দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা: খালাস পেলেও এখনই মুক্তি মিলছে না বাবরের

চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ছয়জন আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ মামলা থেকে খালাস পেলেও এখনই মুক্তি মিলছে না তার। কারণ, একই ঘটনায় আরেক মামলায় তার দণ্ড বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। মামলাটিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর ছয় আসামির সাজা কমিয়ে দশ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পরেশ বড়ুয়ার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আসামি মহসীন ও এনামুলসহ পাঁচজনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান। নিজামী ও বাবরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আবদুর রহিম ও লিয়াকতের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আহসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। পলাতক আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হাসনা বেগম শুনানি করেন। নুরুল আমিনের পক্ষে আইনজীবী সাধন কুমার বণিক ও মো. মহিউদ্দিন শুনানিতে অংশ নেন। রায়ে আদালত বলেছেন, ‘লুৎফুজ্জামান বাবর, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসীন উদ্দিন তালুকদার, তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কেএম এনামুল হক ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। যে কারণে তারা অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়ার অধিকারী। তাদের খালাস দেওয়া হল। ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড ও জরিমানা হয়েছিল।’ হাইকোর্ট রায়ে বলেছেন, ‘মারা যাওয়ায় তার আপিল মেরিটে নিষ্পত্তি করে অব্যাহতি (বাদ) দেওয়া হল।’ মামলাটিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব নুরুল আমিনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার বিষয়ে রায়ে আদালত বলেছেন, ‘বিচারের শুরু থেকেই তিনি পলাতক। তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। তাই, তিনি অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়ার অধিকারী।’ পরেশ বড়ুয়ার যাবজ্জীবন: মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুদণ্ড ও জরিমানা হয়েছিল। তার বিষয়ে হাইকোর্ট রায়ে বলেন, ‘শুরু থেকেই তিনি পলাতক। তার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত এবং পারিপার্শ্বিকতা ও সাক্ষ্য-প্রমাণ বিবেচনায় নিয়ে তার সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হলে ন্যায়বিচার হবে। তাই, সাজা মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হল।’ ছয়জনের দশ বছর করে কারাদণ্ড: বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিকে দশ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। তারা হলেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার তৎকালীন মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, এনএসআইয়ের সাবেক উপপরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, তৎকালীন পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ, চোরাকারবারি হাফিজুর রহমান, শ্রমিক সরবরাহকারী দ্বীন মোহাম্মদ ও ট্রলারমালিক হাজি সোবহান। বিচারিক আদালতের রায়ে তাদের পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছিল। সেটা জরিমানা পরিবর্তন করে তাদের দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রহিমের জরিমানা কমে দশ হাজার: ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রহিমের মৃত্যুদণ্ড ও জরিমানা হয়েছিল। তার বিষয়ে রায়ে হাইকোর্ট বলেন, ‘মারা যাওয়ার কারণে তার আপিল অ্যাবেট (পরিসমাপ্তি) ঘোষণা করা হল। বিচারিক আদালতের দেওয়া জরিমানার আদেশ সংশোধন করে দশ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হল।’ বাবরের বিষয়ে তার আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘দশ ট্রাক-সংক্রান্ত অপর একটি মামলায় দণ্ড থাকায় এখনই বাবর কারামুক্তি পাচ্ছেন না। ওই মামলায় বাবরের করা আপিল হাইকোর্টে শুনানির জন্য রয়েছে।’ ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় দশ ট্রাক ভর্তি অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইন ও ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুইটি মামলা হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) পুলিশ দুইটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে। এর বিচারও একসঙ্গে শুরু হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের। বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রায়সহ মামলার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছায়, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্য দিকে, দণ্ডিত আসামিরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন। এর আগে ওই মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), লুৎফুজ্জামান বাবর, পরেশ বড়ুয়া ও দুইটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। দণ্ডিত ১২ জন পৃথক আপিল করেন। মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর গত ৬ নভেম্বর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। ১৩তম দিনে শুনানি শেষে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স নাকচের পাশাপাশি কোন ক্ষেত্রে আপিল মঞ্জুর আবার কোন ক্ষেত্রে, আপিল নামঞ্জুর করে সাজা সংশোধন করে বুধবার রায় দেওয়া হয়।

মকবুল হত্যা মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান

বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমানের আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এদিন কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় নজিবুর রহমানকে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তার ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর এক দফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশের হারুন অর রশীদ, মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযান চালান। কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান তারা। কার্যালয়ের পাশে থাকা হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালান তারা। এতে মকবুল হোসেন নামে এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর মাহফুজুর রহমান নামে একজন বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন, যেখানে আসামি হিসেবে এজাহারভুক্ত করা হয় এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানকেও।

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরকে খালাস দিলেন হাইকোর্ট

বহুল আলোচিত চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর আগে গত ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। সেদিন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজন আসামির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের। বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রায়সহ মামলার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন।

এক যুগ পর দেশে ফিরছেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক

প্রখ্যাত আইনজীবী ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আগামী ২৬ ডিসেম্বর দেশে আসছেন। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) তার চেম্বারের জুনিয়র কাউন্সেল ব্যারিস্টার মাহমুদ আল মামুন হিমু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন,'সব কিছু ঠিক থাকলে দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর আগামী ২৬ সে ডিসেম্বর সকালে সুপ্রিম কোর্টের সুনামধন্য আইনজীবী, আমাদের সিনিয়র দেশে আসছেন, ইনশাআল্লাহ।' জানা গেছে, তিনি সুপ্রিম কোর্টে আইনপেশায় নিয়মিত হবেন। তার দুই ছেলে ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী সুপ্রিম কোর্টে আইনপেশা পরিচালনা করে আসছেন। শেখ হাসিনার শাসনামলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্টাইব্যুনালে বিচার শুরু হলে শুরু থেকে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক জামায়াত নেতাদের প্রধান আইনজীবী ছিলেন। ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়। একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ইংল্যান্ডে চলে যান। এক পর্যায়ে তিনি জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেন। পরে তিনি এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হন। গত সেপ্টেম্বর মাসে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) থেকে পদত্যাগ করেন দলটির প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।

কোর্ট থেকে লাথি মেরে চিফ জাস্টিসকে বের করে দিয়েছিল ডিজিএফআই

কোর্টে এসে লাথি মেরে এক চিফ জাস্টিসকে বের করে দিয়েছিল ডিজিএফআই; এটা কি তাদের কাজ? দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার শুনানিতে এমন প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকালে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক শুনানিতে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিচারপতি মোস্তফা জামার ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ। ব্রিগেডিয়ার (জেনারেল অব) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর পক্ষে যখন যুক্তিতর্ক তুলে ধরছিলেন তার আইনজীবী, তখন হাইকোর্ট বলেন, ‘ডিজিএফআই এসব কি করে। এটা কি ধরনের কাজ।’ কাল চূড়ান্ত যুক্তি তর্ক শেষ করে সময় পেলে রায় দেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। বহুল আলোচিত চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে। এর আগে গেল ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। সেদিন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজন আসামির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় দশ ট্রাক ভর্তি অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুইটি মামলা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুইটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের। বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রায়সহ মামলার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্য দিকে, কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন।

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ বেশকিছু বিষয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে, গত ৫ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ বেশকিছু বিষয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। ২৩ কার্যদিবস শুনানি শেষে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করা হয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন, রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান, চার আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী, ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলে বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার পক্ষভুক্ত হন। এরপর ইনসানিয়াত বিপ্লব, গণফোরাম, চার আবেদনকারী রুলে ইন্টারভেনর হিসেবে পক্ষভুক্ত হন। গত ১৯ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সে সময় বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেছিলেন। উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই সংশোধনীর দ্বারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।

সাবেক মন্ত্রী-উপদেষ্টাসহ ১৬ জনকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে

জুলাই-আগস্টে গণহত্যার মামলায় গ্রেফতার আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ মোট ১৬ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রিজন ভ্যানে করে দ্বিতীয়বারের মতো তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। বিভিন্ন কারাগার থেকে সাবেক এসব মন্ত্রী, উপদেষ্টা, আমলা, বিচারপতি ও রাজনীতিবিদদের আদালতে আনা হয়। এর মধ্যে গোলাম দস্তগীর গাজীকে আনা হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে। এর আগে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত শেষ করে আজ ১৭ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে। এই মামলাতেই তাদেরকে হাজির করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন- সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ড. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, আব্দুর রাজ্জাক, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক-ই-ইলাহী, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও সচিব জাহাংগীর আলম, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু এবং কামরুল ইসলাম। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ‘গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ’ সংঘটনের অভিযোগে গত ১৭ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ২৭ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ১৮ নভেম্বর সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়।

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে হাইকোর্টের রায় ঘোষণা শুরু

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ বেশকিছু বিষয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টা ৫০ মিনিটের দিকে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা শুরু করেন। এর আগে, গত ৫ ডিসেম্বর এই রুলের রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। ২৩ কার্যদিবস শুনানি শেষে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করা হয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন, রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান, চার আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী, ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলে বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার পক্ষভুক্ত হন। এরপর ইনসানিয়াত বিপ্লব, গণফোরাম, চার আবেদনকারী রুলে ইন্টারভেনর হিসেবে পক্ষভুক্ত হন। গত ১৯ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সে সময় বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেছিলেন। উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই সংশোধনীর দ্বারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রিভা দুই দিনের রিমান্ডে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় হত্যাচেষ্টা মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার (৩২) দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মোস্তাফিজুর রহমান। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মাসুদ সরদার। আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখি রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়ের পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেয়। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনে ক্যাম্পাস ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান রিভা। এরপর তাকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি। বিভিন্ন সময়ে ‘বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের’ জন্য আলোচিত রিভা ইডেন কলেজের মার্কেটিং বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এর আগে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নিশীতা ইকবাল নদীকে গ্রেফতার করে ডিবি। কলাগান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা একটি মামলায় তাকে দুই দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। আওয়ামী লীগ সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে ‘সন্ত্রাসী’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৩ অক্টোবর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের আয়কর নথি জব্দের আদেশ

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া এ আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম আসাদুজ্জামান খানের আয়কর নথি জব্দের আদেশ চেয়ে আবেদন করেন। এ বিষয়ে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সালাউদ্দিন ইস্কান্দার কিং শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান ও কন্যা সাফিয়া তাসনিম খানসহ দশজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। গত ১৫ সেপ্টেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ের আসাদুজ্জামান খান কামালসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করেন। তাদের বিরুদ্ধে মোট ৭৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার পর গত ৪ নভেম্বর আসাদুজ্জামান খান কামালের নয়টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করেন আদালত। এতে ১২ কোটি ১১ লাখ ৯৪ হাজার ১৮০ টাকা রয়েছে। আসাদুজ্জামান খান কামাল ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ঢাকা-১১ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১২ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হন। পরে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তৃতীয় বারের মত সাংসদ নির্বাচিত হন এবং পুনরায় শপথ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন। গেল ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে ভারত চলে যান। পরে রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিলে আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংসদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ হারান। এরপর থেকে তিনি অজ্ঞাতস্থানে আত্মগোপনে আছেন।

স্থগিত হল শমী কায়সারের জামিন

ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানায় জুলাই-আগস্টের ঘটনায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় ই-কর্মাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাবেক সভাপতি ও অভিনেত্রী শমী কায়সারকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ। একই সাথে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আগামী ৬ জানুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেন। এ মামলায় রোববার (৮ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন তিনি। গত ৫ নভেম্বর শমী কায়সারকে উত্তরার একটি বাসা থেকে গ্রেফার করে পুলিশ। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ীসহ অন্যরা কর্মসূচিতে অংশ নেন। উত্তরা পূর্ব থানাধীন চার নম্বর সেক্টরের আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাই স্কুলের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ হামলা চালায় ও গুলিবর্ষণ করে। এ সময় ইশতিয়াকের পেটে গুলি লাগে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।’ এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় শমী কায়সার ২৪ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। ৯০ দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শমী কায়সার শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সার এবং ঔপন্যাসিক ও সাবেক সাংসদ পান্না কায়সারের সন্তান। শমী কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগ সরকারের দমনপীড়ন চলাকালে সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে তুমুল সমালোচিত হন।

গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের ১০ বছরের খালাসের রায় বহাল

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এ বিষয়ে মামুনের আপিল মঞ্জুর করে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আইনজীবী সাব্বির হামজা চৌধুরী বলেন, এক এগারোর সময় এ মামলা দায়ের করা হয়। বিচারিক আদালত ১০ বছরের সাজা দেন। পরে হাইকোর্ট খালাস দেন। এর বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগ মামলাটি পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। পুনরায় শুনানির আদেশের বিরুদ্ধে গিয়াস উদ্দিন মামুন রিভিউ করেন। সেই রিভিউ আদালত মঞ্জুর করেন। এরপর তিনি আপিল করেন। আজ সেই আপিল মঞ্জুর করেছেন। ফলে হাইকোর্টের খালাসের রায় বহাল। ২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পদের হিসাব দাখিল না করায় একই সালের ৮ মে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলা করেন। মামলায় মামুনের বিরুদ্ধে ১০১ কোটি ৭৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ মার্চ বিচারিক আদালত মামুনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চে ২০১২ সালের ৩০ জুলাই খালাস পান মামুন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে পরে লিভ টু আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর হাইকোর্টের খালাসের রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে মামলার পুনরায় আপিল শুনানির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের ওই আদেশ রিভিউ চেয়ে গিয়াস উদ্দিন মামুন আবেদন করেন। আপিল বিভাগ তার রিভিউ মঞ্জুর করলে তিনি আপিল করেন। আজ সেই আপিল মঞ্জুর করা হয়।

আরও এক মামলা থেকে খালাস পেলেন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। রায়ের পর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন। গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের পক্ষে শুনানি করেন ফিদা এম কামাল, আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আসিফ হোসেন। ২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের নোটিশের প্রেক্ষিতে সম্পদের হিসাব দাখিল না করায় একই সালের ৮ মে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলা করে। মামলায় মামুনের বিরুদ্ধে ১০১ কোটি ৭৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩’শ ৬৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ মার্চ বিচারিক আদালত মামুনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চ ২০১২ সালের ৩০ জুলাই খালাস পায় মামুন। পরে এ মামলায় আপিল বিভাগে যায় দুদক। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর অর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলা থেকে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে খালাস দেয় হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে মামুনের সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন। পরে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দিন তিনি কারাগার থেকে জামিনে বের হন।

শমী কায়সারের জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানায় করা মামলায় অভিনেত্রী শমী কায়সারকে তিন মাসের জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এবার তার জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা এ আবেদন করেছেন। আজই এর শুনানি হতে পারে। এর আগে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এদিন আদালতে শমী কায়সারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম হামিদুল মেজবাহ।রোববার (৮ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় উত্তরা পূর্ব থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন ই-কর্মাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাবেক সভাপতি ও অভিনেত্রী শমী কায়সার।গত ৫ নভেম্বর দিবাগত রাতে উত্তরার চার নম্বর সেক্টরের ছয় নম্বর রোডের ৫৩ নম্বর বাসা থেকে শমী কায়সারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। গত ৯ নভেম্বর শমী কায়সারকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠান আদালত।জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ীসহ অন্যরা কর্মসূচিতে অংশ নেন। উত্তরা পূর্ব থানাধীন চার নম্বর সেক্টরের আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাই স্কুলের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ হামলা চালায় ও গুলিবর্ষণ করে। এ সময় ইশতিয়াকের পেটে গুলি লাগে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় শমী কায়সার ২৪ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। রিমান্ড শেষে শমী কায়সারকে ৯ নভেম্বর কারাগারে পাঠান ঢাকার আদালত।

পিরোজপুরে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা থেকে খালাস পেলেন তারেক রহমান

পিরোজপুর জেলার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে খালাস দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে পিরোজপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন এ আদেশ দেন।দায়ের হওয়া মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. দেলোয়ার হোসেন ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর দণ্ডবিধি ১২৩ (ক) ধারায় বিএনপির তখনকার জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেশের সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট করা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া, নিন্দাবাদ ও উসকানিমূলক বক্তব্য রাখার অভিযোগ এনে পিরোজপুর সদর থানায় এ মামলা করেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য থাকায় আদালতের বিচারক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন উপাদান না থাকায় তাকে দায় থেকে অব্যাহতি দেন এবং মামলাটি খারিজ করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মামনুন আহসান। পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি ও তারেক রহমানকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ। দেশে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতায় আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিধায় আজ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পিরোজপুরে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় সম্পূর্ণ খালাস ও মামলাটি খারিজ হয়েছে। সব মামলায় তারেক রহমান খালাস পাবেন ও দেশে ফিরবেন বলে আশা রাখছি।’

হাসিনাকে পলাতক দেখিয়ে বিচার করতে বাধা নেই বললেন টবি ক্যাডম্যান

শেখ হাসিনাকে পলাতক দেখিয়ে বিচার করতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ টবি ক্যাডম্যান। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে প্রসিকিউশন টিমের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক ক্যাডম্যান। এ সময় শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান আন্তর্জাতিক এই অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ। টবি ক্যাডম্যান বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারত কী করবে জানি না। আশা করছি ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। তারা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি সম্মান জানিয়ে জুলাই গণহত্যার প্রধান আসামি শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে। তবে ভারত যদি না ফেরত দেয় তাহলে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে। জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারে আন্তর্জাতিক মান মেনে চলা হচ্ছে জানিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক বলেন, নিশ্চিত করা হবে আন্তর্জাতিক মান ও ন্যায়বিচার। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতেও যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এর আগে সকালে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর ও তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ক্যাডম্যান। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের বিশেষ পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় লন্ডনভিত্তিক গার্নিকা ৩৭ ল’ ফার্মের যুগ্ম প্রধান টবি ক্যাডম্যানকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে টবি ক্যাডম্যান লেখেন, ‘এই ঘোষণা দিতে পেরে আমি আনন্দিত ও খুবই সম্মানিত বোধ করছি যে আমাকে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংক্রান্ত সব বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটরকে পরামর্শ দেওয়া বি ক্যাডম্যানের ভূমিকা হবে বলে পৃথক আরেকটি পোস্টে জানিয়েছে টবি ক্যাডম্যানের ল’ ফার্ম গার্নিকা ৩৭। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে এসেছিলেন টবি ক্যাডম্যান। গত ২ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করেছিলেন ক্যাডম্যান।

আজ থেকে 'জয় বাংলা' আর জাতীয় স্লোগান নয়, হাইকোর্টের রায় স্থগিত

‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।আদেশের বিষয়টি জানান অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক। এর আগে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা চেয়ে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. বশির আহমেদের হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। পরে ২০২০ সালের ১০ মার্চ ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। বাংলায় দেওয়া রায়ের আদেশের একটি অংশে আদালত বলেন, ‘আমরা ঘোষণা করছি যে জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে।’ পরে ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা। এর আগে, গত ২ ডিসেম্বর ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

সিঙ্গাপুরে অর্থপাচার মামলায় তারেক রহমানের সাজা স্থগিত

সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৭ বছরের সাজা স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একই মামলায় তারেক রহমানের বন্ধু ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের সাজাও স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের মামলায় ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালত তারেক রহমানকে খালাস দেন। ওই মামলায় তারেকের বন্ধু ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে দুদক তারেক রহমানকে খালাস দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে। ওই আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ২১ জুলাই বিচারিক আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেন। ২০১০ সালে মামলাটিতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেলেন অভিনেত্রী শমী কায়সার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় করা মামলায় অভিনেত্রী শমী কায়সারের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ই-কর্মাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আজ শমী কায়সারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম হামিদুল মেজবাহ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যার চেষ্টা হয়। ওই ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা হয়। সে মামলায় শমী কায়সারকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে রিমান্ড শেষে শমী কায়সারকে গত ৯ নভেম্বর কারাগারে পাঠান ঢাকার আদালত।

চট্টগ্রাম আদালতে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ৮ আসামি রিমান্ডে

চট্টগ্রাম আদালতে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় আট আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন। রিমান্ডে পাঠানো ব্যক্তিরা হলেন- সুমন দাস, সাকিবুল আলম, আহমদ হোসেন, সুজন চন্দ্র দাস, ইমন চক্রবর্তী, রূপন দাস, মো. রাকিব ও সৌরভ দাস। চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, চিন্ময় অনুসারীদের তাণ্ডবের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় আট আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রথম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর ছিদ্দিকের আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন করেন এনামুল হক নামে এক ব্যবসায়ী। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ ওইদিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার একটি আরজি দায়ের করা হয়েছে। ২৬ নভেম্বরের ঘটনায় এ মামলার আবেদন করা হয়েছে। বাদীপক্ষের আইনজীবী শামসুল আলম বলেন, ২৬ নভেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার সময় এনামুল হক নামে এক ব্যবসায়ী মারধরের শিকার হন। দাঁড়ি-টুপি থাকায় চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা তাকে মেরে ডান হাত ভেঙে দেন। এ ছাড়া তার মাথায় কিরিচ দিয়ে কোপ দিয়েছেন চিম্ময়ের অনুসারীরা। এ ঘটনায় চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নামে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালি এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন তার অনুসারীরা। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয় মামলায় ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

শাহ কামাল দুই ও পলক তিন দিনের রিমান্ডে

শিক্ষার্থী মানিক হত্যার দায়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় করা মামলায় আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার সিএমএম আদালত আনা হলে তার সাত দিনের পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় আসামির শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। শুনানি শেষে বিচারক তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই আদালত পল্টন থানার যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় সাবেক সচিব শাহ কামালকে দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন থানায় করা মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, রাশেদ খান মেনন, ডিবির সাবেক কর্মকর্তা মশিউর রহমান এবং গাজীপুরের সাবেক মেয়র আসাদুর রহমান কিরণকে নতুন করে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপরপর থেকে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও এমপি এবং নেতাকর্মীদের নামে অনেক মামলা হয়। ইতোমধ্যে অনেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। তাদের অনেককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।

সাবেক সাংসদ ও জাপার নেতা টিপু জেলে

বরিশাল-৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপুর জামিন না মঞ্জুর করে জেলে পাঠানো হয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির মামলার আসামি হিসেবে রোববার (৮ ডিসেম্বর) বরিশালের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর রহমান জামিন না মঞ্জুর করে জেলে পাঠিয়েছেন বলে জিআরও এএসআই খাদিজা বেগম জানান। গেল ২১ নভেম্বর বাবুগঞ্জের দেহেরগতি ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন হেমায়েত বাদী হয়ে টিপুকে প্রধান আসামি করে নামধারী ১১ ও অজ্ঞাত আরো ১৫০ জনকে আসামি করে ওই মামলাটি করেন। খাদিজা বেগম জানান, মামলার আসামি হিসেবে টিপু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এছাড়াও, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে দশ দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর জামিন ও রিমান্ড আবেদনের শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৩ আসনে জাপার মনোনীত প্রার্থী হয়েছিলেন গোলাম কিবরিয়া টিপু। তিনি নির্বাচনে জয়ী হয়ে সাংসদ হয়েছিলেন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ইউনিয়নের ‘ঠাকুর মল্লিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট চলাকালে সকাল ১০টার দিকে আসামিরা রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে হামলা চালায়। এ সময় বিএনপির দলীয় প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করে। পরে ভোটকেন্দ্রে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এছাড়া, মামলার বাদী আনোয়ার হোসেনের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে ভোটকেন্দ্র দখল করে। পরে জাপার প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপুর ব্যালট পেপারে সিল মেরে তাকে অবৈধভাবে সাংসদ নির্বাচিত করেন। এ অভিযোগে করা ওই মামলার নামধারী অন্য আসামিরা হলেন একই আসনের সাবেক সাংসদ ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ টিপু সুলতান, বাবুগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী এমদাদুল হক দুলাল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার খালেদ হোসেন স্বপন, উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ফারজানা বিনতে ওহাব, উপজেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান মিলন, মাধবপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, রিয়াজ সরদার, মাধবপাশা ইউনিয়ন তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মো. সোহেল সরদার। এ দিকে, গোলাম কিবরিয়া টিপুর আত্মসমর্পণের খবর পেয়ে বরিশাল-৩ আসনের মুলাদী ও বাবুগঞ্জ উপজেলার বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।

‘জয় বাংলা’ স্লোগানের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন শুনানি চলতি সপ্তাহে

‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগানের রায় স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের শুনানি চলতি সপ্তাহে হবে বলে জানিয়েছেন আপিল বিভাগ। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির জন্য এ সময় নির্ধারণ করেন। হাইকোর্টের এ বেঞ্চে সকালে উপস্থিত হয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘এই মামলাটি আজ শুনানির জন্য টপে থাকার কথা ছিল। কিন্তু তা আসেনি। সেজন্য এটি দ্রুত শুনানির আবেদন করছি। বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার এ রায় দেওয়ার অনুরোধ করছি। উত্তরে আপিল বিভাগ বলেন, চলতি সপ্তাহেই হয়ে যাবে।’ ২০২০ সালের ১০ মার্চ জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। বাংলায় দেওয়া ওই রায়ের আদেশের অংশে আদালত বলেন, ‘আমরা ঘোষণা করছি যে “জয় বাংলা” বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে।’ পরে ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দেয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা। হাইকোর্টের দেওয়া এ রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ২ ডিসেম্বর এ তথ্য জানান অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে চট্টগ্রামে বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনার মামলায় আপিল শুনানিতে আসামিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ১১টায় বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। আদালতে আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এর আগে গত ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। সেদিন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজন আসামির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের। বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রায়সহ মামলার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন।