আমার এলাকার খবর

ঈদুল ফিতরের জামাত: সব রেকর্ড ভেঙে শোলাকিয়ায় ছয় লক্ষাধিক মুসল্লির অংশগ্রহণ

এক মাস সিয়াম সাধনার পর উপমহাদেশসহ দেশের অন্যতম বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এবার ঐতিহাসিক এই জামাতে প্রায় ৬ লাখের বেশি মুসল্লি অংশ নেন। এর আগে, গত বছরের ঈদুল ফিতরের নামাজের ৫ লক্ষাধিক মানুষ সমবেত হয়েছিলেন। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ১০টায় দেশের বৃহৎ এই ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী জানান, এবারের ঈদুল ফিতরের জামাতে প্রায় ৬ লাখেরও বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। ঈদের জামাতে অংশ নিতে সোমবার সকালে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ঈদগাহে আসে। ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুটি ট্রেন সকালে মুসল্লিদের নিয়ে কিশোরগঞ্জে পৌঁছায়। সকাল ৯টার মধ্যেই ঈদগাহ ময়দান লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। দীর্ঘ ১৫ বছর পর জামাতে ইমামতি করেছেন কিশোরগঞ্জ শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। বিকল্প ইমাম হিসেবে ছিলেন হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদরাসার প্রভাষক মাওলানা জুবায়ের ইবনে আব্দুল হাই। মুসল্লিদের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল এই ঈদগাহ ময়দান। এ বছর শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হলো। খুতবা শেষে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়। শোলাকিয়ায় নামাজ আদায়ে দুই দিন ধরেই গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা, বরিশাল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, যশোরসহ ৬৪টি জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে কিশোরগঞ্জে লোক আসতে শুরু করেন। অনেকে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের বাসায়, আবাসিক হোটেল, শহরের মসজিদগুলোতে এবং ঈদগাহ মাঠে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে রাত্রীযাপন করেন। ভোররাতে ট্রেন, বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, রিকশা, মোটরসাইকেল, সাইকেল ও হেঁটে হাজারো মানুষ কিশোরগঞ্জে আসেন। সবার গন্তব্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া। বড় ঈদগাহ, বড় জামাত বেশি মুসল্লির সঙ্গে জামাত আদায় করলে দোয়া কবুল হয়- এমন আকর্ষণে সকাল থেকেই এই ঈদ জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য কিশোরগঞ্জ ও আশপাশের জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন লাখো মুসল্লি। নেত্রকোনা থেকে ঈদের জামাতে নামাজ পড়তে এসেছেন রফিকুল ইসলাম। তার সঙ্গে এসেছেন আরও কয়েকজন মুসল্লি। তারা সবাই একসঙ্গে শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষ করে বাড়ি ফিরবেন। তাদের মধ্যে এক স্বস্তির ঈদ উদযাপন লক্ষ্য করা গেছে। কিশোরগঞ্জের পুলিশ হাছান চৌধুরী বলেন, ‘অতীতের বিষয়গুলো মাথায় রেখে আমরা সব সময় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। এবারও পূর্বের সব বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। তাই আমরা কিছু বাড়তি আয়োজন করেছি। এর মধ্যে ইদগাহ ময়দানকে লক্ষ্য করে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’ ঈদগাহ ময়দান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, ‘খুব সুন্দরভাবেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ ঈদগাহ মাঠের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকলেই আমাদের সহযোগিতা করছেন। রাস্তাঘাটে মানুষে লোকারণ্য। নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে সবাই শান্তিপূর্ণভাবেই বাসায় ফিরতে পারবেন।’ রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে মুসল্লিদের সংকেত দিতে শর্টগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। তিনটি জামাত শুরুর ১৫ মিনিট আগে, দুটি ১০ মিনিট আগে এবং শেষ গুলিটি ছোড়া হয় জামাত শুরুর এক মিনিট আগে। আগত লাখ লাখ মুসল্লির নিরাপত্তার স্বার্থে এখানে টুপি ও জায়নামাজ ছাড়া কিছু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের চলাচলের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুইটি বিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা করেছে। একটি ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে এবং অন্যটি ভৈরব থেকে ছেড়েছে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে প্রার্থনার ক্যাপ, মুখোশ ও প্রার্থনার ম্যাট ছাড়া অন্য কিছু বহন করা নিষিদ্ধ ছিল। মুসল্লিদের সাহায্য করার জন্য বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক এবং কয়েকটি মেডিকেল টিম মাঠে কর্তব্যরত ছিল। মাঠসহ প্রবেশপথে সিসিটিভি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ারও ছিল। আর পুলিশের ড্রোন ক্যামেরা আকাশে উড়েছে। প্রসঙ্গত, ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী ও এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। তবু এ ঈদগাহ ময়দানের ধারাবাহিক জামাত আয়োজনে ছন্দপতন ঘটেনি, কিন্তু করোনা অতিমারির কারণে দুই বছর এই ঈদগাহ ময়দানে ঈদের কোনো জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। ২৭৪ বছরের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে শোলাকিয়া ঈদগাহ। এই ঈদগাহের যাত্রা শুরু ১৭৫০ সালে। তবে ১৮২৮ সালে প্রথম আনুমানিক সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সেই থেকেই এই ঈদগাহসহ পুরো এলাকার নামকরণ হয় ‘শোলাকিয়া’। ১৮২৮ সাল থেকে জামাত গণনায় এবার ১৯৭তম জামাত হবে। প্রশাসন থেকে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেনাবাহিনী, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), পুলিশ, সাদা পোশাকের গোয়েন্দাদের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মোট ৫টি প্লাটুন মোতায়েন করা হয়েছিল। তারা আনসার সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে মাঠ পর্যবেক্ষণ করছিলেন। সিসিটিভি ক্যামেরা ছাড়াও, ৬টি ওয়াচ টাওয়ার এবং ড্রোনও মাঠে নজরদারির জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল। জরুরি সেবার জন্য ৬টি অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।

সংকীর্ণতাকে পাশ কাটিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান সারজিসের

সবাইকে মনের সংকীর্ণতা ও সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সেইসঙ্গে রমজানকে ধারণ করে বাকি ১১ মাস আল্লাহর ভয়ে সব ধরনের নেতিবাচক কাজ থেকে দূরে থাকতে সবার প্রতি আহ্বানও জানান তিনি। সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে পঞ্চগড় পৌরসভার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাতে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন করা। এই তাকওয়া অর্থাৎ আল্লাহর ভয়ে সব নেতিবাচক কাজ থেকে দূরে থাকা। আমরা যেন এই রমজানকে ধারণ করে বাকি ১১ মাস আল্লাহর ভয়ে, সৃষ্টিকর্তার ভয়ে সব ধরনের নেতিবাচক কাজ থেকে দূরে থাকি। আল্লাহর প্রতি আমাদের বান্দার যা হক রয়েছে এবং বান্দার প্রতি বান্দার যে হক রয়েছে এই হক যেন আমরা আমাদের জায়গা থেকে আদায় করি।’‘আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পুরো পৃথিবীতে মজলুম অনেক মুসলিম ভাইবোন আমাদের মতো করে ঈদ করতে পারছেন না। অনেক দেশে মুসলিম ভাইয়েরা মজলুম হিসেবে রয়েছেন। আমাদের দেশে মিয়ানমারের অনেক মজলুম মুসলিম ভাইয়েরা রয়েছেন আমরা পৃথিবীর সব মজলুম মুসলিম ভাইয়ের জন্য দোয়া করব।’এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘পৃথিবীর সব মানুষের জন্য দোয়া করব যেন আমরা সবাই একসঙ্গে আমাদের মনের সংকীর্ণতা আমাদের সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি।’সবাইকে ক্ষণস্থায়ী এ জীবনে ভালো কাজ করার আহ্বান জানিয়ে সারজিস দেশের সব মানুষকে ফ্যাসিস্টমুক্ত নতুন বাংলাদেশে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।এর আগে ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাতের প্রথম জামাতে নামাজ আদায় করেন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র তৌহিদুল ইসলাম, জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও মুসল্লিরা।

চুয়াডাঙ্গায় ঈদে কোটি টাকার দই-মিষ্টি বিক্রির রেকর্ড

এবারের ঈদে চুয়াডাঙ্গার দই-মিষ্টির বাজারে ব্যাপক বিক্রি হয়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এবার কোটি টাকার বেশি দই-মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। এতে সন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরা। ঈদের উৎসবমুখর পরিবেশে সব শ্রেণির মানুষের খাবারের তালিকায় দই-মিষ্টি আবশ্যিক উপকরণ হয়ে উঠেছে, যা এর চাহিদা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু জেলা শহর নয়, চুয়াডাঙ্গার প্রত্যন্ত অঞ্চল, উপজেলার বাজার ও গ্রামাঞ্চলের দই-মিষ্টির দোকানগুলোতেও বিক্রি ছিল আশানুরূপ। ঈদের দুই দিন আগে থেকেই চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরসহ উপজেলা পর্যায়ের দই-মিষ্টির দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। বিক্রেতারা জানান, চাহিদা এতটাই বেশি ছিল যে, তারা যথেষ্ট পণ্য সরবরাহ করতেও হিমশিম খেয়েছেন। শুধু চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরেই দুই দিনে প্রায় দুই কোটি টাকার মিষ্টি বিক্রি হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন। এক বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জেলাজুড়ে কয়েক কোটি টাকার দই-মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। শুধু চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরেই গত দুই দিনে দুই কোটি টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে। আলমডাঙ্গা, জীবননগর ও দামুড়হুদার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। জেলার জনপ্রিয় দই-মিষ্টির দোকান যেমন কালিপদ মিষ্টান্ন ভান্ডার, কাশফুল, মিঠাই বাড়ি, খন্দকার সুইটস ও মিষ্টিমুখে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। এসব দোকানে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যবসায়ীরা জানান, সাদামিষ্টি, কালোজাম, চমচম, রসগোল্লা, খির চমচম, স্পঞ্জ মিষ্টি ও ছানা মিষ্টির চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। অভিজাত ক্রেতারা বিশেষ ধরনের দই ও ছানার মিষ্টির প্রতি বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন। এছাড়া অনেকে টক নিয়েছেন নিজ বাড়িতেই দই তৈরির জন্য। মিষ্টির কারিগররা জানান, চাহিদা মেটাতে তারা দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। এক দোকানে দুই দিনে মণকে মণ দই বিক্রির তথ্যও পাওয়া গেছে। চুয়াডাঙ্গার কাশফুল মিষ্টির দোকানের স্বত্বাধিকারী অপু বলেন, ‘আমাদের পাঁচজন কর্মচারী দিনরাত কাজ করেও চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।’ এদিকে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ঈদের মৌসুমে দুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। খন্দকার সুইটসের মালিক সৌরভ বলেন, ‘বিক্রির চাপ প্রচুর, কিন্তু পর্যাপ্ত দুধ না পাওয়ায় উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে।’ অন্যদিকে, ক্রেতারাও জানান, প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে অনেকেই দই কিনতে এসে খালি হাতে ফিরেছেন। শহরের বনানী পাড়ার সাকিব নামের একজন বলেন, ‘দুপুরে এসে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়েও দই পাইনি, তাই মাঝরাতে আবার এসেছি।’ চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির নেতা সুমন পারভেজ খান বলেন, ‘এবারের ঈদে পুরো জেলাজুড়ে কোটি টাকার বেশি দই-মিষ্টি বিক্রি হয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর।’ চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মনজুরুল ইসলাম লার্জ বলেন, ‘এবার জেলায় কোটি কোটি টাকার দই-মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের জন্য এটি অবশ্যই আনন্দের খবর।’ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘চাহিদা বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে দই-মিষ্টি শিল্পে আরও উন্নয়ন সম্ভব হবে। তবে দুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করাই আগামী দিনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।’

টাঙ্গাইলে ঈদগাহ মাঠে ১৪৪ ধারা জারি

টাঙ্গাইলে ঈদের মাঠে সংঘর্ষ এড়াতে ১৪৪ ধারা জা‌রি করেছে জেলা প্রশাসন। ঈদের দিন সোমবার (৩১ মার্চ) টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বড় বাসালিয়া ঈদগাহ মাঠে ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। রোববার (৩০ মার্চ) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। অফিস আদেশে বলা হয়, ‘টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বড় বাসালিয়া ঈদগাহ মাঠে ঈদুল ফিতরে নামাজ আদায়কে কেন্দ্র করে গ্রামের লোকজনের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।’ বড় বাসালিয়া গ্রামের ঈদগাহ মাঠের ৪০০ গজ পরিসীমার মধ্যে সকল প্রকার সমাবেশ, স্লোগান, মিছিল, শোভাযাত্রা, পিকেটিং, মাইক্রোফোন ব্যবহার, ঢাকঢোল পেটানো, গোলযোগ সৃষ্টি, লাঠিসোটা, অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যাদি পরিবহন এবং সর্বসাধারণের বে-আইনি অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ঈদগাহ মাঠে ঈদের দিন সোমবার ভোর ৫টা হতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে।। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার বলেন, ‘পুলিশের প্রতিবেদনের পরিপেক্ষিতে বড় বাসালিয়া ঈদগাহ মাঠে ঈদের দিন আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।’

যমুনা সেতু দিয়ে এক দিনে ৩১ হাজার গাড়ি পারাপার

ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ফাঁকা রাজধানী ঢাকা। নাড়ির টানে ঘরে ফিরেছে মানুষ। তবে ঈদের আগের দিনে উত্তরবঙ্গসহ কয়েকটি রুটের ঘরমুখো এসব যাত্রীদের বহন করা বিভিন্ন গাড়ি পারি দিয়েছে যমুনা সেতু। গত ২৪ ঘণ্টায় এ সেতুর ওপর দিয়ে ৩১ হাজার ৪৬৫ টি গাড়ি চলাচল করেছে। এতে উভয় পাশে টোল আদায় হয়েছে দুই কোটি ২৫ লাখ ২৬ হাজার ৮৫০ টাকা। সোমবার (৩১ মার্চ) ভোরে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার (২৯ মার্চ) রাত ১২টা থেকে রোববার (৩০ মার্চ) রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত যমুনা সেতু দিয়ে গাড়ি পারাপার হয়েছে ৩১ হাজার ৪৬৫ টি। এর মধ্যে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী লেনে ২১ হাজার ১২৬ ও উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী লেনে ১০ হাজার ৩৩৯ গাড়ি চলাচল করেছে। এরমধ্যে পূর্ব টোলপ্লাজায় এক কোটি ৪৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬০০ টাকা ও পশ্চিম টোলপ্লাজায় আদায় হয়েছে ৭৮ লাখ ৩৮ হাজার ২৫০ টাকা। তিনি আরও জানান গত ২৪ ঘণ্টার শুরুর দিকে গাড়ির চাপ থাকলেও পরে আস্তে আস্তে তা কমে যায়। সোমবার এ সংখ্যা আরও কমবে।

দিনাজপুরে গোর-এ-শহীদে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত

দেশের সবচেয়ে বড় দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৯টায় ঈদের প্রথম নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।২৩ একর জমি নিয়ে বিস্তৃত গোর-এ-শহীদ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায়ের জন্য সারা দেশ থেকে মুসল্লিরা অংশ নেন। তাদের শান্তিপূর্ণভাবে ইবাদতের ব্যবস্থা করতে নানা ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ।জানা যায়, ওযু, যানবাহন রাখার ব্যবস্থা, মেডিকেল টিম, খাবার পানিসহ ১৪৫টি মাইক রাখা হয়। ছিল তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে বৈদ্যুতিক লাইটিং করা হয়।

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাবার ওপর হামলা

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাবা আজিজুল রহমান বাচ্চুর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের নিজ গ্রাম নারায়ণপুর মোল্লা বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে আন্দোলনকারীরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। এর আগে, সন্ধ্যায় উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের বাড়িতে হামলার শিকার হন মাহফুজের বাবা। তিনি ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী মঞ্জু বাড়িতে এসেছেন- এমন খবরে তার বাড়িতে হামলা চালায় বিএনপি-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় মাহফুজের বাবা বাচ্চু মোল্লা বাধা দেন। বাচ্চু ও মঞ্জু সম্পর্কে চাচা ভাতিজা। হামলায় বাধা দেওয়ায় একটি পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে বাচ্চুর ওপর হামলা করে। এতে তিনি হাতে আঘাত পান। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি বাড়িতে আছেন। উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী মঞ্জু বলেন, ‘রাজনীতি করে কখনও কারও ক্ষতি করিনি। এরপরও পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। অসুস্থ মাকে দেখতে বিকেলে বাড়িতে আসি। খবর পেয়ে বিএনপির লোকজন বাড়িতে হামলা করে। আমি এর আগেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। তখন বাচ্চু কাকা হামলাকারীদের বাধা দিতে গিয়ে হামলার শিকার হন।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লার মোবাইল ফোনে কল দিলে পরিবারের এক সদস্য কল রিসিভ করে বলেন, ‘বাচ্চু মোল্লা এখন ভালো আছেন। বাড়িতেই রয়েছেন।’ এ নিয়ে রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার বলেন, ‘বাচ্চু মোল্লার বাড়ির সামনে দুইটি পক্ষ ঝামেলায় জড়ায়। তখন তিনি উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু একটি পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে আঘাত করে। হাতে আঘাত পেলে তাকে হাসপাতাল নিয়ে চিকৎসা করানো হয়। আমিও হাসপাতাল গিয়েছি। তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।’ তবে বিক্ষোভ মিছিলের সময় আমি হাসপাতালে ছিলাম বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পদ্মা সেতুতে সর্বমোট টোল আদায় ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর থেকে শনিবার (২৯ মার্চ) পর্যন্ত উভয় প্রান্তের টোল প্লাজায় সর্বমোট টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ৪৫৯ টাকা। আর ঈদযাত্রার পাঁচ দিনে শনিবার পর্যন্ত পদ্মা সেতু হয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ সময়ে ১৭ কোটি ৪২ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শেষ মুহূর্তের ঈদযাত্রায় পদ্মা সেতু অতিক্রম করে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার লাখ লাখ মানুষ। তবে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ নেই। কখনও কখনও একেবারেই ফাঁকা থাকছে টোল প্লাজা। শনিবার পদ্মা সেতু দিয়ে ৩৬ হাজার ৯২৪ যান পারাপার হয়। এর মধ্যে মোটরসাইকেল ছিল ৮ হাজার ৭৫০টি। টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৭ লাখ ৯২ হাজার ২০০ টাকা। এছাড়া শনিবার পর্যন্ত ঈদযাত্রার পাঁচ দিনে পদ্মা সেতু হয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ সময়ে টোল আদায় হয়েছে ১৭ কোটি ৪২ লাখ ২১ হাজার ৭০০ টাকা। সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক আলতাফ হোসেন আরও জানান, লম্বা ছুটির কারণে এবার ঈদযাত্রায় চাপ অপেক্ষাকৃত কম। রোববার ভোরেও টোল প্লাজা ঘিরে যানবাহনের লম্বা লাইন ছিল। কিন্তু বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে থাকে। টোল আদায়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদ উপলক্ষে কর্মজীবী ও ব্যবসায়ী অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন। তাই রোববারও অস্থায়ী টোল বুথটি চালু রাখা হয়। এখন ৯টি লেনে টোল আদায় করা হচ্ছে। তবে অনেকেই গরম এবং যানজট এড়াতে সেহেরির পরপরই বেরিয়ে পড়েন। তাই সকালে কিছুটা চাপ থাকলেও বেলা গড়ানোর পর চাপ কমতে থাকে। একই চিত্র দেখা গেছে জেলার অপর মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রামের পথেও। রোববার (৩০ মার্চ) সকাল থেকে এ মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ১৩ কিলোমিটারে ছিল না কোনো যানজট।

লোহাগড়ায় ঈদের সকালে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত পাঁচ

চট্টগ্রাম জেলার লোহাগড়া উপজেলায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬ জন। আজ সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৭টা ২৫ মিনিটের দিকে এ সংঘর্ষ হয়। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, লোহাগড়ার জাঙ্গালিয়া মাজার গেট এলাকায় সৌদিয়া পরিবহনের বাসের সঙ্গে একটি মিনি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। পরে লোহাগড়া ফায়ার স্টেশনের ১টি ইউনিট উদ্ধার কার্যক্রম চালায়।

‘স্বৈরাচারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৩ জনের মনোনয়ন বাতিল

স্বৈরাচার সরকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে দোসর আখ্যা দিয়ে দিনাজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে অংশ নেওয়া একটি প্যানেলের ১৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শনিবার দিনাজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের বৈধ প্রার্থী পদের তালিকা প্রকাশের দিন ধার্য ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রার্থীদের পদের দাখিলকৃত প্রত্যেকটি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্তভাবে প্রতিয়মান হয় যে, ক্রমিক নম্বর ১-১৩ নম্বর পর্যন্ত প্রার্থীগণ বিগত ফ্যাসিস্ট, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগী ও দোসর প্রমাণিত হওয়ায় বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাদের প্রার্থীত পদের জন্য অযোগ্য ও উপযুক্ত নন। সেহেতু ১-১৩ নম্বর প্রার্থীতা পদের জন্য দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রগুলো প্রত্যাখ্যান অগ্রহণযোগ্য ও বাতিল করা হলো। তবে ওই বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়া অন্য দুই নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ইকবাল রায়হান (সোহেল) ও অ্যাডভোকেট তোফায়েল আহমদের (বকুল) স্বাক্ষর ছিল না।’ ওই প্যানেলে সভাপতি পদে লিয়াকত আলী ও একরামুল আমিন, সহসভাপতি পদে নুরুল ইসলাম ও জব্বার, সাধারণ সম্পাদক ইয়ামিন আহমেদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক রনি চন্দ্র রায়, কামরুল হাসান (ফিদেল), কোষাধ্যক্ষ পদে ইন্দ্রোজিৎ কুমার রায় (অনিক), শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে সৈয়দ মোসাব্বির হোসেন উচ্ছ্বাস, সমাজ কল্যাণ ও ধর্মীয় সম্পাদক পদে দেলোয়ার হোসেন, পাঠাগার সম্পাদক সৌরভ রায়, সদস্য পদে শাহাজাদ- এ কিউ খাঁন এবং তছলিমা আকতার (তাজ) মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাই শেষে স্বৈরাচারী সরকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

মিঠামইনে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শালিসে হামলা, আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় একটি শালিসকে কেন্দ্র করে বিএনপি সমর্থকদের হামলায় আওয়ামী লীগের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। রোববার (৩০ মার্চ) রাতে উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের হেমন্তগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম জজ মিয়া (৬৫)। তিনি হেমন্তগঞ্জ গ্রামের সুলমান মিয়ার ছেলে এবং আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে। কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাশেম মিয়া বলেন, ‘কিছু দিন পূর্বে তাজুল নামে এক আওয়ামী সমর্থককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই ঘটনার জেরে এলাকায় উওেজনা বিরাজ করছিল। ঘটনাটি মীমাংসার জন্য হেমন্তগঞ্জ বাজারে একটি শালিস বসলে ওই সময় বিএনপির সমর্থক রাজিব, সজীব, নজির, বুলবুল ও মানিক এসে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শালিসে হামলা চালায়। এই ঘটনায় আওয়ামী লীগ কর্মী জজ মিয়া নিহত হয়।’ মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম জজ মিয়ার মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মরেদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

খুলনায় সন্ত্রাসীদের সাথে গোলাগুলির ঘটনায় পুলিশ-নৌবাহিনীর সদস্যসহ আহত ১৮

খুলনায় শনিবার (২৯ মার্চ) মধ্যরাতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ-নৌবাহিনীর সদস্যসহ ১৮ জন আহত হয়েছেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ৭০-৮০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। এ সময় খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশসহ তার বাহিনীর ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার (৩০ মার্চ) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার। অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পলাশ শেখ (৩৮), নুরে আলম সিদ্দিকী লিমন শরীফ (২৯), রুবেল ইসলাম লাভলু কালা লাভলু (৩৫), ইমরান হোসেন ট্যাটু ইমরান (৩৫), সৈকত রহমান (২৭), ফজলে রাব্বি রাজন (৩৬), রিপন (৩০), গোলাম রব্বানী (২৬), ইমরানুজ্জামান (৩৩) ও শহিদুল (৩৫)।বিজ্ঞাপন এর আগে, শনিবার রাতভর খুলনা মহানগরীর আরামবাগ এলাকার একটি বাড়িতে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর গোলাগুলি হয়। জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধের একপর্যায়ে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ৭ পুলিশ এবং ১ জন নৌবাহিনীর সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশসহ তার বাহিনীর ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের আহত অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে তিনটি পিস্তল, পিস্তলের চার রাউন্ড গুলি, ১টি শটগান, শটগানের ২৩ রাউন্ড গুলি, ২টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি চাপাতি, ১টি হাঁসুয়া, ২টি চাকু, ৪টা মোবাইল ফোন এবং ৭টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।’ কেএমপির কমিশনার বলেন, ‘নগরীর বানরগাতি আরামবাগ এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছে বলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে পুলিশ। এর প্রেক্ষিতে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ বাড়িটি ঘেরাও করে অভিযান পরিচালনা করেন। সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেয়ে ভবনের ছাদ থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশ নিজেদের আত্মরক্ষার্থে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে পাল্টা শটগানের গুলি ছোড়ে। এ সময় সন্ত্রাসীরা ছাদ থেকে নেমে বিল্ডিংয়ের নিচে এসে পুনরায় গুলি ছুড়তে শুরু করে। পুলিশও পাল্টা শটগানের গুলি ছোড়ে। এ সময় নৌবাহিনীর সদস্যদের সংবাদ দিলে তারাও ঘটনাস্থলে আসে।’ জুলফিকার আলী বলেন, ‘যৌথবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির মধ্যেই চারিদিক থেকে বিল্ডিংটি ঘিরে ফেলা হয় এবং বিল্ডিংয়ের ভিতর থেকে দেশীয় অস্ত্র, বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশসহ ৫ জনকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা অন্যান্য সন্ত্রাসীরা বিল্ডিং থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করে। সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। গোলাগুলির একপর্যায়ে আরও পাঁচ সন্ত্রাসীকে দেশীয় অস্ত্র, বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আটক করা হয়। থানার রেকর্ডপত্র যাচাই করে জানা যায়, সন্ত্রাসী পলাশের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৪টি মামলা আছে। আসামি রুবেল ইসলাম লাভলু ওরফে কালা লাভলুর বিরুদ্ধে ডাকাতি, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ ৬টি মামলা রয়েছে। আসামি নুরে আলম সিদ্দিকী ওরফে লিয়ন শরীফের বিরুদ্ধে দুটি, মো. ইমরান হোসেন ওরফে ট্যাটু ইমরানের বিরুদ্ধে একটি, ফজলে রাব্বি রাজনের বিরুদ্ধে একটি, মো. রিপনের বিরুদ্ধে একটি, মো. ইমরানুজ্জামানের বিরুদ্ধে একটি মামলা আছে।’ কেএমপির কমিশনার আরও বলেন, ‘নিজেদের জানমাল ও সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে এবং সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে শটগানের ৪৭ রাউন্ড গুলি করে পুলিশ। এ সময় সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ৭টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ৫টির নম্বর প্লেট আছে এবং দুটির নম্বর প্লেট বিহীন। ঘটনার সময় বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে পালাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় আসামিরা শারীরিকভাবে আহত হওয়ায় তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ, খুলনা নৌবাহিনীর স্টাফ অফিসার অপারেশন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সামিউর রহমান, কেএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড সিপি) মোহা. আহসান হাবীব, সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আজম খান ও সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।

১৬ বছর পর পরিবারের সাথে ঈদ করবে মামলা-হামলার শিকার মানুষ: সারজিস

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে মানুষ স্বস্তি ও শান্তির ঈদ করবে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ ও মডিফাইড কালচারে যেসব রাজনৈতিক দল মামলা হামলার ভয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারত না। তারা ১৬ বছর পর শান্তির ঈদ করবে পরিবারের সঙ্গে।’ রোববার (৩০ মার্চ) এনসিপি পঞ্চগড়ের আয়োজনে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন সারজিস। অনুষ্ঠানে সারজিস আরো বলেন, ‘আমরা আজ জাতীয় নাগরিক পার্টির মাধ্যমে যে একত্রিত হয়েছি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ যে সম্পর্ক সেটা শেখ হাসিনা নিজ হাতে ধ্বংস করে দিয়েছিল। নতুন বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের সৌহার্দ্যপূর্ণ ফিরিয়ে আনা। তাহলে আমরা আমাদের আগামী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। আমরা বিশ্বাস করি সেই সূচনা জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং অন্য দলগুলোর সহযোগিতায় পঞ্চগড় জেলা থেকে শুরু হবে।’ এর আগে শুভেচ্ছা বক্তব্যে দল-মত নির্বিশেষে একসঙ্গে থেকে সবাইকে আগামী দিনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সবাইকে ঐক্য থাকার আহ্বান জানান বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ। তিনি বলেন, ‘রাজনীতির মাঠে আমাদের ভিন্নতা থাকতে পারে, বিভিন্ন মত থাকতে পারে। কিন্তু আমরা পঞ্চগড়ের সাথে এক থাকব। ঠিক তদ্রূপ আমরা নিজেদের যে সামাজিক অনুষ্ঠান থাকে সে অনুষ্ঠানগুলোতে আমরা দলমত নির্বিশেষে একসঙ্গে থেকে আমরা আগামী দিনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে- যে দীর্ঘ যে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি আজকে যে ফ্যাসিস্টকে আমরা বিতাড়িত করেছি, সেখান থেকে আমরা সব সময় চেষ্টা করব ঐক্য থাকব। আমাদের ঐক্যের মাঝে যেন ভিন্নতা না থাকে। এই ঐক্য নিয়ে কাজ করব। এই ঐক্য নিয়ে যদি আমরা ভিন্নতা তৈরি করি, তাহলে যে ফ্যাসিস্টরা ওত পেতে প্রতিদিন ষড়যন্ত্র করছে তারা আমাদের ঐক্যকে বিশিষ্ট করার জন্য এবং প্রভাব বিস্তার করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করব এই মাহফিলের মাধ্যমে সেভাবে সবাইকে ধারণ করে কাজ করব।’

কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা মুক্তিযুদ্ধের সেই ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা হল

লালমনিরহাট শহরের বিডিআর রোডে শিশু পার্কসংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্মারক মঞ্চের ঢেকে রাখা ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। রোববার (৩০ মার্চ) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ম্যুরালটি ভেঙে ফেলেন শ্রমিকরা। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ম্যুরালটি ভাঙছেন তারা। তবে এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দারকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অতিক্রমের আহ্বায়ক সাংবাদিক হেলাল কবির বলেন, ‘ম্যুরালটি ভাঙা হয়েছে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে। ঢেকে রাখারও নির্দেশ ছিল তার। অন্য কেউ এ নিয়ে আপত্তি জানায়নি।’ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শহরের বিডিআর রোডে লালমনিরহাট শিশু পার্কসংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্মারক মঞ্চের ম্যুরালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতা যুদ্ধ, মুজিবনগর সরকার গঠন, স্বাধীন ভূখণ্ডে নব রবির উদয়, ৭১-এর গণহত্যা, বিজয়ে উচ্ছ্বসিত বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ, জাতীয় পতাকা হাতে উল্লসিত জনতা ইত্যাদি। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে গত বুধবার (২৬ মার্চ) জেলা প্রশাসন সেই ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছিল। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় টিআইবির অনুপ্রেরণায় গঠিত লালমনিরহাট সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক)। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার বলেছিলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতীয়মান না হওয়ায় ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।’ দুই দিন পর শনিবার (২৯ মার্চ) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের সংগঠক রাসেল আহমেদ সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘আমরা ৫২, ৭১-কে ২৪-এর মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাই না।’ রোববার বিকালে টিআইবির এরিয়া কোঅর্ডিনেটর মো. মোরশেদ আলম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ঢেকে রাখার বিষয়ে আমরা আগে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আমি এখন ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছি। ম্যুরাল ভাঙার বিষয়টি আমার জানা নেই। লালমনিরহাট সনাকের সভাপতি বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন (অব.) আজিজুল হক অসুস্থ। আমরা সবাই এ নিয়ে পরবর্তীতে প্রতিবাদ জানাবো।’ এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ম্যুরাল ভাঙার সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসকের। উনার কাছেই এ বিষয়ে জানতে চান।’

বাড়ির পাশে আড্ডা দিলেন শাওন, তিন মোটরসাইলে এসে হঠাৎ গুলি

খুলনায় চাঁদরাতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে শাওন নামের যুবক আহত হয়েছেন। আজ রোববার (৩০ মার্চ) রাত পৌ‌নে ৮টার দি‌কে সিটির রূপসা বেড়িবাঁধ সড়কের বরফ ক‌লের সাম‌নে এ ঘটনা‌ ঘ‌টে। স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শাওনকে উদ্ধার ক‌রে খুলনা মেডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে ভর্তি করেন। তিনি এখন আশঙ্কামুক্ত। শাওন নতুন বাজার লঞ্চ ঘাটের পাশে তরিক গলির বা‌সিন্দা মো. শুকুর আলীর ছে‌লে। প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, শাওন বাবার মাছ ব্যবসায় দেখাশুনা ক‌রেন। রাত পৌ‌নে ৮টার দি‌কে ওই যুবক বা‌ড়ির পাশে এক‌টি চা‌য়ের দোকা‌নে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সম‌য় তিন মোটরসাইকেলে করে ছয় যুবক তা‌কে গু‌লি করে। তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হ‌য়ে তার ডান হা‌তে বিদ্ধ হয়। স্থানীয়রা এগি‌য়ে এলে দুর্বৃত্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ ক‌রে। খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার স‌নোয়ার হুসাইন মাসুম ব‌লেন, ‘শাওন‌কে সন্ত্রাসীরা বা‌ড়ির পা‌শেই গু‌লি ক‌রে‌ছে। কী কার‌ণে তা‌কে গু‌লি করা হ‌য়ে‌ছে, তা তদন্ত ক‌রে জানা যা‌বে। আসা‌মি‌দের গ্রেপ্তা‌রে অ‌ভিযান শুরু হ‌য়ে‌ছে।’

বসতবাড়ির নলকূপে গ্যাস, চলছে রান্নাবান্নার কাজ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বসতবাড়ির একটি গভীর নলকূপ থেকে গ্যাস বের হচ্ছে। এ গ্যাস দিয়ে চলছে রান্নাবান্নার কাজ। উপজেলার পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ধামদি গ্রামে একরাম হোসেনের বাড়ির নলকূপ থেকে এ গ্যাস বের হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক যুগ আগে এ নলকূপটি স্থাপন করা হয়। সম্প্রতি নলকূপ থেকে বুদ্বুদ ধরনের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু কোনো গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না একরাম হোসেনের মা বেগম আক্তার। সম্প্রতি বিষয়টি ছেলেকে জানান তিনি। ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরে একরাম হোসেন কৌতূহলবশত নলকূপের সঙ্গে একটি অতিরিক্ত পাইপ সংযোগ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। মুহূর্তেই সেখানে আগুন জ্বলে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, ‘প্রথমে শুনে বিশ্বাস হয়নি। পরে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি গ্যাসে আগুন জ্বলছে। এই গ্যাস দিয়ে রান্নাবান্নার কাজও চলছে। এই মাটির নিচে নিশ্চয়ই গ্যাসের খনি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি যথাযথভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, তবে এটি প্রাকৃতিক গ্যাসের নতুন উৎস হিসেবে সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।’ এ বিষয়ে বেগম আক্তার বলেন, ‘নলকূপে বুদ্বুদ ধরনের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। পরে আমার ছেলেকে বিষয়টি জানালে সে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় আগুন জ্বলে ওঠে। এই গ্যাস দিয়ে রান্নাবান্না করছি। বাড়ির অন্য নারীরাও এসে খাবার রান্না করছে।’ বেগম আক্তারের ছেলে একরাম হোসেন বলেন, ‘পাইপ থেকে বুদ্বুদ ধরনের শব্দ শুনে গ্যাস থাকতে পারে বলে ধারণা করেছিলাম। পরীক্ষা করার পর দেখি, আগুন ধরে যাচ্ছে। এটি আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। গ্রামে বসবাস করেও গ্যাস ব্যবহার করে রান্না করতে পারায় আমার মাসহ বাড়ির অন্য নারীরাও খুশি।’ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরশাদুল আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ এ নিয়ে তিতাস গ্যাসের ময়মনসিংহের ম্যানেজার (অপারেশন) হিলটন পাল বলেন, ‘বিষয়টি এখনো আমাদের নজরে আসেনি। তবে ওই গ্রামে গিয়ে বিষয়টি দেখা হবে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইমাম নিয়ে গ্রুপিং: গফরগাঁওয়ে ঈদগাহে সংঘর্ষের আশঙ্কা, ১৪৪ ধারা জারি

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার পাঁচবাগ ইউনিয়নের লামকাইন ঈদগাহ মাঠের ইমাম নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে দুই পক্ষ। এ অবস্থায় সংঘর্ষের আশঙ্কায় ঈদগাহ মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। রোববার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঈদের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত (চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল) ১৪৪ ধারা জারি করে গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট এনএম আবদুল্লাহ আল মামুন সই করা একটি চিঠি জারি করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ‘লামকাইন ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজ আদায় করাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফলে আইনশৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা বিদ্যমান। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হলো।’ চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঈদগাহ এলাকায় সব প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, লাঠি বা দেশি অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, আতশবাজি, পটকা, মাইকিং বা শব্দযন্ত্রের ব্যবহার, পাঁচ ব্যক্তির একত্রে চলাফেরা, সভা-সমাবেশ, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ থাকবে।’ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় মুফতি মোহাম্মদ আলী আওয়ামী ওলামা লীগের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। বিতর্ক থাকায় তাকে ওই মাঠের ইমাম হওয়া নিয়ে আপত্তি জানায় একটি পক্ষ। তবে এ নিয়ে তার অনুসারীরাও তাকে ইমাম হিসেবে রাখতে চেষ্টা চালায়। এতে দুই পক্ষ মুখোমুখি হওয়ায় সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট এনএম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ঈদ হচ্ছে আনন্দের। এদিন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সৃষ্টি হোক, সেটা আমরা কেউই চাই না। ঈদগাহে ইমাম নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ দুটি গ্রুপ তৈরি হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে আশপাশের মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত আদায় করতে পারবে।’

চোখ তুলে নেওয়া সেই বেয়াইয়ের মৃত্যু, বেয়াইন গ্রেপ্তার

যশোরে ‘ধর্ষণচেষ্টায়’ চোখ তুলে নেওয়া সেই বেয়াই সিরাজুল ইসলাম কুটির (৪৫) মৃত্যু হয়েছে। এদিকে আটক অভিযুক্ত বেয়াইনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে মারধরের শিকার হয়ে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। বেয়াই সিরাজুল ইসলাম কুটি শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার মৃত রবিউল ইসলামের ছেলে। এছাড়াও তিনি ওই নারীর (বেয়াইন) মেয়ের শ্বশুর। শনিবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর জেস গার্ডেন পার্ক এলাকায় এই মারপিটের ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এ ঘটনা নিয়ে উভয়ের পরিবার ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে বেয়াই সিরাজুল বেয়াইনের বাড়িতে যান। এরপর হঠাৎ ওই বাড়ি থেকে মারামারি ও কান্নাকাটির শব্দ পাওয়া যায়। পরে প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, একে অন্যকে লোহার পাইপ দিয়ে মারধর করছে। এর মধ্যে সিরাজুলের এক চোখ ক্ষতবিক্ষত দেখতে পান। এ ছাড়াও ভুক্তভোগী নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানেও জখমের দাগ দেখতে পান। পরে স্থানীয়রা তাদের থামান এবং গুরুতর অবস্থায় সিরাজুলকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক নিজাম উদ্দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন। এ সময় ওই নারী নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এদিকে হাসপাতালে সিরাজুল ও তার স্বজনেরা জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে বেয়াইন ও তার মেয়ে এবং তার আরেক জামাতা মিলে সিরাজুলকে শাবল দিয়ে মারধর করেন। তার চোখেও গুরুতর জখম করেন। অন্যদিকে বেয়াইন অভিযোগ করে জানান, সিরাজুল দীর্ঘ দিন ধরে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ‘তাকে ধর্ষণচেষ্টা’ করেন। এসময় তিনি আত্মরক্ষায় তার হাত সিরাজুলের চোখে লাগে। এ ছাড়া তাকেও মারধর করা হয়েছে বলে তিনি পালটা অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিমাদ্রী শেখর সরকার জানিয়েছেন, আহতের দুটি চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। যা এখানে সেবা দেওয়া সম্ভব না। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। এদিকে, সিরাজুলের মৃত্যুর পর রোববার এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় ওই বেয়ইনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ‘মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পায়, সিরাজুল চোখে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় সিরাজুলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলায় এক নারীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’

ট্রেনের যাত্রীকে মারধর করায় স্টেশন ঘেরাও, কর্মচারী বরখাস্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলায় টিকিট কেটে মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠা এক যাত্রীকে মারধর করায় রেলওয়ের এক কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার (৩০ মার্চ) বিকালে তাকে বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্ত হওয়া কর্মচারীর নাম কাউসার মিয়া। তিনি ওই ট্রেনের পাওয়ারকার অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ছামিউল ইসলাম। উপজেলা প্রশাসন ও কসবা রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকাগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন কসবা উপজেলার সায়েদাবাদ এলাকার বাসিন্দা ফুল মিয়া (৬২)। তিনি কসবায় আসতে আসনবিহীন একটি টিকিট কেটে ট্রেনের পাওয়ারকার বগিতে অবস্থান করেন। একপর্যায়ে সেখানে ফাঁকা জায়গা পেয়ে বসে পড়েন। দুপুর আড়াইটার দিকে ট্রেনটি ফেনী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় পৌঁছে। সেসময় ট্রেনের পাওয়ারকার অপারেটর কাউসার মিয়া টিকিট আছে কিনা ফুল মিয়ার কাছে জানতে চান। আসনবিহীন টিকিট দেখালে সেখানে বসায় ফুল মিয়ার কাছে ২০০ টাকা দাবি করেন কাউসার। টিকিট আছে টাকা কেন দেবো বললে খেপে গিয়ে তাকে মারধর শুরু করেন তিনি। এরপর বৃদ্ধ ফুল মিয়ার কাছে ঘটনা শুনে মোবাইলে ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট করেন ট্রেনে থাকা কসবার আরেক যাত্রী। স্থানীয় লোকজন ট্রেনের উপকূল ট্রেনের একটি ফেসবুক পেজেও সেই ভিডিও পোস্ট করেন। মুহূর্তের মধ্যেই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। বিকাল সাড়ে ৩টার পর থেকে কসবার স্থানীয় লোকজন, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ কসবা রেলস্টেশনে জড়ো হন। বিকাল ৪টার দিকে ট্রেন অবরোধসহ অভিযুক্ত ট্রেনের কর্মচারীর শাস্তি দাবিতে তারা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা শুরু করেন। তখন ট্রেনের চালক কসবার আগের স্টেশন মন্দবাগে ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখেন। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পর বৃদ্ধ যাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কাউসারকে আটক করেন ট্রেনের নিরাপত্তাকর্মীরা। পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন তার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে ইউএনও ছামিউল ইসলাম, পুলিশ ও সেনাবাহিনী রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ট্রেনটি কসবা স্টেশনে পৌঁছে। স্থানীয় লোকজন ও ট্রেনের পরিচালকসহ অন্যদের কথা মতো কাউসার ফুল মিয়ার কাছে ক্ষমা চান। সেইসঙ্গে কাউসারকে বহিষ্কার করা হয়েছে জানালে স্থানীয়রা শান্ত হন। বিকাল ৫টার দিকে কসবা স্টেশন ছেড়ে যায় ট্রেনটি। ছামিউল ইসলাম বলেন, ‘ট্রেনের ওই কর্মচারী বৃদ্ধ যাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণসহ তাকে মারধর করেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। স্থানীয় জনতা, শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা একত্র হয়ে কসবা রেলওয়ে স্টেশনে জড়ো হন। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বলে স্থানীয়দের শান্ত করেছি। ট্রেনের ওই কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ খবর পাওয়ার পর উত্তেজিত জনতা শান্ত হন।’ কসবা রেলস্টেশনের মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই কর্মচারীকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিকাল ৫টার দিকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।’

৩৫ জেলায় বইছে তাপপ্রবাহ, ঈদের দিন বৃষ্টি হবে?

চৈত্রে মাঝামাঝি এসে ঢাকাসহ দেশের ৩৫ জেলার ওপর দিয়ে হালকা থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চৈত্রের এ দাপট ঈদের দিনও থাকবে একই রকম। কোথাও বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কিছু কিছু জায়গায় তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে। রোববার (৩০ মার্চ) আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানার দেয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। পূর্বাভাসে বলা হয়, ‘লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।’ এর প্রভাবে রোববার অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। এ ছাড়া মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে হালকা থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে তা কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে। কাল সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এ ছাড়া আগামী মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। অন্যদিকে বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

নড়াইল জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদককে পিটিয়ে খুন

নড়াইলের লোহাগড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নড়াইল জেলা বাস-মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে (৫০) পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৩০ মার্চ) বিকেলে লোহাগড়া পৌর এলাকার লক্ষ্মীপাশা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় গোপিনাথপুর এলাকার তাহের শেখের ছেলে কাঁচামাল ব্যবসায়ী ইদ্রিস মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত মামুন উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের মহিষাপাড়া গ্রামের ওলিয়ার ফকিরের ছেলে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেল ৫টার দিকে জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন লোহাগাড়ার লক্ষ্মীপাশা কাঁচা বাজারে আলু কিনতে ইদ্রিস মিয়ার দোকানে যান। সেখানে আলুর দাম নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে মামুনের মাথায় গামলা দিয়ে আঘাত করেন ইদ্রিস মিয়া। এতে তিনি মাটিতে পড়েন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত কাঁচামাল ব্যবসায়ী ইদ্রিস মিয়াকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নওগাঁয় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত জামায়াত নেতার মৃত্যু

নওগাঁর পোরশায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি আফজাল হোসেন (৫৫) নিহত হয়েছেন। রোববার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত আফজাল উপজেলার গাঙ্গুরিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি ও বড়গুন্দইল নওয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে। পুলিশ সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে বড়গুন্দইল নওয়াপাড়া মালতিপুর ও কাদিপুর জামে মসজিদের লিজ নেওয়া পুকুরের পানি সেচকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে প্রতিপক্ষের পিটুনিতে আফজাল হোসেন গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তিনি মারা যান। পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ঘটনায় শুক্রবার (২৮ মার্চ) নিহতের ছোট ভাই আলফাজ হোসেন বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গুন্দইল গ্রামের ইমামুল হাসান, একই গ্রামের বাবুল হোসেন ও সাপাহার উপজেলার পদলপাড়া গ্রামে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে এবং অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

গাজীপু‌রে বন বিভা‌গের উচ্ছেদ অভিযানে হামলা, আহত ৫

গাজীপু‌র জেলার কা‌লিয়া‌কৈর উপ‌জেলার সিনাবহ এলাকায় বন বিভা‌গের জ‌মি‌তে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান প‌রিচালনা করেছে যৌথবাহনী। রোববার (৩০ মার্চ) সকাল ৯টা থে‌কে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর দুই দফা হামলা চালা‌য় দখলকারীরা। এতে বন বিভা‌গের অন্তত ৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় দুইজন‌কে আটক করা হ‌য়ে‌ছে এবং হামলায় ব্যবহার করা একটি প্রাইভেটকার জব্দ ক‌রে‌ছে যৌথবা‌হিনী। কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ জানান, পূর্ব নির্ধা‌রিত সময় অনুযায়ী রোববার সকাল ৯টা থে‌কে বন বিভাগের উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এ সময় ঈদের আগের দিন বসতবাড়ি উচ্ছেদের প্রতিবাদে দখলকারী ও স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হ‌য়ে সিনাবহ -কা‌লিয়া‌কৈর আঞ্চ‌লিক সড়ক অব‌রোধ ক‌রে। একপর্যা‌য়ে বন বিভাগের কর্মচারীদের ওপর ইটপা‌ট‌কেল নি‌ক্ষেপ শুরু ক‌রে। প‌রে যৌথবা‌হিনীর সদস‌্যরা এসে প‌রি‌স্থি‌তি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুপু‌রের দি‌কে হঠাৎ এক‌টি প্রাইভেটকার যো‌গে ক‌য়েকজন যুবক এসে বন কর্মকর্তা‌দের ওপর লাঠি সোটা নিয়ে হামলা ক‌রে। এতে বন‌ বিভা‌গের অন্তত ৫ জন আহত হয়। আহত‌দের স্থানীয় হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি করা হ‌য়ে‌ছে। ঘটনাস্থল থে‌কে প্রাইভেকার‌টি জব্দ ও প্রাইভেটকার চালক ও এক নারী‌কে আটক ক‌রে যৌথবা‌হিনী। অভিযা‌নে এক‌টি ডু‌প্লেক্স বা‌ড়িসহ শতা‌ধিক ঘরবা‌ড়ি উচ্ছেদ করা হয়।

লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়ার প্রতিবাদ, কারাগারে ২৮ যাত্রী!

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমবি রয়েল ক্রু-২ ও রাজারহাট লঞ্চের স্টাফ ও যাত্রীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বেতাগী থানা পুলিশ লঞ্চযাত্রীদের মধ্যে ২৮ জনকে আটক করেছে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকার সদরঘাট থেকে এমবি রয়েল ক্রু-২ ও রাজারহাট লঞ্চ বরগুনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। রাতে যাত্রীদের কাছে সরকার নির্ধারিত ভাড়া জনপ্রতি ৪০০ টাকার স্থলে ৮০০-১০০০ টাকা আদায় করা হয়। এ সময় যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে লঞ্চের স্টাফ ও কর্মচারীদের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ২০-২৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এ ঘটনায় খবর পেয়ে পুলিশ বেতাগী লঞ্চঘাট থেকে এম বি রয়েল ক্রু-২ ও রাজারহাট লঞ্চের ২৮ জন যাত্রীকে আটক করে বেতাগী থানায় নিয়ে যায়। আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের স্বজনরা বেতাগী থানার সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। বেতাগী সদর ইউনিয়নের আটক পারভেজের (২০) মা শিউলি আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে পারভেজ ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। ঘুমন্ত অবস্থায় থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। আটক রুবেল খন্দকার (২৪) ও আরাফাতের (১৫) স্বজনদেরও একই অভিযোগ। তারা বলেন, ‘আগামীকাল ঈদ। অথচ ছেলে থাকবে কারাগারে। মুক্তি না দিলে আমাদের কোনো ঈদ হবে না।’ বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান মনির এ বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘আটককৃতরা ঘটনার সাথে জড়িত কিনা বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্দোষ হলে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশ পেলেই ছেড়ে দেওয়া হবে।’