বেগুন-শসায় আগুন, বাড়ছে সবজির দাম


March 2025/Begun cucumber.jpg

ময়মনসিংহের বাজারে বেগুন-শসার দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। একইসঙ্গে বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে ৫-৪০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া লাফিয়ে বাড়ছে মুরগির দামও। তবে কমেছে লেবুর দাম।

বুধবার (২৫ মার্চ) সকালে সরেজমিনে শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজার ঘুরে জানা যায়, গত সপ্তাহ বেগুন ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দ্বিগুণ বেড়েছে শসার দামও। গত সপ্তাহ শসা ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ এক লাফে শসার দাম বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা। এছাড়া মটরশুঁটি ও ররবটি ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১০০, শিম ২৫ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৪০, খিরা ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৭০, কচুরলতি ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৯০, গাঁজর ২৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া দেশি লাউ ৪০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হলেও এখন ৭০, বাঁধাকপি ২০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হলেও এখন ২৫, ফুলকপি ২০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হলেও এখন ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি ডাঁটা হালি ১৫ টাকা হালিতে বিক্রি হলেও এখন ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে কমেছে লেবু, করলা ও টমেটোর দাম। গত সপ্তাহ লেবু ৪০-৫০ টাকা হালিতে বিক্রি হয়েছে। এই ধরনের লেবুর দাম ১০ টাকা কমে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

করলার দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা। গত সপ্তাহ ৭০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটো পাঁচ টাকা কমে ১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ, সজিনা ও মিষ্টিকুমড়া। বর্তমানে কাঁচামরিচ ৩০ টাকা, সজিনা ১২০ ও মিষ্টিকুমড়া ১৫ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সবজি কেনার সময় কথা হয় রফিকুল ইসলাম নামের একজনের সঙ্গে। তিনি আক্ষেপ করে জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে প্রচুর সবজি রয়েছে। দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ থাকার কথা নয়। ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করেছে। ঈদকে টার্গেট করে বাড়তি দামে বিক্রি করে বিক্রেতারা বেশি লাভ করতে চাচ্ছে। এতে যে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষদের কষ্ট হচ্ছে, তা বিক্রেতারা বিবেচনায় নিচ্ছে না।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা লাল মিয়া বলেন, ‘যেসব সবজি বেশি দামে কিনেছি, সেগুলোর বেশি দামে বিক্রি করছি। কিছু সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন।’

এদিকে মুরগির দাম বেড়েছে ১০-৫০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহ ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ২১০, সাদা কক ২৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২৯০ ও লাল কক ২৯০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। গরু ৭৫০ ও খাসি ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগি কিনতে দামাদামি করছিলেন রাব্বি ‍রুবায়েত। এ সময় কথা হয় তার সঙ্গে। রাব্বি বলেন, ‘প্রতি বছর ঈদের আগে মুরগির দাম বেড়ে। এ জন্য আগেই বুঝতে পেরেছি, এবারও বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেবেন। এসে দেখি তাই হয়েছে। ঈদের জন্য প্রচুর মুরগি বিক্রি হওয়ায় বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে ক্রেতারা নিরুপয় হয়ে তাদের নির্ধারিত দামে মুরগি কিনছেন।’

মুরগি বিক্রেতা আরফান আলী বলেন, ‘অনেক বিক্রেতা পাইকারদের কাছ থেকে, আবার অনেকে সরাসরি খামার থেকে মুরগি কিনে আনেন। ঈদের আগে দাম কিছুটা বাড়তি রাখায় সামান্য লাভ করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছি।’

এ নিয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, ‘বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। দাম বাড়াতে হলে যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে। কোনো বিক্রেতা বেশি দাম রেখে ক্রেতাদের ঠকাতে চেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এদিকে, গত সপ্তাহের মতো বাড়তি দামেই স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে মাছের দাম। এ বাজারে আকারবেধে তেলাপিয়া ১৪০-২১০, সিলভার কার্প ১৮০-১৯০, দুই কেজি ওজনের রুই ও কাতলা ২৬০-২৭০, মৃগেল ২২০-২৭০, পাঙ্গাশ ১২০-১৮০, কৈ ২৭০-২৯০, ট্যাংরা ৩১০-৪০০, শিং ২৮০-৪৭০, টাকি ৩৩০-৫০০, পাবদা ২৬০-৩৬০, বাউশ ২৭০, শোল ৪৬০-৫৬০, রাজপুঁটি ১৯০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন dhakawatch24@gmail.com ঠিকানায়।
×