ধর্ষণের বিচার না পেয়ে কিশোরীর ‘আত্মহত্যা’
- লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৭:৪৪ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৫

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে জান্নাত বেগম (১৬) নামে এক কিশোরীর আত্মহত্যারর খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার পশ্চিম চরকলাকোপা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে ধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মো. রাকিবসহ প্রতিবেশী ১২ জনের বিরুদ্ধে রামগতি থানায় মামলা করেছেন জান্নাত বেগমের মা সেলিনা আক্তার। এর মধ্যে ওই গ্রামের মো. হেলাল নামের এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের বিচারের নামে সালিসে তাকে উল্টো ভৎসনা করেছিলেন গ্রামের মাতব্বরেরা। এই অপমান সইতে না পেরে জান্নাত আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে।
জান্নাতের পরিবারের অভিযোগ, প্রতিবেশী মো. রাকিবের সঙ্গে গত ৬-৭ মাস ধরে জান্নাতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের জের ধরে গত শনিবার গভীর রাতে জান্নাতকে ধর্ষণ করে রাকিব।এ সময় জান্নাতের মা সেলিনা আক্তার টের পেয়ে মেয়ের কক্ষে গেলে রাকিব পালিয়ে যায়। এর আগেও বিয়ের প্রলোভন দিয়ে রাকিব কয়েকবার তার সঙ্গে শারীরিক মেলামেশা করে। ঘটনাটি তাৎক্ষণিক রাকিবের বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য নিষেধ করে এবং জান্নাতকে রাকিবের বউ করে নিয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন।
পরের দিন ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে মো. হেলাল, মো. আজাদসহ অভিযুক্তরা গত মঙ্গলবার সালিশ বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে মো. বাশার, জামশেদ উদ্দিনসহ অভিযুক্তরা জান্নাতকে নানা ধরনের অপবাদ দেয়।
এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে জান্নাতকে বাড়িতে রেখে বাড়ির পাশে ফসল দেখতে যায় তার মা সেলিনা। এ সময় অভিযুক্ত হেলাল তাদের বাড়িতে গিয়ে জান্নাত ও তার মা সেলিনার চুল কেটে এলাকায় ঘুরাবে বলে হুমকি দেয়। এতে মানসিক চাপে বেলা ১২টার দিকে বসতঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে জান্নাত। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, ‘এই ঘটনায় রামগতি থানায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মো. হেলাল নামে একজনকে আটক করে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’