পরীক্ষায় ফেল করায় সমন্বয়ক দাবি করা মিজানের কাণ্ড
- পিরোজপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০২:১৫ পিএম, ১৯ মার্চ ২০২৫

নার্সিং পরীক্ষায় ফেল করায় পিরোজপুর নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনচার্জের বিরুদ্ধে মামলার হুমকির অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ থেকে ভোলপাল্টে সমন্বয়ক হওয়া মিজানুর রহমান নামের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মিজান সিরাজগঞ্জের তাড়াস উপজেলার আবু তালেবের ছেলে এবং পিরোজপুর নার্সিং ইন্সটিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
গত ১১ মার্চ বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের অধীনে অনুষ্ঠিত পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে এক বিষয় অকৃতকার্য হওয়ার পর থেকে ইনচার্জের বিরুদ্ধে মামলার হুমকিসহ ইন্সটিটিউটের অনেক ইনস্ট্রাক্টরকে বিভিন্নভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে।
হুমকির কথা স্বীকার করেছেন পিরোজপুর নার্সিং ইনস্টিটিউটের নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ বেবী রায়।
তিনি জানান, মিজান ৫ আগস্টের পূর্বে এই প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে চলেছে। এখনো প্রভাব খাটাচ্ছে। কোন এক অদৃশ্য হাত তার পিছনে কাজ করছে। পরীক্ষার আগে মিজান দলবলসহ এসে পরীক্ষার হল ছেড়ে দেয়া সহ পাস করাতে হুমকি দেন। পরে পরীক্ষায় ফেল করলে আমার নামে মিথ্যাচার ও আমাকে মামলাসহ বিভিন্ন রকম হুমকি দিচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই।
নার্সিং ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের অধীনে গত নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) প্রকাশিত হয়। তাতে তিনি (মিজান) এক বিষয়ে অকৃতকার্য হন। পরে তিনি কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে নার্সিং ইনস্টিটিউটের কর্তৃপক্ষকে ফোন দিয়ে পাস করানোর জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাতেও কাজ না হলে প্রতিষ্ঠানের ইনস্ট্রাক্টর ইনচার্জ বেবী রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকিও দেন।
নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রক্টর প্রভা রানী বড়াল জানান, মিজানুর রহমান আমাদের নার্সিং ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষার্থী। গত ১১ মার্চ বিএনএমসির রেজাল্ট দেয়ার পর থেকে সে বিভিন্নভাবে সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের দিয়ে ফোন দিয়ে আমাদের পাস করানোর ব্যাপারে হুমকি দেয়। সে যে বিষয়ে ফেল করেছে সে বিষয়ে আমাদের কোন টিচার পরীক্ষা নেয়নি। ওই বিষয়ে বাহির থেকে টিচার নিয়োগ দেয়া হয়। আমরা টিচার হিসেবে কখনই কোন শিক্ষার্থী ফেল করুক সেটা চাই না।
নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইনস্ট্রাক্টর সাজেদা খানম জানান, মিজান আমাদের এ ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ক্লাসে খুব অমনোযোগী ছিল। সে প্রথম বছরে ১ বিষয়ে ফেল করে। তখন বিষয়টি নিয়ে তেমন কোন ঝামেলা না করলেও এবারে ফেল করে সে বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি করছে।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা সকল ইনস্টাক্টরসহ সব শিক্ষার্থী বিব্রতবোধ করছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী জানান, মিজান সব সময় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের প্রভাব দেখাতো। সে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিতো। গত ৫ আগস্টের পর হঠাৎ তিনি সমন্বয়ক বনে যান। তিনি পরীক্ষায় ফেল করে আমাদের ইনস্ট্রাক্টরদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে।
এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘তারা আমার শিক্ষক। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা তো দূরের কথা কোন খারাপ কথাও আমি বলিনি।’
তিনি এর চেয়ে বেশি কিছু ফোনে বলবেন না বলে কল কেটে দেন।