স্ত্রী-শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে খুন, স্বর্ণালংকার-ফোন নিয়ে লাপাত্তা আমির


March 2025/Joti Smrity.jpg

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলায় স্ত্রী-শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে খুনের অভিযোগ উঠেছে আমির হোসেন সামিউল নামের ব্যক্তির বিরুদ্ধে। রোববার (২ মার্চ) গভীর রাতে কসবার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্তঘেঁষা ধজনগরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার পর ওই বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোনসেট নিয়ে পালিয়ে যায় সামিউল।

নিহত জ্যোতি আক্তার (২৫) সামিউলের স্ত্রী ও স্মৃতি আক্তার (১৪) শ্যালিকা। তারা ধজনগর গ্রামের মৃত রৌশন আলীর মেয়ে। বছর তিনেক আগে জ্যোতির সঙ্গে পাশের কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়ার জামতলী গ্রামের সামিউলের বিয়ে হয়। সে পেশায় দিনমজুর। কখনও মাটি কাটার শ্রমিক হিসেবে, কখনও রাজমিস্ত্রি বা ইলেকট্রিক মিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে সে।

জ্যোতি-স্মৃতির ছোট ভাই জিহান মিয়া (১১) জানায়, রোববার রাতে পাশের কক্ষের বিছানায় ঘুমাতে যায় তার দুই বোন। ভগ্নিপতি সামিউল তার সঙ্গে ঘুমিয়েছিল। সোমবার সকালে জেগে তাকে দেখতে পায়নি। এ সময় পাশের কক্ষে বোনদের ডাকতে যায়। তারা সাড়া না দেওয়ায় সে নাক ছুঁয়ে দেখে কারও নিঃশ্বাস পড়ছে না। ভয় পেয়ে জিহান চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা সেখানে আসে। সংবাদ পেয়ে কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল কাদের ও এসআই মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে আসে। তারা সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।

জিহানের খালা জাহানারা বেগম সকালে ভাগনিদের মৃত্যুর খবরে পাশের বড়মুড়া গ্রাম থেকে ছুটে আসেন। 

তিনি বলেন, ‘আমার বোনের কষ্টের শেষ নেই। তাঁর স্বামী ২০১৭ সালে ক্যান্সারে মারা যান। অনেক কষ্ট করে চার সন্তানকে লালন-পালন করছেন।’

জিহান জানায়, দেড় মাস আগে একটি মামলায় তার মা লোনা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে যান। এই সংবাদে বড় বোন জ্যোতি আক্তার এসে তাদের সঙ্গে থাকছেন। দুই দিন আগে স্বামী সামিউলকে নিয়ে জ্যোতি মাকে কারাগারে দেখতে যান। জিহানের বড় ভাই জাবেদ মিয়া (২২) কয়েক মাস আগে সৌদি আরবে গিয়েছেন। তিনি বিদেশ থেকে কিছুদিন আগে ৫০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের পর ওই মোবাইল ও বোনদের স্বর্ণালংকারও নিয়ে গেছে সামিউল। 

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, ‘স্মৃতির পায়ে কাদামাটি লেগে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে বাইরে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘরে আনা হয়। আর জ্যোতি আক্তারকে বিছানায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। আপাতত থানায় অপমৃত্যুর একটি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তে নতুন কোনো তথ্য আসতে পারে। দ্রুত আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×