ভেড়ামারায় পদ্মা নদীর বালুঘাট দখলে নিতে তাণ্ডব, গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ
- কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১১:১৭ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীর দুটি বালুমহাল দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এ সময় ব্যাপক গুলিবর্ষণ ও ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ১৮টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও ৬টি অগ্নিসংযোগ করা হয়। মঙ্গলবার ফেরিঘাট বালুমহাল ও মসলেমপুর ১২ মাইল বালুরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভেড়ামারা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সশস্ত্র মহড়া এবং উত্তেজনা চলে প্রায় তিন ঘণ্টা। এ ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়েছেন। দুপুর ১২টার দিকে সশস্ত্র একদল সন্ত্রাসী মোটরসাইকেল নিয়ে ভেড়ামারার পুরাতন ফেরিঘাট বালুমহালে হামলা চালায়। ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেল থেকে নেমেই শতাধিক সন্ত্রাসী ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকেন। আত্মরক্ষার্থে বালু ব্যবসায়ীরা আড়ালে পালিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। এ সময় মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি অধ্যাপক শহীদুল ইসলামের ভাতিজা জহুরুল ইসলাম বিজলী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম চুনুর নামে ঘাট ছিল। টাকা উঠাতেন জাকিরুল নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা। এই বালুঘাট দখল নিতে আধিপত্য বিস্তার করতেই রোকনের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী এ হামলা চালায়।
আরেক বিএনপি নেতা বিপ্লব মালিথা বলেন, ‘নাইন এম এম পিস্তল, শটগান, দোনলা বন্দুকসহ প্রত্যেকের হাতেই ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। তারা প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়া দিয়েছেন।’
এ দিকে ফেরিঘাটের বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ নিয়েই সশস্ত্র এই বাহিনী চলে যায় পাশের ১২ মাইল বালুঘাট দখল নিতে। সেখানেও একইভাবে তাণ্ডব চালায় সন্ত্রাসীরা। বালুঘাটে থাকা বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম বিশু এবং তার ছেলে শামসুজ্জামান সবুজকে খুঁজতে থাকেন। এ সময় অন্তত ১০ থেকে ১৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করা হয়। এ ছাড়া ৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও কয়েকটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এ বিষয়ে শামসুজ্জামান সবুজ অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপি নেতা তৌহিদুল ইসলাম নির্দেশে তার ক্যাডার রোকন ও উজ্জ্বলের নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ঘাটে প্রবেশ করে ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। এতে দুই ব্যবসায়ী আহত হন। আমার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।’
জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের কাছ থেকে খাস আদায় করার জন্য ইজারা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যারা অভিযোগ আনছেন তারাই জোর করে বালুমহাল চালাচ্ছেন। তাদেরই কোনো বৈধতা নেই। বরং গত দুদিনে তারা ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছেন। আমার লোকদের ওপর গুলি করেছেন। আমার ৪৭ বছরের রাজনৈতিক জীবন নষ্ট করতেই একদল লোক কাজ করছেন। আমি সবকিছু বৈধভাবে কাজ করছি। এখানে কোনো মহড়া দেওয়া বা অবৈধ পথ অবলম্বন করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’
এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’