যুগের পর যুগ কাঠামোগতভাবে বৈষম্য তৈরি হয়েছে: আলী রিয়াজ


Feb 2025/Ali Riaz S.jpg

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান প্রফেসর ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, `বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ কাঠামোগতভাবে যে বৈষম্য তৈরি হয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাকে স্থায়ী করা হয়েছে, সেগুলো কেবল প্রাণের বিনিময়ে অবিলম্বে দূর করতে পারব- এ রকম ভাবার সুযোগ নেই। ১৯৭২ সালে পৃথিবীজুড়ে অনেক অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, বাংলাদেশ টিকবে না, তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হবে। বাংলাদেশের মানুষ প্রমাণ করেছে, তারা পারে। বাংলাদেশ অগ্রসর হয়েছে।’

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে আলী রিয়াজ আরো বলেন, ‘সবাই দায়িত্ববোধ আর জ্ঞান দিয়ে, আচরণ দিয়ে একটু একটু করে সেই বৈষম্য কমানো সম্ভব। অর্জনের প্রথম কাজ হলো পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতাবোধ তৈরী করা। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও বাংলাদেশের মানুষ নিজস্ব কর্মউদ্যোগে অনেককিছুই অর্জন করেছে। তরুণরাই হচ্ছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তাই এই তরুণদের প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা, ভিন্নমতদের প্রতি সহমর্মিতাবোধ তৈরি, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের প্রাপ্য সুবিধা নিশ্চিত করা, সকলকে সমতার জায়গায় নেয়ার চেষ্টা থাকলে সাফল্য অর্জিত হবে।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘গত ৫৪ বছর ধরে মানুষ নিজ উদ্যোগে অনেক কিছু অর্জন করেছে। ফলে, সমাজ এগিয়েছে। ২০২৪ বলে দিচ্ছে আপনারা পারেন। এই কমিটমেন্ট ধরে রাখতে হবে। যে বীর শহিদরা নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন, তাদের মেধা, পরিশ্রম, আন্তরিকতা, সহযোগিতা ও আন্দোলনের ফসল নতুন বাংলাদেশ। আমি অনুভব করি এটার প্রয়োজন ছিল। তাদের অবদান আপনি যদি না স্বীকার করেন তাহলে সেটা ব্যক্তির উদ্‌যাপন হবে। কোথাও অন্যায় হলে কণ্ঠস্বর স্পষ্ট হওয়া উচিত। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হওয়া দরকার। ছোট অন্যায্য একদিন বড় হয়ে যায়। অন্যায্য সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকুন। সৃষ্টিশীল মানুষ সম্পদশালী হয়।’

এর আগে সকাল সাড়ে দশটায় ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে নিহত শহিদদের জন্য দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে নিহত শহিদ ও আহতদের জন্য দোয়া করা হয়।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ড. এসএম আব্দুল আওয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আনোয়ারুল আজিম আকন্দ, কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নকীব মুহাম্মদ নাসরুল্লাহ, রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এসএম আব্দুর রাজ্জাক।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মো. নজরুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন  কোশাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শামীম আহসান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক, হল প্রভোস্ট ও নবাগত শিক্ষার্থীরা। 

সভার শুরুতে অতিথিদের ক্রেস্ট উপহার দেন রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক হুমায়ন কবির ও সায়মুন্নাহার রিতু। বিকালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×