সিলেটে এনসিপির ইফতারে হট্টগোল, হাতাহাতি
- সিলেট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১০:৪১ পিএম, ২২ মার্চ ২০২৫

সিলেটে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ইফতার মাহফিলে নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা ছবি ও ভিডিও তুলতে গেলে অসদাচরণ ও ক্যামেরা কেড়ে নিতে নিতে চেষ্টা করেন দলটির নোতকর্মী, সমর্থকরা। এর প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা ইফতার অনুষ্ঠান বয়কট করে আসেন।
শনিবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় সিলেট নগরের বালুচর আমানউল্ল্যাহ কনভেনশন সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শান্ত নামে লিডিং ইউনিভার্সিটির একটি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইফতারের ঠিক ৭-৮ মিনিট আগে মঞ্চে বক্তব্য রাখছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসমিন জারা। এমন সময় মঞ্চের সামনে আসন ইস্যু, বক্তৃতা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তরুণ নেতৃত্বে গড়া দলটির নেতাকর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েনে। এ সময় ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণকালে ডিবিসি নিউজ, সিলেট ভিউ, খবরের কাগজ, ঢাকা পোস্টের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানালে তারা উল্টো তেড়ে আসে।
সাংবাদিক নেতাদের হস্তক্ষেপে তারা সরে গেলেও পরবর্তী ইফতার না করেই সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ কনভেনশন সেন্টার থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে তারা সেন্টার সংলগ্ন রাস্তার পাশের একটি ছোট রেস্তোরায় ইফতার করেন। এছাড়া ছাত্রদের একটি পক্ষ ইফতার না করেই বেরিয়ে বাইরে গিয়ে বিক্ষোভ করে দলের নেতাকর্মীদের আশ্রাব্য গালিগালাজ করেন। ইফতার পরবর্তী নেতাকর্মীরা আবারো মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এতে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির এক যুগ্ম আহ্বায়ক পদবীর এক নেতা বলেন, ‘বৈষম্যে বিরোধী ছাত্রদের মধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে।এরমধ্যে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা নাসির, গালিবসহ অন্তত ২৫-৩০ জন ইফতার মাহফিলে এসে হট্টগোল ও হাতাহাতি করে বেরিয়ে যায়।ইফতার পরবর্তী তরা হাতাহাতিতে জড়ায়।’
ওই নেতা আরো বলেন, ‘ইফতারের সময় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকলেও পরবর্তী আবারো হট্টগোল হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ছাত্রদের মধ্যে হট্টগোল, হাতাহাতির ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, ইফতার পূর্ব সাংবাদিকদের প্রশ্নত্তরে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি বলেন, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে মিটিং করছেন। তার বক্তব্য স্যোসাল মিডিয়ায় আসা উচিত হয়নি। আমরা মনে করি, এটা শিষ্টাচার বহি:র্ভূত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের বিভিন্ন ফাংসনারি যা যা আছে, ও আমরা দেখছি, সেনানীবাসের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ রাজনৈতিক জায়গায় হস্তক্ষেপ করছেন। এই ধরণের হস্তক্ষেপ আমাদের কাছে কাম্য নয়। ’
এনসিপির কেন্দ্রীয় মুখ্য সমন্বয়ক নুরুল হুদা জুনেদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক এহতেশামল হক বলেন, ‘যারা এই আচরণ দেখাচ্ছে, তারা কুক্ষিগত করতে চাচ্ছে। তারা পাওয়ারটা এভিউজ করতে চায়, বক্তৃতা দিতে চায়। এনসিপির নামে তারা চাঁদাবাজি করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী চাত্র আন্দোলনের নাম করে উশৃঙ্খল মানুষ হট্টগোল করার চেষ্টা করে। মেহমান সাংবাদিকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করে। এটার দায় এড়াতে পারি না। জুলাই বিপ্লবকে পুঁজি করে যারা শক্তি প্রদর্শন ও চাঁদাবাজি অন্যায় সুযোগ নিতে চায়, তাদের কোনো স্থান এনসিপিতে হবে না। তাছাড়া যারা ছাত্র, দারা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদে যোগদান করতে পারে। আর পড়াশোনা শেষ করে এনসিপিতে যোগ দিতে পারবে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে কোনো প্লাটফর্ম নেই।’