
কুমিল্লার দেবিদ্বারে এক অভিযানে গ্রেপ্তারের পর রাজনৈতিক পরিচয় ঘিরে নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। বদিউল আলম বদু (৫৫) নামের এক ব্যক্তি রাতে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে গ্রেপ্তার হলেও পরদিন সকালে বিএনপি নেতা পরিচয়ে মুক্তি পাওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দিবাগত রাতে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে দেবিদ্বার পৌর এলাকার দক্ষিণ ভিংলাবাড়ি গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে বদিউল আলম বদুও ছিলেন।
তবে শনিবার দুপুরে আটক চারজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হলেও, বদিউল আলম বদুকে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের তদবিরে ছেড়ে দেয় পুলিশ বলে অভিযোগ উঠেছে। সকাল থেকেই পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ভিপি মহিউদ্দিন সরকার মাহফুজের নেতৃত্বে ১০–১৫ জন নেতাকর্মী থানায় উপস্থিত হয়ে বদুর মুক্তির দাবি জানান।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, বদিউল আলম বদু অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মিছিল-সমাবেশেও অংশ নেন। তাঁর ছেলে জামির হোসেন পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি, যিনি গত বছরের আব্দুর রাজ্জাক রুবেল হত্যা মামলার ৫৩ নম্বর আসামি। সম্প্রতি বদু নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ভিপি মহিউদ্দিন সরকার মাহফুজ বলেন, “বদিউল আলম বদু দেবিদ্বার পৌর বিএনপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক। আগে তিনি সহ-সভাপতিও ছিলেন। সে আগে আওয়ামী লীগ করতেন কিনা, তা আমাদের জানা নেই। তবে তার ছেলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত, এটা সত্য।”
অন্যদিকে দেবিদ্বার থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, “তিনি বর্তমানে ওয়ার্ড বিএনপির কমিটিতে আছেন। বিএনপি নেতা হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তার ছেলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা।”
এ বিষয়ে দেবিদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেলের সিনিয়র এএসপি মো. শাহীন বলেন, “পর্যাপ্ত প্রমাণ না থাকায় তদন্ত কর্মকর্তা তাকে ছেড়ে দিতে পারেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আবারও গ্রেপ্তার করা হবে। এতে বড় কোনো সমস্যা নেই।”