আজ গাইবান্ধা হানাদার মুক্ত দিবস
- গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১০:৩৮ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
আজ ৪ ডিসেম্বর। আজকের এইদিনে গাইবান্ধা জেলার প্রথম হানাদার মুক্ত হয় ফুলছড়ি থানা। মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে এই হানাদারমুক্ত করে। মুক্তিযোদ্ধারা ৪টি দলে বিভক্ত হয়ে ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে ফুলছড়ি থানার চারপাশে অবস্থান নেয় এবং সূর্য উঠার আগেই ফুলছড়ি থানায় আক্রমণ করে। এতে পাকবাহিনীর ২৭ জন সৈন্য এবং ৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হয়। বেলা ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তানি সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করে।
পাক-সেনাদের অন্যতম ঘাটি ছিল গাইবান্ধার ফুলছড়ি থানা ও তিস্তামূখঘাট রেলওয়ে ফেরিঘাট। নৌ ও রেলপথে পাকিস্তানী হানাদার এখানে এসে অবস্থান নিয়ে উত্তরাঞ্চলের চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটসহ সব ধরনের অপকর্ম করতো। এছাড়াও নৌপথে কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজিবপুর হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতের মানকার চরে যেতে না পারে সে জন্য নিয়মিত টহল দিতো।
এই অঞ্চলের শক্তিশালী পাক হানাদার ঘাটি দখলে নিতে মুক্তিযোদ্ধা সংগঠিত হয়ে পরিকল্পনা করতে থাকে তাদের পরাজিত করার জন্য। সেই অনুযায়ী চারটি দলের মধ্যে তিনটি দল ৪ ডিসেম্বর ভোররাতেই ফুলছড়ি থানায় আক্রমণ করে। মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিটের সম্মুখ যুদ্ধেই পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানের দুই শতাধিক সৈন্য। মুক্তিযোদ্ধারা থানার গোলাবারুদ ও অস্ত্র নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এই সম্মুখ যুদ্ধে শহিদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা কবেজ আলী, জাহেদুর রহমান বাদল, ওসমান গনি, আফজাল হোসেন ও আব্দুল সোবাহান।
এ বিষয়ে ১১নং সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গৌতম চন্দ্র মোদক জানান, শহিদদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী সাঘাটা উপজেলার সেগুনা ইউনিয়নের খামার ধনারুহা গ্রামে এনে কবরস্থ করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই পাঁচ শহিদের সম্মানার্থে ইউনিয়নটির নাম পরিবর্তন করে মুক্তিনগর রাখা হয়।