বাপেরই জন্ম হলো না, সন্তানের জন্ম হবে কী করে: রিজভী


March 2025/Rizvi son.jpg

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আইনগুলো আইনিকরণ করতে গেলে তো নির্বাচনী সরকার দরকার। নির্বাচিত সরকার না হলে কি করে এটা সম্ভব? সম্ভব নয়। এ জন্য আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দরকার। তার পরে না হয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কারণ বাপেরই জন্ম হলো না, সন্তানের জন্ম হবে কী করে?’

শুক্রবার (৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারে ভুবনমোহন পার্কে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র আয়োজনে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে রাজশাহীতে আহত ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহিদ পরিবারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের চূড়ান্ত গণতন্ত্র এখনও ফিরে আসেনি। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে কোনো মানুষের মুক্তি মিলবে না। আজকে সংস্কারের কথা যারা বলছেন, এই জিনিসটি সংস্কার করতে কতদিন সময় লাগে? পুলিশ আচরণ করবে আইন অনুযায়ী। পুলিশ কোনো ক্ষমতাশালী লোকের কথা শুনবে না। গুম, হত্যা, বেআইনি কাজ হোক আইন অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার করবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সংস্কার করতে কত দিন সময় লাগে? আর বিভিন্ন কমিশন যে করা হয়েছে, সেই কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে। এটা মার্চ মাস। নির্বাচনের জন্য গড়িমসি কেনো? আবার শুনি কেউ কেউ বলছেন- এটাও পিছিয়ে দিতে হবে। এই সময়ে নির্বাচন করা কঠিন। নির্বাচন তো করবে নির্বাচন কমিশন। তাকে সহায়তা দেবে সরকার।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকারকে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার মনে করি। ইউনূস সাহেবের নেতৃত্বে এই সরকার। আমরা মনে করি তারা ন্যায়সংগত আচরণ করবে জনগণের সঙ্গে, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। কারণ ড. ইউনূস সাহেব দেশের একজন অন্যমত স্বনামখ্যাত একজন সন্তান। তিনি নিজেই আন্তর্জাতিক সম্মান নিয়ে এসেছেন। তার থেকে আমরা বেআইনি আচরণ পাব না। কিন্তু তারপরেও দেখি সরকারের ঘনিষ্ঠ কেউ কেউ বলছেন- ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা কঠিন। কেনো কঠিন হবে? ইতোমধ্যে তো প্রায় ছয় থেকে সাত মাস চলে গেল। এখনও ৯-১০ মাসের মতো বাকি আছে। নির্বাচন করতে এতো সময় লাগবে কেনো?’

তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন তো শেখ হাসিনা ১৫ বছর আটকে দিয়েছিলেন। ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই তাদের ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। দিনের ভোট রাতে হয়েছে। রাতের ব্যালট বাক্সগুলো পরিপূর্ণ করা হয়েছে। আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সবগুলো পা দিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে শেষ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। আমাদের সেখান থেকে ফিরে আসতে হলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সজীব করতে হবে, প্রাণবন্ত করতে হবে। এগুলোর জন্য এতো গড়িমসি কেনো? নির্বাচন কমিশন যদি সঠিকভাবে কাজ করে তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যে, ডিসেম্বর কেনো জুনের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।’

রিজভী বলেন, ‘এ দেশের জনগণ দেড় যুগ ধরে নির্বাচনে ভোট দিতে পারে না। আর এটা নিয়ে গড়িমসি করা হলে জনগণের মনে তো সন্দেহ জাগবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি। কোনো এই গড়িমসি করা হচ্ছে। আজকে কেউ কেউ বলছে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আরেকটা হচ্ছে গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে করতে হবে। এগুলো তো আমরা বুঝতে পারছি। গণপরিষদ হয় যখন একটা দেশ স্বাধীন হয়। যেখানে সংবিধান থাকে না, কোনো ধরনের আইনকানুনের বিষয় থাকে না। তখন গণপরিষদ হয়।’

আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুম্মানের সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুন অর রশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×