ঋণের বোঝা এড়াতে চলন্ত ট্রেনের সামনে


March25 Naeem/Train-moulavi.webp

ঘড়ির কাঁটায় তখন মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা। ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস তখন ছেড়েছে শমশেরনগর রেলস্টেশন। আউটার সিগনালে ট্রেনটি পৌঁছামাত্র হঠাৎ রেললাইনে ঝাঁপিয়ে পড়েন এক ব্যক্তি। মুহূর্তেই মাথাসহ শরীর কয়েক খণ্ড হয়ে যায়। ওই ব্যক্তির সঙ্গে ছিল একটি মোবাইল ফোন। পাশেই পাওয়া যায় একটি কীটনাশকের বোতল।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার (জিআরপি) পুলিশ সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করে। একপর্যায়ে মৃত ব্যক্তির মোবাইল ফোনে কল আসে। সেই সূত্রে জানা যায় তাঁর পরিচয়। মৃত মহরম আলী (৫৫) মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের চানগাঁওয়ের বাসিন্দা। স্থানীয় পীরের বাজারে মুদি দোকান রয়েছে তাঁর। পুলিশের কাছে স্বজন জানান, ঋণের চাপে বিপর্যস্ত ছিলেন মহরম। এ কারণেই তিনি চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিতে পারেন।

মহরম আলীর তিন ছেলে। তাদের মধ্যে বড় ছেলে প্রবাসী। মেঝো ছেলেটি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ও ছোট ছেলে কেজি স্কুলে পড়ে। তাঁর বড় ভাইয়ের স্ত্রী মালা বেগম জানান, গ্রামের মহাজন ও কয়েকটি এনজিও থেকে নানা সময়ে ঋণ নিয়েছিলেন মহরম আলী। সেই টাকা বাড়তে বাড়তে ২০ লাখ টাকার বেশি হয়ে গেছে। কিছুদিন ধরে কিস্তি বা মূল টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। এ কারণে পাওনাদাররা মহরমকে চাপ দিচ্ছিলেন।

হাজীপুর ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রাজা মিয়া বলেন, তিনিও জানতে পেরেছেন মুদি ব্যবসায়ী মহরম আলী ঋণগ্রস্ত ছিলেন। ঋণের চাপ সইতে না পেরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে সবার ধারণা।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার (জিআরপি) উপপরিদর্শক (এসআই) দীপক সরকার বলেন, ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত মহরম আলীর লাশ উদ্ধার করে সেদিনই ময়নাতদন্ত করা হয়। মঙ্গলবার রাতেই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×