশাগত দায়িত্ব পালনে গেলে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ীর নেতৃত্বে ১২-১৫ জন স্থানীয় দৈনিকের ফটো সাংবাদিক এন আমিন রাসেল ও মনিরুজ্জামানের ওপর হামলা চালানো হয়। তাদের মারধর করাসহ, ক্যামেরা, দুটি মোবাইল ভাঙচুর করা এবং নগদ টাকা পয়সা লুটে নেয় হামলাকারীরা। পাশাপাশি আদালতের প্রধান ফটকেই সাংবাদিকদের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। আর এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক উদ্বেগ জানিয়েছে সাংবাদিক মহল। বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন বলেন, ‘সাংবাদিকরা কর্মক্ষেত্রে গিয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মূখীন হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আদালত প্রাঙ্গণে ও তার সামনে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও তাদের মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা সত্যিই উদ্বেগজনক। দিনের বেলা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে বরিশালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবণতির বিষয়টি যেমন সামনে আসছে, তেমনি আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সে সঙ্গে পুলিশের সামনে এ ঘটনা ঘটিয়ে সন্ত্রাসের জানান দিল হামলাকারীরা। পুলিশ এর দায় এড়াতে পারে না। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি যেসব পুলিশ সদস্যের সামনে এমন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

ভোগান্তির নৌপথ দিয়ে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে ঘরমুখো মানুষ

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে যাত্রীদের ভিড় বাড়লেও বাড়তি চাপ নেই। ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে নৌপথে ছোট-বড় মিলে ১৭টি ফেরি চলাচল করছে। অন্যদিকে কাটা যাত্রীদের নদী পারাপার করতে নৌপথে চলছে ২০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ। ফলে এক সময়ের ভোগান্তির নৌপথ দিয়ে এবার স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছে ঈদে ঘরমুখো হাজারো মানুষ। শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. আব্দুস সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে লঞ্চ ঘাটেও যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। এই ঘাটের ব্যবস্থাপক পান্না লাল নন্দী বলেন, ‘পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথের লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের ভিড় বাড়লেও চাপ নেই। এ নৌপথে ২০টি লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে লঞ্চগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে আজকে সকালের পর যাত্রী ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। তবে ঘাট এলাকায় যাত্রী বা যানবাহনগুলোকে আগের মতো দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। ঘাট পার হতে আসা যানবাহনগুলো সহসাই ফেরিতে উঠে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত গাড়ির ঘাটে আসা মাত্রই ফেরিতে উঠে নদী পার হচ্ছে এবং যাত্রীবাহী পরিবহন বাসের সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০টির মত হবে।’ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১১টি রো রো, ২টি ইউটিলিটি, ১টি কেটাইপ, ৩টি ছোট ফেরিসহ মোট ১৭টি নৌপথে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে চলাচল করছে। তবে ঈদে ঘরমুখো মানুষ স্বস্তিতেই নৌপথ পার হয়ে যে যার গন্তব্যে ফিরছে বলেও জানান তিনি।

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জেলার জনপদ। সব থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন রোজাদাররা। কৃষক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশা চালকরা গরমে অস্থির হয়ে পড়ছেন। শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এদিকে তাপপ্রবাহের কারণে অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। ঈদে মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা জমে উঠলেও ভ্যাপসা গরমের কারণে বেলা বাড়ার সাথে সাথে লোকজন সীমিত আকার ধারণ করছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান পরামর্শ দিয়ে ঢাকা পোস্টকে বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রোজাদারদের সন্ধ্যার পর থেকে বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে। শিশু, কিশোর ও যারা রোজায় থাকছে না তাদেরকে শরবত পান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘আর কয়েক দিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। কেনাবেচা জমে উঠলেও অতিরিক্ত গরমের কারণে দুপুর ১২টার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে লোকজনের আনাগোনা খুবই সীমিত।’ চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেনির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যৈষ্ঠ আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, ‘চলতি মৌসুমে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আজ রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান তাপ প্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করতে পারে।’

জামিন নিয়ে সিঙ্গাপুরে পালিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা সজীব চন্দ্র দাস

নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায় অপারেশন ডেভিল হান্টে ধরা পড়লেও উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে গেছেন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সজীব চন্দ্র দাস। রাষ্ট্রবিরোধী নাশকতার মামলায় জামিনে থাকলেও বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আগে কীভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা দেশত্যাগ করল, সেই প্রশ্ন উঠেছে। জানা যায়, রাষ্ট্রবিরোধী নাশকতার অভিযোগে অপারেশন ডেভিল হান্টে আটক হয়ে হাতিয়ার ছাত্রলীগ নেতা সজীব চন্দ্র দাস প্রায় দুই মাস কারাগারে ছিলেন। তবে বেশ কিছু দিন আগে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান তিনি। এরপর সুকৌশলে অত্যন্ত গোপনে দেশত্যাগ করেন স্বৈরাচারের সহযোগী এই ছাত্রলীগ নেতা। পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা জানাজানি হলে হাতিয়ায় তীব্র মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সজীব চন্দ্র দাসের চক্রের প্রতারণা ও দাপটে দ্বীপ হাতিয়ার সাধারণ মানুষ ছিল অতিষ্ঠ। কিন্তু তাদের দাপটে মানুষ মুখ খুলতে পারত না। সে সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশে উভয় জায়গায় সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত। এছাড়াও, সিঙ্গাপুরে অবৈধ টাকা পাচারের সাথে জড়িত এবং বাংলাদেশ নিষিদ্ধ লীগ সংগঠনের একজন সক্রিয় সদস্য। তিনি জামিন পেয়ে সিঙ্গাপুর পালিয়ে গিয়ে সরকারবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন। সেজন্য তাকে দেশে ফেরত এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। সে যেন অন্য কোন দেশে পালাতে না পারে, সেজন্য তার পাসপোর্ট ব্লক করে দিতে হবে। শাহীনুর রহমান নামে স্থানীয় যুবক বলেন, ‘সজীব চন্দ্র দাশ হাতিয়ার ত্রাস ছিল। নদীতে ডাকাত চক্র পরিচালনা থেকে শুরু করে এমন কোন অপকর্ম নেই, সে যা করেনি। এরপর পরিস্থিতি টের পেয়ে সে সিঙ্গাপুর পালিয়ে গেছে। এমনকি সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশ উভয় জায়গায় অসংখ্য মেয়েদের জীবন নিয়ে খেলা করে এবং সেইসব মেয়েদের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। এমন অনেক ভুক্তভোগী নারী হাতিয়ায় এসে অভিযোগ করেছে।’ এসব অভিযোগের বিষয়ে সজীব চন্দ্র দাসের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি সাড়া দেননি।

চাটমোহরের জমি জবর দখলের অভিযোগ

পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নে জমি জবর দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। বিগত পতিত আওয়ামী সরকারের সময় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে বছরের পর বছর ১১ একর ৬০ শতাংশ জমি নিজেদের দখলে রেখেছে প্রতিপক্ষ। ভুক্তভোগীরা বিবাদমান জমি নিয়ে আদালতের একতরফা ডিগ্রি পেলেও মানছেন না প্রতিপক্ষের লোকজন। অভিযোগের তীর হান্ডিয়াল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল করিম, তার ভাই আব্দুর রহমান, আব্দুল আজিজ, আব্দুল মজিদ, শামসুল আলম, নজির প্রামাণিক গংয়ের দিকে। তবে তাদের দাবি, তারা কেনাসূত্রে জমির মালিক। এসএ এবং আরএস রেকর্ডও তাদের নামে। তাই যারা জমি দাবি করছেন তাদের অভিযোগের ভিত্তি নাই। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। সেখানেই তারা প্রমাণ করুক তাদের দাবি সত্য নাকি মিথ্যা। অভিযোগে জানা গেছে, হান্ডিয়াল ইউনিয়নের মারিয়া স্থল মৌজায় ১১ একর ৬০ শতাংশ জমির ডিএস রেকর্ড অনুযায়ী মালিক নুরুল হক সরকার গং। ১৯৫১ সালে ওই জমি নিয়ে খাজনার মামলা করে সরকার পক্ষ। মামলা নম্বর ৩০২/৫১। তার প্রেক্ষিতে জিংক জারী হয় ১৯৫৩ সালে। যার নম্বর ৮১৫/৫৩। এর মাধ্যমে বিবাদমান জমি সম্পূর্ন সরকারের নামে হয়ে যায়। সরকার তখন ওই জমি ১৯৫৪ সালের ২০ মার্চ ডিএস মালিকপক্ষকে না জানিয়ে কোনো নোটিশ না করে নিলাম বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একই এলাকার বাসিন্দা শশধর হালদারের কাছে বিক্রি করে। এরপর ১৯৫৪ সালের ২০ মে তার নামে জমি অবধারিত বহাল হয়। বিবাদীপক্ষ বিষয়টি অবগত না থাকার কারণে ডিএস মালিকপক্ষে হিলু সরকার গং ১৯৫৯ সালে জানার পর নিলাম বাতিলের জন্য জেলা পাবনার তৃতীয় মুনসেফি আদালতে ইউএস/ইউ/এস/১৭৪(৩) বিটি এ্যাক্ট আইনে একটি রদ মামলা দায়ের করেন। বিবাদী করা হয় পূর্ব পাকিস্তান সরকার ও জমি ক্রেতা শশধর হালদারকে। পরবর্তী ছোলেনামা শর্ত মোতাবেক শশধরের ৮৫ শতাংশ জমি বাদে বাদ বাকি ১০ একর ৭৫ শতাংশ বাদিপক্ষ হিলু সরকার গংয়ের পক্ষে আংশিক রদরহিত হয় ১৯৬১ সালের ১৪ নভেম্বর। তারপর ওই জমি ভ্রমাত্মকভাবে এসএ রেকর্ড শশধর হালদারের নামে অন্তর্ভূক্ত হয়। যা ডিএস মালিকপক্ষের ওয়ারিশগণ অবগত ছিল না। ওই রেকর্ডীয় বিষয়ে ১৯৭৬ সালে খাজনা খারিজ করতে গিয়ে বিষয়টি অবগত হয় ডিএস মালিকপক্ষ। ১৯৭৬ সালে উক্ত রেকর্ড সংশোধনের জন্য পাবনার তৃতীয় মুনসেফী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৮০২/৭৬। পরবর্তী যা আদালত বদলিজনিত কারণে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে এই মামলাটি নতুন করে নথিভূক্ত হয়। যার নম্বর ৩৬১/১৯৮২। যাহা চলমান থাকা অবস্থায় বিশেষ কারণে পূর্ণ দাখিল সাপেক্ষে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে প্রত্যাহার করে সেই শর্ত মোতাবেক অত:পর ১৩৭/১৯৮৪ নম্বর মামলা দায়ের করা হয় একই আদালতে। বাদি ডিএস মালিক পক্ষে ছকির উদ্দিন গং। রেকর্ড সংশোধনের মামলা চলমান অবস্থায় শশধর হালদার চতুরতার আশ্রয় নিয়ে কিছু জমি অন্যত্র বিক্রি করেন। দলিলমুলে ওই জমি ক্রেতারা জোরপূর্বক দলীয় ক্ষমতাবলে ভয়ভীতি হত্যার হুমকি দিয়ে আংশিক জমি (৮ একর ৬ শতাংশ) জবর দখল করে আসছেন। পরে বাদিপক্ষ নিরুপায় হয়ে ১৯৮২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ১৪৪ ধারা মামলা করেন। তারা সেটিও মানেননি। কিন্তু ১৯৮২ সালের ৫২ ধারা অনুযায়ী মামলা চলমান অবস্থায় জমি ক্রয় বিক্রয় করা যাবে না। সে হিসেবে জমিক্রেতাদের দলিলই অবৈধ। উপজেলা ওয়ারী মামলা ভাগ হয়ে যাওয়ায় মামলাটি চাটমোহর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে এসে ১৪৪/৯৪ নম্বর ধারণ করে। ওই মামলাটির এক পর্যায়ে ১৯৯৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বাদি পক্ষ ডিগ্রি প্রাপ্ত হয়। অত:পর ডিগ্রির বিরুদ্ধে মিস ছানি মামলা করেন বিবাদীপক্ষ শশধর হালদারের ছেলে শচিন্দ্রনাথ হালদার। মামলা নম্বর ৩৭/৯৫। যা শুনানী শেষে ২০০১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি না মঞ্জুর হয়। ছানি মামলা না মঞ্জুর হওয়ায় বিবাদি শচিন্দ্রনাথ হালদার মিস আপিল দায়ের করেন। যার নম্বর ১০/২০০১। ওই মিস আপিল আদালত কর্তৃক উভয়পক্ষ মুঞ্জুর হওয়ার পর মিস ৩৭/৯৫ নম্বর ছানী মোকদ্দমা বিচারের আদেশ দেওয়া হলে ওই মিস ৩৭/৯৫ নম্বর ছানী মোকদ্দমা গত ২০১১ সালেল ৪ অক্টোবর না মঞ্জুর বাতিল হয়। তারপর বাদিপক্ষ কমিশনার নিয়োগের আদেশ চাইলে আদালত অ্যাডভোকেট আব্দুল হককে কমিশনার নিযুক্ত করেন। তিনি কমিশনার কার্যক্রম সম্পন্ন করে বিজ্ঞ আদালতে গত ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি) কমিশনার রিপোর্ট দাখিল করেছেন। এ বিষয়ে বাদিপক্ষের ভুক্তভোগী মৃত নইম উদ্দিন সরকারের ছেলে আলমগীর হোসেন বলেন, ‘তারা বছরের পর বছর দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে জমিগুলো জবর দখল করে আছে। আমরা আদালতের রায় পেলেও তারা সেটা মানে না। আমাদের জমিও এখনও বুঝিয়ে দেয়নি। আমরা জমির কাছে গেলেই তারা মারতে আসে, হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। ইউনিয়ন পরিষদের বিচার বসলেও তারা কিছুই মানতো না। আমরা চাই প্রশাসনের কাছে তারা যেন আমাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়।’ আলমগীরের ভাই শিমুল হোসেন বলেন, ‘নালিশী সম্পত্তিতে আমাদের অনেকগুলো ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও তারা জমি ছাড়ছে না। জবর দখল করে আছে। ডিগ্রি পাওয়ার পর তাদের কাছে একাধিকবার গিয়ে বলেছি যে, তোমার আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আমাদের জমিগুলো ফিরিয়ে দাও। কিন্তু তারা আইনের কথা মানে না। তারা তাদের ক্ষমতাবলে বাহুবলে আমাদের বেদখল করে রাখছে। মামলা চলমান অবস্থায় তারা জমি কিনেছে। কিন্তু আইন অনুযায়ী তো মামলা চলা অবস্থায় জমি কেনাবেচা যায় না। তাহলে তাদের দলিল তো অবৈধ। অথচ তারা আইন নিয়মকানুন কিছুই মানে না। প্রশাসনের কাছে দাবি, আপনারা আমাদের কাগজপত্র দেখে সমাধানের ব্যবস্থা করেন।’ অভিযোগের বিষয়ে রবিউল করিম বলেন, ‘তারা তো একের পর এক মামলা করেই আসছে। তারা না জানিয়ে একতরফা ডিগ্রি পেলে তো হবে না। ওটার বিরুদ্ধে আপিল আছে। সেই পথেই গেছি আমরা। ওরা মামলা করছে জমির আগের মালিক শশধর হালদারের নামে। কিন্তু জমি তো আর শশধর হালদারের কাছে নাই। ৫০ বছর আগে থেকে তৃতীয়পক্ষ মানে আমাদের হাতে আছে। এখন শশধর হালদারের মামলা করতে আমরা তো আর জানি না। আমাদের জানাতে হবে তো নাকি। আপিল করেছি সেটা চলমান। তাদের দাবি ভিত্তিহীন।’ আব্দুল মজিদের ছেলে আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘তারা যে ডিগ্রির কথা বলছেন বা যে কাগজপত্র দেখাচ্ছেন তার বিপরীতে আমি বলতে চাই, তারা একতরফা ডিগ্রি নিয়েছেন। বিবাদীকে যে নোটিশ করা হয়েছিল সেই নোটিশগুলো তারা গোপন করেছিলেন। আমরা বর্তমানে যারা ভোগদখলে আছি তারা এটা জানার পরে আদালতে আপিল করেছি। তারা আবার আমাদের শশধর হালদারের পক্ষভুক্ত না করার জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু আদালত সেটা না মঞ্জুর করে। তারপর থেকে আমরা পক্ষভুক্ত হয়ে মামলা মোকাবেলা করছি। সকল পেপারস ডকুমেন্টস আমাদের কাছে আছে। তারা যদি আমাদের সাথে আদালতে মামলা মোকাবেলা করে ডিগ্রি পায় তাহলে আমরা জমি ছেড়ে দেবো।’ দেরাজ উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘৫৪ সালে নিলাম সূত্রে জমির মালিক ছিলেন শশধর হালদার, সরকারও তাকে জমির দখল বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। ৬২ সালে এসএ রেকর্ডও তার নামে হয়। আবার ৭৮ সালে আর এস রেকর্ডও হয় তার নামে। তারপর শশধর হালদার বিক্রির প্রস্তাব দিলে তার কাছ থেকে জমি কেনার পর আমরা ক্রয়সুত্রে মালিক হই। মোট ৩২ বিঘা জমির মধ্যে যারা মামলার বাদি সেই পক্ষ আবার ১০ বিঘা জমি কিনে নেয়। তাহলে নিলামটা কিন্তু তারাও মেনে নিয়েছিল। একতরফা ডিগ্রি তো কোনো ডিগ্রি না। আমাদের না জানিয়ে করছে। এখন আমরা মামলা মোকাবেলায় গেছি। সেখানে প্রমাণ করুক সমস্যা নাই।’

লক্ষ্মীপুরে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে আইএফআইসি ব্যাংকের ঈদ উপহার বিতরণ

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ‘ঈদের জামায় খুশির সাজ, সবার মাঝে ছড়িয়ে যাক’-এই প্রতিপাদ্যে সুবিধাবঞ্চিত ও এতিম শিশুদের মাঝে নতুন পোশাক বিতরণ করেছে আইএফআইসি ব্যাংক লক্ষ্মীপুর শাখা।বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সদর উপজেলার উত্তর টুমচরে অবস্থিত জামিয়া ইসলামিয়া হিলফুল ফুজুল মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিশুদের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে নতুন পোষাক বিতরণ করা হয়। আইএফআইসি ব্যাংকের লক্ষ্মীপুর শাখার ম্যানেজার মো. শাহাদাত হোসেন শিশুদের হাতে ঈদ উপহার হিসেবে নতুন পোশাক তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অফিসার মো. ফয়সাল, মাদ্রাসা ট্রাস্টি মো. আরাফাত হোসাইন শান্ত, সাংবাদিক সরোয়ার হোসাইন বুলবুল ও মাদ্রাসার পরিচালক নোমান সিদ্দিক।এ নিয়ে মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ঈদের নির্মল আনন্দ শিশুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে দেশ ব্যাপী আমাদের ব্যাংকের মাধ্যমে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমের আওতায় ইতিমধ্যে সুবিধাবঞ্চিত ও এতিম শিশুদের মাঝে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ঈদের নতুন পোশাক।’ উল্লেখ্য, সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বপ্নপূরণে আইএফআইসি ব্যাংক সারা বছর বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

সম্পদ লুন্ঠনকারীদের বাংলার মাটি থেকে নিশ্চিহ্ন করবে বিএনপি: হেলেন জেরিন

দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজি, লুটেরা ও মানুষের সম্পদ লুন্ঠনকারীদের বাংলার মাটি থেকে নিশ্চিহ্ন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার মজুমদার কান্দি মাদ্রাসা মাঠে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল রাজৈর উপজেলার শাখার আয়োজনে ইফতার এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সময় হেলেন জেরিন আরও বলেন, ‘এই দেশে যেনো আর কোন চাঁদাবাজের জন্ম না হয়। কোন দুর্নীতিবাজদের জন্ম না হয়। কোন স্বৈরাচার শাসকের জন্ম না হয়। সেই লক্ষ্যে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল কাজ করছে। এই বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য এবং বাংলাদেশের মানুষের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য কাজ করছে জাতীয়তাবাদি দল বিএনপি।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি মহিলা দল মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি লাইজু আক্তার, মহিলা দল সভাপতি প্রত্যাশি মিনু আক্তার, বিএনপির রাজৈর উপজেলা শাখার সভাপতি ওহাব মাতুব্বর, সহ-সভাপতি ছালাম মৃধা, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হাওলাদার, রাজৈর পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি চুন্নু মিয়া, শ্রমিক দলের সভাপতি হাসান কাজী, রাজৈর উপজেলা যুবদল নেতা খায়ের হাওলাদার, তরুণ দলের সভাপতি মো. আলী ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় করেন রাজৈর উপজেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশি খালেদা আক্তার।

গাজীপুরে পিকআপ ভ্যান-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত দুই

গাজীপুর সদর উপজেলায় ট্রাকের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার হোতাপাড়া এলাকার (ফু-ওয়াং ফুড কারখানার সামনে) ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে সালনা হাইওয়ে পুলিশের এসআই হাবিবুর রহমান জানান। নিহতরা হলেন পিকআপ ভ্যানের কনডাক্টর রাজু মিয়া (৩৫) ও পোল্ট্রি ব্যবসায়ী জিয়ারুল ইসলাম (৪০)। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মুরগী ব্যবসায়ীর একটি পিকআপ ভ্যান ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। পথে একটি ট্রাকের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানটির সংঘর্ষ হয়।’ ‘এতে পিকআপ ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং দুজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। দুর্ঘটনার পর চালক পালিয়ে গেছে। খবর পেয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।’ নিহতদের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে বলে জানান হাবিবুর রহমান।

বীরগঞ্জে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে মা-মেয়ের মৃত্যু

দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলায় বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে এমনটা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) রাতে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের দুলর্ভপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। তারা দুইজন হলেন রতন কুমার রায়ের স্ত্রী ববিতা রানী (৩০) ও মেয়ে তনি রানী রায় (৭)।পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা বৃহস্পতিার সন্ধ্যার আগে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খায়। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু তনিকে মৃত ঘোষণা করেন এবং ববিতা রানিকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নেয়ার পথে তিনিও মারা যান।স্থানীয়দের অভিযোগ, এনজিওর কিস্তির টাকা নিয়ে দুই-তিন দিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক কলহ চলছিল। স্বামী রতন কোন কাজকর্ম না করে অনলাইন জুয়া খেলতেন। সেই টাকা জোগাড় করতে সংসারে প্রায় কলহ লেগে থাকত।বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফুর জানান, সঠিক ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত করা হবে। দুইজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মৌলভীবাজারে ৮০ শতাংশ হোটেল-মোটেল অগ্রিম বুকিং

এবারের ঈদের রেকর্ড ছুটিতে যাচ্ছে দেশ। টানা ৯ দিনের সরকারি ছুটিতে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে মৌলভীবাজারের ব্যাপকসংখ্যক পর্যটক আশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ইতোমধ্যে ৮০ শতাংশ হোটেল-মোটেল বুকিং হয়ে গেছে। জানা গেছে, পুরো জেলায় শতাধিক পর্যটন স্পট থাকলেও দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসুদের প্রথম পছন্দ শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা। এই দুই উপজেলাসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পাঁচ তারকা মানের রিসোর্টসহ দেড় শতাধিক রিসোর্ট, ইকো কটেজ, হোটেল, মোটেল। যার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ আগাম বুকিং সম্পন্ন হয়েছে। শ্রীমঙ্গলের রাধানগর এলাকার শান্তিবাড়ি ইকো রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী তানভিরুল আরেফিন লিংকন বলেন, ‘প্রতি বছর নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত মূলত পর্যটন মৌসুম। এবছর মার্চে রোজা থাকায় রিসোর্ট, কটেজগুলো একেবারে ফাঁকা ছিল। ফলে লোকসানে পড়ে পর্যটন ব্যবসা। তবে ঈদে সে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমাদের রিসোর্টের পুরোটাই অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আমরা পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত রয়েছি।’ নির্জন নেচার হাইড আউট রিসোর্টের ব্যবস্থাপক দুর্জয় দেববর্মা বলেন, ‘অনলাইনে রিসোর্টের প্রায় ৭০ শতাংশ বুকিং কনফার্ম হয়েছে। বাকি ৩০ শতাংশ হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করি। অন্যবারের চেয়ে এবার ভালো সাড়া পাচ্ছি।’ রাধানগর পর্যটন কল্যাণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী সামছুল হক বলেন, ‘ঈদের টানা ছুটিতে এবার ভালো ব্যবসায় হবে। তবে মৌলভীবাজারে পর্যটকদের আগমনের জন্য বিশেষ ট্রেনের দাবি করছি। বিশেষ ট্রেন হলে পর্যটক আরও বড়বে।’ শ্রীমঙ্গল আবাসন সেবা সংস্থার যুগ্ম আহ্বায়ক ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী সেলিম আহমদ বলেন, ‘কোনো উৎসব বা সরকারি লম্বা ছুটিতে মানুষ ঘুরতে বের হয়। এটার সঙ্গে পর্যটন শিল্পের বিকাশের সম্পর্ক রয়েছে বলে আমার মনে হয় না। কারণ এটা অনেকটা মৌসুমি ব্যবসার মতো। তবে কিছুটা প্রভাব তো পড়বেই। এবারের ঈদের ছুটি বেশ লম্বা। আর এই লম্বা ছুটির কারণে মানুষ ঘুরে বেড়ানোর সময় পাবে। অন্যদিকে ভারতের ভিসা বন্ধ, সাজেক ভ্রমণে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ফলে দেশের সমৃদ্ধ পর্যটন স্থান শ্রীমঙ্গল তথা মৌলভীবাজারে পর্যটকদের সমাগম হবে।’ ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ঈদে পর্যটকদের ভ্রমণ নির্বিঘ্ন করতে নিরাপত্তায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে ডিউটি তদারকি করা হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশ সতর্ক অবস্থানে থাকবে।’

গাজীপুরের দুই মহাসড়কে যাত্রীদের ঢল

গাজীপুরের দুইটি মহাসড়কে ভোর থেকেই যাত্রীদের ঢল নেমেছে। মহাসড়ক দুটিতে বিভিন্ন মোড়ে যাত্রী উঠানোয় সেসব এলাকায় কিছুটা ধীর গতিতে চলছে যানবাহন। কোথাও কোথাও যানজট সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। শুক্রবার (২৮ মার্চ) ভোর থেকে ঈদে লম্বা ছুটি পাওয়া কর্মজীবী মানুষ আপনজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরমুখো হচ্ছেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখো যাত্রীদের ঢল নামার পাশাপাশি সড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। গাড়ির সংখ্যা বেড়ে কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় ভোগড়া বাইপাস থেকে চান্দনা চৌরাস্তা, টঙ্গী, গাজীপুর, চেরাগ আলী, সালনা, পোড়াবাড়ি মাস্টারবাড়ি, রাজেন্দ্রপুর, হোতাপাড়া, ভবানীপুর, বাঘেরবাজার, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, আনসার রোড, মাওনা চৌরাস্তা পল্লী বিদ্যুৎ মোড়, এমসি বাজার, নয়নপুর বাজার ও জৈনাবাজার মোড়গুলোতে ধীরগতিতে যান চলাচল করছে। এছাড়া যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, ইউটার্ন নেওয়া, যাত্রী উঠানামার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় ঘরমুখো মানুষের উপস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। এতে এই পয়েন্টেও কিছুটা ধীর গতিতে চলছে গাড়ি। ঈদকে সামনে রেখে সড়ক-মহাসড়কে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তায় ড্রোন পর্যবেক্ষণ, মোটরসাইকেল পেট্রোলিং, কুইক রেসপন্স টিম ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে পুলিশ কাজ করছে। একই সঙ্গে যানজট নিরসনে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা এক যোগে কাজ করছে। স্বস্তিদায়ক ও নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি কয়েকশ ভলেন্টিয়ার কাজ করছে মহাসড়কগুলোতে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গাজীপুরের পোশাক কারখানাগুলো ছুটি হলে যাত্রীদের চাপ আরও বাড়বে।

ডাকাত আতঙ্কে রাতভর মসজিদে মাইকিং

ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলায় ডাকাত আতঙ্কে রাতভর বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে রাস্তায় নামেন সাধারণ মানুষ। এতে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেখা দেয় চরম উৎকণ্ঠা। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দিবাগত রাত ১২ টার পর বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয় ডাকাত প্রতিহত করার জন্য। এতে সাধারণ মানুষ লাঠি হাতে রাস্তায় নামেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসুল হুদা খান। তিনি জানান, কে বা কারা উপজেলার ৮-১০ টি মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয় এলাকায় ডাকাত পড়েছে। এ ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে মুহূর্তেই খবরটি পুরো উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দেখে এবং মসজিদের ঘোষণা শুনে অনেকেই বিচলিত হয়ে যান। ‘বিভিন্ন এলাকায় জনতা লাঠি নিয়ে পাহারা দিচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ডাকাতের কোন অস্তিত্ব এখনও খুঁজে পাইনি। এটা সম্পূর্ণ গুজব। তবে এলাকাবাসী সজাগ রয়েছে। পুলিশের তিনটি ইউনিট বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে আমরা বিষয়টি মনিটরিং করছি।’

সিলেটে ছেলের হাতে বাবা খুন

সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপাশা ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামে ছেলের হাতে খুন হয়েছেন বাবা। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ইফতারের সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছেলে সুলতান আহমদ তার বাবা দুলু মিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে। ঘটনার পর সুলতানকে আটক করেছে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ। নিহত দুলু মিয়া ওই গ্রামের মৃত কুটি মিয়ার ছেলে। দুলু মিয়ার পরিবার ‘প্রবাসী পরিবার’ বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। খুনের দায়ে অভিযুক্ত ছেলে সুলতান গত ছয় মাস আগে ফ্রান্স থেকে দেশে ফিরেন। দুলু মিয়ার আরও দুই ছেলে প্রবাসে থাকেন বলে জানা গেছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সুলতান দেশে ফেরার পর অনেকটা একা থাকতেন। কারো সাথে বেশি কথা বলতেন না। তার মানসিক সমস্যা রয়েছে। গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম মোল্লা জানিয়েছেন, ঠিক কী কারণে ছেলে তার পিতাকে খুন করেছে প্রাথমিকভাবে তা জানা যায়নি। ঘটনার পর সুলতানকে আটক ও মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশের সামনেই দোকানে লুটপাটের অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে জমিতে মালিকানা দাবি করে এক ব্যবসায়ীর দোকানে লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৭ ফেব্রুয়ারি ওই দোকান থেকে উচ্ছেদ করা হয় তাঁর ভাড়াটিয়াকে। এ জন্য প্রতিপক্ষকেই দায়ী করেছেন ভুক্তভোগী মানিক বণিক। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ লুটপাটের সময় নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল।বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) জেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে থাকতে চাই, আমি বাংলাদেশের নাগরিক। আমার মাতৃভূমি আমার সব। সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আকুল আবেদন, আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই এবং প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা চাই।’ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০০ সালের ১৯ জুন বণিকপাড়ার মানিক বণিকের বাবা নিতাই চন্দ্র বণিক পাশের সোনাই দীঘিরপাড় এলাকার আব্দুল হেকিমের কাছ থেকে অষ্টগ্রাম বড় বাজারে আধা শতাংশ জায়গাসহ দোকানটি কেনেন। নামজারির পর তারাই প্রতিবছর খাজনা দিচ্ছেন। ক্রেতা নিতাই বণিক ও বিক্রেতা আব্দুল হেকিম মারা গেছেন। তাঁরা জীবিত থাকতে কখনও দোকান নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। দোকান কেনার ২৫ বছর পর গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে মানিক বণিককে হুমকি দেওয়া শুরু করেন আব্দুল হেকিমের ছেলে জয় মিয়া, দানা মিয়া ও ওয়াজ মিয়া। তারা পাঁচ লাখ টাকা ধার চায়। এতে অস্বীকৃতি জানালে ৭ ফেব্রুয়ারি কিছু সন্ত্রাসী নিয়ে মানিক বণিকের দোকানের ভাড়াটিয়া গ্রাম-বাংলা টেলিকম সেন্টারের মালিক জসিম উদ্দিনকে সেখান থেকে বের করে দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়। প্রতিবাদ করতে গেলে মানিককে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও থানায় অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি তিনি। মানিকের অভিযোগ, গত বুধবার স্বাধীনতা দিবসের সকালে তাঁর দোকানের তালা ভেঙে প্রতিপক্ষের লোকজন লুটপাট চালিয়েছে। সেখানে পুলিশ থাকলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো বাড়িতে হামলারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এখন তিনি পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছেন। তাঁর ভাষ্য, ‘আমি যদি আজ মানিক বণিক না হয়ে মানিক মিয়া হইতাম, তাহলে তারা কখনোই জোরপূর্বক আমার দোকানঘরের ভাড়াটিয়া জসিমকে বের করে তালাবদ্ধ করতে পারত না।’ এ বিষয়ে জয় মিয়ার দাবি, মানিক বণিকদের কাছে আধা শতাংশ জায়গা বিক্রি করা হলেও তারা বেশি জায়গা দখলে রেখেছেন। বাড়তি জায়গা ছেড়ে দিতে অনেকবার বলেছেন। কিন্তু মানিকরা ছাড়ছেন না। এ কারণেই তালা দেওয়া হয়েছে। জয় মিয়ার দাবিকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে মানিক বণিক বলেন, যে আধা শতাংশ জায়গা তাঁর বাবা কিনেছিলেন, সেখানে আধা শতাংশের চেয়েও কম আছে। দলিলে অন্যভাবে লেখা আছে, দৈর্ঘ্যে সাড়ে ১৬ হাত, প্রস্থে ৮ হাত। কিন্তু এখন আছে দৈর্ঘ্যে ১৫ হাত, আর প্রস্থে ৭ হাত। অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন জানিয়েছেন, প্রয়াত আব্দুল হেকিমের কাছ থেকে মানিক বণিকদের পাশেই হুমায়ুন মিয়া নামে আরেকজন দেড় শতাংশ জায়গা কিনেছিলেন। তাঁর দখলে জায়গা কম। তিনি আদালতে বাটোয়ারা মামলা করেছেন। হেকিমের ছেলেদের তিনি দোকান দখল না করতে বলেছেন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সব পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আহ্বান জানান।

নির্বাচন হলে বিএনপি একাই ৯০ ভাগের বেশি আসন পাবে : হারুনুর রশিদ

বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে নির্বাচন হলে শতকরা ৯০ ভাগের বেশি আসন বিএনপি একাই পাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে শাহ নেয়ামুতুল্লাহ কলেজ মাঠে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবদলের আয়োজনে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। হারুনুর রশিদ বলেন, সংস্কারের নাম করে নতুন কিছু রাজনৈতিক দল তৈরি হয়েছে। তাদের কেউ বলছে আগে শেখ হাসিনার বিচার হতে হবে, তারপর নির্বাচন। আবার কেউ বলছে আগে সংস্কার শেষ হতে হবে, তারপর নির্বাচন। ৮ মাস তো গেল সরকারের বয়স, কী সংস্কার হয়েছে? আমরা মানুষ হিসেবে যদি আমাদের অন্তর আমরা সংস্কার না করি, নিজেরা যদি ঠিক না হই তাহলে কি কেউ ওপর থেকে এসে ঠিক করে দিতে পারবে। বাংলাদেশের সংকট হলো বাংলাদেশে নির্বাচন সঠিক হয়নি। বাংলাদেশের পুলিশ, প্রশাসন নির্বাচনের সময় পক্ষপাতিত্ব করে ও সরকারের দালালি করে। সেটা যদি বন্ধ হয় আর নির্বাচন যদি সঠিক হয়, এটাই তো জনগণের প্রত্যাশা, এটিই জনগণ চায়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে কতিপয় নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি হয়েছে। তাদের নিবন্ধনই হয়নি। নির্বাচনে তারা কোনো প্রতীকই পাবে না, কিন্ত দেখেন বড় বড় কথা বলে বেড়াচ্ছে। বিএনপিকে নিয়ে তারা কটাক্ষ করছে, মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কটাক্ষ করছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, গত জুলাই-আগস্টে ব্যাপক রক্তপাতের মধ্য দিয়ে একটা পরিবর্তন হয়েছে। এই পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে আজকে একটি মহল বিভিন্ন রকমভাবে এটাকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ যদি ৭১ সালে স্বাধীন না হতো, ৪৭ সালে ভারত থেকে বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান তৈরি না হতো, আজকে যদি আমাদের মানচিত্র ও পতাকা না থাকতো তাহলে জুলাই-আগস্টের বিপ্লব দিয়ে আমরা কোনো কিছু অর্জন করতে পারতাম না। সুতরাং আজকে এই পরিস্থিতিতে সারা বাংলাদেশে যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে শতকরা ৯০ ভাগের বেশি আসন একাই বিএনপি পাবে এবং এককভাবে বিএনপি নির্বাচিত হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তাবিউল ইসলাম তারিফের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান অনু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান, সহ-সভাপতি মিম ফজলে আজিম প্রমুখ।

ঈদে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে প্রি-পেইড গ্রাহকদের ডেসকোর নির্দেশনা

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিকালীন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রি-পেইড গ্রাহকদের নির্দেশনা দিয়েছে ডেসকো। এ সময়ের জন্য প্রি-পেইড গ্রাহকদের পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা রিচার্জ করতে অনুরোধ করেছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)। সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া যে কোনো প্রয়োজনে ১৬১২০ বা ১৬৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে ঈদের ছুটিতেও রিচার্জ করা যাবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় ডেসকোর হটলাইন অপারেটর আরজু বলেন, গ্রাহক চাইলে যে কোনো সময় রিচার্জ করতে পারবেন। সেবা অব্যাহত রয়েছে। গ্রাহক ঈদের ছুটিতেও রিচার্জ করতে পারবেন।

চট্টগ্রামে পুলিশি অভিযানে গ্রেফতার ৬০

চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৬০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) দিনগত রাত ১২টা থেকে বুধবার (২৫ মার্চ) দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে নগরীর বিভিন্ন থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। সিএমপি জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় মামলাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী, পরিকল্পনাকারী, অপরাধের সহযোগী ও অবৈধ অস্ত্রধারী রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে এক বা একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন- ডবলমুরিং মডেল থানার আসামি মো. রাজু (১৯), মো. জিয়াউর রহমান (২৩), মো. ইয়াকুব (২৪), মো. কাউসার (২৫), মো. ইমন (২২), মো. শাকিব (২২), মো. আরিফ (২২), মো. সুজন ওরফে নোমান (২৪), রাবেয়া খাতুন ওরফে জেসমিন বেগম (৪০), মো. সাগির (৩৮), মো. আরিফ (২৩), সদরঘাট থানার আসামি মো. বাবু (২৫), মো. মাসুম খান (৩৮), বায়েজিদ বোস্তামী থানার আসামি মো. ইরফানুল ইসলাম হৃদয় (২৮), উজ্জ্বল দত্ত (৩৫), দিদারুল আলম (৩৭), কোতোয়ালি থানার আসামি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন (৪৪), মোহাম্মদ সামী (২৩), পাঁচলাইশ থানার আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বাঁশখালী উপজেলা শাখার শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম (২৩), মো. সোহেল ওরফে সুহেল (২২), বন্দর থানার আসামি মো. রায়হান হোসেন ওরফে রুকন (৩০), কর্ণফুলী থানার আসামি মো. আরিফ (২৫), পতেঙ্গা থানার আসামি মো. আব্দুল মাবুদ ওরফে বাবলু (৩৫), চাঁন্দগাও থানার আসামি সাইফুর রহমান সৈকত (৩৫), মো. রিয়াজ (২১), মো. আলী (৩০), তারা (২৪), পারভিন আক্তার (১৮), মো. জালাল হোসেন (৩০), মুন্নি আক্তার মিথিলা (২০), মো. এমদাদুল রহমান রাসেল (২৭), স্বপন দে (৩৮), হালিশহর থানার আসামি দেবরাজ রতন ওরফে দেবু (৪০), ইপিজেড থানার আসামি মো. সুমন মন্ডল (৩২), চকবাজার থানার আসামি ফারদিনুল ইসলাম (২৬), মো. মোশাররফ হোসেন টিপু (২৬), ফিরোজ আহম্মদ (৭৫), নজরুল ইসলাম (৩৬), মো. রাব্বি (২৪), মো. আবু জায়েদ মেহরাব (৩১), পরাগ কুইয়া (২০), রবিউল হোসেন (১৮), মো. গিয়াস উদ্দিন ওরফে সুজন (৪৪), মো. হৃদয় (২২), ইসহাক উদ্দিন রিয়াজ (২৮), মীর আসাদ মাহমুদ (২৪), পাহাড়তলী থানার আসামি মো. রোমান উদ্দিন (৩৩), মো. জসিম (২৬), মো. সাগর (২৮), মো. হাতেম (৩২), রবিউল আলম (২৭), আবুল কালাম (৪৬), মো. আনোয়ার হোসেন (৪০), বাকলিয়া থানার আসামি ৪। মো. নুরুল হুদা (৩৮), আশরাফ উদ্দিন রিয়াজ (২৮), মীর সাদ মাহাম্মদ (২৪), আকবরশাহ্ থানার আসামি শিমলা আক্তার মিম (১৮), খুলশী থানার আসামি মো. শাহিনুর ইসলাম সম্রাট (১৯), মো. মহিউদ্দিন ইসলাম (২০) এবং মো. আরিফ হোসেন শান্ত (১৯)।

ট্রেন দেখতে গিয়ে ট্রেনের ইঞ্জিনের ধাক্কায় প্রাণ গেল নানা নাতনীর

নানার বাড়িতে ঈদ করার জন্য গিয়েছিলেন ছোট্ট মুনতাহার। বাড়ির পাশে রেললাইন হওয়ায় নানার সাথে ট্রেন দেখতে বের হয়েছিলেন শিশুটি। কিন্তু ট্রেনের ইঞ্জিনের ধাক্কায় প্রাণ গেল নানা ও নাতনির। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের বাঘইল (দোতলা সাঁকো সংলগ্ন) এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উত্তর বাঘইল ও চর-মিরকামারী গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা হলেন উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের উত্তর বাঘইল এলাকার মৃত রহমত সরদারের ছেলে বাবুল সরদার (৫৫) ও চর-মিরকামারী এলাকার ইসমাইল হোসেনের মেয়ে মুনতাহার (৫)। বাবুল ও মুনতাহার সম্পর্কে নানা ও নাতনী। নিহতের পারিবারিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সুত্রে জানা যায়, ঈদ করার জন্য মুনতাহার নানার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। ইফতারের কিছু সময় আগে বাড়ির নিকটবর্তী রেললাইন হওয়ায় নাতনীর ট্রেন দেখার আবদার মেটাতে রেল লাইনের উপর নানা ও নাতনি বেড়াতে যান। এসময় ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের দিক থেকে ট্রেনের ইঞ্জিন আসতে দেখে নাতনী দৌঁড়ে রেললাইনের উপর উঠে যায়। এই অবস্থায় নাতনীকে বাঁচাতে গেলে নাতনীর মত নানা বাবুল সরদারও ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে নানা ও নাতনী দুইজনই ছিটকে নিচে পড়ে। আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে নানাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। গুরুতর আহত নাতনীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। পরে রেলওয়ে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান জানান, নিহতদের পরিবারের লিখিত আবেদনে মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।