টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করে হত্যা করা হয় টিকটকার মুন্নিকে


News Defalt/tiktoker munni.jpg

চুয়াডাঙ্গার টিকটকার খালেদা আক্তার মুন্নি (১৮) হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত দু’জন হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।দুজনই আদালতে বিজ্ঞ বিচারকের কাছে হত্যা ঘটনার বর্ণনা করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। তারা জানিয়েছে, টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করে হত্যা করা হয় মুন্নিকে।

Your Image

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) রিয়াজুল ইসলাম জানান, আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়ীয়া গ্রামের মরহুম খোয়াজ আলী শেখের মেয়ে খালেদা আক্তার মুন্নি গত শনিবার (৯ নভেম্বর) বেলা আনুমানিক ১২ টার দিকে হাটবোয়ালিয়া বাজারে কেনাকাটার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। ওইদিন সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার দিকে সে তার মাকে মোবাইল ফোনে জানায়, কেনাকাটা করতে রাত হওয়ায় সে আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরে তার খালার বাসায় থাকবে।

পরবর্তীতে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৮ টায় হাজরাহাটি-বোয়ালমারী মাঠ থেকে অজ্ঞাতনামা মহিলার অর্ধগলিত পোকা ধরা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহের বিভিন্ন জায়গায় ট্যাটু দেখে খালেদা আক্তার মুন্নির বলে শনাক্ত করে।

এ ঘটনায় হত্যার শিকার মুন্নির মা বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১১।
 
এরপর চুয়াডাঙ্গা ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামী পৌর এলাকার হাজরাহাটি শেখ পাড়ার টোকন আলীর ছেলে মানিক আলী ওরফে মানিক মুন্সী (২২) ও একই পাড়ার মইদুল ইসলামের ছেলে পারভেজ মুন্সী ওরফে স্বপনকে (১৯) তাদের নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।

আসামী মানিক আলী ওরফে মানিক মুন্সীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও জবানবন্দী সূত্রে পুলিশ জানায়, গত বুধবার (৬ নভেম্বর) তিনি ও তার বন্ধুরা আলমডাঙ্গা উপজেলার বড়গাংনী গ্রামে মুন্নির সাথে টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য যায়। এসময় মুন্নি স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাদেরকে ব্লাকমেইল করে ২০ হাজার টাকা আদায় করে। তারপর আসামী মানিক মুন্সী, মুন্নির উপর রাগ করে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। গত শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে মোবাইল কলের মাধ্যমে আসামী মানিক মুন্সীর সাথে মুন্নি সারারাত ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে সম্মত হয়। ওইদিন সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে মুন্নি সদর উপজেলার বোয়ালমারী-নীলমনিগঞ্জ পিটিআই মোড়ে পৌঁছুলে আসামী মানিক মুন্সী ও তার অপর সহযোগী পারভেজ মুন্সী ওরফে স্বপনকে মোটরসাইকেলে মুন্নিকে নিয়ে আসতে বলে। আসামী পারভেজ মুন্সী ওরফে স্বপন পিটিআই মোড় থেকে তাকে নিয়ে বোয়ালমারী শ্বশানের রাস্তার ফাঁকা জায়গায় আসামী মানিক মুন্সীর নিকট নিয়ে যায়। আসামী দু’জন পানবরজের পেছনের জঙ্গলে মুন্নির সাথে পালাক্রমে শারীরিক সম্পর্ক করে। আসামী পারভেজ মুন্সী ওরফে স্বপন ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলেও আসামী মানিক মুন্সী একাধিকবার মুন্নির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। এরপর তাকে ৫ হাজার টাকা দিলে সে টাকা নিতে অসম্মতি প্রকাশ করে এবং চিৎকার করতে থাকে। সে সময় মুন্নির গলা চেপে ধরলে সে উপুড় হয়ে পড়ে যায়। এরপর মানিক মুন্সী তার পিঠের উপর বসে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে, ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে জঙ্গলেয ফেলে রাখে। এরপর মুন্নির শপিং ব্যাগ ও জুতা নদীতে ফেলে দিয়ে চলে যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আসামী দু’জন আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের কাছে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়ার পর তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×