সালিসে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে উল্টো অপবাদ, কিশোরীর আত্মহত্যা
- লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১২:৫০ এম, ০৯ মার্চ ২০২৫

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে রাকিব হোসেন নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে প্রেমিকাকে (১৬) ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর সালিসি বৈঠক হলেও বিচার না পাওয়ায় মানসিক চাপে কিশোরী আত্মহত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে রামগতি থানায় ১২ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় হেলাল উদ্দিন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শনিবার রাত ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে কিশোরীর মা বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। প্রধান অভিযুক্ত রাকিব হোসেনসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
এর আগে গত ১ মার্চ ওই কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। পরদিন ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় সালিসি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো বিচার পায়নি কিশোরী। উল্টো তাকে অপবাদ দেওয়া হয় বলে জানায় স্থানীয়রা।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার সকালে কিশোরীকে বাড়িতে রেখে তার মা বাড়ির পাশের জমিতে ফসল দেখতে যায়। তখন মো. হেলাল উদ্দিন নামে একজন বাড়িতে ঢুকে কিশোরীসহ তার মাকে চুল কেটে এলাকায় ঘুরানোর হুমকি দেয়। এতে মানসিক চাপে ওই দিন দুপুরে কিশোরীটি আত্মহত্যা করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
মামলায় প্রধান অভিযুক্ত রাকিব পশ্চিম চরকলাকোপা গ্রামের খবির উদ্দিনের ছেলে। অভিযুক্ত অন্যরা হলো—মো. আজাদ, জামশেদ উদ্দিন ও মো. বাশারসহ ১০ জন। তারা পশ্চিম চরকলাকোপা গ্রামের বাসিন্দা।
মামলা সূত্র জানা যায়, অভিযুক্ত রাকিবের সঙ্গে প্রায় ৭ মাস ধরে কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। এতে গত ১ মার্চ রাতে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে রাকিব ধর্ষণ করে। ঘটনাটি কিশোরীর মা টের পেয়ে ঘরে ঢুকলে রাকিব পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক ঘটনাটি ভুক্তভোগী পরিবার রাকিবের বাবা-মাকে জানায়। এতে তারা কাউকে কিছু জানাতে নিষেধ করে। কিন্তু পরদিন ঘটনাটি জানাজানি হয়। এতে মামলায় অভিযুক্তরাসহ একটি সালিসি বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে ধর্ষণের ঘটনায় কোনো বিচার করা হয়নি। উল্টো কিশোরীকে অপবাদ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার হেলাল উদ্দিন বাড়িতে ঢুকে কিশোরীসহ তার মাকে চুল কেটে গ্রামে ঘুরানোর হুমকি দেয়। এটি সহ্য করতে না পেরে কিশোরীটি আত্মহত্যা করে।