পত্রিকার সার্কুলেশন নিয়ে চরম জালিয়াতি হয়েছে: কামাল আহমেদ

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, পত্রিকার সার্কুলেশন নিয়ে চরম দুর্নীতি হয়েছে। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) তথ্য অনুসারে তালিকাভুক্ত পত্রিকার সার্কুলেশন অনুসারে ঢাকা শহরে ১ কোটি ৫১ লাখ পত্রিকা বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে এ সংখ্যা ১০ লাখও হবে না। সে হিসাবে ১ কোটি ৪১ লাখ পত্রিকা বিক্রির তথ্য একেবারে ভুয়া ও জালিয়াতি। সরকারি হিসাবে মিডিয়াভুক্ত হিসেবে ৬০০টি পত্রিকা সরকারি বিজ্ঞাপন পাচ্ছে। কিন্তু পত্রিকা যারা বিক্রি করেন দুটি হকার সমিতির হিসাব অনুসারে, মাত্র ৫২টি পত্রিকা নিয়মিত বিক্রি হয়। যে পত্রিকা প্রকাশিত হয় না সে পত্রিকা কি কেউ কেনে? এগুলো শুধু সরকারি বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্য দেখানো হয়। দীর্ঘদিন যাবত এ অনিয়ম দুর্নীতি জালিয়াতি হয়ে আসছে। আজ শনিবার (২২ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং তিনি এ কথা বলেন। সারকুলেশনের জালিয়াতি রোধে কোনো সুপারিশ করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল আহমেদ বলেন, পত্রিকার সার্কুলেশন যাচাইয়ে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া পত্রিকা বিক্রির বিল রসিদ যাচাই করারও সুপারিশ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

হাসনাত সারজিসকে শুয়োর বলে চাকরী হারালেন উপস্থাপিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষনেতা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দলোনের প্রধানমুখ হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে শুয়োর বলে চাকরী হারিয়েছেন এখন টিভির নিউজরুম এডিটর ও টেলিভিশন উপস্থাপিকা জেনিসিয়া বর্ণা। সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া ন্যাক্কারজনক ঘটনা, আট বছরের শিশু আছিয়া নিজ বোনের শশুরবাড়িতে গণধর্ষণের স্বীকার হয়ে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। ঘটনার প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমিক ভূমিকায় একটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল ‘এখন টিভি’ সংবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে সরাসরি সম্প্রচারে ছিলো। অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারে থাকা অবস্থায়, কারিগরি ত্রুটির ফলে, স্টুডিও ইসনাইড কনভার্সেশনের একটি অংশ সরাসরি সম্প্রচারে চলে আসে। যেখানে নিউজরুম থেকে একজন জিজ্ঞেস করছিলেন, হাসনাত ও সারজিস মাগুরায় গিয়েছেন কি না। তার প্রতিউত্তরে এখন টিভির উপস্থাপিকা বর্ণা আনকোট অবস্থায় বলেন, এই শুয়োরগুলো গেলেই কি আর না গেলেই কি। মুহুর্তের মধ্যে টিভি ফুটেজটি ভাইরাল হয়ে গেলে এখন টিভির সিইও তুষার আব্দুল্লাহ তড়িঘড়ি করে টিভি উপস্থাপিকা জেনিসিয়া বর্ণাকে চাকরিচ্যুত করেন বলে জানা গিয়েছে। এ বিষয়ে সরাসরি জানার জন্য বর্ণা কিংবা তুষার আব্দুল্লার সঙ্গে এখনো পর্যন্ত যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক মাসুমা মারা গেছেন

বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিক মাসুমা আক্তার মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে মাসুমা আক্তার ইন্তেকাল করেন। তিনি এখন টিভিতে কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে, মাসুমাকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মিরপুরে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গোসলসহ লাশ সংরক্ষণের যাবতীয় কার্যক্রম শেষে নাটোরের গুরুদাসপুর নারায়ণপুরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে রওনা হবেন তার স্বজনরা। সেখানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে মাসুমা আক্তার শ্বশুরবাড়ি কুমিল্লায় যাচ্ছিল। কুমিল্লার নূরজাহান হোটেলের সামনে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মাসুমা ও তার স্বামী আহত হন। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ নিউরো সার্জারি বিভাগের ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার আইসিইউর প্রয়োজন হয়। সেখান থেকে তাকে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। মাসুমা ২০২৪ সালে এখন টিভির রিপোর্টার হিসেবে রাজশাহীতে যোগ দেন। এর আগে দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন বাংলার জনপদ নামের রাজশাহীর একটি অনলাইনে। এখন টিভির রাজশাহীতে কর্মরত হাসান রাজিব বলেন, ঢাকা থেকে মাছুমার মরদেহ গ্রামের বাড়ি নাটোরে গুরুদাসপুর আনা হবে। পরিবার বলছে সেখানে পারিবারিক গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।

স্বাধীন সাংবাদিকতা তৈরি করতে হবে যেন ক্ষমতাকেই প্রশ্ন করে: প্রেস সচিব

নতুন বাংলাদেশে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা চান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘স্বাধীন সাংবাদিকতা তৈরি করতে হবে। যেন সংবাদ ক্ষমতাকেই প্রশ্ন করতে পারে।’ রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘গণমাধ্যমে ফ্যাসিবাদী বয়ান: ফিরে দেখা ১ থেকে ৩৬ জুলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন। প্রেস সচিব বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা তৈরি করতে হবে। যেসব সংবাদ ক্ষমতাকেই প্রশ্ন করতে পারে। সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে সরকার তদন্ত করবে না। করলে অনেকে বলবে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। বেসরকারি উদ্যোগে এ বিষয়ে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে অনেক সাংবাদিক শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন আবার অনেকে ট্রমাটাইজ। সব চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে অনেক গণমাধ্যম ভালো সাংবাদিকতা করেছেন। এর বাইরে অনেক গণমাধ্যম দালালি করেছে। শুধু এক মাস নয়, এর আগে আওয়ামী লীগের পুরোটা সময় ক্ষমতাসীনদের পক্ষে বয়ান তৈরি করেছে অনেক গণমাধ্যম। স্বৈরাচারের হাতকে শক্তিশালী করেছে। শফিকুল আলম বলেন, ১-৩৬ জুলাই গণমাধ্যমের ভূমিকা নথিভুক্ত করা হবে। অনেক গণমাধ্যম শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এরমধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের হত্যার বৈধতা দিয়েছে। ভয়াবহ সাংবাদিকতা হয়েছে। পূর্বাচলের প্লট পাওয়ার জন্য অনেক সাংবাদিক এমন ভূমিকা রেখেছে।বিজ্ঞাপন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা এলে সব পক্ষের সঙ্গেই বসা হবে বলে জানান প্রেস সচিব।

‘ওনাব’-এর নির্বাহী কমিটি ভেঙ্গে এডহক কমিটি গঠন

অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ওনাব) নির্বাহী কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও কার্যকরী করার জন্য শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লতিফুল বারী হামিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নির্বাহী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন গঠিত এডহক কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন মোস্তফা কামাল মজুমদার, যুগ্মআহ্বায়ক লতিফুল বারী হামিম ও সদস্য সচিব হয়েছেন শাহীন চৌধুরী। এডহক কমিটির সদস্যরা হলেন- আলীমুজ্জামান হারুণ, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, আশরাফুল কবির, মো. মোস্তাকিম সরকার, রফিকুল বাসার, অয়ন আহমেদ, মহসিন হোসেন, মাহবুবা ইসলাম কাকলী, সাখাওয়াত হোসেন সজিব ও সৈয়দ আরিফুজ্জামান। সভায় উপস্থিত ছিলেন শাহীন চৌধুরী, আশরাফুল কবির, মোস্তাকিম সরকার, অয়ন আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, মহসিন হোসেন ও রফিকুল বাসার। সভায় আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোস্তফা কামাল মজুমদার ও আলীমুজ্জামান হারুণ।সভায় যত দ্রুত সম্ভব সংগঠনের সদস্য তালিকা চূড়ান্ত করে একটি সাধারণ সভা আহ্বানের প্রস্তাব গৃহীত হয়। সভায় জাতীয় গণমাধ্যম কমিশনের সাথে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয় সাধারণ সম্পাদক শাহীন চৌধুরী সবাইকে অবহিত করেন। এছাড়া সদস্যদের দাবি দাওয়া বাস্তবায়নের জন্য অবিলম্বে তথ্য উপদেষ্টা ও তথ্য সচিবের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠানের প্রস্তাব গৃহীত হয়।

চট্টগ্রাম বেতারের বিশ্ব বেতার দিবস উদযাপন

বেতার ও জলবায়ু পরিবর্তন এই স্লোগানে ১৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ব বেতার দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রামের আয়োজনে বর্ণ্যাঢ্য র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটির আগ্রাবাদ বেতার ভবনে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রামের পরিচালক মো. মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) গণ-যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল হক, দৈনিক আমার দেশের আবাসিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তী সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রামের আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক মোল্লা মো. আবদুল হালিম। নাসরিন ইসলাম ও এহতেশামুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সিনিয়র প্রকৌশলী সুব্রত কুমার দাশ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান ও ফাতেমা আক্তার লিজা। অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা ও আহতদের সমবেদনা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে মো. জিয়া উদ্দীন বলেন, ‘বেতার গণমানুষের কথা বলে। এখনো সাধারণ মানুষের কাছে বেতারের জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের যে ঝুঁকির কথা বলা হচ্ছে, তাতে চট্টগ্রামও রয়েছে। ঝুঁকি মোকাবেলায় সকলকে সচেতন হতে হবে। বাংলাদেশ বেতার দেশের প্রাচীন ও বৃহৎ একটি গণমাধ্যম। একটি সচেতন ও সুশিক্ষিত জাতি গঠনে বাংলাদেশ বেতারের রয়েছে অসামান্য ভূমিকা। তারুণ্যের যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, সেটিকে এগিয়ে নিতে বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বেতারের নানা আয়োজন

বেতার ও জলবায়ু পরিবর্তন এই স্লোগানে ১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার পালিত হবে বিশ্ব বেতার দিবস ২০২৫। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালন নয়টা থেকে বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্র নানা আয়োজন করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বর্ণাঢ্য র‌্যালি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন। সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রামের পরিচালক মো. মাহফুজুল হক। অনুষ্ঠানে শিল্পী, কলাকুশলী, সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

অনলাইন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও প্রকাশকদের সাথে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত

অনলাইন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও প্রকাশকদের সাথে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ রবিবার বেলা ১১টায়। রাজধানীর সার্কিট হাউজ রোডের তথ্য ভবনে সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ। সভায় গণমাধ্যমকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তুনিষ্ঠ করতে অনলাইন গণমাধ্যমে সরকারি বিজ্ঞাপন প্রদানের লক্ষ্যে নীতিমালা সংশোধন, অনলাইন গণমাধ্যম বাৎসরিক নবায়ন সিস্টেম বাতিল, অনলাইন গণমাধ্যমে সংবাদকর্মীদের চাকরির সুরক্ষায় নীতিমালা প্রণয়ন, সম্প্রচার আইন ও অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার আলোকে স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠনের গুরুত্বারোপ করে বক্তব্য রাখেন বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোরের সম্পাদক লুৎফর রহমান হিমেল, জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোরের ভারপ্রপ্ত সম্পাদক কেএম জিয়াউল হক, ঢাকাওয়াচ টোয়েন্টিফোরের সম্পাদক সাখাওয়াত সজীব, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান বার্তা সম্পাদক জাহিদুল কবীর, ঢাকামেইলের প্রধান বার্তা সম্পাদক হারুন জামিল, দ্য রিপোর্ট টোয়েন্টিফোরের সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, ওনাবের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চোধুরী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লতিফুল বারী হামিম। সভায় কমিশনের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেন বৈঠকে উঠে আসা সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে সুপারিশ করবেন। প্রসঙ্গত, দেশের গণমাধ্যমকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তুনিষ্ঠ করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব করার লক্ষ্যে ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন’ গঠন করে অন্তবর্তী সরকার।

একক গণমাধ্যমে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সর্বোচ্চ ১৫ জন

একটি গণমাধ্যমে ৩০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১৫ জন সংবাদকর্মী প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড পাবেন বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে এমন প্রস্তাব রেখে একটি সুপারিশমালা তৈরি করেছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর। এই সুপারিশমালা নিয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি হয়েছে। তাদের কাজ হবে বিদ্যমান নীতিমালাকে পর্যালোচনা করা যাতে গণমাধ্যমকর্মীরা আরও সহজভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন।’ উপপ্রেস সচিব বলেন, ‘২০২২ সালের নীতিমালার বেশকিছু বিষয়ে সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে। যেমন আগের নীতিমালার প্রথম ধারায় বলা হয়েছিল, অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড পেতে হলে সরকারের উন্নয়ন-সাফল্য তুলে ধরতে হবে। কার্ডধারীরা বিদেশে যেতে হলে প্রধান তথ্য কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। এবার এ ধরনের ধারা বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। আগে কোনো প্রকার নিয়ম না মেনেই ফ্রিল্যান্সিং সাংবাদিকদের নামে কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। আবার এমন গণমাধ্যম আছে যাদের ৩০-৩৫টি কার্ড ইস্যু করা হয়েছে, কিন্তু তাদের সে রকম তৎপরতা চোখে পড়েনি। লেখালেখিতে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে কার্ড পেতে পারবেন। মফস্বলের সংবাদকর্মীদেরও কীভাবে স্থানীয়ভাবে কার্ড দেওয়া যায়, সে ব্যাপারেও সুপারিশ থাকবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘যদি কেউ কার্ড না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন, তাদের আপিলেরও ব্যবস্থা থাকবে। নতুন নীতিমালায় অস্থায়ী-স্থায়ী কোনো কার্ড থাকবে না। সব কার্ডের মেয়াদ হবে তিন বছর। সার্কুলেশনের ভিত্তিতে কার্ড ইস্যুর নিয়ম তুলে দেওয়া হবে। সরকার নিবন্ধিত সব গণমাধ্যমের কর্মীরাই আবেদন করতে পারবেন।’ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব আহমদ ফয়েজ, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি উপস্থিত ছিলেন।

সাবের হোসেনের অফিসের সামনে ভোরের কাগজের কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচী

দৈনিক ভোরের কাগজের কার্যালয় খুলে দেওয়া ও পত্রিকার প্রকাশনা অব্যাহত রাখাসহ বকেয়া পরিশোধের দাবিতে ঢাকার কাকরাইলে কর্ণফুলী গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এইচআর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সংবাদকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে তাদের এই কর্মসূচীতে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারাও অংশ নিয়ে ভোরের কাগজের বন্ধ কার্যালয় খুলে দেওয়ার দাবি জানান। ঢাকার মালিবাগে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে এক নোটিস টানিয়ে ৩৩ বছরের পুরনো এ সংবাদপত্রটির বন্ধ ঘোষণা করা হয় গত সোমবার। নোটিসে বলা হয়, ‘ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬’-এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যা ২০-০১-২০২৫ ইং তারিখ থেকে কার্যকর হবে।’ মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন দাবি মেনে নিতে মালিকপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেধে দেন। অন্যথায় মালিক পক্ষের অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। ‘ভোরের কাগজ’ কর্ণফুলী গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। গ্রুপটির প্রধান কার্যালয় কাকরাইলের এইচআর ভবনে। পত্রিকার মালিক সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরে এইচআর ভবনের সামনের অবস্থান কর্মসূচী থেকে প্রতিষ্ঠানটির সংবাদকর্মীরা ‘ন্যায্য পাওনাসহ’ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের পেছনের ‘ষড়যন্ত্রকারীদের’ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এ সময় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই, অন্যায়তো অনেক করেছেন। গত ১৫ বছর ধরে আপনার যে অন্যায় করছেন, আমরা সেগুলো টেনে আনতে চাই না। জুলাই আন্দোলন বিপ্লবীদের আপনারা সন্ত্রাসী বানানোর চেষ্টা করেছেন। আমরা সেই কথাগুলো ভুলে যেতে চেয়েছিলাম।’ ‘আমরা চেয়েছিলাম নতুন বিপ্লবী সরকারের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আদর্শ গণমাধ্যম হয়ে উঠবেন। কিন্তু, আপনারা সাংবাদিকদের পাওনা না বুঝিয়ে দিয়ে অফিস বন্ধ করে দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কোন গণমাধ্যম বন্ধ করতে চাই না। আমরা চাই প্রত্যেকটা গণমাধ্যম থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরিয়ে দিন৷ সেই কাজটি না করে সাবের হোসেন পত্রিকার প্রায় ১ হাজার সংবাদকর্মীর পাওনা না দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন।’ সাবের হোসেন চৌধুরীকে উদ্দেশ করে করে ডিইউজের সভাপতি বলেন, ‘আপনারা গণভবনে দিয়ে দেখুন। শেখ হাসিনার অন্যায়ের জন্য সেখানকার প্রত্যেকটি ইট মানুষ খুলে নিয়ে গেছে। শুধু এইচআর ভবন নয়, আপনার প্রত্যেকটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ইট এ দেশের জনগণ খুলে নিয়ে যাবে।’ ‘আপনারা ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে পত্রিকাটি খুলে দিন। তাদের দেনাপাওনা বুঝিয়ে দিন৷ তা না হলে সামনের দিনে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিবো।’ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, ‘এভাবে বিনা নোটিশে একটা পত্রিকা অফিস বন্ধ করা যায় না। আপনারা জানেন দীর্ঘ দিন এ দেশে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার গণমাধ্যমে ওপর নিপিড়ন চালিয়েছে। সেই নিপিড়ন থেকে আমরা মাত্র বেরিয়ে এসেছি। এখন আমাদের কাজের স্বাধীনতা, লেখার এবং বাকস্বাধীনতার সুযোগ এসেছে। ঠিক সেই মুহুর্তে একজন ফ্যাসিস্ট সাবের হোসেন এভাবে তার পত্রিকাটি বন্ধ করে দিয়েছে। এটা খুবই ন্যাক্কারজনক।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাবের হোসেন চৌধুরীকে বলতে চাই, আপনি দীর্ঘ দিন এই পত্রিকাকে ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন। সংবাদপত্রের আইন অনুযায়ী পত্রিকার সব কর্মীর পাওনা শোধ করে দিন। আর যদি পাওনা শোধ না করেন, তাহলে এখানে আপনার কোন ব্যবসায়-বাণিজ্য চলতে দেওয়া হবে না।’ এ সময় ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান, সাবেক সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, নির্বাহী সদস্য আব্দুল্লাহ মজুমদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক আবু বক্কর মিয়া, ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন, সাহিত্য সম্পাদক কবি সালেক নাছির উদ্দিন, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক মুকুল শাহরিয়ারসহ সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা

দৈনিক ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) মালিকপক্ষ একটি নোটিশের মাধ্যমে পত্রিকাটির প্রধান কার্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেয়। ভোরের কাগজের দায়িত্বশীল একাধিক সংবাদকর্মীও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধান কার্যালয় বন্ধ হওয়া মানেই পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যাওয়া। জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরেই ভোরের কাগজের কয়েকজন সংবাদকর্মী অষ্টম ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন দাবি এবং তাদের নিয়োগের তারিখ থেকে বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য আন্দোলন করছিলেন। রোববার (১৯ জানুয়ারি) সংবাদকর্মীদের একটি অংশ সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা এবং বহিরাগতদের নিয়ে ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার মালিকপক্ষ নোটিশটি জারি করে। নোটিশে বলা হয়েছে, ‘শ্রম আইন ২০০৬’-এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ ভোরের কাগজের একজন সিনিয়র সাংবাদিক জানান, এই প্রতিষ্ঠানে কারও বেতন বকেয়া নেই। তবে, সংবাদকর্মীদের একটি অংশ অষ্টম ওয়েজ বোর্ডে বেতন পান। কিন্তু, যাদের কনস্যুলেটেড হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারা ওয়েজ বোর্ড দাবি করছেন। এটি নিয়েই সমস্যা তৈরি হয়েছে।

আরও ১৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব, কারা আছেন তালিকায়?

আরও ১৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একইসঙ্গে তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে সংস্থাটি। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তলব করা সাংবাদিকরা হলেন এপির ব্যুরো চিফ জুলহাস আলম, ইউএনবির উপদেষ্টা সম্পাদক ফরিদ হোসেন, বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাহজাহান সরদার, ঢাকা ট্রিবিউনের স্টাফ রিপোর্টার আলী আসিফ শাওন, ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক (সাবেক প্রেস মিনিস্টার) নাদিম কাদির, ডিবিসি নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার রাজীব ঘোষ, ডেইলি পিপলস লাইফের (সাবেক বাসস) সম্পাদক মো. আজিজুল হক ভুঁইয়া, বাসসের স্পোর্টস ইনচার্জ স্বপন বসু, ডি‌বিসি নিউজের স্টাফ রিপোর্টার তাহমিদা সাদেক জেসি, চ্যানেল আইয়ের সিনিয়র রিপোর্টার নিলাদ্রি শেখর কুন্ডু, বাংলা টিভি সাবেক (দেশ টিভি) নজরুল কবীর, গাজী টিভির বার্তা সম্পাদক ইকবাল করিম নিশান, গ্রিন টিভির সাজু রহমান, বাংলাভিশনের (সাবেক) আমিনুর রশীদ। ‌ বিএফআইইউর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে।’ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের অপকর্মের সহযোগী ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এমন সন্দেহে বেশকিছু পেশাজীবীদের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করে বিএফআইইউ। তলব করা হিসাবগুলোতে সন্দেহজনক বা অস্বাভাবিক লেনদেন কিংবা অর্থপাচার বা অনিয়মের কোনো প্রমাণ মিললে এসব হিসাবের তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তদন্ত করতে দিয়ে থাকে বিএফআইইউ।

মা হারালেন সাংবাদিক শেখ শাফায়াত হোসেন

ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এর কার্যনির্বাহী কমিটির আইসিটি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক এবং সকাল সন্ধ্যার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শেখ শাফায়াত হোসেনের মা সুফিয়া কেরামত (৫৭) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে খুলনার দৌলতপুর থানার দেয়ানা গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। সুফিয়া কেরামত দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত থাকা অবস্থায় প্যারালাইজড হয়ে ছয়মাসেরও বেশি সময় ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন। তাঁর জন্ম ১৯৬৭ সালের ২২ মার্চ । মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে এবং দুই কন্যাসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আজ বাদ জোহর খুলনার গোয়ালখালি কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। শেখ শাফায়াত হোসেনের মায়ের মৃত্যুতে ইআরএফ এর পক্ষ থেকে সংগঠনের সভাপতি দৌলত আকতার মালা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ইআরএফ নেতৃবন্দ এক শোক বার্তায় শাফায়াত হোসেনের মায়ের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতা জানান।

ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সম্পাদক বাদশা

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় নবনির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র সাংবাদিক আবু তাহের। ক্র্যাবের সিনিয়র সদস্য আহমদ আতিক ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব। নির্বাচনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য পদে মোট প্রার্থী ছিলেন ২৫ জন। সভাপতি পদে ১২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের মির্জা মেহেদী তমাল। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী যুগান্তরের মাহবুব আলম লাবলু পেয়েছেন ৯৫ ভোট। এ ছাড়া দেশ রুপান্তরের সরোয়ার আলম পেয়েছেন ৪৯ ভোট এবং দৈনিক পূর্বকোণের আসাদুজ্জামান বিকু পেয়েছেন ১২ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে এম এম বাদশা ১৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এস এম নুরুজ্জামান পেয়েছেন ১০৪ ভোট। সহ-সভাপতি পদে ১৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন উমর ফারুক আলহাদী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিজানুর রহমান (মাসুম মিজান) পেয়েছেন ১২০ ভোট। যুগ্ম সম্পাদক পদে নিয়াজ আহমেদ লাবু ১৬৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুল লতিফ রানা ১০২ ভোট পেয়েছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ১৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সাজ্জাদ মাহমুদ খান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাইফ বাবলু পেয়েছেন ৯৪ ভোট এবং খন্দকার হানিফ রাজা পেয়েছেন ২৯ ভোট। কল্যাণ সম্পাদক পদে ১৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মো. মাহমুদুল হাসান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ কালিমউল্ল্যাহ পেয়েছেন ১১৬ ভোট। কার্যনির্বাহী সদস্যের তিনটি পদে ২০৩ ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছেন জিয়া খান, ১৮৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন ইমরান রহমান ও ৭৫ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন মোহাম্মদ জাকারিয়া। এ ছাড়া এবার দপ্তর সম্পাদক পদে ওয়াসিম সিদ্দিকী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে নিহাল হাসনাইন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রকিবুল ইসলাম মানিক, প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক পদে মো. জসীম উদ্দীন এবং আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে হাবিবুল্লাহ মিজান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। নির্বাচনে মোট ভোটার ২৯৮ জন। এর মধ্যে ২৮৬ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

ইরাবের সভাপতি আকতারুজ্জামান, সম্পাদক সেলিম আহমেদ

শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইরাব) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার আকতারুজ্জামান। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন প্রতিদিনের বাংলাদেশের নিজস্ব প্রতিবেদক সেলিম আহমেদ। রাজধানীর একটি হোটেলে ১১ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন করেন সিনিয়র সাংবাদিক আজিজুল পারভেজ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— সহ-সভাপতি পদে সংবাদের সিনিয়র রিপোর্টার রাকিব উদ্দিন, যুগ্ম-সম্পাদক পদে আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার রাহুল শর্মা, সাংগঠনিক সম্পাদক ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক মুছা মল্লিক, অর্থ সম্পাদক সময় টিভির সিনিয়র রিপোর্টার আতাউর রহমান, দফতর সম্পাদক পদে বিডি নিউজের রুম্মান তুর্য। এছাড়া কমিটিতে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে রয়েছেন ভোরের কাগজের সিনিয়র রিপোর্টার অভিজিৎ ভট্টাচার্য, বাহান্ন নিউজ সম্পাদক বিভাস বাড়ৈ, সংবাদ প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার আবদুল হাই তুহিন ও ব্রেকিং নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার এসএম আতিক। এর আগে, সংগঠনের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি অভিজিৎ ভট্টাচার্য।

আরো ২১ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব

আরো ২১ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একইসাথে তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে সংস্থাটি। রোববার (৫ জানুয়ারি) বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। হিসাব তলব করা সাংবাদিকরা হ‌লেন দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, বাসসের সিনিয়র রিপোর্টার শাহনাজ সিদ্দিকী, ডিবিসি নিউজের বার্তা প্রধান প্রণব সাহা, এসএ টিভির হেড অব নিউজ মাহমুদ আল ফয়সাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি হাসান জাহিদ তুষার, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির বার্তা প্রধান মামুন আবদুল্লাহ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এম শামসুর রহমান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট অনিমেষ কর, সমকালের সাংবাদিক রামা প্রসাদ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মো. রুহুল আমিন রাসেল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের উপ-সম্পাদক মাহমুদ হাসান, দৈনিক খোলা কাগজের সিনিয়র রিপোর্টার জাফর আহমেদ, দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির সম্পাদক এমজি কিবরিয়া চৌধুরী, আমাদের সময় ডটকম ও আমাদের অর্থনীতির চিফ রিপোর্টার দীপক চৌধুরী, একুশে টিভির হেড অব ইনপুট অখিল কুমার পোদ্দার, একাত্তর টিভির সাংবাদিক ঝুমুর বারী, একুশে সংবাদ ডটকমের সম্পাদক জিয়াদুর রহমান, দৈনিক কালবেলার বিশেষ প্রতিনিধি আঙ্গুর নাহার মন্টি, মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথী, এসএ টিভির নির্বাহী পরিচালক রাশেদ কাঞ্চন ও একুশে টিভির সাংবাদিক রাশেদ চৌধুরী। বিএফআইইউর নির্দেশনায় হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে। ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এরপর নতুন অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের অপকর্মের সহযোগী ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এমন সন্দেহে বেশকিছু পেশাজীবীদের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করে বিএফআইইউ। তলব করা হিসাবগুলোতে সন্দেহজনক বা অস্বাভাবিক লেনদেন কিংবা অর্থপাচার বা অনিয়মের কোন প্রমাণ মিললে এসব হিসাবের তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তদন্ত করতে দিয়ে থাকে বিএফআইইউ।

মুন্নী সাহার ১৩৪ কোটি টাকার সন্দেহভাজন লেনদেন, অনুসন্ধানে দুদক

টেলিভিশন উপস্থাপক ও সাংবাদিক মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাবে ১৩৪ কোটি টাকার সন্দেহভাজন লেনদেনসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালানোর পর পর মুন্নী সাহার আমানতের মধ্যে ১২০ কোটি টাকাই উত্তোলন করা হয়েছে। স্থগিত করা হিসাবে এখন স্থিতি আছে মাত্র ১৪ কোটি টাকা। ১৭টি ব্যাংকের মাধ্যমে এ লেনদেন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওয়ান ব্যাংকের মাধ্যমে। বিধিবহির্ভূত লেনদেনের অভিযোগে মুন্নী সাহার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ইতোমধ্যে জব্দ করেছে বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ)। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বেসরকারি ওয়ান ব্যাংকের কারওয়ানবাজার শাখায় মুন্নী সাহার স্বামী কবির হোসেনের মালিকানাধীন এমএস প্রমোশনের নামে ২০১৭ সালের ২ মে একটি হিসাব খোলা হয়। যেখানে নমিনি হিসেবে নাম রয়েছে মুন্নী সাহার। অন্যদিকে, ব্যাংকটির চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখায় জনৈক মাহফুজুল হকের মালিকানায় প্রাইম ট্রেডার্সের নামে ২০০৪ সালের ২১ জুলাই একটি হিসাব খোলা হয়। দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকটি থেকে ৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঋণ নেওয়া হয়। ঋণ পরিশোধ না করে বারবার সুদ মওকুফ ও নবায়ন করেছে ব্যাংকটি। এর মধ্যে কেবল ২০১৭ সালেই সুদ মওকুফ করা হয় ২৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার। যদিও প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে পারস্পরিক ব্যবসায়ীক কোন সম্পর্ক নেই। অথচ বিভিন্ন তারিখে হিসাব দুটির মধ্যে বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে। ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের একটি উদাহরণ তুলে ধরে বলা হয়েছে, ‘ওই দিন আলাদা তিনটি চেকের মাধ্যমে এমএস প্রমোশনের হিসাব থেকে প্রাইম ট্রেডার্সের হিসাবে ৫৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা স্থানান্তর করা হয়, যা সন্দেহজনক। এই অর্থ পাচার হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে বিএফআইইউ।’ গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ৬ অক্টোবর বিএফআইইউ মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাব তলব করে।ব্যাংক হিসাবের বাইরে গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোড এলাকায় শান্তিনিকেতনে ১৬৫, রোজাগ্রীণে তার একটি ডুপ্লেক্স বাড়ির সন্ধান মিলেছে। ভোরের কাগজ দিয়ে মুন্নী সাহার সাংবাদিকতা শুরু। সেখান থেকে তিনি যান একুশে টেলিভিশনে। এরপর যোগ দেন এটিএন বাংলায়। মুন্নী সাহা বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি টেলিভিশনের পর্দায় উপস্থাপন করেছেন। বিশেষ করে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশের ব্যাপারে তার ব্যাপক ভূমিকা ছিল। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার (১৭) নিহত হওয়ার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। গত ২২ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় ওই মামলা করেন নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মো. কামরুল ইসলাম। সেই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ একাধিক মন্ত্রী-সাংসদ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সদস্য এবং পুলিশ ও র‍্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে যে সাত সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন মুন্নী সাহা।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্যপদ স্থগিত হলো সিনিয়র ৫ সাংবাদিকের

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে গণহত্যার উসকানিদাতা পাঁচজন সাংবাদিকের সদস্য পদ স্থগিত করেছে জাতীয় প্রেসক্লাব। গত শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে ব্যবস্থাপনা সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানিয়েছে প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ। সদস্যপদ স্থগিত হওয়া পাঁচজন সিনিয়র সাংবাদিক হলেন, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাহজাহান সরদার, গ্লোবাল টেলিভিশনের সাবেক সিইও ও বতর্মানে ঢাকা জার্নালের এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, দি সাউথ এশিয়ান টাইমসের সম্পাদক ও প্রকাশক দীপক কুমার আচার্য ও অ্যানার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেন। পাঁচজন সাংবাদিকের সদস্য পদ স্থগিত বিষয়ে হাসান হাফিজ বলেন, প্রথমে স্থগিত করা হয়েছে। ধীরে-ধীরে বাতিল হয়ে যাবে।

১২ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব

দেশের ১২ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একইসাথে তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ‌্যও দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে সংস্থাটি। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। হিসাব তলব করা সাংবা‌দিকরা হ‌লেন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বাদল, ঢাকা টাইমসের সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন, বাংলাদেশ পোস্টের বিশেষ প্রতিনিধি নুরুল ইসলাম হাসিব, নাগরিক টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক দ্বীপ আজাদ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসসের সাবেক প্রধান বার্তা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, উপ-প্রদান বার্তা সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সাবেক মহাপরিচালক জাফর ওয়াজিদ, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি হোসনে আরা মমতা ইসলাম সোমা, দৈনিক জনকণ্ঠের ডেপুটি এডিটর ওবাইদুল কবীর মোল্লা, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত ও গ্লোবাল টিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশ‌তিয়াক রেজা। বিএফআইইউর নির্দেশনায় হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে। ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের অপকর্মের সহযোগী ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এমন সন্দেহে বেশকিছু পেশাজীবীদের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ ক‌রে বিএফআইইউ। তলব ও জব্দ করা হিসাবগু‌লো‌তে সন্দেহজনক বা অস্বাভাবিক লেনদেন কিংবা অর্থপাচার বা অনিয়মের কোন প্রমাণ মিললে এসব হিসাবের তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তদন্ত করতে দিয়ে থাকে বিএফআইইউ।

চারণ সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা আয়োজন

রংপুরের প্রথম একুশে পদকপ্রাপ্ত, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, ‘চারণ সাংবাদিক’ মোনাজাতউদ্দিনের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর মহানগর এবং তার জন্মস্থান গঙ্গাচড়ায় স্মরণসভা, দোয়া মাহফিল, বিকেলে সিটি প্রেসক্লাব ও প্রেসক্লাব রংপুরে দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। চারণ সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিন ১৯৯৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ছিলেন দৈনিক জনকণ্ঠের উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিনিধি। পত্রিকার জন্য সরেজমিন প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহের জন্য গাইবান্ধায় ছুটে গিয়েছিলেন। সেখানে ফুলছড়ি উপজেলার যমুনা নদীতে কালাসোনার ড্রেজিং পয়েন্ট থেকে ফেরিযোগে নদী পারের সময় পা পিছলে নদীতে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার একদিন পর ৩০ ডিসেম্বর রংপুর শহরের মুন্সিপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে। তিনি ‘সত্যি পা পিছলে পড়েছিলেন’ নাকি ‘কোনো ষড়যন্ত্রে মারা যান’ এ নিয়ে প্রশ্ন ছিল। তার মৃত্যুর পর তৎকালীন বিএনপি সরকারের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। দীর্ঘ ২৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি সেই তদন্ত প্রতিবেদন। খুঁজে পাওয়া যায়নি কোনো কূল-কিনারা। মোনাজাতউদ্দিন তিন দশকের কর্মজীবনে উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশের পথে-প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে মানুষের জন্য সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। মফস্বল সাংবাদিকতার দিকপাল চারণ সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিন একজন সফল গবেষকও ছিলেন। তার লেখনিতে উঠে এসেছিল গ্রাম-বাংলার অজানা অনেক কথা। সততা, ধৈর্য আর অসীম সাহসিকতাকে পুঁজি করে তিনি সাংবাদিকতায় নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। যার কারণে তার লেখনিতে পাঠকরা ছিল সবসময় জাগরিত সমাজের একাংশ। ছাত্র থাকাকালীন বগুড়ার সাপ্তাহিক বুলেটিন পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশায় আসেন তিনি। ১৯৬২ সালে স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে ঢাকার কাগজ দৈনিক আওয়াজ এবং ১৯৬৬ সালে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। স্বাধীনতার পর তিনি নিজেই দৈনিক রংপুর নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। আর্থিক সমস্যার কারণে সেটি থমকে যায়। এরপর ১৯৭৬ সাল থেকে মোনাজাত উদ্দিন পূর্বদেশ ও দৈনিক সংবাদে প্রায় ২০ বছর কাজ করেন।তার কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে ‘দৈনিক সংবাদ’-এর উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিনিধি হিসেবে (প্রায় দেড় যুগ)। তিনি ১৯৯৫ সালে দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় যোগ দেন। মৃত্যুর শেষদিন পর্যন্ত জনকণ্ঠই ছিল তার ঠিকানা। তিনি রংপুর শহরের কেরানীপাড়ার বাসা থেকে নানা অভাব-অনটনের মধ্য দিয়েও সাংবাদিকতা চালিয়ে যান। তিনি শুধু সাংবাদিকতায় ব্যস্ত ছিলেন না। ব্যস্ততা ছিল নাটক, গল্প, কবিতা আর ছড়া লেখাতেও। বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘করিম মণ্ডলের বৈঠকখানা’র পাণ্ডুলিপি লেখার পাশাপাশি ভালো গীতিকার হিসেবেও তার ছিল বেশ সুনাম। তার রচিত একমাত্র নাটক ‌‘রাজা কাহিনি’। এছাড়া মৃত্যুর আগে ও পরে মোনাজাতউদ্দিনের লেখা বেশ কয়েকটি গ্রন্থ প্রকাশ পায়। এর মধ্যে রয়েছে- সংবাদের নেপথ্য, পথ থেকে পথে, নিজস্ব রিপোর্ট, কাগজে মানুষেরা, নরনারী, শাহ আলম ও মজিবের কাহিনি, পায়রাবন্দের শেকড় সংবাদ, ছোট ছোট গল্প, কানসোনার মুখ, লক্ষ্মীটারী, চিলমারীর এক যুগ, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও মোনাজাতের শেষ লেখা ও শেষ দেখা ইত্যাদি। সাংবাদিকতায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৪ সালে সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরী স্মৃতি পদক, দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত ‘মানুষ ও সমাজ’ প্রতিবেদনের জন্য বাংলা ১৩৯৩ সালে ফিলিপস পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স পুরস্কার, ১৯৯৫ সালে অশোকা ফেলোশিপ পান তিনি। ১৯৯৭ সালে গণমানুষের সাংবাদিক হিসেবে তিনি মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক পান। মফস্বল সাংবাদিকতায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকা দেশবরেণ্য এই সাংবাদিকের জন্ম হয়েছিল রংপুরে। ১৯৪৫ সালের ১৮ জুন রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা মৌলভী আলীম উদ্দীন আহমেদ আর মা মতিজান নেছা। মোনাজাতউদ্দিন কৈলাশ রঞ্জন স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করে ভর্তি হন কারমাইকেল কলেজে। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এ সময় বাবাকে হারিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। পরে প্রাইভেটে পরীক্ষা দিয়ে বিএ পাস করেন। সেখান থেকেই সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে সমাজে সত্যের আলো তুলে ধরেছেন। মোনাজাতউদ্দিন বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের একটি পরিচিত নাম। তিনি ছিলেন তৃণমূল মানুষের সংবাদকর্মী, ছিলেন জনগণের সাংবাদিক। খবরের অন্তরালে যেসব খবর লুকিয়ে থাকে সেসব তথ্যানুসন্ধান এবং রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে তিনি নতুন মাত্রা যোগ করেছিলেন দেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে।কর্মসূচি সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকীতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে আজ (২৯ ডিসেম্বর) কবর জিয়ারত, বিশেষ দোয়া মাহফিল ও এতিম শিশুদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মরহুমের মাগফেরাত কামনায় সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তার স্ত্রী নাসিমা মোনাজাত ও দুই মেয়ে ডা. চৈতি ও ডা. সিঁথি। মোনাজাতউদ্দিনের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সিটি প্রেসক্লাব রংপুরের উদ্যোগে বাদ আছর ক্লাব কার্যালয়ে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে রংপুর প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিনের স্মরণে স্থানীয় মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজনসহ গঙ্গাচড়ায় সাংবাদিক আব্দুল মজিদ-মোনাজাতউদ্দিন স্মৃতি সংসদ দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

ইআরএফের নতুন সভাপতি মালা, সম্পাদক আবুল কাশেম

অর্থ ও বাণিজ্যবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ‌্য ফাইনা‌ন্সিয়াল এক্সপ্রেসের বিশেষ প্রতিনিধি দৌলত আকতার মালা। আর নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আরেক ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের বিশেষ প্রতিনিধি আবুল কাশেম। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয়ে দ্বিবার্ষিক সভা ও ২০২৫-২৬ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরে নির্বাচন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হাসান হা‌ফিজ ফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনে ইআরএফের ২১৪ ভোটারের মধ্যে ১৯৭ জন ভোট দিয়েছেন। দৌলত আকতার মালা ১১৪ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দ্য ডেইলি স্টারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা পেয়েছেন ৮২ ভোট। ১০১ ভোট পেয়ে সহ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন নয়া দিগন্তের বি‌শেষ আশরাফুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাজী আজিজুল ইসলাম ৭৫ ভোট, ইআরএফের জ্যেষ্ঠ সদস্য সিরাজুল ইসলাম কা‌দির পেয়েছেন ২১ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে আবুল কাশেম পেয়েছেন ৯৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দ্য ডেইলি অবজারভারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মো. মিজানুর রহমান পেয়েছেন ৪৮ ভোট। এ ছাড়া চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি রিজভী নেওয়াজ পেয়েছেন ৪৩ ভোট এবং বাংলা ভিশনের বিজনেস এডিটর জিয়াউল হক সবুজ পেয়েছেন ৬ ভোট। সহ সাধারণ সম্পাদক পদে বাংলাদেশ প্রতিদিনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মানিক মুনতা‌শির ও অর্থ সম্পাদক পদে দৈনিক বর্তমানের আমিনুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন। তথ‌্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি সম্পাদক শেখ শাফায়াত ‌হো‌সেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এ ছাড়া চার সদস্য পদে নিউ এজের বিশেষ প্রতিনিধি এএসএম মঈনুল হক, ইআরএফের জ্যেষ্ঠ সদস্য কায়েস মোহাম্মদ সোহেল, আজকালের খবরের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মো. জা‌কির হো‌সেন এবং জা‌গো নিউজের বিশেষ প্রতিনিধি ইব্রাহিম হো‌সেন অভি নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে সদস্য পদে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন এএসএম মঈনুল হক। তিনি পেয়েছেন ১২৭ ভোট। নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডে সদস্য ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুইয়া ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবদাল আহম্মেদ। নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে ২০২৩-২৪ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা হয়।

চীন ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমের যোগাযোগ জোরদারে নানা আয়োজন

চীন ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে দুই দেশের মধ্যে গণমাধ্যমের যোগাযোগ ও বন্ধুত্ব আরও জোরদার করতে ঢাকায় ‘বালাদেশ-চায়না আপন মিডিয়া ক্লাবের লোগো উন্মোচনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশের জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে তিনটি সেশনে পৃথক তিনটি অনুষ্ঠান করেছে চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি) বাংলাদেশ ব্যুরো। দিনের শুরুতে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ক্লাবের লোগো উন্মোচন করেন। এ ছাড়া, জাতীয় প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি ও বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে সিএমজি। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে চীনের গল্প আরও বেশি করে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের চীন সম্পর্কে জানা দরকার। আর এই জায়গায় মূল ভূমিকা রাখতে পারে সিএমজি।’ গেল কয়েক দশকে চীনের অভাবনীয় উন্নতি, চীনের আধুনিক প্রযুক্তি, বাংলাদেশে চীনা কোম্পানির বিনিয়োগ সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য বাংলাদেশি মিডিয়ার তুলে ধরা উচিত বলেও জানান শফিকুল আলম। ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক অব্যাহকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদানের ইতিহাস হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিস্তৃত। জাতি, বিশ্বাস ও ভাষার স্বাতন্ত্র্য সত্ত্বেও আমরা সবসময় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, সম্প্রীতি ও পারস্পরিক লাভজনক সহযোগিতা বজায় রেখেছি।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এএসএম জাহীদ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চিফ রিপোর্টার মুরসালিন নোমানি, চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লি শাওফেং, সিএমজির বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়ে। এই উদ্যোগের সফলতা প্রত্যাশা করে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। দ্বিতীয় অনুষ্ঠানে বিকালে একই ভেন্যুতে ‘চায়না থ্রু লিটারেচার’ শীর্ষক রাইটার্স ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রেস ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। তিনি চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের আরও বেশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আমাদের অনেক কিছু নিয়ে কাজ করার সুযোগ আছে। বাংলাদেশিদের কথা মাথায় রেখে চীনের কুনমিংয়ে হেলথ সার্ভিস ও পর্যটন সার্ভিস গড়ে তুললে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন দেশে যায়। চীনের সঙ্গে চিকিৎসাক্ষেত্রে আরও সম্পর্ক উন্নত করতে পারি আমরা।’ লেখক-প্রকাশকদের নিয়ে অনুষ্ঠানে লি শাওফেং বলেন, ‘চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন ও ঐতিহ্য চর্চার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক বিনিময় আরও গভীর হবে।’ ফোরামে বাংলাদেশের লেখক, প্রকাশক ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে চীন বিষয়ক বইয়ের তিনজন লেখককে বিশেষ সম্মাননা ও ক্রেস্ট দেয়া হয়। এ সময় লেখক ও সাংবাদিক মাহবুব হাসান, আবদুল হাই শিকদার, জাকির আবুজাফর চীন ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ স্থাপনে দুই দেশের লেখকদের মধ্যে বিনিময়, পর্যটন, কর্মশালা ও অনুষ্ঠান আয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মিট দ্য অডিয়েন্স’ শীর্ষক আরেকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সিএমজি বাংলা। ‘মিট দ্য অডিয়েন্স’ নামে এই অনুষ্ঠানে সিএমজির দর্শক, শ্রোতা, পাঠক ও ফ্যানদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ করে দেওয়া হয়। সিএমজির বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়েসহ গণমাধ্যমটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উপস্থাপকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকরা সিএমজির বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাদের মতামত ও পরামর্শ জানান। এ সময় গণমাধ্যমটির দর্শক, শ্রোতা ও পাঠকরা জানান, সিএমজি বাংলার অনুষ্ঠান দেখে তারা চীন সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য জানতে পেরেছেন এবং অনুপ্রাণিত হয়েছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিএমজি বাংলার কর্মকর্তারাও দর্শকদের অভিমত শুনে ভবিষ্যতে আরও ভাল অনুষ্ঠান তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন। এ ছাড়া, অনুষ্ঠানে চায়না মিডিয়া গ্রুপের মিডিয়া সহযোগি আরটিভি, দীপ্তটিভি, বাংলাভিশন, রেডিও টুডের উচ্চপস্থ কর্মকর্তা ও দর্শকরাও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কুইজ ও র‌্যাফেলে ড্র অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে মোবাইল ফোন, স্মার্ট ওয়াচসহ বিভিন্ন পুরষ্কার তুলেন দেন অতিথিরা। এর আগে সিএমজি ঢাকা স্টেশনের বার্তা সম্পাদক শান্তা মারিয়া ও ফিচার সম্পাদক ফয়সল আবদুল্লাহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও রেডিওতে প্রচারিত সিএমজির টিভি ও রেডিও অনুষ্ঠানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। অনুষ্ঠান দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বন্ধুত্ব আরও জোরদার করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বাচসাস

চীন ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী সামনে রেখে চীন ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ ও বন্ধুত্ব স্থাপনের উদ্দেশ্যে চায়না মিডিয়া গ্রুপের (সিএমজি) উদ্যোগে বাংলাদেশ-চায়না আপন মিডিয়া ক্লাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ও চীনের গণমাধ্যমের মধ্যে বিনিময় ও সহযোগিতা বৃদ্ধির বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির (বাচসাস) সাথে সমঝোতা স্মারক সই হয়। জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাথেও সমঝোতা সই হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, সিএমজির বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়ে, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বাচসাসের সিনিয়র সদস্য হাসান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন চীন ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও বিশিষ্টজনরা। এ সময় বাচসাসের সাধারণ সম্পাদক রাহাত সাইফুল উপস্থিত ছিলেন। বাচসাসের জন্য এ এক বড় অর্জন। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বাচসাসের যাত্রা শুরু হল।

এক যুগ পর ‘আমার দেশের’ নতুন যাত্রা

বন্ধ হওয়ার প্রায় এক যুগ পর বাজারে আসছে ‘আমার দেশ’ পত্রিকা। আগামী রোববার (২২ ডিসেম্বর) থেকে পত্রিকাটি বাজারে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে সম্পাদক ও প্রকাশক মাহমুদুর রহমান।শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন তিনি।তিনি বলেন, শূণ্য থেকে দুইমাসের মধ্যে জাতীয় পত্রিকা বের করা প্রায় অসম্ভব ছিল। তবুও প্রথমদিন থেকেই পাঠকের চাহিদামত আমার দেশ পত্রিকা। পুন:প্রকাশের এই নতুন যাত্রায় পত্রিকাটি জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করবে বলেও জানান তিনি।তিনি আরও বলেন, পত্রিকাটি যত দ্রুত সম্ভব সঠিক খবর তুলে ধরার চেষ্টা করবে। এর মধ্য দিয়ে জনগণ আবার পত্রিকা পড়ার অভ্যাসে ফিরবে।প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দশ দিনের জন্য আমার দেশ পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর ২০১৩ সালের এপ্রিলে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার এবং আমার দেশ পত্রিকার প্রিন্ট সংস্করণ বন্ধ করে দেয়া হয়।উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার যাত্রা শুরু হয়। ওয়ান-ইলেভেনের পরে পত্রিকাটির মালিক খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব মোসাদ্দেক আলী ফালু কারাগারে গেলে এর মালিকানায় পরিবর্তন হয়। তখন জাতীয় বিনিয়োগ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান পত্রিকাটির দায়িত্ব নেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সরকারের সমালোচনায় মুখর ছিল পত্রিকাটি। এতে সরকারবিরোধীদের কাছে পত্রিকাটি জনপ্রিয়তা পেলেও ক্ষমতাসীনদের চক্ষুশূলে পরিনত হয়।