সাংবাদিককে বেধড়ক মেরে বিএনপি নেতা বললেন ‘পেটানো কম হয়ে গেছে’


Feb 2025/Mamun journalist.jpg

ঠাকুরগাঁওয়ে চাঁদাবাজি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়নের কালিবাড়ি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিএনপির নেতা যুবাইদুর চৌধুরী আখানগর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি। মারধরে আহত সাংবাদিক মামুন অর রশীদ দৈনিক দেশ বাংলার প্রতিনিধি। তাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় রুহিয়া থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় বাজারে চায়ের দোকানে অবস্থান করছিলেন মামুন। কিছুক্ষণ পর যুবাইদুর চৌধুরী তার দলবল নিয়ে অতর্কিত হামলা চালান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মামুনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তার অণ্ডকোষে লাথি দিলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। প্রায় আধা ঘণ্টা তাকে মারধর করা হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা তাৎক্ষণিক হাসপাতালের সামনে এক ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তারা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

মামুন অর রশিদ বলেন, ‘কয়েক মাস আগে আমি তাকে নিয়ে চাঁদাবাজির একটি রিপোর্ট করেছিলাম। এরপর থেকে সে আমাকে মুঠোফোনে হুমকি দিতো। ঘটনার দিন তিনি পরিকল্পিতভাবে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছেন। হায়াৎ ছিল বলে প্রাণে বেঁচে ফিরেছি। আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

যুবাইদুর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক আমার বিরুদ্ধে লিখেছে তাকে পিটাবে না তো কী করবো? পেটানো কম হয়ে গেছে।’ এই বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

তানভীর হাসান তানু নামের গণমাধ্যমকর্মী বলেন, ‘সাংবাদিকরা নিরপেক্ষভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেন। কোনো রিপোর্ট বা লেখার কারণে তাদের ওপর হামলা হলে তা গণতন্ত্রের জন্য ভয়ানক সংকেত। আমরা মামুনের পাশে আছি।’

রবিউল এহসান রিপন নামের আরেক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, ‘এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করবোই। প্রশাসনের উচিত দ্রুত সময়ে হামলাকারীদের গ্রেফতার করা।’

রুহিয়া থানা প্রেস ক্লাবের সভাপতি বাদল মিয়া বলেন, ‘একজন সাংবাদিকের ওপর এমন বর্বর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।’

ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু বলেন, ‘এমন হামলা স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর আঘাত। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম চয়ন বলেন, ‘মামুনের শরীরে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিশেষ করে গলা ও অণ্ডকোষে গুরুতর আঘাত করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে রুহিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি জব্বার বলেন, ‘মামুন একজন ভালো ছেলে। তার ওপর হামলার ঘটনা দুঃখজনক। আমরা এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’

রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম নাজমুল কাদের বলেন, ‘হামলার বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত অভিযুক্তকে আইনেে আওতায় আনা হবে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×