
রাজশাহীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহী নগরী দড়িখড়বোনায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ তিন জন আহত হয়েছেন। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ ছাড়াও এক সাংবাদিকেরসহ দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। উত্তেজনা রাত ১১টা পর্যন্ত চলমান ছিল। তবে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকার মুন রাবেয়া টাওয়ার থেকে যুবলীগ নেতা সাব্বির বাবুকে ধরিয়ে দেন মহিলা দলের নেত্রী লাভলী। এর জেরে সন্ধ্যায় মহিলা দলের নেত্রী লাভলীর বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা সেখান থেকে সরে এলে নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকায় লাভলী গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ইটপাটকেলের আঘাতে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য তোফাজ্জলসহ আরও দুই জন আহত হন। এ সময় দড়িখড়বোনা এলাকায় থেমে থাকা দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি মোটরসাইকেল ‘আজকের পত্রিকার’ মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার জাহিদ হাসান সাব্বিরের। তিনি বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনে তিনি মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাস্থল থেকে দূরে সড়কের পাশে তার মোটরসাইকেলটি রাখা ছিল। এ সময় তার মোটরসাইকেলেও আগুন দেয় বিক্ষুব্ধরা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে দড়িখড়বোনা, শালবাগান ও রেলগেট এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক হোসেন জানান, সংঘর্ষের খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত। সংঘর্ষের কারণ জানতে পুলিশ কাজ করছে।

যুবলীগ নেতার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের একটি বাথানের ঘর থেকে ইউসুফ আলী স্বপন (৪০) নামে এক যুবলীগ নেতার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে লাশটি উদ্ধার করা হয়। স্বপন উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং বীর শুভগাছা গ্রামের ইমান আলী খানের ছেলে। স্বজন জানান, স্বপন একা চরের ওই বাথানে অবস্থান করে গরু, ভেড়া, ঘোড়া ও ছাগল দেখাশোনো করতেন। প্রতি বুধবার বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের জন্য বাজার করে দিয়ে আবার বাথানে ফিরে যেতেন। গত বুধবার তিনি বাড়িতে যাননি, ফোনও বন্ধ ছিল। পরিবারের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। বাথানের মালিক স্বপনের বন্ধু শ্রমিক নেতা সারজিল সম্পদ বলেন, মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় বুধবারের পর থেকে স্বপনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। শুক্রবার সকালে স্থানীয় একজনকে বাথানে পাঠানো হলে জানতে পারি, ঘরের মধ্যে স্বপনের মরদেহ পড়ে আছে। কাজীপুর থানার ওসি নূরে আলম জানান, ধারণা করা হচ্ছে, তিন-চার দিন আগে স্বপনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

আ.লীগ নেতার ফেসবুক প্রোফাইল ও কভার ফটোতে খালেদা জিয়ার ছবি
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক আওয়ামী লীগ নেতার ফেসবুক প্রোফাইল এবং কভার ফটোতে খালেদা জিয়ার ছবি দেখা গেছে। এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে। আওয়ামী লীগের ওই নেতার নাম মাজহারুল ইসলাম পিন্টু। তিনি উপজেলার বানাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। জানা যায়, মাজহারুল ইসলাম পিন্টু বানাইল ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আত্মীয়তার সুত্র ধরে ২০০৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা মীর এনায়েত হোসেন মন্টুর পক্ষে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করেন এবং আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তার পর বানইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং বর্তমানে তিনি ওই পদেই আছেন। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগষ্ট পিন্টুর ফেসবুক প্রোফাইল এবং কভার ফটোতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছবি আপলোড করা হয়। এরপর ২১ আগষ্ট স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী এবং অন্যান্য বিএনপি নেতাদের ছবি তার ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতা পিন্টুর ফেসবুক আইডিতে খালেদা জিয়া এবং বিএনপির নেতাদের ছবি পোষ্ট হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থদের মধ্যে বিরূপ প্রতিত্রিয়া দেখা দেয়। এনিয়ে তাকে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বানাইল ইউনিযন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকট আনিসুর রহমান হুমায়ুন বলেন, প্রথমে তিনিও ওইসব পোষ্টে বিভ্রান্ত হয়েছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় পিন্টুর আইডি হ্যাক হয়েছে। তিনি এখনও আওয়ামী লীগেই আছেন, বিএনপিতে যোগ দেননি। উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জহিরুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রথমে আমরাও অবাক হয়েছি। পরে পিন্টুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তার আইডি হ্যাক হয়েছে। মির্জাপুর পৌর বিএনপির সভাপতি হযরত আলী মিঞা বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের পদধারী কোনো নেতা বিএনপিতে যোগদানের কোনো সুযোগ নেই। পিন্টুর বিএনপিতে যোগদানের বিষয়ে তার জানা নেই বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে বানাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম পিন্টু বলেন, ‘আমার আইডি হ্যাক হয়েছে। অনেকদিন ধরে আমার আইডি থেকে এসব পোষ্ট দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে থানায় জিডি করা আছে। আমি এখনও আওয়ামী লীগেই আছি। ১৫ আগষ্ট শোক দিবস পালন করে আমি মামলার আসামি হয়েছি।’

তরমুজ ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগে ছাত্রদল নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি
মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী এনামুল হক মুন্সি টাকা না দিয়ে তরমুজ নিতে নিষেধ করায় মারধরের অভিযোগে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকালে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতি পাওয়া রমিজ উদ্দিন সৈকত (৩০) গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক। তিনি শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদককে প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতার সঙ্গে কোনোরূপ সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযুক্ত রমিজ উদ্দিন সৈকত বলেন, ‘আমি ব্যবসায়ীকে মারধর করিনি। স্থানীয় একটি মহল সাংবাদিকদের কাছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।’ তিনি দাবি করেন, ওই ব্যবসায়ী তরমুজ মেপে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছিল। এর প্রতিবাদ করলে ওই ব্যবসায়ী তাকে মারধর করেন। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর বাজারে মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী এনামুল হক মুন্সিকে টাকা না দিয়ে তরমুজ নিতে চায় রমিজ উদ্দিন সৈকত। এতে ব্যবসায়ী নিষেধ করায় তাকে মারধর করা হয়।

দু’দিনেও জ্ঞান ফেরেনি ধর্ষণের শিকার শিশুটির, হাসপাতালে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা
হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসা চলছে আট বছরের শিশুর। কথা বলছে না, নড়াচড়াও নেই। অচেতন অবস্থায় শুয়ে আছে সে। মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করছে ধর্ষণের শিকার এই শিশুটি। আর তার পাশে বসে কাঁদছেন মা। সন্তানের এই অবস্থায় তিনি যেন পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় মানুষ। এক হাত দিয়ে মেয়ের মাথা স্পর্শ করছেন, আরেক হাতে নিজের চোখের পানি মুছছেন। মেয়ের করুণ অবস্থা দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। এই দৃশ্য শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের। ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) রাখা হয়েছে। গত তিন দিনেও তার জ্ঞান ফেরেনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। আট বছরের ছোট্ট এই শিশুটি গত বুধবার গভীর রাতে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান অভিযুক্ত বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৪৭) ও স্বামী সজিব শেখকে (১৮) আটক করেছে পুলিশ। এদিকে শিশুকে ধর্ষণের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে মাগুরার সাধারণ মানুষ। অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার দুপুরে শহরে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল হয়। পরে তারা মাগুরা সদর থানা ঘেরাও করে। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে শিশুটি অচেতন অবস্থায় রয়েছে। শুক্রবার রাত ১০টায়ও তার জ্ঞান ফেরেনি।স্বজন জানান, শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই হাসপাতালেও তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি ইউনিটের একজন চিকিৎসক বলেন, শিশুটির জ্ঞান ফেরেনি। তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। চিকিৎসা চলছে। মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী বলেন, মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে আট বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহজনকভাবে শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব শেখ ও তার বাবা হিটু শেখকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। ফলে মামলা হয়নি। শিশুটির স্বজন জানান, তার বাবা ভ্যানচালক। তাদের বাড়ি মাগুরায়। মাস চারেক আগে শিশুর বড় বোনের বিয়ে হয় মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামের রাজমিস্ত্রি হিটু শেখের ছেলে সজিব শেখের সঙ্গে। সজিবও রাজমিস্ত্রি। কিছুদিন আগে শিশুটির বোনের বাড়িতে বেড়াতে যায়। সে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। শুক্রবার দুপুরে ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ২২৩ নম্বর ওয়ার্ডে (পিআইসিইউ) শিশুটির পাশে বসেছিলেন তার মা। কাঁদতে কাঁদতে ওয়ার্ডের গেটের সামনে অবস্থান করা স্বজনদের কাছে আসেন। তখনও কাঁদছিলেন। কাঁদতে কাঁদতে এক স্বজনকে ধরে বলেন, আমার মেয়ে কথা বলছে না। ডাকলেও সাড়া দিচ্ছে না। মেয়ের কী হবে? ওদের ফাঁসি চাই। তিনি বলেন, তাঁর বড় মেয়ে তাঁকে জানান, শ্বশুরবাড়িতে রাতে তার ভয় লাগে। এ জন্য ছোট বোনকে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যেতে চায়। তার আবদারের মুখে গত শনিবার ছোট মেয়েকে বড় মেয়ের সঙ্গে পাঠিয়ে দেন। কিছুদিন থাকার পর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। বুধবার রাতে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। পরে গলায় কিছু পেঁচিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। শিশুটির মামাতো ভাই বলেন, বুধবার গভীর রাতে তাকে ধর্ষণ করে তারই দুলাভাইয়ের বাবা হিটু শেখ। এ ঘটনা তার বড় বোন দেখে ফেলায় তাঁকে ঘরে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে তাঁর শ্বশুর ও স্বামী। এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্যও হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর কাছে মোবাইল ফোন না থাকায় তিনি বিষয়টি মা-বাবাকে জানাতে পারেননি। শিশুটির প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়। এ অবস্থায় তাকে রাতে বাড়িতেই রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন সকালে সজিবের মা তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে রেখে পালিয়ে যান তাঁর শাশুড়ি। পরে হাসপাতাল থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দেওয়া হয়। এর পর সংবাদ পেয়ে শিশুটির মাসহ স্বজন ছুটে যান হাসপাতালে। মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. সুবাস রঞ্জন হালদার বলেন, শিশুটিকে প্রথমে শ্বাসকষ্ট রোগী হিসেবে নিয়ে আসা হয়। পরে মেডিসিন বিভাগে নিয়ে গেলে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার আলামত পাওয়া গেছে। মেয়েটির অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। যে কারণে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শিশুটির মামাতো ভাই বলেন, তাঁর ফুফাতো বোনের গলায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। কিছু জায়গায় আঁচড়ের দাগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। স্বজনরা জানান, বিয়ের মাসখানেক পরে শিশুটির বড় বোনকেও পাশবিক নির্যাতনের চেষ্টা করেছিলেন তাঁর শ্বশুর হিটু শেখ। কিন্তু মেয়ের বাবা দরিদ্র হওয়ায় বিষয়টি জানার পরও চুপ ছিলেন। বড় বোনও শুক্রবার ঢামেক হাসপাতালে এসেছিলেন। তবে বিকেলে তাঁকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ, থানা ঘেরাও শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর মাগুরা শহরে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ স্থানীয় জনতা। এ সময় তারা সদর থানা ঘেরাও করে। থানার ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শুক্রবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে শিশুটি মারা গেছে। এ কারণেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় লোকজন। মাগুরা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সজিব শেখের কথায় বেশ অসংলগ্নতা পাওয়া গেছে। বাবা-ছেলে দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি
গাজীপুরের শ্রীপুরে ‘ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে টাকার বিনিময়ে মিলছে সিরিয়াল’ এমন সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে জবাই করে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীপুর থানা ভবন এলাকায় ছাত্রদলের মিছিলে ওই সাংবাদিককে জবাই করার স্লোগানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন। ওই সাংবাদিকের নাম মো. মোজাহিদ। তিনি দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় গাজীপুর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, মিছিলে নেতাকর্মীরা স্লোগানে বলছেন, ‘একটা একটা মোজাহিদ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর।’ মানববন্ধন শেষে সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন সাংবাদিক এম এম ফারুক, আব্দুল লতিফ মাস্টার, আবুল কালাম আজাদ, ফজলে মমিন আকন্দ, শাহান সাহাবুদ্দিন, ফয়সাল খান, মোতাহার খান, রাতুল মন্ডল, সফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, মাহমুদুল হাসান প্রমুখ। এসময় আগমী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।

দিনেদুপুরে বিকাশ ব্যবসায়ীর প্রায় ৫ লাখ টাকা চুরি
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় দিনেদুপুরে বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীর ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চৌরাস্তা বাজারে। ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী হলেন মেসার্স মাহিন টেলিকমের মালিক আল-আমিন। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী থানায় অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন। দোকানটির মালিক আল আমিন জানান, তিনি ওই দোকানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা লেনদেন ছাড়াও নিয়মিত ফ্লেক্সিলোড দিয়ে থাকেন শুক্রবার দুপুরে দোকানে তালা দিয়ে তিনি কাছের একটি মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে যান। আসার পথে খবর পান তার দোকানে চুরি হয়েছে। পরে দোকানে এসে দেখতে পান, দরজার তালা ভেঙে চোর আলমারির ২টি তালা ভেঙে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী শাহ আলম কিবরিয়া জানান, তখন তিনি দোকানে বসে ঘুমের ঘোরে ছিলেন। এসময় পাশের দোকানের কাঞ্চন নামে একটি যুবক তাকে ডেকে তোলেন। কাঞ্চন জানান, একটি লোক ওই দোকান থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। এসময় তিনি লোকটিকে ধাওয়া দিলে যানবাহনের আড়ালে চলে যাওয়ার কারণে তাকে আর ধরা যায়নি। নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহমেদ জানান, ওই ব্যবসায়ী সাধারণ ডায়রি করেছেন। তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

২২ বছর পর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
পটুয়াখালীতে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. ফিরোজ হাওলাদার ২২ বছর পর র্যাবের জালে ধরা পড়েছে। শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব অভিযান চালিয়ে জেলার বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের রহমতনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ফিরোজ একই উপজেলার কবিরকাঠি এলাকার মৃত মজিদ হাওলাদারের ছেলে। র্যাব-৮ পটুয়াখালী ক্যাম্প অধিনায়ক তুহিন রেজা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। র্যাব জানায়, যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. ফিরোজ ২০০৩ সালে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাউফলের কালিশুরি এলাকায় সংঘটিত সংঘর্ষে প্রতিপক্ষ মালেক মৃধাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন এবং পায়ের রগ কেটে দেন। এ ঘটনায় মালেক মৃধার স্ত্রী জোহরা বেগম বাদী হয়ে বাউফল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্যান্য আসামিরা ধরা পড়লেও ফিরোজ দীর্ঘ ২২ বছর ধরে পলাতক ছিলেন। ২০০৭ সালে পটুয়াখালী জেলা দায়রা জজ আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরবর্তী সময়ে ফিরোজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে অভিযান চালিয়ে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে বাউফল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

নেত্রকোনায় বিজিবির অভিযানে ১৫৪ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার
নেত্রকোনার সীমান্ত এলাকায় পৃথক অভিযানে চোরাচালানের ১৫৪ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করেছে বিজিবি। তবে এ ঘটনায় কেউ আটক হয়নি। শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিষয় জানান নেত্রকোনা ৩১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামান। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলার কলমাকান্দা ও ৩১ বিজিবির আওতাধীন ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত এলাকা থেকে এসব মদ উদ্ধার করা হয়। বিজিবি জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলার কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের বাষানকুড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মালিকবিহীন অবস্থায় চোরাচালানের ৮২ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করা হয়। একই দিন রাতে ৩১ বিজিবির আওতাধীন ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের জয়রামপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোরাচালানের ৭২ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করে বিজিবি। এ বিষয়ে নেত্রকোনা ৩১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক জানান, উদ্ধারকৃত মাদক নেত্রকোনা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে হস্তান্তর করা হবে।

শেরপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেপ্তার ৬
বগুড়ার শেরপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের মহিপুর বুড়িতলা এলাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বড় ফুলবাড়ি এলাকার জাহিদুল ইসলামের ছেলে ওমর ফারুক (২৩), একই এলাকার সিদ্দিকের ছেলে জাকির আহম্মেদ ওরফে জনি (২১), বাদশা মিয়ার ছেলে সামিউল (১৯), আনিছুর রহমান খাজার ছেলে মেহেদী হাসান রব্বানী (২৩), ছোট ফুলবাড়ি এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে আরফান আলীম (২৫) এবং জয়নগর এলাকার মৃত গোলাম আজমের ছেলে আব্দুল গফ্ফার ওরফে সবুজ (১৯)। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম শফিক। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক (মূল্য আনুমানিক ১ লাখ টাকা), দুটি স্লাই রেঞ্জ ও একটি স্ক্রু ড্রাইভার, ১৪ ইঞ্চি লম্বা তালা কাটার কাঁচি, ১০ হাত লম্বা নাইলনের রশি ও হলুদ রঙের কসটেপ, দেশীয় তৈরি ১৮ ইঞ্চি লম্বা চাইনিজ কুড়াল, ১৩ ইঞ্চি লম্বা ছোরা ও ছয়টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বোনের জানাজায় আওয়ামী লীগ নেতা
দুই ঘণ্টার প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বোনের জানাজায় অংশ নিয়েছেন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর কবির। শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুর ১২টা থেকে দুইটা পর্যন্ত তাকে প্যারোলে মুক্তি দেন বরগুনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে বরগুনা জেলা কারাগার থেকে বেরিয়ে পুলিশি নিরাপত্তায় বরগুনা সার্কিট হাউজ মাঠে জানাজা নামাজে অংশগ্রহণ শেষে পৌনে ২টার দিকে কারাগারে ফিরে যান। এর আগে শুক্রবার ভোররাতে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান জাহাঙ্গীর কবিরের বড় বোন আনোয়ারা বেগম (৮৪)। গত বছরের ১৪ আগস্ট ভোর পৌনে ৬টার দিকে শহরের আমতলা সড়কের নিজ বাসভবন থেকে পিবিআই ও বরগুনা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে জাহাঙ্গীর কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন-অর রশিদ হাওলাদারের করা একটি চাঁদাবাজি মামলায় তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

মাগুরায় ‘ধর্ষণে’র শিকার শিশুটি বেঁচে আছে: পুলিশ
মাগুরায় ‘ধর্ষণের শিকার’ ৮ বছরের শিশুটি বেঁচে আছে বলে জানিয়েছেন মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. মিরাজুল ইসলাম। শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য জানান তিনি। এর আগে ‘মাগুরার শিশুটি মারা গেছে’ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। মিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মিত শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিচ্ছি। এখনও সে অচেতন অবস্থায় আছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় শিশুটির দুলাভাই সজিব শেখ (১৮) ও তার বাবা হিটু শেখকে (৪৭) আটক করা হয়েছে। তাদের দুজনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সজিবের কথায় বেশ অসংলগ্নতা পাওয়া গেছে। বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুটিকে প্রথম অচেতন অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে ওই অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সকালে শিশুটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়। শিশুটির মা জানান, বোনের বাড়িতে মেয়েকে ঘরের মধ্যে একা পেয়ে কেউ একজন ধর্ষণ করেছে। যেহেতু ওই সময় বাড়িতে সে একা ছিল আর এখনও মেয়ের জ্ঞান ফেরেনি তাই তাকে কে ধর্ষণ করেছে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। এদিকে ধর্ষণে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন মুসল্লিরা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মাগুরা শহরের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ করেন তারা।

পছন্দের ইমামকে না রাখায় জাতীয় পতাকার খুঁটিতে জুতা
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে পছন্দের ইমামকে না রাখায় জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে (খুঁটি) জুতা ঝুলিয়ে দিয়েছে নানা অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লার অনুসারীরা। শুক্রবার (৭ মার্চ) জুমার নামাজের পর কলেজের ডিগ্রি শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ভাইরাল হয়। জুমার নামাজের আগে থেকে জুতা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা পর্যন্ত পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক লোকজন ক্যাম্পাসজুড়ে অবস্থান করছিলেন। জানা গেছে, জুমার নামাজের খুতবার আগের মসজিদের মিম্বরে মুসল্লিদের উদ্দেশে কথা বলেন কলেজ এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন। পূর্বপরিস্থিতি যাতে আর না হয় আহ্বান করে তারা বলেন, ‘ভিক্টোরিয়া একটি স্বনামধন্য কলেজ। স্থানীয়দের সঙ্গে ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরোধ কখনও কাম্য নয়। কলেজ মসজিদের অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহকে সসম্মানে বিদায় করার পাশাপাশি বর্তমান ইমামকে বাদ দিয়ে নতুন ইমাম নিয়োগ দিতে হবে। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে এমন একজনকে নিয়োগ দিতে হবে যাকে কলেজ ও মসজিদ এলাকার কেউ না চেনে। এ বিষয়ে আমরা ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবো।’ এই কথা মানেনি অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লার অনুসারীদের একাংশ। খুতবা চলাকালে তারা বের হয়ে যান মসজিদ থেকে। নামাজ শেষ হতেই কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা জাতীয় পতাকার তিনটি স্ট্যান্ডের মধ্যে মাঝের স্ট্যান্ডে বিভিন্ন অশ্লীল স্লোগান দিয়ে জুতা ঝুলিয়ে দেয় ৮-১০ জন যুবকের একটি দল। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাঈদ আহমেদ বলেন, ‘এ কেমন কাজ! ইমাম গেলে ইমাম আসবে। দোষ করলে মানুষ করছে। জাতীয় পতাকার অবমাননা করলো কেন? কলেজ প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’ অভিযুক্ত ইমাম মারুফ বিল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কলেজ প্রশাসন আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি কলেজ থেকে চলে এসেছি। এখন কী ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঁঞা বলেন, ‘জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা উত্তোলন, রাষ্ট্রদ্রোহী কাজের সমান। এই কাজ কখনোই আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে তাবলিগের বিবদমান দুই পক্ষ মাওলানা সাদ ও জুবায়েরের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে গত ২০ জানুয়ারি তাবলিগের সাপ্তাহিক তালিম সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা করেন কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল বাসার ভূঁঞা। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিনের মতবিরোধে ২১ জানুয়ারি বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করেন ইমাম মারুফ বিল্লার অনুসারীরা। এরপর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ইমাম মো. মারুফ বিল্লাহকে নানান অভিযোগ তুলে অব্যাহতি দেয় কলেজ প্রশাসন। পরে ১৮ ফেব্রুয়ারি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ইমামকে চাকরিচ্যুত করার পর থেকেই কলেজে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রতি শুক্রবার নামাজের আগে ইমামকে বহালের দাবি করে আসছে স্থানীয় একটি পক্ষ। প্রতি শুক্রবারই শিক্ষকদের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে স্থানীয়দের ও কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি অংশের। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কলেজের নামাজ শুরুর আগেই স্থানীয় কিশোর ও যুবকরা কলেজের অধ্যক্ষের ওপর হামলা করে। এ সময় তারা অধ্যক্ষের গায়ে আঘাত করে। পার্শ্ববর্তী নজরুল হলের শিক্ষার্থীরা পাশে দাঁড়াতে আসলে তাদের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা। এ সময় পুলিশ আসলেও স্থানীয়দের হামলায় প্রথমে পিছু হটে পরে কলেজে ঢুকে।

বৈষম্যবিরোধী পরিচয়ে বাসায় ঢুকে চাকরিজীবীকে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি’ পরিচয়ে চট্টগ্রামের এক বেসরকারি চাকরিজীবীকে অপহরণ করেছে একদল লোক। অপহরণের পর ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ ও ১৫ লাখ টাকার একটি ব্যাংক চেক আদায় করেছে অপহরণকারীরা। অপহরণের শিকার আবেদিন আল মামুন চট্টগ্রাম সিটির ইপিজেড এলাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে আকবর শাহ থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকার বাসা থেকে অপহরণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয় দেওয়া একদল লোক। এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন নাজমুল আবেদিন, নইমুল আমিন ইমন (২২), আরাফাত হোসেন ফহিম (২২) ও রিসতি বিন ইউসুফ (২৩)। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (পশ্চিম) হুসাইন মোহাম্মদ কবির ভূইয়া বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাসা থেকে তাকে (চাকরিজীবী আবেদিন আল মামুন) অপহরণ করে। এ সময় তার গাড়ি ও চালককে জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এরপর পতেঙ্গা সাগরপাড় এলাকা ও পাহাড়তলীর কর্নেলহাট জোন্স রোড এলাকাসহ পাহাড়তলী এবং আকবর শাহ থানার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করে তারা। এই সময়ের মধ্যে ভিকটিমের স্ত্রীর কাছ থেকে মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা আদায় করে এবং ১৫ লাখ টাকার একটি ব্যাংক চেক লিখে নেয়। পরে ভিকটিমকে অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হসপিটাল এলাকায় রেখে পালিয়ে যায় তারা। তিনি বলেন, ‘অপহরণের খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক অভিযানে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামি নইমুল আমিন ইমনের বাসা থেকে মুক্তিপণের টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।’ আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘রাত দুইটার সময় ভিকটিমদের উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী অভিযানে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে আসামি ইমনের বাসা থেকে মুক্তিপণের জন্য আদায় করা টাকা উদ্ধার করা হয়।’

মসজিদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ করায় মারপিটে আহত ৫
পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলায় মসজিদের দুই মেট্টিক টন চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদ করায় তাদের হামলায় আহত হয়েছেন নারী শিশুসহ পাঁচজন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত তিনজনকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের কদমতলী মিনাজ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন কদমতলী মিনাজ মোড় গ্রামের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী সালমা খাতুন (৩৫), তার শিশু সন্তান সোহেল (১১) ও আলাউদ্দিন আলীর স্ত্রী আলপনা খাতুন (৩২)। অভিযুক্ত বিএনপির নেতা হলেন ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। আহত সালমা খাতুন জানান, মিনাজ মোড় জামে মসজিদের দুই টন চাল বরাদ্দ পাওয়া যায় সরকারিভাবে। সেই চাল বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করে সাইফুল ইসলাম, মতিন গং। তার প্রতিবাদ করেছিলেন আমার স্বামীসহ এলাকার অনেকে। সেই ক্ষোভে সকালে এসে তারা আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। তাদের বাধা দিতে গেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিটে আমাদের আহত করে। স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান হোসেন (৬০) বলেন, ‘গত বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে উপজেলা থেকে দুইজন অফিসার আমাদের এলাকায় গিয়ে বলেন, মিনাজ মোড় জামে মসজিদে সরকারিভাবে ২ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৫ দিন আগে। পেয়েছেন কি না। কিন্তু আমরা কেউ কিছু জানি না। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি বিএনপির নেতা সাইফুল, মনিরুল ইসলাম, মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আব্দুল মতিন মিলে চাল তুলে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তখন অফিসারের সামনে ক্যাশিয়ার মতিন বলেন, ‘তিনি টাকা পান নাই, এ বিষয়ে কিছু জানেনও না।’ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে গ্রামের মুসুল্লীরা ইউএনও অফিসে গিয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ দেন। এ সময় খবর পেয়ে মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার মতিন ইউএনওর অফিসে হাজির হয়ে সবার সামনে বলেন তারা চাল বরাদ্দ পেয়েছেন এবং তুলে বিক্রি করেছেন। চাল বিক্রির ৭০ হাজার টাকা দিতে স্বীকার করেন ইউএনওর সামনে। পরে টাকা মসজিদের তহবিলে জমা দিবেন বলেও জানান মতিন। ইউএনওর অফিসে অভিযোগ দেওয়ার জেরে ক্ষোভে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বিএনপির নেতা সাইফুল, তার সহযোগী মনিরুল, মসজিদের ক্যাশিয়ার মতিন, সাদিকুল, শামীম, জাহাঙ্গীরসহ ১৫-২০ জন অভিযোগকারীদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তাদের বাধা দিতে গেলে শিশু নারীসহ অনেককে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করে। এতে ৫ জন আহত হয়। তার মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। চাল তুলে বিক্রি করেছিল মসজিদের ক্যাশিয়ার। সে তো স্বীকার করেছে যে, তার কাছে টাকা আছে। তাহলে তো কোন সমস্যা থাকার কথা না। ইতিপূর্বে টাকার জন্য ক্যাশিয়া কে ঐ পক্ষ মারধর করেছিল। সে কারণেও আজকের মারপিটের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আজকের মারপিটের ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই। মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’ চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার গ্রামবাসী একটি অভিযোগ দিয়েছেন। একই দিন মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার মসজিদের তহবিলে টাকা দিয়ে দিবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজকে মারধরের ঘটনাটি দুঃখজনক। ফৌজদারী অপরাধ হওয়ায় এখন আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সাবেক স্ত্রীর সাথে খালুর প্রেমের সম্পর্ক, ক্ষিপ্ত হয়ে ২ চোখ তুলেন সাদ্দাম
যশোরে নিজের খালুর দুই চোখ উপড়ে ফেলা সাদ্দামকে (৩২) আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দিবাগত গভীর রাতে শহরের পালবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতেই শহরের বকচর করিম তেল পাম্প এলাকায় সাদ্দাম তার খালু শহিদুল ইসলামের ওপর হামলা করে দুই চোখ উপরে ফেলে। শহিদুলকে গুরুতর অবস্থায় রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহত শহিদুল ইসলাম (৬০) বকচর করিম পাম্প কবরস্থান রোড এলাকার বাসিন্দা। সাদ্দাম (৩০) তার ভায়রা শাহ জামালের ছেলে। শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (এসপি) নূর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘দুই মাস আগে সাদ্দাম ও তার স্ত্রী পিয়ার সঙ্গে ডিভোর্স হয়। সেই সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে তার খালু শহিদুল প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাদ্দাম আঙ্গুল দিয়ে শহিদুলের দুই চোখ তুলে পালিয়ে যান।’ ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দাম জানান, সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে খালুর প্রেমের সম্পর্কে ক্ষিপ্ত হন। পরে তার দুই চোখ তুলে নেন সাদ্দাম।’ নূর ই আলম বলেন, ‘আটক সাদ্দামকে হত্যা চেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও এ ঘটনায় অন্য কোনো ঘটনা বা কেউ জড়িত আছে কি না, সেটা উদঘাটনে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবুল বাশার, যশোর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক ভূঁইয়া প্রমুখ।

উল্টোপথে বিএনপির নেতার গাড়ি, ধমকের সুরে শিক্ষার্থীকে ‘শহরে থাকলে চিনতে হবে’
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে উল্টোপথে গাড়িতে যাওয়ার সময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপনকে আটকে দিয়েছে যানজট নিরসনের দায়িত্বে থাকা একদল শিক্ষার্থী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই বিএনপি নেতা শিক্ষার্থীদের শাসিয়েছেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রেজা রিপন বলেন, ‘এই শহরে থাকতে হলে চিনতে হবে।’ সম্প্রতি সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে রেজা রিপনের গাড়িটি নারায়ণগঞ্জ চেম্বার ভবনের অল্প দূরে উল্টোপথে চাষাঢ়ার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের পক্ষে যানজট নিরসনে থাকা শিক্ষার্থীরা গাড়িটি আটকে দেন। তখন রেজা রিপন এক ছাত্রকে ডেকে বলেন, ‘কী সমস্যা?’ উত্তরে ছাত্রটি বলে, ‘এটি উল্টো দিক দিয়ে যাওয়ার গাড়ি না তো।’ এরপর রেজা রিপন বলেন, ‘তোমরা চেম্বার অব কমার্সের না? সোহেলকে (চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি) ফোন করো। ফোন করে জিজ্ঞেস করো হু আই অ্যাম? আমি এখান দিয়েই যাবো, সরো।’ এটি বলে তিনি গাড়ির গ্লাস উঠিয়ে দিয়ে চলে যেতে চান। উত্তরে ছাত্রটি বলে, ‘চেম্বার অব কমার্সের হলেও আমরা ছাত্র। সবার জন্য আইন সমান।’ চাষাঢ়াগামী রাস্তা দেখিয়ে তা সম্পূর্ণ ঠিক আছে বলেও জানায়। এর মধ্যে রেজা রিপনের পক্ষে বিএনপি এক কর্মী এসে ছাত্রদের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়। ওই সময় রেজা রিপনকে বলতে শোনা যায়, ‘এই শহরে থাকতে হলে চিনতে হবে।’ গাড়ি আটকানো ছাত্রটি তখন ‘এটা বললে তো আর কিছু বলার নেই’ বলে গাড়িটি ছেড়ে দেন। শিক্ষার্থীদের যানজট নিরসনের মনিটরিংয়ের দায়িত্ব রয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের আহ্বায়ক মাহফুজ খান। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাটি দ্বিতীয় রমজানের। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে এ ঘটনা ঘটে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই বিএনপি নেতা শিক্ষার্থীদের সাথে তর্কবিতর্ক শেষে ওই দিন উল্টোপথেই বাসায় ফেরেন। উল্টোপথে আসার কোন যৌক্তিকতাই নাই, সেটা যেই হোক না কেন। তা ছাড়া ওই বিএনপির নেতার এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই শোভনীয় নয়। দায়িত্বশীল একজন ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ এবং কর্মকাণ্ড আশা করা যায় না।’ এ বিষয়ে জানতে ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, ‘ওই দিন রেজা রিপন বাসায় ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটেছিল। যতদূর জানতে পেরেছি, তার বাসায় ফেরার খুব তাড়া ছিল। এ কারণে উল্টোপথে যেতে চেয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করা উচিত হয়নি। এ বিষয়টি নিয়ে আমি তার সাথে কথা বলবো।’ নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি ও বিকেএমইএর সহসভাপতি সোহেল সারোয়ার বলেন, ‘এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা সবাই যানজট নিরসনে সহযোগিতা করবো।’

দিরাই-শাল্লায় ১১ বিলে দশ কোটি টাকার মাছ লুট
বিএনপির নেতাদের অংশীদার করেও জলমহাল রক্ষা করতে পারছেন না দিরাই-শাল্লার আওয়ামী লীগ ঘরানার ইজারাদাররা। গত ছয় দিনে সুনামগঞ্জের এই দুই উপজেলার ১১ বিলে লুটপাট হয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালেও হালুয়া খাটুয়া ও দিরাই চাতল বিল লুট করেছে কয়েক হাজার মানুষ। এসব বিল থেকে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার মাছ লুট হয়েছে বলে দাবি জলমহাল ইজারাদারের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিরাইয়ের কামান বিলে মাছ লুটপাটের মধ্য দিয়ে জলমহাল লুটের উৎসব শুরু হয় দিরাই-শাল্লা উপজেলায়। কাগজপত্রে এই বিলের ইজারাদার চরনারচর বিএম মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। সমিতির নামে ইজারা থাকলেও এই জলমহালের মালিক হিসেবে পরিচিত দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ মিয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জয় কুমার বৈষ্ণব। সম্প্রতি কামান বিলের জলমহালের মাছ আহরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল ইজারাদার পক্ষ। এর মধ্যেই শুক্রবার ৭ মার্চ) ভোরে পাশের নোয়াগাঁও, কার্তিকপুর, মাইতি, হাসনাবাদ, শ্যামারচর, আটগাঁও, মির্জাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের হাজারো মানুষ জড়ো হয়ে জলমহালে মাছ ধরা শুরু করে। এভাবে গেল ছয় দিনে একে একে উদীর হাওর (মুরগা নদী), সউত্বা, জয়পুর-আতনি, বেতইর নদী, লামা বেতইর, হালুয়া-ঘাটুয়া, দিরাই-চাতল, কলকলিয়া, বড়গাঁও-ইয়ারাবাদ গ্রুপ ও জোয়ারিয়া বিলে লুটতরাজ চালায় তারা। চরনারচর বিএম মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি সুধীর বিশ্বাস জানান, বছরে এ জলমহালে বার্ষিক ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব জমা দেন তারা। এবার নিয়ে ছয় বছর হয় বিলের ইজারায় রয়েছে তাদের সমিতি। ইজারা নিতে অনেক টাকার প্রয়োজন, এ জন্য ‘বছর-বছর চুক্তিতে’ আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ মিয়া ও জয় কুমার বৈষ্ণবকে শরিক রেখেছেন তারা। শুক্রবারের ঘটনায় বিল থেকে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার মাছ লুট হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। উদীর হাওরের ইজারাদার সুধীর রঞ্জন দাস বলেন, ‘১৮ বছর হয় বিলের ইজারাদার তাদের সমিতি। এ বছর ৯০ লাখ টাকা ইজারামূল্য ছিল। ইতোমধ্যে এক কোটি টাকার মাছ তারা আহরণ করেছেন। লুট হয়েছে কমপক্ষে তিন কোটি টাকার মাছ। এই লুটপাটে কমপক্ষে ২০ গ্রামের মানুষ ছিল।’ এমনকি আওয়ামী লীগের কিছু সমর্থককেও জলমহাল লুটপাটে অংশ নিতে দেখা গেছে বলে জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে সুধীর রঞ্জন দাস বলেন, ‘তাদের জলমহালে দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের পুঁজি রয়েছে।’ জয়পুর-আতনি জলমহালের ইজারাদার জয়পুর আতনি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। চলতি বছর ভ্যাটসহ ৮৬ লাখ টাকায় জলমহাল ইজারা নেয় এই সমবায় সমিতি। গত কয়েক দিনে এখান থেকে ৫ কোটি টাকার মাছ লুট হয়েছে বলে দাবি করেন ইজারা সমিতির সভাপতি বিকাশ রঞ্জন দাস। জানা গেছে, এই বিলে পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়। শাল্লার আটগাঁওয়ের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রাহুল দাস জানালেন, তাদের এলাকার লুট হওয়া বিলের ইজারাদার সমিতির সঙ্গে অংশীদার ছিলেন দিরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর মিয়া চৌধুরী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান কাজী। বিভিন্ন জলমহাল লুটের ধরনের ঘটনাকে বিগত সময়ে সরকারদলীয়দের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতারা। দিরাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দিরাই-শাল্লার সাবেক সাংসদ নাছির উদ্দিন চৌধুরীর ছোট ভাই মইনুদ্দিন চৌধুরী মাসুক বলেন, ‘গেল ১৫ বছর যারা অত্যাচার-নির্যাতন, শাসন-শোষণ করে মানুষকে অতিষ্ঠ করেছিল, তাদের প্রতি মানুষ ক্ষুব্ধ। আওয়ামী লীগ নেতাদের জলমহাল লুটে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে সবাই।’ সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা, বর্তমানে দিরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তাহির রায়হান চৌধুরী পাভেলের ভাষ্য, জলমহাল লুট শুরু করেছে অন্য উপজেলার লোকজন। পরে দিরাইয়ের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ উৎসবের মতো পলো বাওয়া শুরু করে। এমনও হয়েছে, ৫০০ টাকার মাছ ধরতে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করেছেন উৎসাহীরা। লুটপাটে বিএনপির কেউ জড়িত নয় দাবি করে তাহির রায়হান চৌধুরী বলেন, ‘জলমহাল লুটের ঘটনায় দিরাই-শাল্লার মানুষের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’ জলমহালের ইজারায় শরিক বিএনপির কেউ কেউ থাকতেই পারেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘টাকা থাকলে ব্যবসায় বিনিয়োগ করা অপরাধের কিছু দেখছি না।’ জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘জলমহাল লুটপাটের ঘটনায় ইজারা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইজারাদাররা যদি মামলা করেন, আমরা আইনানুগভাবে শক্ত ব্যবস্থা নেব। যাতে এ ধরনের দুষ্কৃতিকারীরা ছাড় না পায়। লুটের আশঙ্কায় থাকা অন্য বিলগুলোর দিকে নজর রাখতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গ্রাম পুলিশকে বলা হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেউ যাতে এ ধরনের ঘটনায় যুক্ত না হন এবং রাষ্ট্রের রাজস্বের ক্ষতি না করেন।’

বাপেরই জন্ম হলো না, সন্তানের জন্ম হবে কী করে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আইনগুলো আইনিকরণ করতে গেলে তো নির্বাচনী সরকার দরকার। নির্বাচিত সরকার না হলে কি করে এটা সম্ভব? সম্ভব নয়। এ জন্য আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দরকার। তার পরে না হয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কারণ বাপেরই জন্ম হলো না, সন্তানের জন্ম হবে কী করে?’ শুক্রবার (৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারে ভুবনমোহন পার্কে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র আয়োজনে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে রাজশাহীতে আহত ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহিদ পরিবারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের চূড়ান্ত গণতন্ত্র এখনও ফিরে আসেনি। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে কোনো মানুষের মুক্তি মিলবে না। আজকে সংস্কারের কথা যারা বলছেন, এই জিনিসটি সংস্কার করতে কতদিন সময় লাগে? পুলিশ আচরণ করবে আইন অনুযায়ী। পুলিশ কোনো ক্ষমতাশালী লোকের কথা শুনবে না। গুম, হত্যা, বেআইনি কাজ হোক আইন অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার করবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সংস্কার করতে কত দিন সময় লাগে? আর বিভিন্ন কমিশন যে করা হয়েছে, সেই কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে। এটা মার্চ মাস। নির্বাচনের জন্য গড়িমসি কেনো? আবার শুনি কেউ কেউ বলছেন- এটাও পিছিয়ে দিতে হবে। এই সময়ে নির্বাচন করা কঠিন। নির্বাচন তো করবে নির্বাচন কমিশন। তাকে সহায়তা দেবে সরকার।’ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকারকে আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার মনে করি। ইউনূস সাহেবের নেতৃত্বে এই সরকার। আমরা মনে করি তারা ন্যায়সংগত আচরণ করবে জনগণের সঙ্গে, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। কারণ ড. ইউনূস সাহেব দেশের একজন অন্যমত স্বনামখ্যাত একজন সন্তান। তিনি নিজেই আন্তর্জাতিক সম্মান নিয়ে এসেছেন। তার থেকে আমরা বেআইনি আচরণ পাব না। কিন্তু তারপরেও দেখি সরকারের ঘনিষ্ঠ কেউ কেউ বলছেন- ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা কঠিন। কেনো কঠিন হবে? ইতোমধ্যে তো প্রায় ছয় থেকে সাত মাস চলে গেল। এখনও ৯-১০ মাসের মতো বাকি আছে। নির্বাচন করতে এতো সময় লাগবে কেনো?’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন তো শেখ হাসিনা ১৫ বছর আটকে দিয়েছিলেন। ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই তাদের ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। দিনের ভোট রাতে হয়েছে। রাতের ব্যালট বাক্সগুলো পরিপূর্ণ করা হয়েছে। আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সবগুলো পা দিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে শেষ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। আমাদের সেখান থেকে ফিরে আসতে হলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে সজীব করতে হবে, প্রাণবন্ত করতে হবে। এগুলোর জন্য এতো গড়িমসি কেনো? নির্বাচন কমিশন যদি সঠিকভাবে কাজ করে তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যে, ডিসেম্বর কেনো জুনের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।’ রিজভী বলেন, ‘এ দেশের জনগণ দেড় যুগ ধরে নির্বাচনে ভোট দিতে পারে না। আর এটা নিয়ে গড়িমসি করা হলে জনগণের মনে তো সন্দেহ জাগবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি। কোনো এই গড়িমসি করা হচ্ছে। আজকে কেউ কেউ বলছে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আরেকটা হচ্ছে গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে করতে হবে। এগুলো তো আমরা বুঝতে পারছি। গণপরিষদ হয় যখন একটা দেশ স্বাধীন হয়। যেখানে সংবিধান থাকে না, কোনো ধরনের আইনকানুনের বিষয় থাকে না। তখন গণপরিষদ হয়।’ আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুম্মানের সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুন অর রশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামে ‘ক্লিন বাংলাদেশ প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার’ চালু
জলাবদ্ধতা ও প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় ক্লিন বাংলাদেশের উদ্যোগে এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সহযোগিতায় যাত্রা শুরু করল “প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার”। রমজান উপলক্ষ্যে চালু হওয়া এই বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিনের বিনিময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণ করা হচ্ছে। সিটির চকবাজার কাঁচাবাজারের সামনে শুক্রবার (৭ মার্চ) আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চসিকের মেয়র শাহাদাত হোসেন। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা, রাজনীতিবিদ মনিরুল ইসলাম ইউসুফ। অনুষ্ঠান ক্লিন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শওকত হোসেন জনি বলেন, ‘আমাদের শহরের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো প্লাস্টিক বর্জ্য ও জলাবদ্ধতা। আমরা জানি, নালা ও ড্রেনগুলো প্লাস্টিকের কারণে বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আমরা চেয়েছি সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান দিতে- যেখানে পরিবেশ রক্ষা ও মানবিক সহায়তা একসাথে করা যায়। তাই, ‘প্লাস্টিক আনুন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিন’ এই ধারণা নিয়ে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এটি শুধু প্লাস্টিক দূষণ রোধ করবে না, বরং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রমজানের সময়ে সহায়তা হিসেবে কাজ করবে।’ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষা ও জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। ক্লিন বাংলাদেশের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কারণ এটি জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নগর পরিচ্ছন্নতার জন্য একটি বাস্তবসম্মত সমাধান দিচ্ছে। আমরা চাই, এই কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হোক এবং নগরবাসী প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আরও সচেতন হোক।’ রমজান মাসব্যাপী প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট ও আগ্রাবাদ কাঁচাবাজারের সামনে এই কার্যক্রম চলবে। ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিন জমা দিয়ে চনা, ছোলা, খেজুর, ছিড়া, আলু, পেঁয়াজ ও ডিমসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিতে পারবেন সাধারণ জনগণ। এই আয়োজন সফলভাবে পরিচালনা করছেন ক্লিন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক তানভীর রিসাত ও টিম লিড করছে ইমন, আলভি, জাহিদ, প্রমি, তানজিফা। পাশাপাশি সদস্য হিসেবে কাজ করছে সাকিব, ইয়াজ, মুনতাসির, পার্থ। ক্লিন বাংলাদেশ আশা করছে, এই উদ্যোগ নগরবাসীর মধ্যে প্লাস্টিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে এবং পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।

গণপিটুনিতে নিহত নেজাম ও ছালেকের সহযোগীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা
চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলায় গণপিটুনিতে নিহত হন নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক নামের দুইজন। তাদের মধ্যে নেজামের মরদেহের পাশে অত্যাধুনিক ও প্রাণঘাতী একটি পিস্তল পাওয়া যায়। যেটি চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হয়েছিল। এ ঘটনায় বুধবার (৫ মার্চ) সাতকানিয়া থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেছে পুলিশ। থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নাজমুল হাসান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন কাঞ্চনা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কবির আহাম্মদের ছেলে আলমগীর (২০), ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুস সাত্তারের ছেলে ফরহাদ (৪০), ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলমগীরের ছেলে মো. ফারুক প্রকাশ কালা ফারুক, উত্তর কাঞ্চনা দীঘির পাড় এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে সাইফুদ্দীন প্রকাশ সাবু এবং এওচিয়া ইউনিয়নের চুড়ামণি এলাকার আব্বাস উদ্দিনের ছেলে সিএনজিচালক হারুন। আসামিরা সবাই নেজাম ও ছালেকের সহযোগী এবং তারা ওই দিন এলাকাবাসীর ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। এজাহার ও পুলিশের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, নেজামের মরদেহের পাশে থেকে উদ্ধার করা পিস্তলটি ‘টরাস টিএইচ’ মডেলের ৯ মিলিমিটার ক্যালিবারের পিস্তল। টিকেইউ৩৯১৬১ নম্বরের পিস্তলটি বডির ওপরের অংশের এক পাশে টরাস বিপি- ২০১৭ মিটিসি মেড ইন ব্রাজিল এবং অপরপাশে টিএইচ৯ ৯এক্স১৯ লেখা আছে। সিরিয়াল মিলিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে অস্ত্রটি নগরের কোতোয়ালি থানায় ব্যবহৃত হতো। ৪ দশমিক ২৭-ইঞ্চি ব্যারেল ও অ্যাডজাস্টেবল টু-ডট রিয়ার সাইট সুবিধার কারণে আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটি দিয়ে নিখুঁত লক্ষ্যে গুলি করা যায়। মাত্র ৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের পিস্তলটির সঙ্গে দুটি ম্যাগাজিন থাকায় এতে ১৭-রাউন্ড গুলি রাখা যায়, যা দিয়ে অনেকক্ষণ শুট করা যায়। বিশেষায়িত পিস্তলটি তৈরি হয় ব্রাজিলের সাও পাওলোর কারখানায়। এ ছাড়া গুলির পাশে প্রাপ্ত ছয়টি গুলির খোসার পেছনের অংশে ইংরেজিতে এনআর বিপি ২০২০ লেখা আছে। সেদিনের ঘটনার বিষয়ে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৩ মার্চ রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আবু ছালেক ও মো. নেজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ১৪-১৫ জন অস্ত্রধারী হেলমেট পরিহিত অবস্থায় আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে ৬-৭টি সিএনজিযোগে ছনখোলা পশ্চিম পাড়া বাজারে ঘোরাফেরা করে। স্থানীয় লোকজন ডাকাত সন্দেহে আসামিদের ধাওয়া করলে আসামিরা তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করতে করতে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন আবু ছালেক ও নেজাম উদ্দিনকে আটক করে। আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে এওচিয়ার ছনখোলা ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওবায়দুল (২০), নাছির (৩৫), আব্বাস (৩০), মামুন (৪০), সাইদ (২৪) গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। স্থানীয় লোকজন আহত হওয়ার কারণে উপস্থিত লোকজনদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর উত্তেজিত জনতা আবু ছালেক ও নেজাম উদ্দিনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে এবং আসামিদের ফেলে যাওয়া সিএনজিটি ভাঙচুর করে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। উত্তেজিত জনতার মারধরের ফলে ঘটনাস্থলে আবু ছালেক ও নেজাম উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে এজাহারনামীয় ১-৬ নম্বর আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ১৪-১৫ জন কৌশলে গুলি বর্ষণ করতে করতে ঘটনাস্থল থেকে সিএনজিযোগে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যাওয়ার সময় এজাহারনামীয় ৬ নম্বর আসামির চালিত অজ্ঞাত নম্বরের সিএনজি এবং তাদের ব্যবহৃত জব্দ করা আগ্নেয়াস্ত্রটি ঘটনাস্থলে ফেলে যায়। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে তদন্তকালে জানা যায়, এজাহারনামীয় আসামিদের স্বভাব-চরিত্র ভালো নয় এবং তারা মৃত আবু ছালেক ও মৃত মো. নেজাম উদ্দিনের সহযোগী মর্মে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। আসামিরা ইতোপূর্বেও ঘটনাস্থল এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের নিমিত্তে সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে বলে জানা যায়। মৃত আবু ছালেক ও নেজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে এজাহারনামীয় ১ থেকে ৬ নম্বর আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ১৪-১৫ জন আসামি পরস্পর যোগসাজশে ও জ্ঞাতসারে অস্ত্রশস্ত্র নিজেদের হেফাজতে রেখে ‘দ্য আর্মস অ্যাক্ট ১৮৭৮’-এর ‘১৯এ’ ধারার অপরাধ করেছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম সানতু নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, গণপিটুনির ঘটনায় অনেকে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কথা বলছেন। ঘটনার সময় বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের কোনো ব্যক্তি বা চেয়ারম্যানের উপস্থিতি ছিল কি না, প্রশ্ন তুলেছেন। আসলে আমরা এ ধরনের কারো উপস্থিতি খুঁজে পাইনি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে খুন হন নেজাম ও ছালেক। ঘটনার দিন তারা সাতটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে সেখানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের অস্ত্র প্রদর্শন করেছিলেন। তারা চাঁদার জন্য নিয়মিত সেখানে যেতেন বলে পুলিশ তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে। ৪-৫ দিন আগেও তারা সেখানে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের এক ওয়ার্ড সদস্যের স্ত্রীকে থাপ্পড় মেরেছিলেন। যে কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, ‘সাতকানিয়ায় মারা গেছেন নেজাম ও ছালেক। ছালেকের বিরুদ্ধে আটটি মামলা রয়েছে, তার মধ্যে দুইটি হত্যা। এ ছাড়া চুরি ও বিস্ফোরক আইনেও মামলা আছে। নেজামের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। তাদের গতিবিধি যদি আমরা পর্যবেক্ষণ করি, বিগত তিন মাসে ওই এলাকায় তারা বিভিন্ন কাজে গিয়েছেন অন্তত আট বার। ঘটনার দিন তারা সাতটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা যোগে গিয়েছিলেন। সেখানকার দোকানদারদের অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন।

মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দুলাভাই-তালই আটক
মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৫০) ও তার স্বামী সজীব শেখকে (১৮) আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ মার্চ) ভোরের দিকে সজীব শেখ ও বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে হিটু শেখকে আটক করে। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এরইমধ্যে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল এবং হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছে। শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত হিটু শেখ ও সজিব শেখকে আটক করা হয়েছে।’ ‘মাগুরা জেলা পুলিশ অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ পুলিশ জানায়, মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার বাসিন্দা ধর্ষণের শিকার শিশু। সে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। রমজান ও ঈদের ছুটিতে স্কুল বন্ধ থাকায় কয়েক দিন আগে বড় বোনের বাড়ি মাগুরা শহরে বেড়াতে আসে। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির পাশে তাকে রক্তাক্ত অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। পরে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। শিশুটির ছোট চাচা বলেন, ‘চার-পাঁচ মাস আগে বড় ভাতিজিকে বিয়ে দেওয়া হয়। সুযোগ পেলে তার শ্বশুর হিটু শেখ তাকেও বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করতেন বলে শুনেছি। যে কারণে বড় ভাতিজি বাপের বাড়িতে চলে এসেছিল। পরে তাকে বুঝিয়ে আবার শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’ মাগুরা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনি ওয়ার্ডের ডাক্তার শিরিন সুলতানা বলেন, ‘শিশুটির অবস্থা ভালো নয়। তার শরীরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।’

সম্পত্তির জন্য পিতা-মাতাকে কুপিয়ে জখম, ছেলে আটক
খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে বৃদ্ধ বাবা-মাকে কুপিয়ে জখম করেছেন মাদকাসক্ত ছেলে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দিনগত রাত পৌনে ১টার দিকে মাটিরাঙ্গার বেলছড়ি ইউনিয়নের ক্যাম্পটিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন আব্দুর রহিম (৭০) ও তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৬০)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে আবুল কালাম কালনকে (৩৮) আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরেই সম্পত্তির ভাগ চেয়ে মা-বাবার ওপর মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন ছেলে আবুল কালাম। ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাড়িতে ফিরে আবারও সম্পত্তির ভাগ-ভাটোয়ারা চেয়ে মা-বাবার টাকার জন্য চাপ দেন। তারা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন আবুল কালাম। এ সময় আহতদের চিৎকারে স্বজনসহ প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। পরে সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তফিকুল ইসলাম তৌফিক বলেন, ‘এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।’

এক বছর ধরে কিশোরীর ওপর অমানবিক নির্যাতন, মামা-মামি আটক
১৬ বছর বয়সী কিশোরী রোজিনা আক্তার। প্রায় এক বছর ধরে মামার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছে। আর পুরো এ সময়টা পরিবার থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয় রোজিনাকে। বাসায় থাকার নামে তার ওপর দিনের পর দিন চলে নির্যাতন। সারা শরীরে জখমের চিহ্ন। থেঁতলে ফেলা হয়েছে সামনের দুই পায়ের আঙুল। হাত-পা-পিঠে কাটা দাগ ও আগুনের ছেঁকা। রোজিনার শরীরের ক্ষতচিহৃ দেখে যে কারও গা শিউরে উঠবে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে চাঁদপুর শহরের বিষ্ণুদী মাদরাসা রোড এলাকার একটি ভবনের চারতলা থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন রোজিনাকে। পরে পুলিশ এসে অভিযুক্তদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে সেই অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দেয় ওই কিশোরী। রোজিনা চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের চৌরাস্তা এলাকার আহমদ ভূইয়ার মেয়ে। স্থানীয় যুবক মোরশেদ আলম, হেলাল ও বেলাল জানান, মাদরাসা রোডে ৪-৫ মাস ধরে ভাড়া থাকছেন রোকেয়া-রুবেল দম্পতি। তাদের দুই সন্তান। একজন প্রতিবন্ধী। মূলত তাদের দেখাশোনা ও বাড়ির কাজ করার জন্য আপন ভাগিনিকে নিয়ে আসেন রুবেল। কিন্তু রুবেল ও তার স্ত্রী মেয়েটাকে দিনের পর দিন অমানবিক নির্যাতন করে গেছেন। তারা আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতন থেকে বাঁচতে দরজা খুলে পালিয়ে যায় ওই কিশোরী। পরে স্থানীয় এক খালা তাকে দেখতে পেয়ে বাসায় নিয়ে যান। পরবর্তী এলাকার লোকজন ওই ভবনে ঢুকে তালা লাগিয়ে দেন। ওই সময় বাসায় শুধু রুবেল ছিলেন। তার স্ত্রী ছিলেন বাইরে। আমরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তার স্ত্রী থানায় এলে তাকেও আটক করা হয়।’ এদিকে এক বছর পর মেয়ে রোজিনার শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখে থানার মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন বাবা আহমদ ভূইয়া। পাশাপাশি মেয়েও কান্নায় ভেঙে পড়ে। কিশোরীর বাবা আহমদ ভূইয়া বলেন, ‘আমার মেয়েকে আমার আপন শ্যালক এক বছর আগে নিয়ে এসেছে। এই এক বছরে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। আমার মেয়েকে বাড়িতে আনার কথা বললে রুবেল আজকাল বলে এক বছর পার করে দেয়। আমার মেয়েকে এভাবে দেখতে হবে জীবনে কল্পনাও করিনি। তারা আমার মেয়েকে শেষ করে ফেলেছে। মেয়ের পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন। আমি এর বিচার চাই।’ নির্যাতনের শিকার কিশোরী জানায়, মামা-মামি প্রতিদিন নির্যাতন করতেন। দা, ছুরিসহ বিভিন্ন জিনিস দিয়ে শরীরে আঘাত করতেন। ব্লেড ও দা দিয়ে পিঠ কেটে ফেলেন। মাঝে মধ্যে গরম খুন্তি দিয়ে ছেঁকা দিতেন। পায়ের আঙুলগুলো থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। পেটানোর কারণে দুই হাত ফুলে গেছে। ঠিকমতো খাবারও দিতেন না। কিছু হলেই নির্যাতন করা হতো। রোজিনা বলে, ‘আজকে (বৃহস্পতিবারি) মামি বাসায় ছিল না। তাই মামাকে ফাঁকি দিয়ে দরজা খুলে বের হয়ে যাই। আমার মামি আমার সঙ্গে যা করেছে, তার বিচার চাই।’ চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, `অভিযুক্ত দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’