ধর্ষণবিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া যুবলীগ নেতাকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ


March 2025/Talwar Jahangir.jpg

ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ডাকা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন মো. জাহাঙ্গীর ওরফে ‌‘তলোয়ার জাহাঙ্গীর’ নামে যুবলীগের এক নেতা। রোববার (৯ মার্চ) দুপুরে ঠাকুরগাঁও আদালত চত্বরে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের ডাকা কর্মসূচি থেকে তাকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তারা।

জাহাঙ্গীর ঠাকুরগাঁও সদরের পুলিশ লাইনস এলাকার মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি জেলা যুবলীগের সদস্য। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ আছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা শহরে বিক্ষোভ করেন। সেই বিক্ষোভে রামদা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান জাহাঙ্গীর। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। রোববার দুপুরে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আদালত চত্বরে ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছিল। হঠাৎ শিক্ষার্থীরা দেখেন জাহাঙ্গীর সেখানে উপস্থিত। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে তাকে ঘিরে ধরে মারধর করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিকের বিরুদ্ধে। ওই দিন রাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার দুপুরে অভিযুক্ত শিক্ষককে ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। ওই শিক্ষকের বিচারের দাবিতে ছাত্র-জনতার ব্যানারে কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা জজ আদালত চত্বরে গিয়ে অবস্থান নেয়। দুপুরে ওই শিক্ষককে আদালতে তোলার সময় পুলিশের উপস্থিতিতে পিটুনি দেন শিক্ষার্থীরা। এর কিছুক্ষণ পর ওই কর্মসূচি থেকে জাহাঙ্গীরকে ধরে মারধর করা হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী শাহনাজ শাহীনা বলেন, ‌‘আমরা জাহাঙ্গীরের চেহারা ভালো করেই মনে রেখেছিলাম। কারণ তিনি আমাদের ভাই-বোনদের ওপর হামলা করেছিলেন। আদালত এলাকায় তাকে দেখে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। পরে নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা সবাই মিলে তাকে আটক করেছি।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘মারধরের শিকার হওয়ার পর জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে আনা হয়। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা আছে। যাচাই-বাছাই করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×