উল্লাপাড়ায় জোড়া খুনের মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন আট
- সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৬:২৪ পিএম, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫

সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলায় জোড়া খুনের মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা করে এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ২৫ হাজার করে জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা তৃতীয় আদালতের বিচারক মাহবুবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন উল্লাপাড়ার চক পাঙ্গাসী গ্রামের আক্তার প্রামাণিকের ছেলে হাসানুর হাসু, একই গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে কাওছার আলী, দেল মাহমুদের ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন রিন্টু ও মৃত লাজেমুদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে জাহিদুল ইসলাম আলিম।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন একই গ্রামের আশরাফ (৫০), মোতালেব (৪০), রেজাউল (৩২), দুলাল (৩৫), মনিরুল (৩০), সাদ্দাম (২৮), বেল্লাল (৫০) ও আওয়াল (৩০)।
এ দিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৩৯ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (অতিরিক্ত পিপি) হামিদুল ইসলাম দুলাল ও পেশকার আব্দুল মমিন ।
তারা জানান, উল্লাপাড়ায় জোড়া খুনের মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা করে এবং যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিদের ২৫ হাজার করে জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া, অনাদায়ে তাদের তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডও দেয়া হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উল্লাপাড়ার চকপাঙ্গাসী গ্রামের সাইফুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী আবুল কালামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি সকালে সাইফুল ইসলাম তার ভাই সোনা মিয়া, আবুল কালাম, মকবুল হোসেনসহ অন্যরা বাড়িতে বসে ছিলেন। এ সময় আসামি হাসানুর রহমান হাসুর নেতৃত্বে আসামিরা লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্রসহ লোকজন নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা মকবুল হোসেন, আবুল কালাম, সাইফুল ইসলাম ও সোনা মিয়াকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ছাড়া, তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।
পরে আহতদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে মকবুল হোসেন, সোনা মিয়া ও সাইফুল ইসলামের অবস্থার অবনতি হলে তাদের প্রথমে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মকবুল হোসেন ও সাইফুল ইসলামের মৃত্যু হয়।
পরে এ ঘটনায় চকপাঙ্গাসী গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫১ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
মামলা চলার সময় ২১ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ এ মামলায় রায় ঘোষণা করলেন আদালত।