বালুমহাল ইজারার দরপত্র দাখিল নিয়ে ছাত্রদলের সঙ্গে সংঘর্ষ
- রাজশাহী প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১০:০৮ পিএম, ১৮ মার্চ ২০২৫

রাজশাহীতে বালুমহাল ইজারার দরপত্র দাখিলকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের সঙ্গে বিএনপি পরিচয় দেওয়া একটি পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে মো. রায়হানুল ইসলাম রাকিব নামের এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের দোতলায় এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে তা কার্যালয়ের সামনের সড়ক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় নগরের রাজপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন আহত রায়হানুল ইসলাম রাকিব। রায়হান জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শামীম সরকারের সঙ্গে দরপত্র জমা দিতে এসেছিলেন। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল দুপুর ১টা। সময় পেরিয়ে যাওয়ায় তারা দরপত্র জমা দিতে পারেননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজশাহীর বালুমহালগুলো ইজারার দরপত্র (টেন্ডার) দাখিলের শেষ সময় ছিল দুপুর ১টা। টেন্ডার বাক্স রাখা ছিল ডিসি অফিসের দোতলায় এসএ শাখার সামনে। দুপুর ১টার পর শামীম সরকারের সঙ্গী রাহুল ইসলাম দরপত্র দাখিল করতে গেলে পুলিশ এবং আগেই যারা দরপত্র দাখিল করেন, তারা বাধা দেন। ফলে শামীম সরকার দরপত্র জমা দিতে না পেরে তার লোকজন নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এরপর বিএনপি পরিচয়ে নগরের গুড়িপাড়া এলাকা থেকে দরপত্র দাখিল করতে আসেন শহীদ হাজি, জহুরুল, নাজির, টিয়া, নুরু, ফারুকসহ কয়েকজন। তারা নির্ধারিত সময়ের পরও জোর করে দরপত্র বাক্সে ফেলে দেন। এ সময় ছাত্রদলের নেতা শামীম সরকারের পক্ষের লোকজন বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তাদের এখন দরপত্র দাখিল করতে দিতে হবে বলে দাবি তোলেন। তখন গুড়িপাড়ার ওই লোকজনের সঙ্গে শামীমের লোকজনের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসএ শাখার সামনেই শামীমের সঙ্গে আসা রায়হানকে পেটানো হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ডিসি অফিসের সামনে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ছাত্রদলের নেতা শামীম সরকার বলেন, ‘সকালে একটি দরপত্র দিয়েছি। বাঘার লক্ষ্মীনগর ঘাটের। আমি সেটি পেয়েছি। পরে রায়হানুল ইসলাম শ্যামপুর ঘাটের জন্য দরপত্র ফেলতে আসেন। তাকে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং তার ওপরে হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় আমি ওই ভবনেই ছিলাম। তবে ভেতরে যাইনি।’
সময় পার হয়ে যাওয়ার পর যাওয়া প্রসঙ্গে শামীম বলেন, ‘তখনও দুই মিনিট সময় ছিল। সিসিটিভির ফুটেজ দেখলে প্রমাণ পাওয়া যাবে। আসলে সেটা নয়, পাঁচ মিনিট আগে থেকেই তারা ওখানে জটলা করে বলছিলেন সময় শেষ, সময় শেষ। আসলে তারা ফেলতে দেবেন না।’
তারাও তো বিএনপি, কেন তাদের সঙ্গে ছাত্রদলের বিরোধ জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদল সভাপতি শামীম বলেন, ‘তারাও বিএনপি, ঠিক আছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে হাইব্রিড বিএনপিও ছিল। তারা আওয়ামী লীগের ঠিকাদার ছিলেন। হামলায় রায়হানুল আহত হন। আমার জানামতে, অপর পক্ষের কেউ আহত হননি।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহা. যোবায়ের হোসেন বলেন, ‘মারামারির ঘটনা দেখেছি। তবে কী কারণে সেটা ঘটেছে, তা বলতে পারবো না।’ নির্ধারিত সময়ের পরও দরপত্র বাক্সে ফেলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ রকম তো আমাকে কেউ বলেনি।’
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, ‘দরপত্র ফেলতে বাধা দেওয়া ও হামলার করা হয়েছে জানিয়ে রায়হানুল থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’