থানাকে জনগণের আস্থার জায়গায় পরিণত করতে হবে
- চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৭:৫৩ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘থানাকে জনগণের আস্থার জায়গায় পরিণত করতে হবে। জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে ও নির্ভয়ে যে কোন সমস্যায় থানায় যেতে পারে ও উপযুক্ত সেবা পায়, থানার পরিবেশ ও কার্যক্রম সেভাবে রূপান্তর করতে হবে। থানায় সাধারণ জনগণের সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে। জনবান্ধব পুলিশ গড়ে তুলতে থানার কার্যক্রম আরো সক্রিয় ও যুগোপযোগী করতে হবে।’
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম সিটির দামপাড়া পুলিশ লাইনে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপি, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাঙ্গে মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘যানজট নিরসনসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে কমিউনিটি পুলিশিংকে জোরদার করতে হবে। ইতোমধ্যে ডিএমপির এলাকায় ৭০০ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত সদস্য যারা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের সাথে জড়িত ছিল তাদের আগ্রহী সদস্যদের বয়সসীমা বেঁধে দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজে লাগানোর চিন্তাভাবনা চলছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সিটির যানজট নিরসনে সভা-সমাবেশের জন্য মুক্তাঙ্গন নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। ইতোমধ্যে ঢাকা সিটিতে সভা-সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রামসহ অন্যান্য সিটির জন্য মুক্তাঙ্গন ঠিক করে দিতে হবে; যাতে যানজট হ্রাস পায়।’
এ সময় মেট্রোপলিটন এলাকায় অনুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশ করা যাবে না মর্মে নির্দেশনা দেন উপদেষ্টা।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আদালত থেকে রায় পেয়ে বহু শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিন পেয়েছে। এসব অপরাধী পুনরায় অপরাধে লিপ্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের গ্রেফতার করতে হবে ও কঠোর নজরদারিতে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার অপপ্রচারসহ বিভিন্ন সাইবার অপরাধও বেড়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারেও সজাগ থাকতে হবে ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তবে, হয়তো সেটা জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী খুব সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছেনি।’
তিনি পুলিশকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন ও প্রোটকল ডিউটি কমিয়ে আনার নির্দেশ দেন।
সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা বলেন, ‘মিডিয়াকে সত্য ঘটনা প্রচার করতে হবে। আমাদের দেশের মিডিয়ার যে একটা সুনাম আছে, পার্শ্ববর্তী দেশের মিডিয়ার তা নাই। তারা মিথ্যাই কিন্তু প্রচার করে সবচেয়ে বেশি। আর এ মিথ্যাটাকে কিন্তু কাউন্টার করতে পারেন শুধু আপনারা।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. ময়নুল ইসলাম, র্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী, জেলার প্রশাসক ফরিদা খানম।
সভায় সিএমপির কার্যক্রম সম্পর্কে ব্রিফ করেন অতিরিক্ত কমিশনার হুমায়ূন কবীর চৌধুরী ও চট্টগ্রাম রেঞ্জের কার্যক্রম সম্পর্কে ব্রিফ করেন পুলিশ সুপার (অপারেশনস) নেছার উদ্দিন আহমেদ।