
রান্নার চুলা থেকে ঈদের নতুন শাড়িতে আগুন, গৃহবধূর মৃত্যু
চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলায় ঈদের দিন সকালে নতুন শাড়ি পড়ে রান্নার সময় দগ্ধ হয়ে ঊর্মি আকতার (২৫) নামে গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে বেলা ১১টার দিকে চাতরী ইউনিয়নের খাসখামা এলাকায় মো. নঈম উদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ হাইলধর ইউনিয়নের ১ নম্বর খাসখামা ওয়ার্ডের দেয়াঙ আলী চৌধুরীর বাড়ির রাজমিস্ত্রী বাঁচা মিয়ার স্ত্রী এবং চাতরী ইউনিয়নের ডুমুরিয়া রূদুরা গ্রামের মো. সেলিমের মেয়ে। প্রায় দেড় বছর আগে বিয়ে হয় তাদের। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন নতুন শাড়ি পরা অবস্থায় ঊর্মি রান্না করছিলেন। তখন চুলা থেকে আগুন শাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তিনি রান্নাঘর থেকে বের হয়ে চিৎকার করেন। এই সময় বাড়ি ও এলাকার লোকজন আগুন নেভাতে এগিয়ে আসেন। আগুন নেভাতে গিয়ে স্বামী ও চাচাতো দেবরও আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ঊর্মিকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ অংশ পুড়ে গেছে। আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, ‘আগুনে পুড়ে গৃহবধূর মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ১০টা নাগাদ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার মরদেহ বাপের বাড়ি ডুমুরিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

ঈদের দিন রাতে ডাকাতি শেষে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ডাকাতি শেষে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন রাতে পৌর শহরের একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে কটিয়াদী মডেল থানায় মামলা করেছেন। এতে হাকিম মিয়া (২৫) নামে ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। হাকিম মিয়া ওই উপজেলার বাসিন্দা। কটিয়াদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে গৃহবধূর সংসার। স্বামী দিনে চায়ের দোকান ও রাতে নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করেন। ঈদের দিন সন্ধ্যার পর পাহারা দিতে যথারীতি স্বামী ঘর থেকে বের হয়ে যান। রাত ১০টার পর গৃহবধূ দুই সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১টার দিকে জানালা কেটে ডাকাতরা মুখোশ পরে ঘরে প্রবেশ করে। তারা ঘরের টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। যাওয়ার আগে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে এক ডাকাত। ধস্তাধস্তির সময় মুখোশ খুলে গেলে হাকিম মিয়াকে চিনতে পারেন গৃহবধূ। হাকিম ওই গৃহবধূর প্রতিবেশী। ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান, ডাকাত দলে পাঁচ থেকে ছয় জন ছিল। তাদের মধ্যে হাকিম মিয়া তাকে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে পরে এসে পরিবারের সবাইকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। ভোরে স্বামী বাড়িতে ফিরলে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা জানাই। এরপর থানায় গিয়ে মামলা করেছি। কটিয়াদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে হাকিম মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চলছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ভুক্তভোগীকে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

সড়কে মোটরসাইকেল ‘রেস’, প্রাণ গেল দুই যুবকের
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার ট্যাক্সেরহাট এলাকায় অটোভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আতিকুর রহমান। পুলিশ জানায়, দুই বন্ধু ঈদ উপলক্ষে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই আরোহী এক বার দ্রুত বেগে, এক বার ধীরগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে দ্রুতবেগে মোটরসাইকেল চালানোর সময় বিপরীত দিক থেকে আসা অটোভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই আশিক নামে এক যুবক নিহত হন। তার বাড়ি স্থানীয় পাকার মাথা এলাকায়। গুরুতর আহত হন অপর আরোহী নাঈম হোসেন। তার বাড়ি স্থানীয় পাওটানার হাটে। তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসএম আতিকুর রহমান বলেন, ‘মূলত দুই বন্ধু মোটরসাইকেল নিয়ে সড়কে রেস খেলছিল। এক পর্যায়ে দ্রুতবেগে মোটরসাইকেল চালানোর সময় বিপরীত দিক থেকে আসা অটোভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে আশিক নামে এক যুবক নিহত হন। নিহত দুইজনের মধ্যে একজনের নাম আশিক অপরজনের নাঈম হোসেন।’

ধর্ষণের অভিযোগে আটকের পর থানা হাজতে ‘আত্মহত্যা’
ভোলায় ধর্ষণের অভিযোগে আটক এক ব্যক্তি ‘আত্মহত্যা’ করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোমবার (৩১ মার্চ) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে সদর মডেল থানা হাজতে ‘আত্মহত্যার’ ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তির নাম মো. হাসান। তার বাড়ি সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে। প্রতিবেশী এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে সোমবার বিকালে তাকে আটক করেছিল পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার বিকাল ৩টার দিকে এক প্রতিবেশীর বাড়ির ফ্রিজে মাংস রাখতে যায় হাসান। সেখানে গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ ওঠে। এলাকাবাসী তাকে ধরে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ হাসানকে আটক করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসার পর রাত ৮টার দিকে থানা হাজতে রাখা হয়। রাত ১২টা ১৮ মিনিটে হাজতে থাকা জায়নামাজ গলায় পেঁচিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করে। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাৎ মো. হাসনাইন পারভেজ বলেন, ‘থানার সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, জায়নামাজ গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে হাসান। পরে লাশ মর্গে পাঠানো হয়।’ ‘অপরদিকে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ এখন ভোলার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’

চীন সফর বর্তমান সরকারের একটি বড় সাফল্য: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘চীন সফর বর্তমান সরকারের একটি বড় সাফল্য। ইতিপূর্বে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একতরফাভাবে একটি দলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছিল। কিন্তু এ সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চীন তার চিন্তা ভাবনা পরিবর্তন করেছে। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা কথাবার্তা বলছে।’ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের নিজ বাসভবনে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা তো সরকার প্রধান। চীন যেহেতু অত্যন্ত একটি সমৃদ্ধশালী দেশ; ব্যবসায়ী পর্যায়ে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে রয়েছে। চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আগামী দিনেও তারা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করবে। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য আশাবাদী।’ তিনি বলেন, ‘অন্তবর্তীকালীন সরকার আমাদের সমর্থন নিয়ে এসেছে এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকারে এসেছে। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য তারা সংস্কার কমিশন তৈরি করেছে। সেই সংস্কারের প্রস্তাবগুলো যথাযথভাবে আমরা পর্যালোচনা করছি।’ ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে মতামতগুলো সংস্কার কমিশনকে দিয়েছি। এ বিষয় নিয়ে আগামীতে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা বসবেন। সব ঐক্যমতের ভিত্তিতে আগামীতে নির্বাচন হবে।’ বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সংস্কার নির্বাচন আলাদা জিনিস। সংস্কার সংস্কারের মত চলবে, নির্বাচন নির্বাচনের মত চলবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আমরা সুসম্পর্ক রেখেছি।’ এ সময় জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জগন্নাথপুরে ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৪০
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া নিয়ে বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ ৪০ জন আহত হয়েছে। আহতদের সিলেট ও স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, জামালপুর গ্রামের লেবু মিয়া ও রাজ উদ্দিনের পক্ষের লোকজনের মধ্যে জমি দিয়ে বিরোধ চলছিল। কয়েক দিন আগে স্থানীয়রা বিষয়টি সমাধান করে দেন। ঈদের দিন সোমবার (৩১ মার্চ) লেবু মিয়ার পক্ষের একজন প্রতিপক্ষের লোককে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে উভয়পক্ষের লোকজন সকাল ১১টার দিকে লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে গোলগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবদ্ধসহ ৪০ জন আহত হন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকায় সালিশে অংশ নেওয়া ব্যক্তিসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা সিলেট ও জগন্নাথপুরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাক্তার তামজিদ হোসেন বলেন, ‘আহতের মধ্যে পাঁচজনকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাদের শরীরে গুলি কিনা রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে।’ জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত।’

ঈদের দিন টিভি দেখতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশু
চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলায় টেলিভিশন দেখতে যাওয়ার পর ৭ বছরের এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন বিকাল সাড়ে ৪টা উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের চিনকির আস্তানা এলাকার শফী সওদাগর বাড়ীতে এঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত বাড়ির মালিক দুলাল ড্রাইভার পলাতক রয়েছেন। দুলাল ওই বাড়ীর মৃত ফকির আহমদের ছেলে। ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই শিশুটির পরিবার চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা। তারা স্ব পরিবারে বিগত ৩০ বছর ধরে বারইয়ারহাট পৌরসভায় ভাড়া বাসায় থাকেন। শিশুটির চাচা বলেন, ‘আমার বড় ভাই ও তার পরিবারসহ আমরা দুলাল ড্রাইভারের বাড়িতে টিনসেট ঘরে ভাড়া থাকি। ঈদের দিন সোমবার বিকেলে দুলাল ড্রাইভার প্রথমে আমার ভাতিজিকে চকোলেট খাওয়ার জন্য ডাকে। তখন সে যায়নি। পরবর্তী আমার ভাতিজি যখন টেলিভিশন দেখার জন্য তাদের ঘরে যায় তখন দুলাল ড্রাইভার তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরবর্তী সে চিৎকার দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে চলে আসে। এ সময় দুলাল ড্রাইভারের ঘরে কেউ ছিলো না। রাতে আমার ভাবীকে ভাতিজী সবকিছু খুলে বলে। মঙ্গলবার সকালে আমার ভাবী সহ আমরা জোরারগঞ্জ থানায় গেলে সেখান থেকে পুলিশ আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) যাওয়ার জন্য বলে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত চিকিত্সক ডাক্তার বাঁধন দাশ বলেন, ‘মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুরে ৭ বছরের এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে তার পরিবার নিয়ে আসে। তাকে প্রাথমিক চিকিত্সা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা শেষে ধর্ষণের বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।’ জোরারগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক মো. ওয়াদুদ বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে ধর্ষণের অভিযোগ এক কন্যা শিশুকে থানায় আনা হয়েছিলো। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

ঘরে ঢুকে ধর্ষণের অভিযোগ, ইউএনও অফিসের গাড়িচালকসহ গ্রেপ্তার ৪
নওগাঁর মান্দায় এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিসের গাড়িচালকসহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তাদের গতকাল সোমবার (৩১ মার্চ) রাতে ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া যুবকরা হলেন উপজেলার ছোটবেলালদহ গ্রামের সোলাইমান আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম সোহাগ (২৯), বড়পই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম সুইট (২৯), বিজয়পুর প্রিন্সিপালের মোড় এলাকার মোজাহার আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান মুন্না (২৯) ও বিজয়পুর মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে নাসির উদ্দিন (২৯)। তাদের মধ্যে নাসির উদ্দিন মাস্টাররোলে ইউএনও অফিসের গাড়িচালক। মামলার এহাজার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারীর স্বামী পিকআপচালক। তারা ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। ঈদ উপলক্ষে এ দম্পতির একমাত্র মেয়ে তারা নানার বাড়ি যায়। কাজের জন্য রাতে পিকআপ ভ্যান নিয়ে তার স্বামী বাইরে যান। ফলে বাড়িতে একাই ছিলেন ওই নারী। ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘গত রোববার (৩০ মার্চ) রাত ৮টার দিকে আমার স্বামী পিকআপ ভ্যান নিয়ে কাজের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। রাত ৯টার দিকে আমি রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আসামি স্বাধীন বাসায় এসে আমার স্বামীকে ডাকাডাকি করে। স্বাধীন আমার স্বামীর পূর্ব পরিচিত হওয়ায় সরল বিশ্বাসে আমি দরজা খুলি। সঙ্গে সঙ্গে ৬-৭ জন যুবক ঘরে ঢুকে মুখ চেপে ধরে। এর পর তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে আমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে চারজনকে আটক করে। তবে বাকিরা পালিয়ে যায়।’ মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনুসর রহমান বলেন, ‘দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২-৩ জনের নামে মামলা করেছেন। এ মামলায় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে সোমবার নওগাঁ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই নারীকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ‘শুনেছি, নাসির উদ্দিন ইউএনও অফিসের গাড়ি চালায়।’

বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের শঙ্কা, জলঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি
নীলফামারীর জলঢাকায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের শঙ্কায় পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। সোমবার (৩১ মার্চ) রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জলঢাকা পৌরসভা এলাকার পেট্রোল পাম্প ও জলঢাকা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এলাকায় একাধিক পক্ষ থেকে একাধিক স্থানে এবং ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সভা-সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। উক্ত সমাবেশ ঘিরে বর্ণিত এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এর ফলে আইন শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলে জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবহিত করেছেন।’ ‘সেই প্রেক্ষিতে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে জলঢাকা পৌর এলাকায় সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। এ সময় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, গণজমায়েত, বিক্ষোভ, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র বহনসহ পাঁচজনের অধিক ব্যক্তির একত্রে চলাচলে বা অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’ জানা গেছে, জলঢাকা উপজেলা বিএনপির পক্ষে গত ৩০ মার্চ জলঢাকা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই মাঠে ঈদের দিন বিকেল থেকে তিন দিনের জন্য মেলার আয়োজন করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম ও তার পক্ষের লোকজন মেলা কমিটির আহ্বায়ক জলঢাকা উপজেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন এবং জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবু সাঈদ শাকিলসহ মেলা কমিটির অন্যান্য সদস্যদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা করে মেলা প্রাঙ্গণ ভাঙচুর করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) জলঢাকায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করেন তারা। অপরদিকে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে উপজেলা ও পৌর বিএনপির পক্ষে অপর গ্রুপের বিরুদ্ধে মেলার নামে চাঁদাবাজি ও মেলা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। এতে ঈদের দিন বিকেল থেকে জলঢাকা উপজেলা শহরে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ব্যাপারে বিএনপির উভয় পক্ষের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করেও কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জলঢাকা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘১৪৪ ধারা জারি করেছেন ইউএনও। কোনো পক্ষ যাতে কোনো কর্মসূচি পালন করতে না পারে সে জন্য জলঢাকা শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন বলেন, ‘দুই পক্ষের একই সময় পাশাপাশি স্থানে সমাবেশ আহ্বান করায় সংঘাতের আশঙ্কা করছি। এ কারণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।’

মাদারীপুরে বেপরোয়া মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ৪
মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুরে তিনটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে শিবচর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়েনের বাবু খাঁর ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুরের এলাকার শাজাহান তালুকদারের ছেলে মিঠুন তালুকদার, শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ঢালীকান্দি এলাকার বাবুল ঢালীর ছেলে হৃদয় ঢালী, একই উপজেলার জয়নগর এলাকার আলী খান ও রমজান মিয়া। স্থানীয়রা জানান, নিজ বাড়ি শিবচরের কুতুবপুর থেকে খালাতো ভাই হৃদয় ঢালীকে সঙ্গে নিয়ে পদ্মাসেতুর কাছে ঘুরতে যাচ্ছিলেন মিঠুন তালুকদার। কুতুবপুর ইউনিয়নের বাবু খাঁর ব্রিজের কাছে এলে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় পেছন থেকে বেপরোয়া আরেকটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মিঠুন ও তার খালাতো ভাই হৃদয় মারা যান। এ সময় আহত হন ৪ জন। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ৪ জনকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পথে মৃত্যু হয় আলী খান ও তার বন্ধু রমজান মিয়ার। মাদারীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাষ্কর সাহা জানান, বেপরোয়া গতির কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল
ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটিতে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে শুরু করে মেরিন ড্রাইভের ইনানী পাটুয়ারটেক পাথুরে সৈকত পর্যন্ত পর্যটকের ভিড় দেখা গেছে। কক্সবাজার সাগর পাড়ের হোটেল, গেস্ট হাউসও এখন ভরে গেছে পর্যটকে। প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করেই আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ঈদের পরের দিন সকাল থেকে দীর্ঘ সৈকত মেতে উঠেছে লাখো পর্যটকের উল্লাসে। সাগরের নীল জলরাশিতে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন আগত পর্যটকরা। পর্যটকদের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের ছুটি কাটাতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে ভিড় করছেন লাখো পর্যটক। গরম উপেক্ষা করে সৈকতের সব পয়েন্টে যেন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। সমুদ্র সৈকত ছাড়াও ইনানীর পাথুরে সৈকত, পর্যটন স্পট দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, রামুর বৌদ্ধ মন্দিরও পর্যটকে মুখরিত। ঢাকা থেকে আগত পর্যটক তাসনিম বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে। তবে প্রচণ্ড গরম। তারপরও সৈকতের নোনাজলে পা ভেজাতে পেরে আমরা অনেক খুশি।’ কুমিল্লা থেকে আগত পর্যটক উর্মি বলেন, ‘প্রথম বার কক্সবাজারে আসছি। তবে হোটেল বুকিং দিয়ে আসিনি। সকাল থেকে রুম খুঁজছি। ভালো মানের হোটেল ৪-৫ হাজারের নিচে পাচ্ছি না। এত বাজেট নেই। আমাদের বাজেট ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।’ ঢাকা মিরপুর থেকে আগত পর্যটক রাজ্জাক বলেন, ‘ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে আসছি। সাগরের গর্জন শুনে ভনটা ভরে গেলেও হোটেল ভাড়াটা একটু বেশি বলে অভিযোগ করেন এই পর্যটক।’ কক্সবাজার আবাসিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘আজ ঈদের পরের দিন সকাল থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। এই মুহূর্তে তারকা মানের হোটেলগুলো প্রায় বুকিং রয়েছে। তবে কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে হোটেল ভাড়া বেশি নিচ্ছে।’ তারকা মানের হোটেল সি-গালের ম্যানেজার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। আমরা পর্যটকদের বরণ করে নিচ্ছি। আমরা পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’ ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘আজ থেকে পর্যটকের ভিড় বাড়ছে। আগামীকাল থেকে আরও বাড়বে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পর্যটকদের সুবিধার জন্য হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে।’

এপ্রিলে তীব্র তাপপ্রবাহের আভাস, হতে পারে ঘূর্ণিঝড়
চলতি এপ্রিল মাসে দেশে ২ থেকে ৪টি মৃদু (৩৬-৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (৩৮-৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ১ থেকে ২টি তীব্র (৪০-৪১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এই মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে ১টি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. মমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এপ্রিল মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। ৫-৭ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের এবং ১-৩ দিন তীব্র কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে বলেও আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। নদ-নদীর অবস্থায় বলা হয়েছে, ‘এপ্রিল মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। তবে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে এই অঞ্চলের নদ-নদীর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।’

পঞ্চগড়বাসীর ঈদ আনন্দ বাড়িয়েছে মিরগড় ইকো পার্ক
পঞ্চগড়ের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল জেলা শহরে সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোশকতায় একটি শিশুপার্ক গড়ে তোলা। অবশেষে শহর থেকে ৪ কিলোমিটার পশ্চিমে ঐতিহাসিক মিরগড়ের করতোয়া নদীর কোল ঘেঁষে গড়ে তোলা হয়েছে কাঙ্ক্ষিত মিরগড় ইকোপার্ক। ২১ একর জমিতে গড়ে ওঠা ইকো পার্কে রয়েছে শিশু, বয়ষ্কসহ সব বয়সের মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থা। সরেজমিন মিরগড় জেলা প্রশাসন ইকোপার্কে গিয়ে দেখা যায়, জেলা প্রশাসনের নিজস্ব উদ্যোগে গড়ে ওঠা পার্কটির শুক্রবার (২৮ মার্চ) কাজ চলাকালীন কিছু অংশ সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এরপর থেকেই সেখানে ভিড় শুরু হয়। ইকো পার্কের প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। অনেকে রোজার মধ্যেই শিশুদের নিয়ে পার্কটি দেখতে এসেছেন। এবার ঈদে ৫০ হাজারের বেশি স্থানীয় পর্যটক ইকো পার্কে আসবেন বলে আশা করছেন জেলা প্রশাসক সাবেত আলী। জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলার নামকরণে পাঁচ গড়ের অন্যতম ঐতিহাসিক মিরগড়। এখানকার করতোয়া তীরের পরিত্যক্ত বিশাল জমিতে এই ইকো পার্ক গড়ে উঠেছে। পার্কে রয়েছে শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইডস। রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান, চা বাগান, হরেক রকম সৌন্দর্য্যবর্ধক গাছ, কৃত্রিম লেক, বড় আকারের পানির ফোয়ারা, ইকো টুরিজমের বিশেষ আদলে বানানো বসার ঘর, আধুনিক সৌচাগার ও চারপাশে ওয়াকিং ওয়ে। জেলার বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের জন্য আছে আবাসন সুবিধাও। স্থানীয় কিশোর আরমান আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকার পরিত্যক্ত ২১ একর জায়গায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইকো পার্কটি হচ্ছে। এখন থেকেই অনেক মানুষ আসছে পার্কটি দেখতে। ঈদ কিংবা বিশেষ দিন ছাড়াও এখানকার করতোয়া নদীর বাঁক, কাঠের ব্রিজ দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ঘুরতে আসেন আমাদের ঐতিহাসিক মিরগড়। আশা করছি পার্কটি সম্পন্ন হলে বাইরে থেকে অনেক পর্যটক আসবে পার্ক দেখতে।’ মিরগড় এলাকার ব্যবসায়ী ওয়াকিলুজ্জামান বলেন, ‘এই জায়গাটি নদীই ছিল। এক সময় চর জেগে ওঠে। এতাবড় একটা জায়গা এখানে পরিত্যক্ত ছিল, আমরা বুঝতেই পারিনি। তবে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।’ জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী বলেন, ‘এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি পার্কের। শহরের কাছেই সরকারি ২১ একর পরিত্যক্ত ছিল। জমিটি অবৈধ দখলদারদের যেকোনো সময় দখলের একটা আশঙ্কাও ছিল। এজন্য ওই জমি ওপর ইকো পার্কটি গড়ে তোলা হয়েছে। পঞ্চগড়ের মানুষের পাশাপাশি সারাদেশের টুরিস্টদের জন্য এটি একটি ভালো বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হবে। এই ঈদে ৫০ হাজারের বেশি স্থানীয় পর্যটক পার্কটিতে যাবেন বলে আশা করছি।’

মেহেরপুরে সড়কে ঝরল ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তিনজনের প্রাণ
মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যানের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুইজন। সোমবার (৩১ মার্চ) বিকেলে শহরের আহম্মদ আলী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অদূরে এ ঘটনা ঘটে।নিহতরা হলেন ঢাকা রুপনগর ব্রাঞ্চের এনআরবিসি ব্যাংকের অফিসার ও মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের হাসানুজ্জামানের ছেলে আকতারুজ্জামান শোভন (২৯), সদর উপজেলার বাড়িবাঁকা গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে মোটরসাইকেল আরোহী আল ইমরান (২৮) এবং পাখিভ্যানের যাত্রী গাংনী উপজেলার ধানখোলা গ্রামের আলী হাসানের ছেলে জুবায়ের হোসেন (৮)।এছাড়া নিহত যুবায়েরের বাবা পাখিভ্যানচালক আলী হাসান ও মাইক্রোচালক পলাশকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি মাইক্রোবাস মেহেরপুর শহরের দিকে আসছিল এবং আক্তারুজ্জামান ও ইমরান মোটরসাইকেলযোগে চুয়াডাঙ্গার দিকে যাচ্ছিলেন। আহম্মদ আলী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অদূরে পৌঁছালে একটি পাখিভ্যানকে সাইড দিতে গিয়ে মাইক্রোবাস, পাখিভ্যান ও মোটরসাইকেলর মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটে। এতে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের মাইলপোস্টে আঘাত লেগে সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। পথচারী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় ৫ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আহতদের মধ্যে আক্তারুজ্জামান মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। আহত ইমরান ও শিশু জুবায়েরকে রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়।মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মেসবাহ উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনার শিকার যানবাহনগুলো পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ
রাজশাহীর বাঘায় বিএনপি নেতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় বাঘা উপজেলা সদরে অবস্থিত জাগ্রত বাঘা কার্যালয়ে এসব ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী। এর আগে রোববার (৩০ মার্চ) বিকেলে বাউসা ইউনিয়নের দীঘা ওয়ার্ড ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি সৌরভ হোসেনের ওপর অতর্কিত হামলা করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি ভিজিএফ, ভিজিডি ও ভিজিবি কার্ড বিতরণে অনিয়ম এবং চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। এ সময় নগদ দেড় লাখ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ দামি জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে হামলাকারীরা। ভাঙচুর করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র। এ ঘটনায় এলাকায় এখন উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত নেতারা অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারসহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেছেন। দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন নেতারা। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাঘা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইউনুস আলী বলেন, ‘বাউসা ইউনিয়ন পরিষদে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ জনগণ ও বিভিন্ন সেবাগ্রহীতারা ইউনিয়ন পরিষদের কর্তা ব্যক্তিদের দ্বারা অন্যায়, দুর্নীতি ও হয়রানির শিকার হয়ে আসছিলেন। আর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এই ঘটনার নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদ করে আসছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২০ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় ইউনিয়ন পরিষদের অন্যায় ও দুর্নীতির প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বাউসা ইউনিয়ন শাখা মানববন্ধনের আয়োজন করে। কিন্তু জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিমের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা করে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন জামায়াত নেতারা। পরে ২৩ মার্চ বাঘা থানার ওসির মধ্যস্থতায় ওই ঘটনার মীমাংসা করা হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘এরপর কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই রোববার (৩০ মার্চ) বিকেলে বাউসা ইউনিয়নের দীঘা ওয়ার্ড ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি সৌরভ হোসেনের ওপর অতর্কিত হামলা করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। আড়ানী থেকে বাড়িতে ফেরার পথে তার ওপর এই হামলা করে তারা। বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিমের ভাতিজা আরাফাতর নেতৃত্বে রতন, মুমিন রাজীব, আকাশ প্রমুখ এ হামলা করেন।’ ইউনুস আলী বলেন, ‘এরপর একই দিন সন্ধ্যায় আহত সৌরভের সহকর্মী ছাত্রশিবির কর্মী মারুফ, মুন্না ও ফয়সালকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে যখম করে ওই হামলাকারীরা। এ সময় তাদের ব্যবহৃত পাঁচটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করে হামলাকারী ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া তারা বাউসা বাজারে অবস্থিত জামায়াত সমর্থিত বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর এবং নগদ অর্থ লুটপাট করে। এর মধ্যে বাউসা বাজারের ব্যবসায়ী টুটুলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আহত ছাত্রশিবিরকর্মী ফয়সাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’ লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাউসা ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মিজানুর রহমান শিল্পীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে তার বাড়ি থেকে আনুমানিক দুই লাখ টাকার বাদাম লুট করে নিয়ে গেছে। ছাত্রশিবির কর্মী রোহানের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে তার বাড়ি থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা এবং দুটি বাইসাইকেল লুট করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। একই সময়ে ছাত্রশিবির কর্মী রোহানের বাবার বাউসা বাজারে অবস্থিত স-মিলে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ছাড়া ঈদের নামাজের পরে ইউনিয়ন যুবদলের নেতা এনামুলের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সশস্ত্র অবস্থান নেন।’ এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় এখন উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে বলেও জানান জামায়াত নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হল অবিলম্বে এ হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা; ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করার চক্রান্ত বন্ধ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষ ও দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বাউসা ইউনিয়নের বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘জামায়াতের লোকজনই আমার ছাত্রদল নেতা রাজিবের ওপর হামলা চালিয়েছে। যার ফলে ছেলেটি গুরুতর আহত হয়েছেন।’ তবে তিনি বাড়ি ও দোকান ভাঙচুরের দায় স্বীকার করেননি। বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামান জানান, বাঘা থানাধীন বাউসা ইউনিয়নের মারামারি ঘটনায় এর আগে মীমাংসা হয়ে আবার নতুনভাবে সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। সঠিক তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেব।

সন্ধ্যার মধ্যে ঝড়ের পূর্বাভাস, ১ নম্বর সতর্কসংকেত
দেশের দুই বিভাগের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া ৬ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। পূর্বাভাসে বলা হয়, ‘ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা থেকে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।’ এ সময় এসব এলাকার ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার সারা দেশের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ‘অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।’

এক দিনে সড়কে ঝরল ২১ প্রাণ
ঈদুল ফিতরের দিন ১০ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২১ জন। এছাড়া আহত অবস্থায় ২৮ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি ও ব্যুরো অফিসের পাঠানোর খবর- চট্টগ্রাম:এদিন ভোরে সৌদিয়া পরিবহনের একটি বাস চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিল। পথে লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়ায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘঠনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৬ জন।সকালে গাজীপুরের শিববাড়িতে বাসচাপায় শিশুসহ সিএনজিচালিত অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নওগাঁ:সকালে নওগাঁর সাপাহারে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শাহিন আলম (১৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের আরও দুই বন্ধু।বগুড়া:দুপুরে বগুড়ার শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে আলাদা সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা ও মেয়েসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। পিরোজপুর:দুপুরে পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহিউদ্দিন তুহিন (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন তার স্ত্রী মিম আক্তার। গাইবান্ধা:বিকেলে গাইবান্ধায় প্রাইভেটকার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৪ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।কিশোরগঞ্জ:কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজন চিকিৎসাধীন। বিকেলে উপজেলার আগরপুর-পোড়াদিয়া সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।মেহেরপুর:মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যানের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুইজন। বিকেলে শহরের আহম্মদ আলী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।ব্রাহ্মণবাড়িয়া:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন দুইজন। সন্ধ্যার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে উপজেলার সোনারামপুর এলাকায় রাজমনি হোটেলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।এছাড়া যশোর ও ঝিনাদহে আলাদা দুর্ঘটনায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

চাঁদা না দেয়ায় দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা
নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় চাঁদা না দেয়ায় দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তাদের বাঁচাতে গেলে মা ও বাবাকে কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করে। মুমুর্ষ অবস্থায় দুই ভাইকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে আনার পর সাকিব নামে একজনকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসক। অপর ভাই রাকিবকে ঢাকায় নেয়ার পথে মৃত্যু হয়। সোমবার (৩১ মার্চ) রাত ৯টার দিকে পলাশের কর্তাতৈল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সদর ফাঁড়ির পুলিশ সদর হাসাপাতাল পরিদর্শন করেন। তবে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি জানিয়েছেন, চোর সন্দেহে দুই জনকে গনপিটুনি দেয়া হয়। এতে তাদের মৃত্যু হয়। নিহত সাকিব মিয়া (২০) ও তার সহদোর ভাই রাকিব পলাশের কর্তাতৈল গ্রামের আশ্রাফ উদ্দিনের ছেলে। আহত হয়েছেন নিহতদের পিতা আশ্রাফ উদ্দিন ও তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন। নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, নিহত রাকিব ও তার পিতা আশ্রাফ উদ্দিন বিদেশে লোক পাঠাতো। তাই, দীর্ঘ দিন ধরে তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল একদল দুর্বৃত্ত। কিন্তু তারা চাঁদা দিতে রাজি হয়নি। এরই মধ্যে সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদ উপলক্ষে সাকিব ও তার বন্ধুরা ঘুরতে বের হয়। তারা কর্তাতৈল এলাকায় বেড়াতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ওই সময় দুর্বৃত্তরা সাকিবকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারী কোপাতে থাকে। খবর পেয়ে তার ভাই রাকিব ও তার মা-বাবাসহ স্বজনরা ঘটনাস্থলে যায়। ওই সময় দুর্বৃত্তদের বাধা দিতে গেলে রাকিব ও তার মা-বাবাকেও এলোপাথারী কোপাতে থাকে। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক সাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন। মুমুর্ষ অবস্থায় রাকিব ও তার মা-বাবাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু ঢাকায় আনার পথে রাকিব মারা যায়। তার মা-বাবাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। নিহতের চাচি হাজেরা বেগম বলেন, ‘এলাকার কিছু দুর্বৃত্ত দীঘ দিন ধরে চাঁদা চেয়ে আসছিল। চাঁদা না দেয়ায় আজকে ঈদের দিন ঘুরতে গেলে সন্ত্রাসীরা সাকিব ও রাকিবকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।’ পলাশ থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, ‘চোর সন্দেহে পলাশের বাঘদি গ্রামের লোকজন সকালে একজনকে গনধোলাই দিয়েছে। পরে রাতেও চোর সন্দেহে কয়েকজনকে গনধোলাই দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠানোর পর চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করে। অপর আহত ৩ জনকে ঢাকায় পাঠায়। সেখানে নেয়ার পর কেউ মারা গেছে কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারিনি।’

মোবাইল চুরির অভিযোগে শ্রমিক দলের নেতাকে পিটিয়ে খুন, আটক চার
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় মোবাইল চুরির অভিযোগে শ্রমিক দলের এক নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (৩১ মার্চ) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। নিহত মো. রাজু (৩৫) উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের দফতর সম্পাদক এবং সবুজের গোঁজা এলাকার সফিক উল্যা সবুজের ছেলে। আটকদের মধ্যে দুজনের নাম জানিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন- সবুজের গোঁজা এলাকায় মো. হারুনের ছেলে কবির হোসেন এবং একই এলাকার নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী রেখা বেগম। রাত ৮টার দিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার (৩০ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে সবুজের গোঁজা এলাকায় কাজল কোম্পানির ইটভাটার সামনে রাজু গণপিটুনির শিকার হন। ওই এলাকার কবিরের বাড়িতে ঢুকে মোবাইল চুরির অভিযোগে তাকে পিটুনি দেওয়া হয়। পরে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। নিহত রাজুর মা নেহার, ভাই ওহিদ হোসেন, বোন জেসমিন বেগম ও মেয়ে রুবি আক্তার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, রাতে রাজুর মোবাইলে চার্জ শেষ হয়ে যায়। তখন সে ভাতিজা কবিরের ঘরে মোবাইল চার্জ দেয়। এ সময় কবির লোকজন ডেকে এনে রাজুকে পিটিয়ে হত্যা করে। তার শরীরে টেঁটা ও ইট দিয়ে আঘাত করা হয়। এতে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চররুহিতা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজু চুরির সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। পরিকল্পিতভাবে এটা ঘটানো হতে পারে।’ ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘রাজুকে চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। কবির ও রেখাকে আসামি করে মামলা হবে। আটক অপর দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

ঈদের দিন সড়কে ঝরল ১৪ প্রাণ
ঈদুল ফিতরের দিন দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন। এতে আহত হয়েছেন ২৩ জন। নিহতদের মধ্যে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ২ জন, বগুড়ায় ৩ জন, নওগাঁ ১ জন, পিরোজপুরে ১ জন, গাজীপুরে ২ জন, চট্টগ্রামে ৫ জন রয়েছেন। সোমবার (৩১ মার্চ) জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি ও ব্যুরো অফিসের পাঠানোর খবর: কিশোরগঞ্জ (ভৈরব): কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। বিকেলে উপজেলার আগরপুর-পোড়াদিয়া সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন শামীম মিয়া (২৫) গোবরিয়া নামাকান্দা গ্রামের কৃষক নোহাজ উদ্দিনের ছেলে এবং আল আমিন (২৭) লক্ষ্মীপুর কাছারীপাড়া গ্রামের কৃষক তারা মিয়ার ছেলে। তারা দুজনই কাঠমিস্ত্রী ছিলেন। কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, বিকাল ৩টার দিকে কুলিয়ারচরের লক্ষ্মীপুর থেকে মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নরসিংদীর ফোরাদিয়া যাচ্ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। অপরজন বাজিতপুর জহুরুল ইসলামকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। এ ঘটনায় একজন চিকিৎসাধীন। বগুড়া: বগুড়ার শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা ও মেয়েসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। দুপুরে উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের ঝুপুনিয়া সেতুর মোড়ে, একই উপজেলার মহিপুর জামতলা এলাকায় ও মহিপুরের ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের সামনে এ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। নিহতরা হলেন অলোক সরকার (২০) উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের হিন্দু পানিসাড়া গ্রামের বাসিন্দা, উপজেলার মহিপুর জামতলা এলাকায় শরিফুল ইসলাম (৩২) ও তার মেয়ে সেজদা (৩)। আহতরা হলেন: শেরপুরের হিন্দু পানিসাড়া গ্রামের জয়ন্ত সরকার (২০), শুভ সরকার (১৯), মো. লিখন (২৮) ও মো. জীবন (৩০)। এ বিষয়ে শেরপুর হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল খালেক ও শেরপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম জানান, এ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নওগাঁ: নওগাঁর সাপাহারে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শাহিন আলম (১৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের আরও দুই বন্ধু। বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কালাইবাড়ী-দিঘিরহাট আঞ্চলিক সড়কের মিরাপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শাহিন আলম (১৭) পোরশা উপজেলার পশ্চিম হরিপুর গ্রামের মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ছেলে। আহতরা হলেন, সাপাহার উপজেলার আলাদীপুর গ্রামের তাহিরের ছেলে আহসান আলী (১৭) এবং পোরশা উপজেলার দুয়ারপাল গ্রামের মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে জামিরুল (১৭)। সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ জানান, তিন বন্ধু মিলে ঈদে ঘুরতে বের হয়েছিলেন। অতিরিক্ত গতির কারণে মোটরসাইকেলটি মিরাপাড়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলে শাহিন আলম নিহত হন। তার সঙ্গে থাকা অপর দুইজন আহত হন। পিরোজপুর: পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহিউদ্দিন তুহিন (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন তার স্ত্রী মিম আক্তার। দুপুর ২টার দিকে উপজেলার ইন্দুরকানী-চণ্ডিপুর সড়কের ফকির বাড়ি জামে মসজিদসংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মহিউদ্দিন তুহিন উপজেলা বালিপাড়া ইউনিয়নের ঢেপসাবুনিয়া গ্রামের রাসেল হাওলাদারের ছেলে। ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মারুফ হোসেন জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ মহিউদ্দিন তুহিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ নিয়ে যেতে আবেদন জানিয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় প্রাইভেটকার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৬ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৪ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সদর উপজেলার গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের সড়ক ভবন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাইভেটকারের চালক ও অটোরিকশায় থাকা ৫ ব্যক্তি আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে অটোরিকশার ৪ যাত্রীর অবস্থা গুরুতর হয়। গুরুতর আহতরা হলেন আসিফ (২৫), আতিক (৩০), ওমর (২৮) ও নাবিল (২৬)। গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শুভ জানান, আহত ৪ জনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। তাদের প্রত্যকের শরীরে ও মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। গাজীপুর: গাজীপুরে বাসচাপায় শিশুসহ সিএনজিচালিত অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম ও পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নিহতরা একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে। এদিকে দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ঈদের সকালে বাসের সঙ্গে মিনিবাসের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৬ জন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস থেকে জানানো হয়েছে, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লোহাগাড়ার জাঙ্গালিয়া মাজার গেটে সৌদিয়া পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে একটি মিনিবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৬ জন। লোহাগাড়া ফায়ার স্টেশনের ১টি ইউনিট উদ্ধার কাজ করেছে।

যশোরে ঈদের রাতে বাজি ফোটানোকে নিয়ে যুবক খুন
যশোরে ঈদের রাতে বাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারিতে অলিদ নামে এক যুবক খুন হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪ জন। সোমবার (৩১ মার্চ) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার বিরামপুরে এ ঘটনা ঘটে। আহত আপন ও স্থানীয়রা জানান, রোববার রাতে বিরামপুর ব্রিজের ওপর আপন, রাশেদুল ও শামীম বাজি ফোটাচ্ছিল। এসময় সেখান দিয়ে যাচ্ছিল অলিদ, পিয়াল, আরিফ ও মেহেদী। তারা দাবি করে বাজি তাদের গায়ে পড়েছে। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। এসময় অলিদসহ অন্যরা আপন, রাশেদুল ও শামীমকে মারপিট ও ছুরিকাঘাত করে। খবর পেয়ে আপনের বাবা রিপন আলী সেখানে গেলে তাকেও ছুরি মেরে আহত করে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অলিদ গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা আহত আপন, তার পিতা রিপন আলী, শামীম, অলিদ ও রাশেদুলকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকালে মারা যান অলিদ। আহতদের মধ্যে রাশেদুলকে খুলনা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া আপন ও বাবা রিপন আলী ও শামীম যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত জানান, বাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারিতে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছে। হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে।

কিশোরগঞ্জে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। সোমবার (৩১ মার্চ) বিকেলে উপজেলার আগরপুর-পোড়াদিয়া সড়কের লক্ষ্মীপুর মধ্যপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন গোবরিয়া নামাকান্দা গ্রামের কৃষক নোহাজ উদ্দিনের ছেলে শামীম মিয়া (২৫) এবং লক্ষ্মীপুর কাছারীপাড়া গ্রামের কৃষক তারা মিয়ার ছেলে আল আমিন (২৭)। তারা পেশায় কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুইজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল ৩টার দিকে উপজেলারর আগরপুর-পোড়াদিয়া সড়কের লক্ষ্মীপুর মধ্যপাড়া এলাকায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান শামীম মিয়া। গুরুতর অবস্থায় আল আমিনকে বাজিতপুর উপজেলার ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেলে নেওয়ার পথে তিনিও মারা যান।

বাঘায় জামায়াত-শিবিরের সাথে বিএনপি-ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি হামলা
রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের সঙ্গে বিএনপি ও ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুইজন আহত হয়েছেন। রোববার (৩০ মার্চ) রাতে উপজেলার বাউসা বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পূর্ব শত্রুতার জেরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেলে বাউসা ইউনিয়নের দিঘা ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি সৌরব আহমেদের গতিরোধ করে মারধর করেন বিএনপিকর্মী রাজীব হোসেন, আরাফাত আহমেদ ও মোমিন হোসেন। এর জেরে রাত ৮টার দিকে বাউসা বাজারে থাকা রাজিবের ওপর হামলা করেন শিবিরের নেতাকর্মীরা। মারধরের খবর শুনে বাজারে ছুটে আসেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। এ সময় জামায়াতকর্মী মিজানুর রহমানের ওষুধের দোকান, রফিকুল ইসলামের জুতার দোকান ও ইমারত শ্রমিক আকবর হোসেনের দোকানে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া জামায়াত নেতা মজিবর রহমান ও আমির উদ্দিনের মোটরসাইকেল এবং আক্কাছ আলীর ভ্যানে আগুন দেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। আহতদের মধ্যে সৌরভ নামের একজন বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজিব রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’

আড়াইহাজারে বিএনপি-যুবদলের সংঘর্ষে আহত ১০
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (৩১ মার্চ) দুপুরে ১টার দিকে উপজেলার মেঘনাবেষ্টিত ইউনিয়নের খালিয়াচর এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকা ও তার আশপাশে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার খালিয়ারচর গ্রামের বিএনপির একটি সমাবেশ আয়োজনকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি কবির হোসেন নিজ নিজ বলয়ের লোকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। ঈদের দিন দুপুরে এ নিয়ে উভয় পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে তোতা মিয়া, এরশাদুল এরশাদ, অহিদুল ইসলাম, খাইরুল ইসলাম, বাবুল মিয়া, দুলাল মিয়া, মনির হোসেনসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে তোতা মিয়া, অহিদুল ইসলামকে আশঙ্কাজনক অবস্থার কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের আড়াইহাজার ও সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনান সত্যতা নিশ্চিত করে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন আনে। তবে যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ব্যপারে কোন পক্ষই এখন পর্যন্ত অভিযোগ দেয়নি।