বিএনপি সরকারের সব ন্যায়ভিত্তিক কাজে সহায়তা করবে: মাসুদ খন্দকার
- পাবনা প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০২:১৬ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৫

পাবনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাকসুদুর রহমান মাসুদ খন্দকার বলেছেন, ‘আজ দেশে একটি স্থিতিশীলতা এসেছে। বিএনপি বর্তমান সরকারের সব ন্যায়ভিত্তিক কাজে সহায়তা করবে। আমরা আশা করছি, বর্তমান সরকার আগামী ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করবে। বিএনপি সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং দেশের মানুষ ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে বিএনপিকে জয়যুক্ত করে খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করবে। তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করবে।’
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিকেলে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বনওয়ারীনগর সরকারি সিবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এই দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ফরিদপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং সব অঙ্গ সহযোগী সংগঠন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে মাসুদ খন্দকার আরো বলেন, ‘আমার নেতা তারেক রহমান বলে দিয়েছেন, যারা বিএনপি করে তারা দেশের মানুষের সেবক হবেন। যারা বিএনপি করেন তারা বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষের সমস্যায় তাদের পাশে দাঁড়াবেন। যারা বিএনপি করেন তারা কখনো শাসক হবেন না। সব সময় সেবক এর ভূমিকা পালন করবে। আগামীদিনের দেশ পরিচালনা বিএনপি করবে ইনশাল্লাহ। আগামী দিনে একটি সুষ্ঠ বাংলাদেশ পরিচালনা করবে। যে দেশে ন্যায় বিচার থাকবে। যে দেশে গণতন্ত্র থাকবে, যে দেশে মানবাধিকার থাকবে, যে দেশে সুশাসন থাকবে। দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি সুন্দর সমৃদ্ধশালী সুখী বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।’
শেখ হাসিনা একজন ক্ষমতালোভী মহিলা ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হাসিনা ক্ষমতায় থাকার জন্য হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছেন। দুই হাজার ছাত্রছাত্রীকে তিনি পাঁচ ই আগস্টের আগে হত্যা করেছেন শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য। তাই, এ দেশের মাটিতে তার বিচার হতে হবে।’
মাসুদ খন্দকার বলেন, ‘আল্লাহর ইচ্ছায় দীর্ঘ ১৬ বছর আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, আমাদের ১ হাজার নেতাকে তারা গুম করেছে, আমাদের ৫ হাজার নেতাকর্মীকে ওরা হত্যা করেছে। আমাদের এক লক্ষ নেতাকর্মীকে ওরা অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রেখেছে। আর আমাদের ৭০ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে তারা মামলা দিয়েছে। এত কিছু অন্যায় অত্যাচার নির্যাতনের পর গত ৫ আগস্ট দেশের জনগণ যখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেল, ছাত্রছাত্রীরা যখন মাঠে নেমে পড়লো, স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগ সরকারকে তখন বিদায় নিতে হল।’
খালেদা জিয়ার উপর যে অত্যাচার নির্যাতন বিগত সরকার করেছিল এত নির্যাতন আর কাউকে করেনি উল্লেখ করে মাসুদ খন্দকার বলেন, ‘৮০ বছরের একজন বৃদ্ধা মহিলাকে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে নির্জন একটি ঘরের মধ্যে দীর্ঘ ২ বছর পর্যন্ত আটকে রেখেছিল। চিকিৎসার সুযোগ দেয় নাই, কোন ডাক্তার প্রবেশ করতে পারত না। তাকে দেখার মত কোন লোক থাকত না। এমনিভাবে তারা অত্যাচার নির্যাতন করেছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত সেই বাড়িটি ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। যে বাড়িতে দীর্ঘ ৪০ বছর বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন। যে বাড়িতে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো ছোটবেলায় খেলাধুলা করে বড় হয়েছেন। বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার সেই বাড়ি থেকে সকল স্মৃতি ধ্বংস করে বাড়ি গুড়িয়ে দিয়ে সেখান থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে জোর করে উৎখাত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিটা জায়গায় নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। আমরা দেখতাম বিগত দিনে সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগের চারজন মিলে একজন নারীকে ধর্ষণ করেছিল সেটার যদি বিচার হতো তাহলে আজকে দেশের মাটিতে এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটত না। আছিয়ার মত ছোট্ট একটি শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হতো না।’
ফরিদপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম বকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ফরিদপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক মো. আবুল হোসেন জোয়াদ্দার, ফরিদপুর পৌর বিএনপির সদস্য সচিব এনামুল হক, উপজেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা আবু দায়েন মঞ্জু, উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক রুহুল আমিন মাস্টার, যুগ্ন আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান, বনওয়ারীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া, ডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল রানা, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আলী হোসেন, উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সজীব।
শেষে দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা মোা. আসাদুল্লাহ আনসারী।