সৌদির সাথে মিল রেখে নোয়াখালীর পাঁচ গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
- নোয়াখালী প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১২:০৯ পিএম, ৩০ মার্চ ২০২৫

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে নোয়াখালীর পাঁচ গ্রামের মানুষ আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন।
রোববার (৩০ মার্চ) সকাল ৯টায় দুই তিন উপজেলার ১০টি মসজিদে একযোগে ঈদের জামাতে অংশ নেন এই চার গ্রামের মুসল্লিরা।
জানা যায়, বড় পীর আবু মুহম্মদ মহিউদ্দীন সৈয়দ আবদুল কাদির জিলানীর (র.) মতাদর্শে তৈরি হয় কাদেরিয়া তরিকা। কাদেরিয়া তরিকার অনুসারী লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিণারায়নপুর, বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর, রামভল্লবপুর গ্রামের বাসিন্দারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি বছর একদিন আগে রোজা রাখে। এছাড়া ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করে থাকে। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তারা প্রায় ১০০ বছর ধরে ঈদ জামাতের আয়োজন করে থাকেন।
গ্রামগুলো হল নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়াখালী পৌরসভা লক্ষ্মীনারায়ণপুর ও হরিণারায়নপুর গ্রাম, কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের রামভল্লবপুর, বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রাম।
মসজিদগুলো হল বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বসন্ত বাগ গ্রামের সিনিয়র মাদ্রাসা জামে মসজিদ, বসন্তবাগ পোদ্দার বাড়ি জামে মসজিদ, বসন্তবাগ গ্রামের নগর বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, বসন্তবাগ গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, পশ্চিম বসন্তবাগ গ্রামের মুন্সি বাড়ির দরজা জামে মসজিদ, ফাজিলপুর গ্রামের দায়রা বাড়ির জামে মসজিদ, বেগমগঞ্জের জিরতলী ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের জামে মসজিদ, কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের রামভল্লবপুর দায়রা শরিফ ও নোয়াখালী পৌরসভার হরিণারায়নপুর রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফ, খান্দানে কাদেরী তরিকায়ে আবুল উলাইয়ী গোলামে জাহাগীরি দায়রা শরিফে ঈদুল ফিতরের নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
গোলামে জাহাগীরি দায়রা শরিফের সাধারণ সম্পাদক সফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা খুব আনন্দিত। দীর্ঘ শত বছর ধরে আমরা এক সঙ্গে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপন করি। আমাদের প্রাণের নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর দেশে সৌদি আরবের সঙ্গে ঈদ করতে পেরে আমরা খুশি।’
রশিদিয়া রহিমিয়া দরবার শরিফের ঈদের জামায়াতের ইমামতি করেন ইমাম হাফেজ মোবারক হোসেন রাকিব। তিনি বলেন, ‘চাঁদ উঠার ওপর নির্ভর করেই রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপন করা হয়। পৃথিবীর আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, শুধু বাংলাদেশ ছাড়া সৌদি আরবসহ সকল মুসলিম দেশে আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। এ কারণে আমরা তাদের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করছি।’
কাদেরিয়া তরিকার অনুসারী নোয়াখালী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. সুমন বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষদের থেকে আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করি। প্রায় ১০০ বছরের বেশি হবে। বিগত বছরের তুলনায় এবারের জামাতে মুসল্লিদের উপস্থিতি বেশি হয়েছে।’
নোয়াখালীর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল্লাহ আল-ফারুক বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আজ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, কবিরহাট ও সদর উপজেলার চার গ্রামের মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা এক দিন আগে রোজা রাখে এবং এক দিন আগে ঈদ করে। সে অনুসারে ঈদুল ফিতর একদিন আগে করে। এ নামাজ পড়াকে কেন্দ্রকে করে সেখানে যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সুষ্ঠু ভাবে সবাই নামাজ শেষ করেছে।’