চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন
- চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০২:৩৪ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২৫

যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বুধবার (২৬ মার্চ) নগরীর পাহাড়তলীস্থ উত্তর কাট্টলীস্থ ডিসি পার্কের দক্ষিণ পাশে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ এবং এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।
বুধবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় কাট্টলীস্থ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, রেঞ্জ ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতুসহ সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
সকাল ৯টায় এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও কপোত উড়িয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উদ্বোধন শেষে প্যারেড পরিদর্শন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো. জিয়াউদ্দীন। এ সময় সিএমপি ও জেলা পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, কারারক্ষী, ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স, বিএনসিসি, বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যুব রেড ক্রিসেন্ট ও সরকারী শিশু পরিবার কর্তৃক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন বিভাগীয় কমিশনার।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশসাক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপির কমিশনার হাসিব আজিজ, রেঞ্জ ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ, জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মো. জিয়াউদ্দীন বলেন, ‘১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সাহসিকতার বার্তা দিয়েছে। দেশের ইতিহাসে এটি একটি ঐতিহাসিক মুহুর্ত হিসেবে চিহ্নিত, যা দেশের প্রতি ভালোবাসা ও দেশের জন্য ত্যাগের প্রেরণা দেয়। আর স্বাধীনতা দিবস বাংলাদেশের জনগণের সাহস, ত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতীক। এটি দেশের জাতীয় গৌরব ও মুক্তির ইতিহাসকে স্মরণ করার দিন।’
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহিদ সব সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গানা মা-বোন ও ২০২৪’-এর জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যূত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আত্মদানকারী শহীদ এবং বিপ্লবে আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করা হাজারও বিপ্লবী বীরদের স্মরণ করেন তিনি।
বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা অর্জন কেবল একটি ভূখন্ডের নয়, বরং এক শাশ্বত চেতনার উদযাপন। এই চেতনাই আমাদেও জাতিকে একত্রিত রাখে এবং ভবিষ্যতের পথ প্রদর্শন করে।’
সবার জন্য উন্নতি, শান্তি ও মানবাধিকারের স্বীকৃতি নিশ্চিতপূর্বক সব প্রকার বৈষম্যকে পেছনে ফেলে সাম্যের এক নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ফরিদা খানম বলেন, ‘অনেক রক্ত, অশ্রু আর স্বজন হারানোর বেদনায় সিক্ত আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ দীর্ঘ দিনের শোষিত আর শৃঙ্খলিত বাঙ্গালী জাতীর হৃদয়ে অধিকার আদায়ের যে মাটির প্রদীপটি মিটমিট করে জ্বলে উঠেছিল, দীর্ঘ নয় মাসে হাজারো ধারায় স্ফুরিত হয়ে ১৬ ডিসেম্বর তা রূপ নিয়েছিল আলোর মশালে। আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীনতা, তারপর বিজয়। ইতিমধ্যে স্বাধীনতার ৫৪ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, ৫৫-তে আমাদের পদার্পণ।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তোমরাই আগামী দিনের নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের কারিগর। তোমাদের প্রতি অনুরোধ শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যা নয় বরং ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে অংশগ্রহণপূর্বক মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে চেষ্টা করবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদেরকে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যোগ্য করে তুলবে।’