যুবকের হাত-পায়ের রগ কর্তন, বাড়িতে লুটপাট অগ্নিসংযোগ


Jan 2025/Feb 2025/cumi-17418423471-1742746814.webp

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় কাউছার সরকার নামে এক যুবককে কুপিয়ে দুই হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়েছে। এর জেরে প্রতিপক্ষের বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেঘনা থানার পরিদর্শক মনিরুজ্জামান।

জানা গেছে, মেঘনার বড়কান্দা ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের জাকির হোসেন ও কাউছার সরকার  ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি পদপ্রার্থী। এ নিয়ে কয়েক দিন আগে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় জাকিরকে মারধর করেন কাউছার। এরই জেরে ১৯ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাউছার সোনাকান্দা এলাকায় আত্মীয়র বাড়ি থেকে ফেরার পথে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন। হরিপুর গ্রামের ঈদগাহ মাঠের উত্তর পাশে সেলিম সাহেবের বাড়ি সংলগ্ন সড়কে মোটরসাইকেল থামিয়ে কুপিয়ে দুই হাত-পায়ের রগ কেটে দেন জাকির ও তাঁর লোকজন। গুরুতর আহত অবস্থায় কাউছারকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

কাউছারের বাবা শাহজাহান সরকার গত শুক্রবার ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মেঘনা থানায় মামলা করেন। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়ে ১০-১৫ জনকে। অন্যদিকে শনিবার রাতে জাকির হোসেনের মেয়ে জিয়াসমিন আক্তার বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয় ১০-১৫ জনকে।

শাহজাহান সরকার চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানান, তাঁর ছেলের শরীরে ২৩৩টি সেলাই লেগেছে। এ কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি এবং ন্যায়বিচার চান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন ও সাবেক ইউপি সদস্য মুকবুল হোসেন বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা। জাকির ও তাঁর লোকজন প্রতিপক্ষকে দমন করতে এ হামলা চালিয়েছে।

কাউছারের চাচাতো ভাই আলামিন বলেন, ‘আমরা কাউছারকে নিয়ে চিন্তায় আছি বাঁচে নাকি মরে। জাকিরের লোকজন আমাদের লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তাঁর বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের বিষয়ে কিছুই জানি না। পুলিশ সঠিক তদন্ত করুক, আমি ঢাকায় আছি।’

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে জাকিরকে কল দেওয়া হলে মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বড়কান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মাহফুজ জানান, জাকির আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কাউছার ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য। তাঁর পরিবারের লোকজনও বিএনপি করে। দু’জনই বড়কান্দা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি পদপ্রার্থী, এই নিয়েই ঝগড়া হয় তাদের।

মেঘনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, কাউছার ও জাকিরের মধ্যে আগে সংঘর্ষ হয়েছিল। এর জেরেই এই হামলা হয়েছে। কাউছারের বাবা মামলা করেছেন, অন্যদিকে জাকির হোসেনের মেয়ে আরেকটি মামলা করেছেন।

দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলার জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তারা, যাতে নতুন করে কোনো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এড়ানো যায়।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×