ছিলেন আ. লীগ কর্মী, পট পরিবর্তনে তারা এখন কৃষকদলের নেতা
- পাবনা প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১১:৫৩ পিএম, ০৫ মার্চ ২০২৫

বিগত সময়ে তারা ছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মী। পট পরিবর্তনের পর হয়েছেন জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের একটি ইউনিয়ন কমিটির সভাপতিসহ বিভিন্ন পদের নেতা। সম্প্রতি পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ঘটেছে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (৫ মার্চ) কৃষকদলের নব ঘোষিত কমিটি থেকে ১০ জন পদত্যাগ করেছেন। একইসঙ্গে নতুন করে ত্যাগী কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সম্প্রতি চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের কৃষকদলের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে উপজেলা কৃষকদল। কমিটিতে সভাপতি পদে ওই ইউনিয়নের কুমারগাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি বাবু মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নটাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল মোমিন ও প্রচার সম্পাদক পদে দোদারিয়া গ্রামের আলহাজ হোসেন এর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিলচলন ইউনিয়ন বিএনপি’র আহ্বায়ক আফছার আলী ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোখলেসুর রহমানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের অভিযোগ কমিটির সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রচার সম্পাদক বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সভাপতি নজরুল ইসলামের বাড়িতে নৌকার অফিস ছিলো। বিগত ১৬ বছরে তারা কোনদিন বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের কোন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি। তারা সবসময় আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন।
বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা কৃষকদলের কমিটি বিলুপ্ত করে আওয়ামী লীগের দমন পীড়নে রাজপথে আন্দোলনে থাকা ত্যাগী কর্মীদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
বিলচলন ইউনিয়ন বিএনপি’র আহ্বায়ক আফছার আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক মোখলেসুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আলামিন শেখ, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিমুল হোসেনসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি ও নেতৃবৃন্দ কৃষকদলের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের জন্য পাবনা জেলা কৃষক দলের সভাপতি এবং সম্পাদকসহ উপজেলা কৃষকদলের নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগ কর্মীদের দিয়ে কৃষকদলের কমিটি গঠন করায় গঠিত নব ঘোষিত কমিটির ১০ জন পদত্যাগ করেছেন। বুধবার তারা পদত্যাগপত্র দিয়েছেন জেলা ও উপজেলা কৃষকদল কমিটির কাছে।
পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক জনি হোসেন, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মহসিন আলী, সহদপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সহত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন, সহশিক্ষা ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক অলিফ হোসেন, সহযোগাযোগ সম্পাদক মিনারুল ইসলাম, সদস্য আমিরুল ইসলাম ও আক্কাস আলী।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নতুন কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, আমি কখনও আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলাম না। আমি ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল করেছি। আমি আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম, এখনো আছি। ভবিষ্যতেও থাকবো। আমার প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছে। তারা প্রমাণ করুক আমি আওয়ামী লীগ করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আজাদুল ইসলাম জানান, অভিযোগ সত্য নয়। কমিটিতে না আসতে পেরে হয়তো তারা এ ধরণের অভিযোগ করেছে। তারা যদি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।