জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে: গোলাম পরওয়ার
- রংপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:২১ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে অবাধ ও সুষ্ঠু স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। সরকার যদি আন্তরিক হয় ইলেকশন কমিশনের পক্ষে সেই নির্বাচন করা সম্ভব।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলা শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ খুশি রেলওয়ে মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
গোলাম পরওয়ার বলেন, দীর্ঘ ১৬/১৭ বছর আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। যে যুগে মানুষের ভোটাধিকার ছিল না, গণতন্ত্র ছিল না। ইসলামী মূল্যবোধ ও আমাদের জাতিসত্তার অস্তিত্ব মুছে ফেলার জন্য চক্রান্ত চলছিল। আইন আদালতে বিচারের নামে দলীয়করণ ও দুর্নীতি, অর্থনীতিতে লুটপাট, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন, লুটপাট হয়েছে। নিরীহ আলেম ওলামা, দাড়িওয়ালা, টুপিওয়ালা ও ইসলামী ব্যক্তিত্বকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এটা ছিল ইতিহাসের একটা কালো যুগ।
গোলাম পরওয়ার বলেন, তিন টার্ম বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এই অত্যাচারী, কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিবাদী শাসকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আন্দোলন করেছে ভোটাধিকারের জন্য। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এ বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। বাংলাদেশে আমরা ১৪, ১৮, ২৪ এর মতো ভোট আর হতে দেব না।
তিনি বলেন, হাসিনা ভেবেছিল সে আজীবন ক্ষমতায় থাকবে। সে ২০৪১ সালের জন্য স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছার সঙ্গে হাসিনার ইচ্ছে মিলেনি। হাসিনা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে তার বোন শেখ রেহেনাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে ভারতে পালিয়ে যায়। শেখ হাসিনা যেই জায়গার মাল সেই জায়গায় চলে গেলেন। যেখানকার মাল সেখানেই ফেরত। ওইখানে গিয়েও সে বসে নাই। সে ওখানে বসে ষড়যন্ত্রের জাল বুনতেছে। অডিও ও ভিডিও বক্তব্য দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যে বাংলার হাজার হাজার মানুষ রক্ত দিয়ে নতুন বাংলাদেশে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার সুযোগ দিলেন তাদের সেই রক্তের ঋণ রক্তের দায় আমাদের শোধ করতে হবে। তারা একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল। যে বাংলাদেশের মানুষ বৈষম্য শিকার হবে না। বিচারে তারা সুবিচার পাবে। ভাত, কাপড়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়ে তাদের কোনো অসুবিধা হবে না, বৈষম্যহীন অর্থনীতি হবে। আমরা তাদের সেই নতুন বাংলাদেশ উপহার দেব। নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার মাধ্যমেই আমরা তাদের ইচ্ছা পূরণ করতে পারব।
তিনি বলেন, মানুষ এখন মুখে মুখে বলছে জামায়াতে ইসলামের হাতেই মানুষ এখন দায়িত্ব দিতে চায়। এজন্য কিছু দলের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ঠিক আওয়ামী লীগ যেভাবে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলতো, ঠিক একই স্টাইলে তারা এখন আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলছে। আমরা বলেছি স্থানীয় সরকার নির্বাচনটা আগে দেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে আগে। কারণ সিটি কর্পোরেশনে কোনো প্রতিনিধি নেই, পৌরসভাতে নেই, উপজেলাতে নেই। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়ন অগ্রগতি ব্যাহত হয়ে আছে, জন দুর্ভোগ বাড়ছে।
রাজবাড়ী জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ বক্তব্য রাখেন। এদিন রাজবাড়ী জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি আলিমুজ্জামানের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ফরিদপুর অঞ্চলের সদস্য দেলোয়ার হোসেন, ফরিদপুর অঞ্চলের টিম সদস্য ও কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াব, ফরিদপুর অঞ্চলের টিম সদস্য শামসুল ইসলাম আল বরাটী, ফরিদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মো. বদরউদ্দিন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মো. জামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান প্রমুখ।