মালয়েশিয়ায় জিম্মি সন্তান, ফিরে পেতে মায়ের আকুতি


March 2025/Sagor Malysia.jpg

পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার যুবক মো. সাগরকে (২০) মালয়েশিয়ায় নিয়ে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে।

পরিবারের অভিযোগ, দেড় বছর আগে তাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়ায় নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর থেকেই তিনি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বর্তমানে তাকে জিম্মি করে সাড়ে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে।

ভুক্তভোগীর মা বিউটি বেগম রোববার (২ মার্চ) বাউফল থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি ছেলের মুক্তির জন্য সরকারের সহায়তা চেয়েছেন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। 

সাগরের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে। তার বাবা ইদ্রিস ফরাজি। 

পরিবারের অভিযোগ, একই উপজেলার দাশপাড়া গ্রামের প্রবাসী মো. আমিন হাওলাদার তাকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যান।

সাগরের মা বিউটি বেগম জানান, আমার ছোট ভাই সোহরাব প্যাদা এবং তার শ্যালক আমিন হাওলাদার অনেক দিন ধরে মালয়েশিয়ায় আছেন। তারা অনেক লোকজনকে বিদেশে পাঠিয়েছেন। আমার ভাই সোহরাব আমিনের মাধ্যমে আমার ছেলেকে মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং বিনিময়ে আমাদের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেন। আমরা ধারদেনা করে টাকা জোগাড় করে দিই। দেড় বছর আগে আমার ছেলে সাগরকে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি চাকরি না পেয়ে উল্টো নির্যাতনের শিকার হন। এখন তারা আমাদের কাছে আরও সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করছে। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।

তিনি আরও জানান, আমিন কিছু দিন আগে আমাকে ফোন দিয়ে আমার ছেলেকে মারধর করে। আমি ফোনে আমার ছেলের কান্নার শব্দ শুনেছি। আমার ভাই সোহরাবও এই কাজে জড়িত। তারা দুইজন মিলে আমার ছেলেকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিতে চাইছেন।

সাগরের মামা মো. ইউসুফ জানান, ২০২৩ সালে দালাল আমিন প্রথম বার অবৈধভাবে সাগরকে মালয়েশিয়ায় নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সে সময় থাইল্যান্ডে আটকে পড়ে এবং এক মাস ১৭ দিন জেল খাটতে হয় তাকে। পরে থাইল্যান্ড সরকার তাকে দেশে ফেরত পাঠায়। এরপর আমিন তাকে বৈধ ভিসায় মালয়েশিয়ায় নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর থেকে আমিন সাগরকে নির্যাতন শুরু করেন এবং মুক্তিপণ দাবি করেন। 

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আমিন হাওলাদারের সঙ্গে একাধিকার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অন্যদিকে, সাগরের মামা সোহরাব প্যাদা নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমার শ্যালকের মাধ্যমে সাগরকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। এ জন্য আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে, যা এখনও পরিশোধ করা হয়নি। তবে সাগরের ওপর কোনো নির্যাতনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। 

এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ‘ব্যাপারটি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×