
মবের হাত থেকে বাঁচাতে পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প
নাটোরে সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বাড়িতে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ব্যানার। পুলিশের দাবি, উত্তেজিত জনতা তথা মবের ভাঙচুর থেকে ভবনটি বাঁচাতে এ কৌশল নেয়া হয়। ব্যানার টাঙানোর একটি ছবি বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, অন্ধকারে দুই যুবক সিংড়া পৌরসভার গোড়াউনপাড়ায় পলকের তিনতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বারান্দার গ্রিলের সঙ্গে একটি ব্যানারের দড়ি বাঁধছেন। ওই ব্যানারে লেখা ‘অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প, সিংড়া থানা, নাটোর’। স্থানীয়রা জানায়, পলকের এই বাড়ি থেকে হেঁটে সিংড়া থানা ৫ মিনিটের ও সহকারী পুলিশ সুপারের (সিংড়া সার্কেল) কার্যালয় ১০ মিনিটের পথ। গতকাল বুধবার রাত ৭টার পর সিংড়া থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে দুই যুবক বাড়িটিতে ব্যানার লাগিয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর ঘটনাটি জানাজানি হলে উৎসুক লোকজন জড়ো হন। তবে বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে ব্যানারটি দেখা যায়নি। স্থানীয়রা আরও জানায়, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ওই দিনই পলকের এই বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। পলক প্রতিমন্ত্রী থাকার সময় বাড়িটির নিচতলার একটি কক্ষ তার প্রটোকলে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই কক্ষকে অনেকেই পুলিশ ক্যাম্প হিসেবে জানতেন তখন থেকে। কক্ষের বারান্দায় পতাকা স্ট্যান্ডও ছিল। এ ব্যাপারে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক জানান, আমাদের কাছে খবর ছিল মবের মাধ্যমে একদল জনতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের বাড়িটি ভাঙচুর করবে। যেহেতু ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভাঙচুর করা হয়েছে, তা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিংড়ার এই বাড়ি ভাঙচুর করা হতে পারে। তবে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প লেখার কারণে কেউ বাড়িটি ভাঙচুর করতে আসেনি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ব্যানারটি খুলে ফেলা হয়েছে। এখন এসে দেখতে পারেন, ব্যানারটি আর নেই।

দাউদকান্দিতে পুলিশ পরিচয়ে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় পুলিশ পরিচয়ে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাতে উপজেলার জিংলাতলী গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় মুকবুল হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা নগদ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, তিন হাজার দুবাইয়ের দিরহামসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালপত্র লুট করে নিয়ে গেছে বলে দাবি পরিবারের। পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ২টার দিকে মুকবুলের বাড়িতে কয়েকজন গিয়ে পুলিশ পরিচয়ে দরজা খুলতে বলে। মুকবুল দরজা খুললে অস্ত্রধারী মুখোশ পরা ডাকাত দল তার দুবাই প্রবাসী ছেলে সাকিলসহ পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে ডাকাত দল ঘরের আলমারি থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, বিদেশি মুদ্রাসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সাইদুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শৈলকুপায় মসজিদে স্যান্ডেল হারানো নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১০
মসজিদে তারাবির জামাত থেকে স্যান্ডেল হারানো নিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের গোকুলনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। যদিও পুলিশ ধারণা করছে, খেলার ছলে কোনো কুকুর মসজিদের বারান্দা থেকে স্যান্ডেল নিয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, গোকুলনগরে আধিপত্য বিস্তারসহ নানা বিষয় নিয়ে আব্দুল মালেকের লোকজনের সঙ্গে আমজাদ হোসেনের পক্ষের বিরোধ চলছে। গ্রামের মসজিদে উভয় পক্ষের লোকেরাই তারাবির নামাজ পড়েন। গত কয়েকদিনে মালেকের সমর্থকদের স্যান্ডেল নামাজ পড়ার সময় মসজিদের সিঁড়ি থেকে হারিয়ে যায়। বুধবার রাতেও তাদের কয়েকজনের স্যান্ডেল হারিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে নামাজের পর মালেকের সমর্থকদের সঙ্গে আমজাদের পক্ষের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ১০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, গোকুলনগর গ্রামে তারাবির নামাজের সময় সম্ভবত কুকুর খেলার ছলে স্যান্ডেল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গ্রামের এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দোষারোপ করতে থাকে। বিষয়টি এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওড়না ঠিক করে পরতে বলায় যুবককে গ্রেফতার ভালো লক্ষণ নয়: রেজাউল করীম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘রমজান মাসের মূল শিক্ষা হলো আল্লাহ-ভীতি অর্জন করা। মানুষের জীবনের সব ক্ষেত্রে আল্লাহ-ভীতি অর্জন করতে পারলে এ ধরনের মানুষ দ্বারাই কেবল দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া সম্ভব। মানুষের মধ্যে আল্লাহর ভয় না থাকায় দেশের সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে। যে ব্যক্তির অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকে সে কখনও রাষ্ট্রের সম্পদ কুক্ষিগত করতে পারে না। কোনও প্রকার পাপ কাজে জড়াতে পারে না। সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহভীরু শাসক প্রতিষ্ঠিত হলে দেশ দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব।’ মুফতি রেজাউল করীম বলেন, ‘হিজাব নিয়ে নতুনভাবে চক্রান্ত শুরু হয়েছে। প্রকাশ্যে ধূমপান দেশের আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ এ কথা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্মরণ করিয়ে দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে নাস্তিক্যবাদী শাহবাগীরা মাঠে নেমেছে। রমজান মাসে প্রকাশ্যে ধূমপান করা ইসলামের বিধি-বিধানের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। অপরদিকে ওড়না ঠিক করে পরতে বলায় যুবককে গ্রেফতার। এসব খুব ভালো লক্ষণ নয়। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে ইসলাম বিদ্বেষীদের দ্বারা ফেল করানোর হুমকি দিয়ে ছাত্রীদের হিজাব খুলতে বাধ্য করা, শ্রেণিকক্ষে শত শিক্ষার্থীর সামনে পর্দার কারণে মেয়েদের হয়রানি করা, ভাইভা বোর্ড থেকে পর্দাশীল প্রার্থীদের গালি দিয়ে কাঁদিয়ে বের করে দেওয়ার মতো অসংখ্য ঘটনায় কোনও প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি কথিত এসব নারী স্বাধীনতাকামীদের। তাহলে পর্দা করতে বললে দোষ হবে কেন? রমজানের প্রতি ন্যূনতম সম্মানবোধ তো নেই-ই, এখন তথাকথিত নারীরা ইসলামের বিধানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছে।’ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বরিশালের চরমোনাই মাদ্রাসা ময়দানে পবিত্র রমজান উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী তালিম-তারবিয়াতের কার্যক্রমে জোহরের নামাজের পর আলোচনায় চরমোনাই পীর এসব কথা বলেন। আলোচনায় পীর সাহেব চরমোনাই ছাড়াও নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম, মাদ্রাসার শিক্ষক এবং চরমোনাই ইউপি চেয়ারম্যান মুফতী জিয়াউল করীম অংশ নেন। চরমোনাই পীর বলেন, ‘রাষ্ট্রের সর্বত্র অশান্তি বিরাজ করছে। মানুষ মানুষকে হত্যা করছে। এ অবস্থায় রমজানের শিক্ষা গ্রহণ করে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ নেতা বহিষ্কার
সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগরের ৪ নেতাকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন- যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর রহমান, যুগ্ম সদস্যসচিব সৈয়েদ আবদুল্লাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব রাকিব হাসান সুজন ও সংগঠক সাফওয়ান ইফাজ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার ও সদস্যসচিব জহুরুল তানভীর বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সঙ্গে কোনোরূপ সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তাদের কোনো কার্যক্রমের দায়ভার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগর নেবে না। সংগঠনের আহ্বায়ক আল শাহরিয়ার, সদস্যসচিব জহুরুল তানভীর ও মুখপাত্র আয়মান আহাদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সাংবাদিকদের সম্মানে লক্ষ্মীপুরে ছাত্রশিবিরের ইফতার মাহফিল
সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে লক্ষ্মীপুর শহর ছাত্রশিবির। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আবদুল আউয়াল হামদুর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ফারুক হোসাইন নুরনবী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহমদ হেলাল, সাবেক সভাপতি আ.হ.ম মোশতাকুর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক সেলিম উদ্দিন নিজামী, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ, জামায়াত নেতা আবদুল আউয়াল রাসেল ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেলসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা। সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। অতীতেও সাংবাদিকরা দেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা কোনো চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নেই। অতীতে সংগঠনের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। শুধুমাত্র ছাত্রদের মানোন্নয়নেই কাজ করে শিবির। পরে ইফতারের আগে দেশ ও জাতীর কল্যাণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

সনদ জালিয়াতি করে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (হারবার) আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ও অভিজ্ঞতার ভুয়া সনদ দিয়ে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে গত পাঁচ বছর বন্দরে চাকরি সুবাদে নানা অনিয়ম করে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তাকে বন্দর থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকা কার্যালয়ে বদলি করা হয়। বর্তমানে এখানে কর্মরত আছেন। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার অ্যান্ড মেরিন শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে আবুল কালাম আজাদ সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) এবং নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) পদে আবেদন করেন। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার থেকে পাস করায় সহকারী প্রকৌশলী এবং নির্বাহী প্রকৌশলী পদে তার আবেদনের কোনও সুযোগ ছিল না। কিন্তু তৎকালীন সরকারদলীয় নেতাদের তদবিরে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সনদ না থাকা সত্ত্বেও সনদ জালিয়াতি করে চাকরি নেন তিনি। বন্দর কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পায়রা বন্দরে নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) পদে নিয়োগের যোগ্যতা হিসেবে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) ডিগ্রি এবং সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে সংশ্লিষ্ট কাজে কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে মর্মে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল। কিন্তু আবুল কালাম আজাদ ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী হওয়ায় আবেদনের সুবিধার্থে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির নামে একটি জাল সনদ তৈরি করেন। ওই সনদ তৈরিতে তাকে ছাত্রলীগের একজন সাবেক সভাপতি সহযোগিতা করেছেন। অথচ আবুল কালাম স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হননি। তার আবেদনে উল্লেখ করেন, ২০০২ সালে একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার) হিসেবে কাজ শুরু করেন। বন্দরের এই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, সনদ জালিয়াতি করে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় তার চাকরি নেওয়া এবং পাসের তারিখ দেখলে। অর্ধাৎ পাস করার আগেই সনদ জমা দিয়েছেন। ২০০৯ সালের ৪ নভেম্বর ওই ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান তাকে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে পদোন্নতি দেয় এবং সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ওই পদে ২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। অর্থাৎ ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে চার বছর কর্মরত ছিলেন; যা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত অভিজ্ঞতা থেকে এক বছর কম। এ ছাড়া জাল সনদ অনুযায়ী, তিনি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন ২০১০ সালের এপ্রিলে। অথচ পাস করার প্রায় ছয় মাস আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালের ৪ নভেম্বর তিনি সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পেয়েছেন মর্মে তার আবেদনে উল্লেখ করেন। এই হিসেবে তার বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সনদ ও অভিজ্ঞতার সনদ ভুয়া বলে প্রতীয়মান হয়। ভুয়া সনদ অনুযায়ী অভিজ্ঞতা পাঁচ বছরের কম থাকা সত্ত্বেও অবৈধ পন্থায় তাকে নিয়োগ দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের কর্মকর্তাদের প্রথম বেসিক প্রফেশনাল ট্রেইনিং কোর্সের সুভেনিয়র বইতে তার এসব যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার বিষয়টি উল্লেখ আছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, নিয়োগ পাওয়ার পর বন্দরের সব ধরনের উন্নয়নকাজের নিয়ন্ত্রণ নিতে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন গঠন করেন। অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে বন্দরের কাজ করাতেন তিনি। পরবর্তীতে রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও ম্যন্টেইন্যান্স ড্রেজিং প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক হওয়ার জন্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও নৌপরিবহন মন্ত্রীকে দিয়ে তদবির করান। তাদের তদবিরে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ আজাদকে ক্যাপিটাল ও ম্যন্টেইন্যান্স ড্রেজিং প্রকল্পের উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেন। এ সুযোগে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। এ নিয়ে অভিযোগ উঠলে তাকে সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পায়রা বন্দর থেকে ২০২৩ সালে বিআইডব্লিউটিতে বদলি করা হয়। অভিযোগ আছে, বন্দরে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার শান্তিনগরে ১৫৫০ বর্গফুটের দুটি ফ্ল্যাট কিনেছেন; যার একটিতে নিজে থাকেন এবং অন্যটি ভাড়া দিয়েছেন। পায়রা বন্দর এলাকায় কয়েক কোটি টাকার জমি কিনেছেন। ঢাকার রামপুরা এলাকায় একটি প্লট ও একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি এখন পায়রা বন্দরে নেই। বর্তমানে ঢাকায় বিআইডব্লিউটিতে কর্মরত আছি। আর এসব অভিযোগের বিষয়ে আমার কাছে প্রশ্ন করে কোনও লাভ নেই। যারা অভিযোগ করেছে তাদের বলেন, তথ্য-প্রমাণসহ আমার মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে। তখন মন্ত্রণালয় তদন্ত করে অনিয়ম-দুর্নীতি পেলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

ছাত্র-জনতার নামে সন্ত্রাসীদের নৈরাজ্য চলছে: আইজিপি
ছাত্র-জনতার নাম করে সন্ত্রাসীরা নৈরাজ্য চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় মিলনায়তনে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ কর্মশালায় তিনি বলেন, ‘শক্ত হাতে নৈরাজ্য রুখে দেওয়া হবে।’ আইজিপি আরও বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যা-নির্যাতনে জড়িত অপরাধী পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বাহিনীর গৌরব ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’ কর্মশালায় অংশ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গত ১৬ বছর ফরমায়েশি রায় দিয়েছেন বিচারকরা।’ এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘এই সংস্কৃতি বাংলাদেশে ফিরে আসতে দেওয়া হবে না।’ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত সময়ে বাংলাদেশকে অন্ধকারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, জড়িতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আয়নাঘরসহ অপরাধে জড়িতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’ কর্মশালায় রংপুর বিভাগের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচারবিভাগের কর্মকর্তারা অংশ নেন। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহবুবুর রহমান। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন অসুবিধার কথা তুলে ধরেন এবং তার প্রতিকার চান। বিশেষ করে চার্জশিট দেওয়ার পর আসামি খালাসের বিষয়ে কথা বলেন পুলিশ ও বিচারকরা।

ডিলারের ট্রলি থামিয়ে চাল লুট, বিএনপি নেতার পদ স্থগিত
যশোরের শার্শায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির এক ডিলারের ১৫৫ বস্তা চাল লুটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার জন্য উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ও তার ভাই ইবাদুল ইসলাম কালুকে দায়ী করেন ভুক্তভোগী। গতকাল বুধবার (৫ মার্চ) এ ঘটনার পর প্রশাসনের চাপে চাল ফেরত দেন তারা। তবে রাতেই যশোর জেলা বিএনপি রুহুল কুদ্দুসের দলীয় পদ স্থগিত করে। অভিযোগকারী শাহজাহান কবির কায়বা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের ডিলার। তার ভাষ্য, বুধবার সকালে বাগআঁচড়া খাদ্যগুদাম থেকে চাল নিয়ে কয়েকটি ট্রলি তার ডিলার পয়েন্টের উদ্দেশে পাঠান। পথে বাগআঁচড়া বকুলতলায় পৌঁছালে বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে তার ভাই ইবাদুল ইসলাম কালু ট্রলিগুলোর গতিরোধ করেন। তারা চালককে জিম্মি করে ১৫৫ বস্তা চাল নিজেদের গুদামে নামিয়ে রাখেন। এ বিষয়ে জানতে তিনি রুহুল কুদ্দুসের নম্বরে কল দিলে তিনি (রুহুল) পাল্টা গালাগাল ও হুমকি-ধমকি দেন। বিষয়টি তিনি প্রশাসনকে জানান। তাদের চাপে দেড় ঘণ্টার পর চাল ফেরত পেয়েছেন। ইবাদুল ইসলাম কালু দাবি করেন, তিনি ডিলার শাহজাহান কবিরের কাছে টাকা পাবেন। তাই ট্রলি আটকে চাল নামিয়ে রেখেছেন। তবে ডিলার শাহজাহান কবির বলেন, ইবাদুলের দাবির কোনো ভিত্তি নেই। বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুসের ভাষ্য, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি কোনো চাল লুট করিনি। আমার ভাই ডিলারের কাছে টাকা পাবে। তাই ট্রলি আটকে রেখেছিল। পরে চাল ফেরত দেওয়া হয়েছে। শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁকে ইউএনও চাল উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এর পরপরই জানতে পারেন, চালের ট্রলিগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শার্শার ইউএনও কাজী নাজিব হাসান জানান, বিষয়টি শুনেই তিনি শার্শা থানার ওসিকে চাল উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এদিকে চাল লুটের অভিযোগ ওঠার পর রুহুল কুদ্দুসের দলীয় পদ স্থগিত করে বিএনপি। বুধবার রাতে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ‘ধর্ষণের শিকার’ শিশু
মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় বোনের বাড়ি বেড়াতে এনে এক শিশু ধর্ষিত হওয়ার অভিযোগ এসেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন মাগুরা সদর থানার ওসি আয়ুব আলী। আট বছর বয়সি শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে আনা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফদিরপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বড় মেয়ের বরাতে শিশুটির মা বলেন, তার ছোট মেয়ে বড় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায়। ঘটনার সময় শিশুটি ছাড়া কেউ ঘরে কেউ ছিল না। এই সুযোগে কেউ একজন ঘরে ঢুকে শিশুটিকে ধর্ষণ করে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। পরে বড় মেয়ে বাড়ি এসে তার ছোটবোনকে অচেতন অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। তখন দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। শিশুটির জ্ঞান না ফেরায় বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, মেয়েটিকে ধর্ষণ করে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছে। মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুবাস রঞ্জন হালদার বলেন, “তাকে প্রথমে শ্বাসকষ্টের রোগী হিসেবে নিয়ে আসা হয়। পরে মেডিসিন বিভাগে নিয়ে গেলে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টার আলামত পাওয়া যায়। মেয়েটির অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়।” মাগুরা সদর থানার ওসি আয়ুব আলী বলেন, মাগুরা শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নিজনান্দুয়ালী এলাকায় শিশুকে ধর্ষণের মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে।

হাঁসে পাড়া কালো ডিমে এলাকায় চাঞ্চল্য
সোনার ডিম পাড়া হাঁসের গল্প শুনে যে কৌতুহল জনমনে, সেই কৌতুহল নিয়েই পাতি হাঁসের পাড়া কালো ডিম নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একটি দেশি পাতি হাঁস কালো রঙের কয়েকটি ডিম পেড়েছে এমন খবরে এলাকায় তৈরি হয়েছে কৌতুহল। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া এলাকার সরদার ডাঙ্গী গ্রামের মো. ইয়াছিন সরদারের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে। পরিবার থেকে জানা যায়, এক বছর আগে পাশের বাড়ি থেকে ছয়টি হাঁসের বাচ্চা কিনেছিলেন ইয়াছিন সরদারের স্ত্রী হামিদা আক্তার। সবগুলো হাঁস স্বাভাবিক রঙের ডিম দিলেও গত কয়েক মাস আগে থেকে একটি হাঁস হঠাৎ করে কালো রঙের ডিম পাড়া শুরু করে। প্রথমে এই ডিম দেখে তারা অবাক হয়ে যান। সাপ অথবা অন্য প্রাণির ডিম ভেবে কাউকে না জানিয়ে রেখে দেন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, পাতিহাঁসের কালো ডিম দেখতে ওই বাড়িতে প্রতিদিন দূর-দুরন্ত থেকে আগত লোকজনের সমাগম ঘটছে। গৃহবধূ স্ত্রী হামিদা আক্তার জানান, প্রায় এক বছর আগে পাশের বাড়ির এক ভাবীর কাছ থেকে ছয়টি হাঁসের বাচ্চা কিনেছিলাম। এর মধ্যে একটি হাঁস কয়েক মাস আগে ৩/৪ টি কালো রঙেয়ের ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ গাঢ় কালো দেখে মনে করি এটা অন্যকোন প্রজাতির ডিম। গত কয়েকদিন আগে আবার পরপর ৪/৫টি ডিম পাড়ে। তখন ডিমগুলো মানুষদের দেখালে এলাকায় আশপাশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে হামিদার স্বামী ইয়াছিন সরদার জানান, কালো রঙয়ের ডিম দেখে প্রথমে অবাক হয়েছি। হাঁসটি কালো রঙয়ের ডিম ছাড়া সাদা ডিমও পাড়ে। এক বছর বয়সী হাঁসটি সাদা রঙয়ের ডিমের পাশাপাশি গত কয়েক মাসে মোট ৮/৯টি ডিম পেড়েছে। ডিম নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার স্মরণাপন্ন হলে তিনি বলেন এটি খাওয়া যাবে এবং এর গুণগত মান স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান। পরে একটি ডিম রেখে সবগুলো খেয়ে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী মজুমদার জানান, প্রাণিদেহের বিলিভার্ডিন কম-বেশি হওয়ার কারণে ডিমের খোলসের রঙ নীলচে বা সবুজাভ হয়ে থাকে। এ ছাড়া জরায়ুতে ডিমের খোলসটি পরিণত হওয়ার সময়ে গাঢ় সবুজ রঙের পিত্তরস বেশি থাকতে পারে। ওই দুটি উপাদান জরায়ুতে বেশি থাকলে তা থেকে ডিমটির রঙ কালো হতে পারে। তিনি আরও বলেন, কালো রংয়ের এ ডিম খেতে কোনো সমস্যা নেই। জেনেটিক কারণে হাঁসের ডিমের রঙ কালো হতে পারে।

কর্মচারীদের হাত-পা বেঁধে ৫ গরু চুরি, ভিডিও আলোচনায়
গভীর রাতে খামারের কর্মচারীদের বেঁধে পাঁচটি গরু চুরি করে নিয়ে গেছে চোরের দল। গরু চুরির ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নের বসন্তপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ভিডিওটি ভাইরাল হতে থাকে। পরে বিষয়টি সবার নজরে আসে। এ ঘটনায় খামারের মালিক হানিফ মিয়া বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেছেন। হানিফ মিয়া চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বসন্তপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি একজন মাংস ব্যবসায়ী। ভাইরাল ওই সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গামছা দিয়ে মাথা বাঁধা এক চোর প্রথমে খামারটিতে প্রবেশ করে একটি গরু টেনে বের করছে। এ সময় খামারে প্রবেশ করে গামছা দিয়ে মুখ ঢাকা আরও দুই চোর। খামারের ডান পাশের খাটের ওপর মশারির নিচ থেকে বৃদ্ধ লোক বের হতে চেষ্টা করলে তাকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে চোর চক্র। দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখে খাটে। পরে একে একে আরও চারটি গরু নিয়ে পালিয়ে যায় চক্রটি। এ ঘটনার পরদিন চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেছেন খামারের মালিক হানিফ। খামারটির মালিক জানান, খামারে গরুগুলো রেখে বসন্তপুর বাজারে জবাই করে মাংস বিক্রি করেন। রোজার আগের দিন ১ মার্চ রাতে তার খামারের দুই কর্মচারী ইদ্রিস ও রানা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ৩টার দিকে একদল চোর খামারে প্রবেশ করে খাটে শুয়ে থাকা খামারের দুই কর্মচারী ইদ্রিস ও রানার হাত-পা বেঁধে ফেলে। খামারে থাকা ৭টি গরুর মধ্যে একে একে তারা ৫টি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। গরুগুলোর মূল্য সাড়ে ৮ লাখ টাকা। চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন বলেন, ‘খামারের মালিক মামলা করেছেন। পুলিশ তদন্ত করছে। চোরচক্রকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর চেষ্টা চলছে।’

ছিনতাইয়ের অভিযোগে স্থানীয়দের হাতে আটক পুলিশ কর্মকর্তা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছিনতাইয়ের অভিযোগে ফিরোজ রানা নামে পুলিশের এক সহকারি উপ-পরিদর্শককে দুই ঘণ্টা আটকে রাখে স্থানীয় জনতা। পরে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠায় ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার (৫ মার্চ) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের হোসেনডাইং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটককৃত ফিরোজ রানা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) ওয়াসিম ফিরোজ বিষিয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়রা জানায়, বুধবার (৫ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এএসআই ফিরোজসহ আরও তিনজন পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে হোসেনডাইং এলাকায় একটি মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। এ সময় ওই মোটরসাইকেল চালক পালিয়ে এসে গ্রামের লোকজনকে জানায়। পরে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে ফিরোজসহ তিনজনকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তবে বাকিরা পালিয়ে গেলেও ফিরোজ রানাকে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। এদিকে, স্থানীয়দের ধারণ করা ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে সদর মডেল থানার ওসি মতিউর রহমানকে তার পরিচয় নিশ্চিত করে উত্তেজিত জনতার সামনে বলেতে শোনা যায়, তাকে ছিনতাইকারি হিসেবেই গ্রেপ্তার করা হলো। হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যারা পালিয়ে গেছে তারা যেই হোক তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এটা আমার লজ্জা, আমার ইউনিফর্মের লজ্জা। অপরদিকে, ঝিলিম ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি জানান, সাদা পোশাকে ছিলেন এএসআই ফিরোজ। স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে ফেলার পর নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দেন এবং সঙ্গে থাকা পরিচয়পত্র দেখান। পরে খবর পেয়ে থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা এসে রাত সোয়া ১১টার দিকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ইউপি সদস্য মনিরুল আরও জানান, এর আগেও হোসেনডাইং এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। তাই স্থানীয় জনতা প্রচন্ড ক্ষুব্ধ ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনাস্থলে শত শত মানুষ জড়ো হয়ে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) ওয়াসিম ফিরোজ জানান, বুধবার রাতে ফিরোজ রানা সদর পুলিশ ফাঁড়িতে ডিউটি অফিসার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। ডিউটি অফিসার থাকা অবস্থায় কোনো অভিযানে যাওয়ার সুযোগ নেই। তারপরও তিনি (ফিরোজ রানা) দাবি করেছেন যে সোর্স নিয়ে মাদক উদ্ধারে গিয়েছিলেন। তবে মাদক উদ্ধারে যাওয়ার আগে তিনি ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাননি। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, তার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠায় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার তদন্তের জন্য একটি তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন আগে এএসআই ফিরোজ রানা ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর পুলিশ ফাঁড়িতে যোগদান করেন।

উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি সিএমপি’র কোতোয়ালী থানা থেকে লুট করা
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘গণপিটুনিতে’ জামায়াতের দুই কর্মী হত্যার পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া পিস্তলটি নগরীর কোতোয়ালী থানা থেকে লুট হওয়া পুলিশের অস্ত্র বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সনতু। তিনি বলেছেন, 'সেখানে একই ধরনের আরও অনেক অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। পুলিশের অনেক অস্ত্র খোয়া গেছে। এ অস্ত্রগুলো কীভাবে কাদের কাছে গেল, সেগুলো অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।' সোমবার রাতে সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা চূড়ামনি গ্রামে ‘ডাকাত সন্দেহে’ দুই জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিল পাঁচজন। নিহতরা হলেন- পাশের কাঞ্চনা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. নেজাম উদ্দিন ও আবু সালেক; যাদেরকে নিজেদের কর্মী দাবি করে জামায়াত ইসলামী বলছে, হত্যাকাণ্ডটি ছিল ‘পরিকল্পিত’। পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বলেন, 'আধিপত্য বিস্তারে অভ্যন্তরীণ বিরোধে খুন হয় নেজাম ও সালেক। ঘটনার দিন তারা সাতটি সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে সেখানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের অস্ত্র প্রদর্শন করেছিলেন।' ঘটনার দিনসহ নিহতরা সেখানে গত তিন মাসে নয়বার গিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, 'তারা চাঁদার জন্য নিয়মিত সেখানে যেতেন বলে পুলিশ তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে। চার-পাঁচ দিন আগেও তারা সেখানে গিয়ে এক মেম্বারের স্ত্রীকে থাপ্পড় মেরেছিলেন; যার কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।' সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি জায়েদ হোসেন মঙ্গলবার বলেন, “নিহত দুজনই ওই এলাকার পরিচিত ব্যক্তি। তাদের না চিনে গণপিটুন দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। সালিশী বিচারের নামে ফন্দি করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।” জামায়াত নেতা জায়েদের ভাষ্য, ফ্যাসিস্টদের চক্রান্তে জেনেশুনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটনানো হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা কাউকে সেখানে যেতে দেয়নি। সড়কে গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে মারধর করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মাইকে ডাকাত হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সনতু বলেন, অনেকেই অনেক রাজনৈতিক কথা বলছেন। বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের কোনো ব্যক্তি বা চেয়ারম্যানের উপস্থিতি ছিল কি না… আসলে আমরা কিন্তু এ ধরনের কোনো ব্যক্তি বা চেয়ারম্যানের উপস্থিতি খুঁজে পাইনি। এমনকি সেখানে তাদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের শক্ত অবস্থানও আমরা খুঁজে পাইনি। পুলিশ সুপারের ভাষ্য, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্যদের ধরতে পুলিশ নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে তাদের থাকার কোনো সুযোগ নেই। ‘ঘটনার দিন গুলি ছুঁড়েছিল নেজাম’ পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার দিন নেজাম সেখানে গিয়ে অস্ত্র ওপেন করেছিল। হত্যাকাণ্ডের পর সেখান থেকে যে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছিল, সেটি সিএমপি’র কোতোয়ালী থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র। সেখানে অনেক অস্ত্র প্রদর্শিত হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছিল, সব একই ধরনের পিস্তল। “আমাদের পুলিশের অনেক অস্ত্র খোয়া গেছে। এ অস্ত্রগুলো কীভাবে কাদের কাছে গেল, সেগুলো অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। এগুলো আমাদের খুঁজতে হচ্ছে এবং এগুলো নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।” পুলিশ সুপার বলেন, “কোনো অবস্থাতে ভাবার সুযোগ নেই- প্রশাসন নির্বিকার হয়ে গেছে। আমরা আমাদের মত প্রকৃত সত্য ঘটনা উদঘাটনের জন্য যা কিছু দরকার, সবগুলো করব। সেজন্য একটু সময় নিচ্ছি। প্রকৃত ঘটনা কী, সেটা আমাদের উদঘাটন করা দরকার।” মামলা হয়নি তিন দিনেও এদিকে হত্যাকাণ্ডের তিন দিনেও কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় দুইটি পক্ষ আছে। “একটা পক্ষ যারা আহত হয়েছেন এবং আরেকটি পক্ষ যারা মারা গেছে। কোনো পক্ষ থেকেই কোনো মামলা হয়নি। যেহেতু সেখানে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, সিআরপিসি ও পিআরবি অনুযায়ী পুলিশের পক্ষ থেকে একটি অস্ত্র মামলা করা হয়েছে।” স্থানীয়ভাবে জানা যায়, বিগত সরকারের আমলে দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা নেজাম ৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে দেশে আসেন। সাতকানিয়ার কাঞ্চনা ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ শুরু করেন তিনি। এওচিয়ার সাবেক এক চেয়ারম্যানের মাছের খামার ও ইটভাটা লুটের অভিযোগও আছে নেজামের বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে দখল-বেদখলের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। স্থানীয়দের ভাষ্য, ঘটনার দিন কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে নেজাম ও সালেক দলবল নিয়ে সোমবার রাতে ছনখোলা গ্রামে প্রবেশ করে। এসময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায় এবং মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার পর সাতকানিয়ার ওসি জাহেদুল ইসলামও জানিয়েছিলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশা, একটি পিস্তল ও আট রাউন্ড গুলির খোসা জব্দ করেছেন তারা। নিহত সালেকের বিরুদ্ধে দুইটি হত্যা, বিস্ফোরকসহ পাঁচটি ও নেজামের বিরুদ্ধে একটি মামলা আছে বলে পুলিশের ভাষ্য।

ব্রিজের রড চুরির অভিযোগে বিএনপির তিন নেতাকে বহিষ্কার
পিরোজপুরের নাজিরপুরে ব্রিজের ছাউনি ভেঙে রড চুরির অভিযোগে তিন নেতাকে দলীয় পদ থেকে বহিস্কার করেছেন জেলা বিএনপি। বুধবার রাতে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব গাজী অহিদুজ্জামান লাভলু স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাদের বহিস্কারের কথা জানানো হয়। তারা হলেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সরদার সাফায়েত হোসেন শাহীন, ওই ইউনিয়ন যুবদলের প্রচার সম্পাদক মো. হেদায়েত খান (৫০) এবং একই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম (৪৫) । প্রেস বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, দলীয়শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিদেশ এবং পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা বিএনপির লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব ধরনের দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। জানা গেছে, সোমবার গভীর রাতে উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর বানিয়ারী গ্রামে লোহার ব্রিজের ছাউনির ঢালাই ভেঙে প্রায় লক্ষাধিক টাকা মূল্যের লোহার রড চুরি করে নেন অভিযুক্তরা। স্থানীয়রা এ সময় ভাঙায় বাধা দিলে অভিযুক্তরা তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে ব্রিজে থাকা লোহার রড নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম হেকমত বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা সরদার সাফায়েত হোসেন শাহীনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন। উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, এক বছর আগে এডিবির আওতায় ওই সেতুটির ছাউনিটি ঢালাই দেওয়া হয়।

ভারতীয় সিগারেট পাচারের সময় বিএনপি নেতাসহ আটক ৪
রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় ভারতীয় অবৈধ সিগারেট পাচারের সময় বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাসহ চার জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। কাউখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ভোরে উপজেলার পানছড়ির উগলছড়ি বেতছড়ি এলাকা থেকে ৩১ কার্টন সিগারেটসহ তাদের আটক করা হয়। জব্দ করা সিগারেটের দাম আনুমানিক ৩২ লাখ টাকা বলে জানিয়েছে কাউখালী থানা পুলিশ। অভিযানে অংশ নেন কাউখালী থানা পুলিশের ওসি সাইফুল ইসলাম সোহাগ। পুলিশ এ সময় বতছড়ি এলাকার একটি বাড়ি থেকে এই অবৈধ সিগারেট উদ্ধারের পর জব্দ করে। আটককৃতরা হলেন– কাউখালী উপজেলা কৃষক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ইসমাইল (৩৮), উপজেলা তাঁতী দলের যুগ্ম সম্পাদক মো. রিপন (৩৫), কাউখালী উপজেলা যুবদলের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ (৪০), ওই বাড়ির মালিক মো. শামসুদ্দিন। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটি জেলার ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিভিন্ন রুট ব্যবহার করে এসব ভারতীয় অবৈধ সিগারেট পাচার করে আসছে পাচারকারী একটি সংঘবদ্ধ চক্র। বৃহস্পতিবার পাচারের লক্ষ্যে ভারতীয় ৩১ কার্টন ওরিশ ও মুন সিগারেট পাচারের জন্য নিয়ে আসে। ভোর হয়ে যাওয়ায় আটককৃতরা বেতছড়ি এলাকার জনৈক শামসুদ্দিনের বাড়িতে লুকিয়ে রাখে। এরই মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে সিগারেটসহ চার জনকে আটক করে। কাউখালী থানার ওসি জানিয়েছেন, অবৈধ ভারতীয় সিগারেট আটকের ঘটনায় কাউখালী থানার এসআই জুলফিকার বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কাউখালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আটক চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তারা ছাড়াও যদি কেউ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কারও অভিযান চালানোর এখতিয়ার নেই’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কারও অভিযান চালানোর কোনো এখতিয়ার নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর পল্টনে ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মব জাস্টিস কমছে না। বাসা-বাড়িতে ঢুকে মব জাস্টিসসহ বিদেশিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি দ্বিমত করব না হচ্ছে। তবে যেখানে হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। পুলিশের ওপরেও হামলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে জনগণকে সচেতন করতে হবে। জনগণ এমন উচ্ছৃঙ্খল হয়ে গেলে অনেক সময় কিন্তু সমস্যা হয়। বাহিনী দিয়ে তো সবসময় কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করা যায় না। তিনি বলেন, আপনাদেরও (সাংবাদিক) একটা বড় ভূমিকা পালন করতে হবে যাতে করে মব জাস্টিসের মতো ঘটনা না ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় তৎপর আছে। যে জায়গায় মব জাস্টিস হচ্ছে তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা (মব জাস্টিস) না ঘটে সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাসা-বাড়িতে হুট করে অভিযানের নামে লুটপাটের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কোনো অভিযান চালানোর কারও এখতিয়ার নেই। সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি হচ্ছে, সামনে ঈদ। কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হবে— এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যতে যেন না হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। হাইওয়েতে ডাকাতির রেড জোন চিহ্নিত করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে রাজশাহী জোনেই ডাকাতির সংখ্যাটা একটু বেশি। টাঙ্গাইলেও বেশি হয়। তবে ডাকাতি যেন না হয় সেজন্য ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ইন্সট্রাকশন দিয়েছি। তারা আগের চেয়ে অনেক তৎপর হচ্ছে। আরেক প্রশ্নে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঈদে চাঁদাবাজি যেন না হয় এবং ছিনতাই যেন না হয় এজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ছিনতাইবিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। টুরিস্ট পুলিশে জনবলের অনেক ঘাটতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের জনবলের অনেক ঘাটতি রয়েছে। তাদের নিজেদের কোনো থানার জায়গা নেই। ভাড়া ভবনে থাকে। পাশাপাশি যানবাহনেরও অনেক সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যেই ট্যুরিস্ট পুলিশ ভালো কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের দেশে ট্যুরিস্ট পুলিশ অ্যাক্টিভ (সক্রিয়) হলে বিদেশি ট্যুরিস্ট আমাদের দেশে আসবে এবং অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখবে। তিনি বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের সংখ্যা অনেক কম হলেও স্পট অনেক বেশি। তাই তাদের জনবল বাড়ানো দরকার।

টিসিবির লাইনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ
নাটোরে খোলা বাজারে টিসিবির পণ্য বিক্রির সময় লাইনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে শহরের বড়হরিশপুর পয়েন্টে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহতের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, খোলা বাজারে টিসিবির পণ্য নিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নাটোর শহরের পাঁচটি পয়েন্টে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। পরে দুপুরের দিকে টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাক এসে পণ্য বিতরণ করতে থাকে। এ সময় লাইনে দাঁড়ান ওকে কেন্দ্র করে ভোক্তাদের মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা ঘটে। এ সময় মারপিটে বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনা সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’ তবে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি। ‘অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
পাবিপ্রবির ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীদের হাতে কোরআন তুলে দিল ছাত্রশিবির
কোরআন শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ৫ শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে পবিত্র আল কোরআন বিতরণ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। ছাত্রশিবিরের পাবনা শহর শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে পাবিপ্রবির প্রধান ফটকের সামনের সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ মাঠে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম শিক্ষার্থীদের হাতে কোরআন তুলে দেন। পাবনা শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফিরোজ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়া এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ছ ম তরীকুল ইসলাম, পাবনা শহর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি গোলাম রহমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম হেলাল। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে সাদিক কায়েম বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলন নিয়ে এখন নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু আমরা এই ষড়যন্ত্র সফল হতে দেব না। ২৪’-এর আন্দোলন ব্যর্থ হলে পুরো প্রজন্ম ব্যর্থ হবে। আমরা অমাদের কোনো ছোটখাটো স্বার্থ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বার্থে এক সঙ্গে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ।’

বরিশালে চলন্ত বাসে আগুন
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গ্রীনলাইন পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বাসটিতে তখন ২০ জন যাত্রী ছিলেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল উজিরপুর উপজেলার বামরাইলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশন কর্মকর্তা বিপুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার সকালে ২৩ যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আছে গ্রিন লাইন পরিবহনের ওই বাসটি। পথে তিন যাত্রী নেমে যান। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দক্ষিণ বামরাইল এলাকায় পৌঁছালে বাসটিতে আগুন দেখা যায়। এ সময় বাসে চালক, সহকারী ও সুপারভাইজারসহ ২০ জন আরোহী ছিলেন। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই তারা গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে আগুনের কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট প্রায় একঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু বাসটির ইঞ্জিন, পেছনের চাকা ও সবগুলো সিট পুড়ে গেছে।’ গৌরনদী মহাসড়ক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে আসে গ্রীনলাইন পরিবহনের একটি এসি বাস। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাসে আগুন ধরে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে চালক বাস মহাসড়কের পাশে রেখে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। তাই কোনো যাত্রীর ক্ষতি হয়নি। তবে বাসটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ ‘আগুন নেভানোর পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’

যুবদল নেতার বিরুদ্ধে ইউএনওর অফিস কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ
যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) দফতরের অ্যাকাউন্ট্যান্ট ক্লার্ক শাহীন আলমকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৫ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ইউএনওর দফতরের সামনে শহীদ মিনারে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদের নেতৃত্বে এ হামলা ও মারধরের অভিযোগ ওঠে। তবে হামলা ও মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদ। মণিরামপুর বিএনপির দুই গ্রুপের এক গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ ইকবাল হোসেন। অন্য গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুছা ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু। অভিযুক্ত মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদ মোহাম্মদ মুছা ও আসাদুজ্জামান মিন্টুর অনুসারী। ইউএনওর অফিসের অ্যাকাউন্ট্যান্ট শাহিন আলম বলেন, ‘অফিস শেষে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে ইউএনও অফিসের সামনের শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে সহকর্মী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এ সময় সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল করে মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদ কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে সাইফুল বলে ওঠেন, শাহিন আমার সামনে আছে। তখন মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদ আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাইফুল আমাকে ফোন ধরিয়ে দেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদকে চিনি। কিন্তু তার সঙ্গে আমার কখনও কথা হয়নি। আমি ফোন ধরতেই তিনি আমাকে গালমন্দ করতে থাকেন। আমি প্রতিবাদ করলে নানা হুমকি দিয়ে তিনি আমার অবস্থান জানতে চান। আমি অফিসের সামনে থাকার কথা বললে তিনি ফোন কেটে দেন। বিষয়টি নিয়ে নিয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু ভাইকে কল করি। কথা বলা শুরু করলে দেড় থেকে দুই মিনিটের মধ্যে মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন আমাদের কাছে আসেন। তখন তার সঙ্গে থাকা একজন আমার মাথায় থাপ্পড় মারেন। অন্য কয়েকজন ধাক্কাধাক্কি ও টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। আসাদুজ্জামান মিন্টু ভাই মোবাইলে কথা বলার পর তারা চলে যান।’ শাহিন আলম বলেন, ‘বিষয়টি তখনই ইউএনও স্যারকে বলি। তখন স্যার জেলা প্রশাসক স্যারকে জানান। পরে থানা পুলিশ ও জেলা পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে।’ কেন আপনার উপর চড়াও হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারণ আমি বলতে পারছি না। তবে ধারণা করছি মণিরামপুরে ওএমএসে ডিলার নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। রিয়াদ সম্ভবত ডিলার হতে ইচ্ছুক। সম্প্রতি এই বিষয়ে আমি মিন্টু ভাইয়ের (আসাদুজ্জামান মিন্টু) সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনা জানাজানি হলে রাতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু ইউএনও স্যারের বাসায় এসে দেখা করেন। এরপর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুছা, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু ও মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদ আমার কাছে এসে ভুল স্বীকার করেছেন। আমি তাদের বলেছি, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেনেছেন। এই বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’ মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, ‘উপজেলা চত্বরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে একজন সরকারি কর্মচারীকে মারধর করা হয়েছে। ঘটনা জানার পরপরই জেলা প্রশাসক স্যারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন। এখনও পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত আমরা পাইনি।’

কিশোরগঞ্জ বার নির্বাচনে সভাপতিসহ পাঁচ পদে আওয়ামীপন্থীদের জয়
কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতি পদসহ ৫টি পদে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী ঘরানার প্রার্থী। আর সাধারণ সম্পাদকসহ ৯টি পদে জয়ী হয়েছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রার্থীরা। আওয়ামী ঘরানার কোনো প্যানেল ছিল না। সবাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রার্থী হয়েছিলেন। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হয়। নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন অ্যাডভোকেট এসএম মাহবুবুর রহমান। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শহিদুল আলম শহীদ ৪২১ ভোট পেয়ে টানা তৃতীয় বার সভাপতি হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ পেয়েছেন ৮০ ভোট। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম রতন ২৯১ ভোট পেয়ে টানা পঞ্চম বার সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শহীদুল ইসলাম হুমায়ুন পেয়েছেন ১৩৪ ভোট। সহ-সভাপতি হয়েছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম প্রার্থী মো. মানিক ও আওয়ামী ঘরানার প্রার্থী মো. আব্দুর রাশিদ ভূঞা। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অন্য বিজয়ীরা হলেন সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে নাদিরা সুলতানা সোমা ও শাহিনূর কলি। লাইব্রেরি সম্পাদক পদে মো. আব্দুল্লাহ আল বোখারী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে এএম সাজ্জাদুল হক, অডিটর পদে আবু বাক্কার সিদ্দিক। কমিটিতে ৫টি সদস্য পদ রয়েছে। সবাই সমঝোতার ভিত্তিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী ঘরানার সদস্য হলেন কফিল উদ্দিন, সারোয়ার জাহান সানি ও সোহাগ মিয়া। জাতীয়তাবাদী প্যানেলের সদস্যরা হলেন আবু তাহের হারুন ও আহসানুজ্জামান নাসির। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৬০৬ জন। ভোট দিয়েছেন ৫৩৭ জন।

বিএনপির কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ বলে তোপের মুখে কনকচাঁপা, ‘সরি’ বলে রক্ষা
সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক একটি কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ বলে নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন কণ্ঠশিল্পী রোমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। পরে অবশ্য ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পেয়েছেন তিনি। বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে আলম চৌরাস্তায় উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সিরাজগঞ্জ-১ কাজীপুর সংসদীয় আসনের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আলোচনা সভায় ওই মন্তব্য করেন কনকচাঁপা। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন দলের উপস্থিত নেতাকর্মীরা। পরে ‘সরি’ বলে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে রক্ষা পেয়েছেন কনকচাঁপা। এ সময় অন্য নেতারা মাইক হাতে নিয়ে নেতাকর্মীদের শান্ত করেন। পরে কনকচাঁপা বক্তব্য না দিয়েই মঞ্চে বসে থাকেন। শেষে প্রাইভেটকারে করে সভাস্থল ত্যাগ করার সময়ও, কিছু নেতাকর্মীকে আবারও কনকচাঁপাকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ভিপি শামীম খান বলেন, ‘বক্তব্য চলাকালে কণ্ঠশিল্পী রোমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা একপর্যায়ে বেফাঁস একটি কথা বলেন। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক কমিটিকে পকেট বলে ফেলেন। এ সময় নেতাকর্মীরা তাকে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন। পরে নেতাকর্মীদের শান্ত করা হয়।’ সভায় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান লেবু, নাজমুল হাসান তালুকদার রানা ও রকিবুল করিম খান পাপ্পুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এবার বঙ্গোপসাগর থেকে ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি
কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলায় ছয়টি মাছ ধরা ট্রলারসহ ৫৬ জন বাংলাদেশি জেলেকে মিয়ানমারে ধরে নিয়ে গেছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। স্থানীয়রা জানান, (৫ মার্চ) বুধবার দুপুরে সেন্টমার্টিনের দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের সময় অস্ত্রের মুখে আরাকান আর্মি ট্রলারগুলো নিয়ে যায়। ট্রলারগুলো এখনো ছেড়ে দেয়া হয়নি। ট্রলারে থাকা জেলেরা শাহপরীর দ্বীপ ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন। তিনি জানান, মিয়ানমারে ছয়টি ট্রলারসহ ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন তারা আরাকান আর্মির জিম্মায়। তাদেরকে ফেরত আনতে কাজ চলছে বলে জানান ইউএনও।