স্ত্রীসহ আশরাফুল আলম খোকনের নামে দুদকের মামলা

১৬ কোটি ৪২ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিব মুহাম্মদ আশরাফুল আলম খোকন ও তার স্ত্রী রিজওয়ানা নুরের নামে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আসামি মুহাম্মদ আশরাফুল আলমর বিরুদ্ধে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৩ কোটি ৩৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮২৭ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। আর তার ৩টি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ এনেছে দুদক। মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে খোকন আমেরিকায় নিউইয়র্ক শহরে বাড়ি ক্রয় করেছেন বলে জানায় দুদক। আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭ (১), ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্যদিকে দ্বিতীয় মামলায় খোকনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৮ লাখ ৮১ হাজার ৫৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার ৩টি ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গত বছরের আগস্টে খোকনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ৯ অক্টোবর তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। দুদক সূত্রে জানা গেছে, আশরাফুল আলম খোকনের বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে। শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিব হিসেবে ২০১৩ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আশরাফুল আলম খোকন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আশরাফুল আলম খোকন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এদিকে আজ মামলার পর খোকন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, শুনলাম দুদক আমার বিরুদ্ধে ১৩ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা করেছে! অভিযোগের ভিত্তি আমেরিকায় আমার বাড়ির বর্তমান বাজারমূল্য ১৩ কোটি টাকা। কিন্তু তারা কি জানে, আমেরিকাতে আমি বাড়ির মালিক ২০১১ সালে, আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগ দিয়েছি ২০১৩ সালে? তাছাড়া আমেরিকায় মাত্র ১০% ডাউনপেমেন্ট দিয়ে বাড়ি কেনা যায়, বাকি টাকা বাড়ি ভাড়ার মতো করে ৩০ বছরে শোধ করতে হয়। আর মজার বিষয় হলো, আমার বাড়ির সব তথ্য ও কাগজপত্র আমিই দুদককে দিয়েছি! তারা আমার কাছে চেয়েছিল। আরও বলেছে, তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা! কিন্তু এই হিসাব কীভাবে বানিয়েছে? ৬৭+ লাখ টাকা জমা হয়েছে, ৬৬+ লাখ উত্তোলন হয়েছে-আর এই দুই যোগ করেই বলছে ১ কোটি ৩৪ লাখ! তার ওপর এই পুরো ৬৭ লাখ টাকাই আমার বেতনের টাকা, আর প্রবাসে থাকাকালীন রেমিট্যান্স পাঠানোর টাকা।

রিমান্ড শেষে কারাগারে সোলাইমান সেলিম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক লালবাগ থানায় মাদ্রাসা ছাত্র শাহেনুর রহমান হত্যা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান সেলিম এবং চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হাজী সিরাজুল ইসলাম রাডোকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিন সোলাইমান সেলিমকে তিন দিন এবং সিরাজুল ইসলাম রাডোকে চার দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর উপ-পরিদর্শক কবির হোসেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী শ্রী প্রানণাথ তাদের জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ১২ মার্চ সোলাইমান সেলিমের তিন দিন, সিরাজুল ইসলামের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার একদিন পর গত বছরের ৬ আগস্ট ভোরে লালবাগ থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গুলি চালালে মাদ্রাসা ছাত্র শাহেনুর রহমান (১৯) গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহতের ভাই মো. মাজেদুল ইসলাম লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

দুদকের মামলায় অব্যাহতি পেলেন খালেদা জিয়ার ভাই

সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার ও শামীমের স্ত্রী মিসেস কানিজ ফাতেমাকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৯-এর বিচারক মো. কবির উদ্দিন প্রামাণিক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুল ইসলাম মিঠু এ তথ্য জানিয়েছেন। আদালত সূত্র বলছে, এদিন এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য ছিল।এদিন শামীম ইস্কান্দার ও তার স্ত্রী আদালতে হাজির হন। পরে আসামিপক্ষে তার আইনজীবীরা এ মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে দুদক অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে অভিযোগ গঠনের উপাদান না থাকায় তাদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। মামলার সূত্রে জানা যায়, সম্পদের তথ্য চেয়ে ২০০৭ সালে শামীম ইস্কান্দারকে নোটিশ দেয় দুদক। কিন্তু সে নোটিশের পর সম্পদের তথ্য গোপন করায় তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষে মামলা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০০৮ সালে রমনা থানায় মামলা করে সংস্থাটি।

কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা : তিন জনের মৃত্যুদণ্ড

তিন বছর আগে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে মারিয়া নামে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিতরা হলেন- কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন খোলামোড়া গ্রামের কামির উদ্দিনের ছেলে মো. সজিব (২৫), ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার খাঁকান্দা গ্রামের হাসমত আলীর ছেলে মো. রাকিব (২৩) এবং শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার মুসলিম মাতবরের ছেলে শাওন ওরফে ভ্যালকা শাওন (২৬)। এছাড়া লাশ গুমের ঘটনায় তাদের প্রত্যেককে সাত বছর করে কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর এরশাদ আলম (জর্জ) সাজার বিষয় নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামিদের স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় করে অর্থদণ্ডের টাকা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাকারে জমা দেওয়ার জন্য ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এদিকে আলী আকবর (২২) এবং মো. রিয়াজের (২২) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন। রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা তিন আসামি রাকিব, রিয়াজ এবং শাওনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। রায় শেষে দণ্ডিত রাকিব এবং শাওনকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডিত সজিব পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। জানা যায়, ২০২২ সালের ১১ জুন কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আঁটিবাজার এলাকায় পুলিশের টহল ডিউটি চলাকালে জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে সংবাদ পায়, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের সামনে পুকুরের পানিতে একজন নারীর মরদেহ পানিতে ভাসছে। পুলিশ সেখানে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ মামলা দায়ের করে। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। প্রথমে তার পরিচয় শনাক্ত করে। ভিকটিমের বান্ধবী বৃষ্টি আক্তার সাক্ষী হিসেবে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানায়, এটা তার বান্ধবী মারিয়ার মরদেহ। পরে পুলিশ শাওনকে গ্রেপ্তার করে। শাওন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। সেখানে জানায়, তিনিসহ মো. রাকিব, মো. সজিব, মো.আলী আকবর মিলে ভিকটিম মারিয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পশ্চিম বামনসুর জামে মসজিদের পানিতে ফেলে রাখে। পরে রাকিব এবং সজিব গ্রেপ্তার হয়। তারাও একই কথা বলে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। মামলাটি তদন্ত করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক অলক কুমার দে ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। মামলার বিচার চলাকালে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

জামিনে মুক্ত হলেন শমসের মবিন চৌধুরী

তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী দুটি হত্যা মামলায় জামিন পেয়ে ঢাকার কারাগার থেকে বেরিয়েছেন। গতকাল সোমবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) জেলার এ কে এ এম মাসুম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রাত ৯টা ৫৩ মিনিটে তিনি কারাগার থেকে জামিনে নিয়ে বেরিয়ে যান। শমসের মবিন চৌধুরী একটি হত্যা মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন হাইকোর্ট থেকে, অন্যটি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে। গত বছরের ১৭ অক্টোবর সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শমসের মবিন চৌধুরী গ্রেপ্তার হন। শমসের মবিন চৌধুরী গ্রেপ্তার হওয়ার পরদিন তাকে পল্টন থানায় করা যুবদল নেতা শামীম মোল্লা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর তাকে যাত্রাবাড়ী থানায় করা পারভেজ মিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

জামিনে মুক্ত হলেন শমসের মুবিন চৌধুরী

তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী কারামুক্ত হয়েছেন। সোমবার (২৪ মার্চ) রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি জামিনে মুক্ত হন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) জেলার এ কে এ এম মাসুম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জানা গেছে, দুটি হত্যা মামলায় জামিন পান শমসের মবিন চৌধুরী। একটি হত্যা মামলায় তিনি জামিন পান হাইকোর্ট থেকে, অন্যটি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে। গত বছরের ১৭ অক্টোবর সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শমসের মবিন চৌধুরী গ্রেপ্তার হন।

সাকিব আল হাসানের সম্পদ জব্দের আদেশ

চার কোটি টাকার চেক ডিজঅনারের অভিযোগে করা মামলায় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। আদালতের পেশকার রিপন মিয়া এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর আইএফআইসি ব্যাংকের চেক ডিজঅনারের এ মামলায় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ চারজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন আদালত। ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত এ আদেশ দেন। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেদিন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি সাকিবসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর আইএফআইসি ব্যাংকের রিলেশনশিপ অফিসার সাহিবুর রহমান বাদী হয়ে আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্মের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গাজী শাহাগীর হোসাইন, ডিরেক্টর ইমদাদুল হক ও মালাইকা বেগম। মামলা সূত্রে জানা যায়, সাকিবের মালিকানাধীন অ্যাগ্রো ফার্ম ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে ঋণ নেয়। তার বিপরীতে দুটি চেক ইস্যু করে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর চেক দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গেলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা ডিজঅনার হয়। দুই চেকে টাকার পরিমাণ প্রায় চার কোটি ১৫ লাখ। পরে ঋণের টাকা ফেরত চেয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায়। এরপর ৩০ দিন পার হলেও সাড়া না পেয়ে আদালতে এই মামলা করা হয়।

আমি বাদীকে চিনি না, বাদীও আমাকে চেনে না: সাবেক মেয়র আতিকুল

আজকে কোন মামলা? কয়টা মামলা হয়েছে? ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক আতিকুল ইসলামের এমন প্রশ্নের জবাবে তার এক আইনজীবী বলেন, স্যার, ৬০ টার মতো মামলা হয়েছে। পাশে থাকা আরেক আইনজীবী বলেন, না স্যার। ৫৬ টার মতো মামলা হয়েছে। তখন আতিকুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি বাদীকে চিনি না, বাদীও আমাকে চেনে না।সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াকের আদালতে আইনজীবীর সঙ্গে তিনি এ কথা বলেন। এদিন আতিকুলকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বাড্ডা থানার হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দেন৷ পরে পুলিশের পাহারায় তাকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়। গত ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাকে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

কাঠগড়ায় সবাইকে ঈদ মোবারক জানালেন পলক

রিমান্ড শুনানি শেষে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে উপস্থিত সবাইকে ঈদ মোবারক জানিয়েছেন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সোমবার (২৪ মার্চ) সকাল ১০টায় পলককে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তাকে আদালতের কাঠগড়ায় রাখা হয়। এরপর এ মামলায় তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট ফারজানা ইয়াসমিন রাখি ও অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন আদালত। রিমান্ড শুনানি শেষে পলকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম জানান, পলক ভাই সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী চাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার ওবায়দুল হত্যা মামলায় পলকের এ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াকের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন। মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় মৃত্যুবরণ করেন ভুক্তভোগী ওবায়দুল ইসলাম। এ ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। গত ১৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জুনায়েদ আহমেদ পলককে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এরপর থেকে বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে দফায় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক ফের ৪ দিনের রিমান্ডে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ফের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াকের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এদিন সকাল ১০টায় পলককে ঢাকার সিএমএম আদালতে উপস্থিত করা হয়। এরপর এ মামলায় তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট ফারজানা ইয়াসমিন রাখি ও অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন আদালত। মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় মৃত্যুবরণ করেন ভুক্তভোগী ওবায়দুল ইসলাম। এ ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। গত ১৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জুনায়েদ আহমেদ পলককে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এরপর থেকে বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে দফায় দফায় রিমান্ডে নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

সাইফুজ্জামান, ডিআইজি মোল্যা নজরুলসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুজ্জামান শেখর, তার স্ত্রী সিমা রহমান ও কারাগারে আটক থাকা পুলিশের ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত। নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন, ফরিদপুরের সাবেক পুলিশ সুপার (বর্তমানে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত) সুভাষ চন্দ্র সাহা ও বিবিএসের প্রশ্নফাঁসের হোতা সৈয়দ আবেদ আলী জীবনের স্ত্রী শাহরিন আক্তার শিল্পী। রোববার (২৩ মার্চ) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। এদিন পৃথক চারটি আবেদনে অভিযুক্তদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ও তদন্তকাজ চলমান থাকায় এ নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। সাইফুজ্জামান শেখর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব ছিলেন। তিনি মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তবে সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

অবৈধ সম্পদ অর্জন : স্বাস্থ্যের সেই গাড়িচালকের ১৩ বছরের কারাদণ্ড

অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত সাবেক গাড়িচালক আব্দুল মালেককে ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৩ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক জাকারিয়া হোসেনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাকে আরও ৬ মাস কারাভোগ করতে হবে। তথ্য গোপনের দায়ে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে অর্জিত এক কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮১০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বিধায় তাকে সর্বোচ্চ ১০ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে বলে জানান দুদকের প্রসিকিউটর আসাদুজ্জামান রানা। এদিন রায় ঘোষণার আগে মালেককে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আব্দুল মালেক এবং তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের আরেক মামলায় রায় প্রস্তুত না হওয়া পিছিয়ে আগামী ১৬ এপ্রিল ধার্য করা হয়েছে। জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এক কোটি ১০ লাখ ৯২ হাজার ৫০ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম মামলাটি করেন। একই দিন ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যাসহ অসাধু উপায়ে অর্জিত ও তার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ এক কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮১০ টাকার মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের মালেকের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন নজরুল ইসলাম। মামলা দুটি তদন্ত করে একই বছরের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন নজরুল ইসলাম। ২০২২ সালের ১১ মে মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এর আগে ২০২১ সালে ২০ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় আব্দুল মালেককে দুই ধারায় ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।

ইসকন নেতা চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে রুল শুনবেন হাইকোর্ট

রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় প্রাক্তন ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল শুনবেন হাইকোর্ট। ঈদের ও অবকাশকালীন ছুটির পর রুলের শুনানি হবে। বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির এ সময় নির্ধারণ করেছেন। রোববার (২৩ মার্চ) চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় প্রাক্তন ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন প্রশ্নে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য ও প্রবীর রঞ্জন হালদার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ। গত বছরের ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। এর কয়েক দিন পর গত ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এ মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়। গত বছরের ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবীর সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর থেকেই কারাগারে আছেন চিন্ময়। গত ২ জানুয়ারি চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন চিন্ময় দাস।

ঘুষের মামলায় তারেক রহমান-লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আটজন খালাস

হত্যা মামলার আসামিদের বাঁচাতে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আটজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩’-এর বিচারক মো. আবু তাহেরের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। খালাস পাওয়া অপর আসামিরা হলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ওরফে শাহ আলম ও তার দুই ছেলে সাফিয়াত সোবহান এবং সাদাত সোবহান, আবু সুফিয়ান, কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, তারেক রহমানের সাবেক একান্ত সহকারী সচিব (এপিএস) মিয়া নুরুদ্দিন অপু। এদিন আবু সুফিয়ান, কাজী সলিমুল হক কামাল আদালতে হাজির ছিলেন। জামিনে থাকা অপর আসামিদের পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী বোরহানউদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণা শেষে অ্যাডভোকেট বোরহানউদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, আমার জানামতে ওনার (তারেক) বিরুদ্ধে আর কোনো বড় মামলা নেই। এখন তিনি দেশে ফেরত আসার জন্য অপেক্ষায় আছেন। দেশবাসী তাকে গ্রহণ করার অপেক্ষায় আছেন। ২০০৭ সালের ৪ অক্টোবর মামলাটি দায়ের করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

সাংবাদিককে ধর্ষণ: একজনের স্বীকারোক্তি, আরেকজন কারাগারে

রাজধানীর পল্লবীর বারনটেকের ‘গ্রিন সিটি’ এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনে এক নারী সাংবাদিককে সারারাত আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় এনামুল হক (৩৮) নামে এক আসামি আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। হামিদুর রহমান রাসেল (৫৩) নামে আরেকজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১৯ মার্চ) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্লবী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কাইয়ুম দুই আসামিকে আদালতে হাজির করেন। এনামুল হক স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত এনামুল হকের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। অন্য আসামি হামিদুর রহমানের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথির আদালতে হামিদুর রহমানের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানির জন্য ধার্য ছিল। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবুল কাইয়ুম আদালতে উপস্থিত না থাকায় রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়নি। আগামী ২৩ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করেন আদালত। পল্লবী থানার (নারী-শিশু) আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সাব-ইন্সপেক্টর আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। জানা গেছে, গত সোমবার দিবাগত রাতে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে যান ওই নারী সাংবাদিক। এ সময় ১৬ জন তাকে ঘিরে ধরে। সেখান থেকে একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে তাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় আটজনের নাম উল্লেখসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই নারী সাংবাদিক। মামলার পর মঙ্গলবার রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে এনামুল হক এবং হামিদুর রহমান রাসেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

‘রিমান্ড যা দেয় দিক, শুনানিতে কিছু বলবি না’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়িতে গুলিতে ওবায়দুল ইসলাম নিহতের মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (১৯ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। আদালতে দীপু মনির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। শুনানির আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে এজলাসে তোলা হয়। এ সময় আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন দীপু মনি। তার আইনজীবী তাকে বলেন, আপা, আজ সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে। প্রতি উত্তরে দীপু মনি আইনজীবীকে বলেন, ‘যা রিমান্ড দেয় দিক। শুনানিতে কিছু বলবি না। কিছু বলার দরকার নেই।’ তখন তার আইনজীবী বলেন, আপা, শুধু রিমান্ড বাতিলের আবেদন দিয়েছি। কোনো শুনানি করব না। পরে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। এ মামলায় হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেননেরও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। গত বছরের ১৯ আগস্ট বারিধারা এলাকা থেকে দীপু মনিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাকে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত বছরের ৪ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে যাত্রাবাড়ির কাজলা পেট্রোল পাম্পের সামনে আওয়ামী লীগের নেতারাসহ ১৪ দলের নেতাকর্মীরা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে হাজার হাজার জনতার ওপর গুলি চালায়। এতে ওবায়দুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের দীপু মনিসহ ৫৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের স্বজন মো. আলী।

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হলেন ৩৪ জন আইনজীবী

সুপ্রিম কোর্টে সরকারের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য নতুন করে ৩৪ জনকে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (১৮মার্চ) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ভারপ্রাপ্ত সলিসিটর সানা মো. মাহরুফ হোসাইনের সই করা পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ল’ অফিসার্স অর্ডার, ১৯৭২ (পিও নম্বর ৬ অব ১৯৭২)-এর ৩ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নিম্নবর্ণিত ৩৪ জন আইনজীবীকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১২ আগস্টের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেলসহ তার কার্যালয়ে বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা নিয়োগপ্রাপ্ত সব সহকারী অ্যাটর্নি অ্যাটর্নি জেনারেলের নিয়োগ আদেশ বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের ১৬১ জন আইনজীবীকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ করা হলো। একই দিন আরেকটি প্রজ্ঞাপনে ৬৬ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ দেওয়ার কথা জানানো হয়। গত ৫ আগস্ট প্রবল গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে অ্যাটর্নি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের পদত্যাগ চলতে থাকে। এর পর গত ৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ১২ আগস্টের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের মধ্যে ৬৭ জন পদত্যাগ করেন। গত ১৩ আগস্ট আইনজীবী আব্দুল জব্বার ভুঁইয়া, অনীক আর হক ও মোহাম্মদ আরশাদুর রউফকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লারেশন ফিরে পেলেন শফিক রেহমান

দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লারেশন ফিরে পেয়েছেন সাংবাদিক শফিক রেহমান। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সই করা অফিস আদেশে এ তথ্য জানা যায়। ঢাকা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (প্রকাশনা ও ছাপাখানা শাখা) নুসরাত নওশীন এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে প্রকাশের ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে পত্রিকাটির সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় এই দৈনিকের ডিক্লারেশন বাতিল করে সরকার। অফিস আদেশ অনুযায়ী, দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকাটি প্রকাশের জন্য যে অনুমোদিত প্রেস রয়েছে সেখান থেকে ছাপা হচ্ছে না, কিন্তু প্রিন্টার্স লাইনে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হচ্ছে মর্মে শফিক রেহমান অভিযোগ জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার পর এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পত্রিকাটি মুদ্রণের ডিক্লারেশন বা ঘোষণাপত্র বাতিল করা হয়। আদেশ অনুযায়ী, দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকা প্রকাশে ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধীকরণ) আইন, ১৯৭৩ এর ১০ ধারার লঙ্ঘন হয়েছে। এ কারণে ‘দৈনিক যায়যায়দিন’ পত্রিকার প্রকাশক ও মুদ্রাকর সাঈদ হোসেন চৌধুরীর নামে যে ঘোষণাপত্র ছিল তা বাতিল করা হয়।

নতুন দলের নিবন্ধন বিষয়ে ইসির গণবিজ্ঞপ্তি হাইকোর্টে স্থগিত

নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই গণবিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট এই আদেশ দেন। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ সংক্রান্ত রিট দায়ের করেন। রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনকে বিবাদী করা হয়েছে। রিট প্রসঙ্গে আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম বলেন, রিটে কয়েকটি বিষয় চ্যালেঞ্জ করেছি। এর মধ্যে অন্যতম হলো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য ইসির আইনে বলা আছে– রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য কমপক্ষে ১০০ উপজেলা ও ২২ জেলায় দলের কমিটি থাকতে হবে। কিন্তু পাহাড়ি জনসংখ্যা অধ্যুষিত তিন জেলায় উপজেলা আছে মাত্র ২০টি। তাই পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ইচ্ছা করলেও রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারবে না, এমনকি আঞ্চলিক দলও গঠন করতে পারবে না। ইসির বর্তমান আইন অনুযায়ী পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক দল গঠনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক দল গঠনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়াসহ আরও কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করে এ রিটটি করা হয়েছে। গত ১০ মার্চ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন। বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে নিবন্ধন পেতে রাজনৈতিক দলগুলোকে আবেদন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

লোডশেডিংয়ের সিডিউল ২৪ ঘণ্টা আগে প্রকাশের জন্য হাইকোর্টের রুল

গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্যহীন বিদ্যুৎ সরবরাহ ও লোডশেডিংয়ের শিডিউল ২৪ ঘণ্টা আগে কেন প্রকাশ করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার (১৭ মার্চ) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের দ্বৈত বেঞ্চ ৪ সপ্তাহের জন্য এ রুল জারি করেন। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে এ রুল জারি করা হয়। এতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে। রিটকারী আদালতকে বলেন, গরমের সময় শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে বেশি পরিমাণে লোডশেডিং হয়। এর ফলে এসব এলাকায় থাকা পোল্ট্রিসহ নানা উৎপাদনমুখী শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছিলেন, আমরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে গ্রাম ও শহরের মধ্যে কোনো বৈষম্য রাখবো না। এজন্য দেশের সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া সেচ উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার কথাও বলেন তিনি।

কাঠগড়ায় কাঁদলেন শাজাহান খান, হাসতে হাসতে গেলেন হাজতখানায়

বড় ছেলে আসিবুর রহমান খানের সঙ্গে পাঁচ মাস দেখা নেই, এই কথা বলতে বলতে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকেন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে শুনানি চলাকালে কাঁদেন তিনি। পরে বাড্ডা থানার রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদিন সকাল ৯ টা ৫০ মিনিটের দিকে শাজাহান খানকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। তখন তিনি আইনজীবীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করেন। পরে তার উপস্থিতিতে ১০ টা ৮ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে তার আইনজীবী মিজানুর রহমান বাদশা বলেন, শাজাহান খান আটবারের সংসদ সদস্য ও দুইবারের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ঐতিহ্যগতভাবে রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান৷ এর আগে তাকে দুইবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার বয়স ৭৬ বছর। রোজার মধ্যে রিমান্ডে নিলে হয়রানি হবে, ফের অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তাই রিমান্ড নামঞ্জুর করা হোক। রিমান্ড শুনানি চলাকালে ১০ টা ২৭ মিনিটে শাজাহান খান বলেন, মাননীয় আদালত আমি কথা বলতে চাই। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, আমি জড়িত না। কেন এই মামলা হলো? শুধু আমার বিরুদ্ধে না, আমার বড় ছেলে আসিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। তখন কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে পাঁচ মাস আমার দেখা নেই। তখন বিচারক বলেন, আপনার বিষয়ে আইনজীবী কথা বলেছেন। তবুও শাজাহান খান দুই হাত জোর করে কথা বলার জন্য সময় চান। তিনি বিচারকের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার কথা শুনতে হবে, আমাকে একটু সময় দেন। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে টিস্যু দিয়ে দুই চোখ মুছতে থাকেন। শুনানি শেষে আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ১০ টা ৪০ মিনিটে হেলমেট, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হাতকড়া পরিয়ে আদালত থেকে বের করা হয়। হাজতখানায় নেওয়ার সময় তিনি বলেন, পুলিশ বলছে কথা বলা নিষেধ। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। আমি সারাজীবন কথা বলে এসেছি, কথা বলেই যাবো। পরে হাসতে হাসতে তিনি হেটে হাজতখানায় যান।

স্ত্রী-সন্তানসহ পাপনের ২৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন, তার স্ত্রী মিসেস রোকসানা হাসান, মেয়ে সুনেয়া রহমান ও রুশমিলা রহমান এবং ছেলে রাফসান হাসানের নামে থাকা ২৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব হিসাবে ৩৩ কোটি ৭৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা রয়েছে। রবিবার (১৬ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিন দুদকের উপপরিচালক সাইদুজ্জামান তাদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, নাজমুল হাসান পাপন ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। গোপন ও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, নাজমুল হাসান পাপন ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে (কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, ঢাকা ছাড়াও অন্যান্য এলাকায়) এবং দেশের বাইরে- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ অন্যান্য দেশে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর করার চেষ্টা করছেন মর্মে অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা আবশ্যক।

সাবেক আইজিপি মামুনকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। রোববার (১৬ মার্চ) সকালে তাকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। আদালতে আজ আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে তাকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তদন্ত সংস্থার সেফ হোমে নিয়ে উভয়পক্ষের আইনজীবী ও চিকিৎসকের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা চলছে

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে। রোববার বেলা ১১টায় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে রায় ঘোষণা শুরু হয়। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান রায় পাঠ করে শোনাচ্ছেন। গত ১০ ফেব্রুয়ারি আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়। এর আগে গত বছরের অক্টোবর মাসে এ মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এ উদ্যোগ নেন। বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র আবরার থাকতেন শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে। সেখান থেকে ডেকে নিয়ে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। রাত ৩টার দিকে হলের সিঁড়ির করিডোর থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। ফেসবুকে ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ নিয়ে দেশজুড়ে আলোড়ন হয়। হত্যাকাণ্ডের পরদিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। একই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ওই মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার বিচারিক আদালত। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে তিনজন মামলার শুরু থেকেই পলাতক। তিন আসামি হলেন– এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মাহমুদুল জিসান ও মুজতবা রাফিদ। রায়ের পরপরই সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা এবং রাষ্ট্রপক্ষে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) আবেদন করা হয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পর গত অক্টোবরে এই মামলায় আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার অপু (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মোজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুর রহমান মাজেদ (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোর্সে‌স, ১৬ ব্যাচ), শামছুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং এসএম মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামি হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), সদস্য আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) ও মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ)।