ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবী সমিতি ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০১:১১ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতার ওপর হামলার ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দু’পক্ষের পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে। সকালে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মূখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহসহ তিন নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলনে করে জেলা আইনজীবী সমিতি। সংবাদ সম্মেলন করার পর দুপুরে আদালত ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ।
আইনজীবী সমিতি ভবনে হওয়া সংবাদ সম্মেলনে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ইউনুছ সরকার জানান, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য বিএম ফরহাদ হোসেনের ঘনিষ্ঠজন আসাদুজ্জামান খোকনকে জামিন করান। চট্টগ্রাম আদালতে দায়ের হওয়া মামলার উপনথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া এনে বিচারককে চাপ প্রয়োগ করে জামিন করিয়েছেন, যা নজিরবিহীন ঘটনা।
এরপর কসবার একটি পারিবারিক সালিশ করার জন্য বাদী পক্ষের হয়ে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলের কক্ষে যান জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মূখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ, জেলা সংগঠক জিহান মাহমুদ ও সদর উপজেলা সংগঠক হাসান নাসিমুল রাসেল। তবে বিলম্বজণিত কারণে ওইদন সালিশ না হবার কথা জানানো হয়। কিন্তু আতাউল্লাহসহ তার সঙ্গে থাকা অন্যান্যরা ওইদিনই সালিশ করতে আইনজীবীদের সাথে উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে।
একপর্যায়ে বাদী ও বিবাদী পক্ষের মধ্যে হওয়া টানা হেঁছড়ার সময় টেবিলের গ্লাসে লেগে পড়ে গিয়ে একজন আহত হন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুকে লাইভ করে অপপ্রচার চালানো শুরু করে তারা। পরে তাদের পক্ষ নিয়ে কয়েকজন এসে মফিজুর রহমান বাবুলের কক্ষে ভাঙচুর চালায়। তবে মফিজুর রহমান বাবুল কোনো পক্ষেরই আইনজীবী নন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এদিকে, দুপুরে পৌর এলাকার কাউতলীর সড়ক ভবনের সামনে থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি বিক্ষোভ মিছিল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শেষ হয়। সেখানে তারা মফিজুর রহমান বাবুলকে জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক উল্লেখ করে তাকে গ্রেপ্তারে শ্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ তাদেরকে সেখানে আটকে দেয়। এক পর্যায়ে মিছিল নিয়ে ফেরার পথে সার্কিট হাউজের ভেতরের রাস্তা দিয়ে আবার আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশের চেষ্টা করে। এখানেও পুলিশের বাধার মুখে পড়ে তারা। এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মো. আতাউল্লাহসহ বক্তারা বলেন, আদালতের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী লীগ ধরতে পুলিশ প্রশাসন ব্যর্থ। তারা বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে আইনজীবীর নামে কতিপয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সংবাদ সম্মেলন করেছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, আদালত এলাকায় বিক্ষোভ কিংবা অন্য কিছু করার সুযোগ নেই। বিক্ষোভকারীদেরকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। সার্বিক পরিস্থিতিতে পুলিশ সতর্ক আছে।
উল্লেখ্য, গত রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে এক মামলা সালিশ সভায় বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে আইনজীবীদের হামলায় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ, জেলা সংগঠক জিহান মাহমুদ ও উপজেলা সংগঠক হাসান নাছিমুল রাসেল আহত হয় বলে অভিযোগ উঠে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসাপাতালে নিয়ে ভর্তি করান।