
নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আনিসুল হক ও আব্দুলাহ আল মামুন
রাজধানীর খিলগাঁও থানার এক হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং উত্তরা পশ্চিম ও খিলগাঁও থানার পৃথক দুই হত্যা মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরী তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।আজ সকাল ৮টার দিকে তাদের কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন শুনানি করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।শুনানি শেষে বিচারক তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়।এরপর তাকে কয়েকটি মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অপরদিকে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় গত ৩ সেপ্টেম্বর তিনি আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।ফলে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয় বলে জানায় ডিএমপি। পরদিন তাকে মোহাম্মদপুর থানার আবু সায়েদ হত্যা মামলায় ৮ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর নতুন করে চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সেদিনই কারাগারে পাঠানো হয়।

ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ
ভারতে ইলিশ রপ্তানির বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে অনুরোধ করে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) নোটিশটি পাঠান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান ।বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আমদানি-রপ্তানির কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রক বরাবরে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।আইনি নোটিশে পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানির বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নোটিশে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান জানান, ইলিশ একটি সামুদ্রিক মাছ। এই ইলিশ বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়। এই ইলিশ যখন সমুদ্র থেকে নদীতে বিশেষ করে বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে আসে, তখন এই ইলিশ মাছ অত্যন্ত সুস্বাদু হয়ে উঠে।এই কারণে সামুদ্রিক ইলিশের চেয়ে পদ্মার ইলিশ অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সুস্বাদু।‘প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিশাল ও বিস্তৃত সমুদ্র সীমা রয়েছে। ভারতের জলসীমায় ব্যাপকভাবে ইলিশ উৎপাদন হয়। এই বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে ভারতের ইলিশ আমদানির কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু ভারত মূলত বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ইলিশ আমদানি করে থাকে। বাংলাদেশে ভারতীয় এজেন্টরা ও মাছ রপ্তানিকারকরা সারা বছর ধরে পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ মজুদ করে রাখে এবং বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে পদ্মা নদীর সব ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার করে। বাংলাদেশের পদ্মা নদীর সব ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি ও পাচার হওয়ার কারণে বাংলাদেশের জনগণ বাজারে গিয়ে পদ্মার নদীর ইলিশ পায় না । ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের জনগণকে সামুদ্রিক ইলিশ খেতে হয়, যা পদ্মার ইলিশের মতো সুস্বাদু নয়। ’এ আইনজীবী আরও জানান, বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে যে সীমিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায়, তা বাংলাদেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী যথেষ্ট নয়। এমতাবস্থায় যদি পদ্মার সব ইলিশ ভারতে চলে যায় তাহলে বাংলাদেশের জনগণ এই পদ্মার ইলিশ খেতে পারবে না। এভাবে বাংলাদেশের জনগণকে পদ্মার ইলিশ থেকে বঞ্চিত করে ভারতের জনগণকে পদ্মার ইলিশ খাওয়ানো বাংলাদেশের সরকারের জন্য সমীচীন নয়। এ কথা সত্য যে, বাংলাদেশ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র ভারত থেকে আমদানি করে থাকে কিন্তু ভারত সরকার কখনোই তার নিজের দেশের জনগনের চাহিদা না মিটিয়ে বাংলাদেশে কোন পণ্য রপ্তানি করে না । ‘বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানি যোগ্য কোন মাছ নয়। এমতাবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন । ’

নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো মেনন-ইনু-দীপু মনিসহ আরও সাতজনকে
ঢাকা: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ সাতজনকে তেজগাঁও থানার পৃথক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এই তালিকা রয়েছেন সাবেক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপা। এর মধ্যে ইনু, মেনন ও মামুনকে তেজগাঁও থানার রমিজ উদ্দিন হত্যা মামলা এবং কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তাহিদুল ইসলাম মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বাকিদের শুধু রমিজ উদ্দিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর তাদের পক্ষে আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর কারাগারে তাদের পাঠানোর আদেশ দেন। ৪ আগস্ট তেজগাঁও থানার এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে রমিজ উদ্দিন আহমদ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।এ ঘটনায় ৭ সেপ্টেম্বর নিহত রমিজ উদ্দিনের বাবা এ কে এম রকিবুল হাসান বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২২৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এছাড়া কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তাহিদুল ইসলাম একই এলাকায় এ আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় তার ভাই তারিকুল ইসলাম বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ৪৭ জনের নামোল্লেখ করে মামলা করেন।

বিচারকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না: প্রধান বিচারপতি
বিগত বছরগুলোতে বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করা হয়েছে জানিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিচার বিভাগ পৃথক হলেও বিচার বিভাগে দ্বৈত শাসন আছে। এ কারণে বিচারকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। বিচার বিভাগ পৃথক সচিবালয়ে না হলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের ইনার গার্ডেনে দেয়া অভিভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠিত এই সভায় সারা দেশের প্রায় দুই হাজার বিচারক উপস্থিত ছিলেন।জরুরি ভিত্তিতে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় করার প্রস্তাব দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, দ্রুত এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে। পাশাপাশি বিচারকদের পদায়নের জন্য পৃথক নীতিমালা করা হবে বলেও জানান তিনি। বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট আইনও করা হবে।প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদেরকে কঠিন সময়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ৪২ লাখ মামলার জট রয়েছে। মুদ্রার ওই পিঠে রয়েছে বিচারক সংকট। মাত্র দুই হাজার বিচারক দিয়ে এটি সম্ভব নয়। দক্ষ জনবল নিয়োগ জরুরি।বিচার বিভাগে কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে স্বচ্ছতার জন্য কমিশন নিয়োগ করতে হবে বলেও জানান তিনি।বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র বাজেট দেয়ার কথাও তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি রেফাত আহমেদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিটির প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান।

৭ দিনের রিমান্ডে অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান
নিউমার্কেট থানার হত্যা মামলায় পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমানকে ৭ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন।এর আগে, শুক্রবার দুপুরের পর তাকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা জোনাল টিমের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিফ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার রিমান্ডের আদেশ দেন।গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম থেকে মশিউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর চট্টগ্রাম থেকে তাকে ঢাকা নিয়ে আসা হয়। তার বিরুদ্ধে ৮টি হত্যা মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।প্রসঙ্গত, মশিউর রহমান দীর্ঘ সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত ছিলেন। সবশেষ লালবাগ জোনের উপকমিশনার (ডিসি) ছিলেন তিনি। এরপর অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিও পান তিনি।৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১৩ আগস্ট তাকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়।উল্লেখ্য আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম), ২০১৫ ও ২০১৯ সালে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) অর্জন করেন। এছাড়া, কর্মদক্ষতার কারণে তাকে চারবার ‘আইজিপি এক্সাম্প্লারী গুড সার্ভিসেস ব্যাচ’ দেয়া হয়। সবশেষ গত ২৯ জুন ২০২২-২৩ সালের জন্য শুদ্ধাচার পুরস্কারও পান তিনি।

তারেক সিদ্দিকসহ ১০ সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানকে অপহরণ, গুম ও হত্যার উদ্দেশে ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনার অভিযোগে তারেক সিদ্দিকসহ ১০ সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে মামলার আবেদন করেন লে. ক. (অব.) মো. তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী।এদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে অভিযোগটি নিউমার্কেট থানায় এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীপক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার শুনানি করেন। মামলায় আসামিরা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আবেদীন, র্যাবের সাবেক প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান (বরখাস্ত), ডিবির সাবেক ডিসি মো. আব্দুল বাতেন, মো. মোখলেসুর রহমান, ডিবির সাবেক এডিসি গোলাম মোস্তফা রাসেল, গোলাম সাকলাইন, ডিবির সাবেক এসি মাহমুদ নাসের জনি, ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আবু আজিফ ও সিরাজুল ইসলাম খান।মামলার আবেদনে বলা হয়, বাদী তৌহিদুল ইসলামকে ২০১৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে সাদা পোষাকে তুলে নিয়ে যায়। দুই দিন গুম করে রাখার পর ২৯ ডিসেম্বর তাকে দুটি ভুয়া মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে জামিন পেয়ে তিনি এসব বিষয়ে অভিযোগ জানাতে থানায় গেলেও সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) নথিভুক্ত করা হয়নি।

আবারও ৫ দিনের রিমান্ডে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক
রাজধানীর কোতোয়ালি থানার বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ (বৃহস্পতিবার) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।এ দিন এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. রাশিদুল হাসান। এ সময় আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক মো. সজীব মিয়া বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গোপন সূত্রে জানা যায় নিউ মার্কেট থানার হত্যা মামলায় জড়িত আসামি সদরঘাট ২নং মসজিদ সংলগ্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা অবৈধভাবে নিজ হেফাজতে রেখে লেনদেন করছে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে অভিযানে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালানোর চেষ্টাকালে তাদের সঙ্গীয় অফিসারদের সহায়তায় হাতে-নাতে আটক করেন। পরে তারা তাদের নাম-ঠিকানা জানায়। আটকের পর আসামি আনিসুল হকের কাছে থাকা ব্যাগে রক্ষিত ১৭ হাজার ৫৯২ ইউএস ডলার, ৭২৬ সিঙ্গাপুর ডলার এবং সালমান এফ রহমানের কাছ থেকে ১২ হাজার ৬২৪ ইউএস ডলার, ৬২০ ফ্রান্সের মুদ্রা, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাড়ে ৮ হাজার মুদ্রা, ১১ হাজার ৬৫০ সোদি রিয়াল, ৭৭৯ সিঙ্গাপুর ডলার, ১৫০ পাউন্ড ও ১৩৩২ ইউরো এবং বাংলাদেশি ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামিদের জব্দকৃত বৈদেশিক মুদ্রার বিষয়ে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে বললে তারা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দেন। আসামিরা জ্ঞাতসারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও অনুমোদন ব্যতিরেকে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বৈদেশিক মুদ্রা নিজ হেফাজতে রেখে ফরেন এক্সচেঞ্জ রেজ্যুলেশন আইনে অপরাধ করেছে।

এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট দায়ের
এস আলম গ্রুপ এবং প্রতিষ্ঠানটির সব সম্পত্তি স্থানান্তর বা বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি এস আলম গ্রুপ এবং প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সব স্থাবর সম্পত্তির তালিকা দাখিল করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।বুধবার আইনজীবী মো. রুকুনুজ্জামান এ রিট দায়ের করেন।বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটের ওপর আগামীকাল বৃহস্পতিবার শুনানি হতে পারে।এর আগে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এস আলম গ্রুপের শেয়ারহোল্ডার, পরিচালক ও অন্যান্য ব্যবসাসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গ্রহণ করা মোট ঋণের পরিমাণ, বর্তমান অবস্থা ও দায়সহ কয়েকটি বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ও ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান রিট আবেদনকারী আইনজীবী। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থসচিব, আইনসচিব, দুদক চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাবর ওই নোটিশ পাঠানো হয়।পরে আইনজীবী মো. রুকুনুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এস আলম গ্রুপের এ পর্যন্ত নেওয়া ঋণের পরিমাণ, সেগুলোর বর্তমান অবস্থা ও দায়, বিদেশে পাচার করা অর্থ ও সব স্থাবর সম্পত্তির তালিকা, সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। আদালতের অনুমতি ছাড়া কোম্পানির পরিচালকসহ পরিবারের সদস্যদের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে।

নগদে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসক নিয়োগ কেন অবৈধ নয়
মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস নগদে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসক নিয়োগ করা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ নওশাদ জমির। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।এর আগে, ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদে প্রশাসক ও সহায়ক কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিসে কর্মরত পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদার। গত ২১ আগস্ট রাতে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

হোটেলকর্মী সিয়াম হত্যা মামলায় কারাগারে আসাদুজ্জামান ও মাহবুব
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তাদের ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় তাদের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন।উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন দুজনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হোটেলকর্মী সিয়াম সরদারকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়।মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সিয়াম সরদার (১৭) রাজধানীর মিরপুরের হোটেল রাব্বানীতে চাকরি করতেন। গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে মিরপুর-১০ নম্বরে গুলিতে আহত হন। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর তার বাবা সোহাগ সরদার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন।আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মিরপুর থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ১১৪ জনকে আসামি করা হয়।এর আগে, রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দয়া করে একটি মামলায় গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।তবে, সে মামলায় তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিনে থাকায় তাকে মিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা সিয়াম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। একই মামলায় রোববার রাত ১১টায় রাজধানীর বেইলি রোডের নওরতন কলোনি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আসাদুজ্জামান নূরকে।

সাবেক গর্ভনর রউফ, সালমানসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বল প্রয়োগ করে চাকরি থেকে পদত্যাগ করানো, প্রতারণা ও মানহানির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেডের (বিআইএফএফএল) সাবেক ও বর্তমান ১০ কর্মকর্তাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেডের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ফরমানুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।মামলার বাদী ফরমানুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে বাদীকে বল প্রয়োগ করে সালমান এফ রহমানের তিস্তা সোলার প্রকল্পে ১৪০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ঋণ প্রস্তাব দিতে বলেন। কোম্পানির পলিসি অনুযায়ী তা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানালে সাবেক গভর্নর রউফ বাদীর ওপর ক্ষেপে যান। এরপর সেই প্রকল্পের অনুকূলে ২০০ কোটি টাকা জিরো কুপন বন্ডে বিনিয়োগ করার কথা বলে সেই টাকা আগাম ঋণ হিসেবে চাইলে বাদী পর্যাপ্ত ফান্ড নেই বলে জানান। এতে আবারও বাদীর ওপর ক্ষিপ্ত হন সাবেক এই গভর্নর। বাদী পর্যায়ক্রমে অবৈধ সুবিধা চাইতে থাকলে তাতে রাজি না হওয়ায় আসামিরা বাদীকে জোরপূর্বক চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। এতে বাদীর অপূরণীয় আর্থিক ক্ষতি, সামজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও মানহানি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে নেয়া হলো আদালতে
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে নেয়া হয়েছে সিএমএম আদালতে। হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করবে পুলিশ।আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় ডিবি কার্যালয় থেকে আছাদুজ্জামান মিয়াকে বের করা হয়। ১০টা নাগাদ তাকে সিএমএম আদালতের গারদখানায় নেয়া হয়। এর আগে, বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর মহাখালী থেকে গ্রেফতার হন তিনি।উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ছাত্রদল নেতা জনি হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত খিলগাঁও থানার একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। জনির বাবা ইয়াকুব আলী গত ২ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেন।আছাদুজ্জামান মিয়া ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাকে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেয় সরকার। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়।

৪ দিনের রিমান্ডে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর বাড্ডার ফুজি টাওয়ারের সামনে সুমন সিকদারকে (৩১) গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল আলম। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুন করেন।গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।গত ১৯ জুলাই ফুজি টাওয়ারের উত্তর পাশে প্রগতি সরণিতে রাস্তার ওপর এলোপাতাড়ি গুলিতে সুমন সিকদার নিহত হন। এ ঘটনায় তার মা মাসুমা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক আইজিপি শহীদুল হক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে, ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার সাবেক আইজিপি শহীদুল হককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ৭ দিনের রিমান্ড শেষে শহীদুল হককে আদালতে হাজির করা হয়।এ সময়, কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক বায়েজীদ বোস্তামী। আবেদনের শুনানি শেষে, ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।এর আগে, গত ৪ সেপ্টেম্বর তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ১৯ জুলাই, বিকেলে নিউমার্কেটের এক নম্বর গেটের সামনে গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ।এ ঘটনায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের’সহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। নিহত ব্যবসায়ীর শ্যালক আব্দুর রহমান বাদি হয়ে গত ২১ আগস্ট নিউমার্কেট থানায় এই মামলা দায়ের করেন।

শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই পুলিশের গুলিতে রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ফারহানের বাবা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এ অভিযোগ দাখিল করেন।মামলার অন্য আসামিরা হলেন– ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ ফজলে শামস পরশ, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালী আসিফ ইনান, পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমারসহ ৩৪ জন। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
.jpeg)
সরাসরি সম্প্রচার করা হবে হাসিনার বিচার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সহিংসতার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া গণহত্যা মামলার বিচার সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, বিচারে স্বচ্ছতার জন্য সবকিছু করবে বর্তমান সরকার।গত ১৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা ও নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০ ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে গত ২১ আগস্ট একই ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৭ জনের নামে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

ট্রাইব্যুনালে বিদেশি আইনজীবী আনতে পারবেন আসামিরা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলাকালীন শেখ হাসিনাসহ গণহত্যা মামলার আসামিরা চাইলে বিদেশি আইনজীবী রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রসিকিউশন টিমের কোনো আপত্তি থাকবে না। ন্যায় বিচারের স্বার্থে প্রসিকিউশন টিমের যা যা করা দরকার সেটা করবে।সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।তাজুল ইসলাম বলেন, প্রসিকিউশন টিম কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে, তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। হাসপাতাল পরিচালকদের কাছেও তথ্য চাওয়া হয়েছে। আজকেও কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শন করা হবে।তদন্তের স্বার্থে গণমাধ্যমের কাছে থাকা ভিডিও-ছবির জন্য চিঠি পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।তিনি বলেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত করার জন্যই এই উদ্যোগ। যাতে করে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো প্রশ্ন না থাকে। ক্ষতিগ্রস্তরা এই গণহত্যার বিচারের জন্য মুখিয়ে আছেন। সাক্ষীরাও আগ্রহী। আলামত তাজা থাকতেই বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিচারে এই সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নাই। কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। ছাত্র-জনতার সঙ্গে ঘটে যাওয়া নির্মমতার বিচার হওয়াই লক্ষ্য।

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে: তাজুল ইসলাম
ভারতের সাথে বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রধান অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। এমন মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। রোববার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলে তিনি।তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিংবা আইজিপি সবাইকে একই পর্যায়ের আসামি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তারা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। তদন্তে প্রয়োজন সাপেক্ষে গুরুতর আসামিদের গ্রেফতার চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।তিনি আরও বলেন, গণহত্যার প্রমাণ সংগ্রহ করা প্রধান চ্যালেঞ্জ। সারাদেশে আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করা হবে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজ তথ্য প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এ সময় গণহত্যার তথ্য প্রমাণ কারও কাছে থাকলে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় জানানোর অনুরোধও করেন তিনি।আওয়ামী লীগের আমলে সিস্টেমেটিক অপরাধ সংগঠিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণহত্যার বিচারের জন্যই প্রসিকিউশন টিম পুনর্গঠন করা হয়েছে। এটি ক্রমান্বয়ে বাড়বে। আগে যেভাবে বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছিল, তা যাতে আর না হয় সেদিকে লক্ষ্য থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জামিন পেলেন আরটিভির রিপোর্টার অধরা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জামিন পেয়েছেন আরটিভির রিপোর্টার অধরা ইয়াসমিন। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সাইবার ট্রাইবুনালের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবির এ আদেশ দেন।জানা গেছে, আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন অধরা ইয়াসমিন। এরপর আদালত তাকে জামিন দিয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য অক্টোবরের ২২ তারিখ দিন ধার্য করেন। অধরার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ আশরাফ হোসেন চৌধুরী (রাজ্জাক) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার মেরিট দেখে বিজ্ঞ আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন।প্রসঙ্গত, রাজধানীর রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর দিল্লুর রহমান ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মামলাবাজি, সারাদেশে অসংখ্য মানুষকে হয়রানি, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেন অধরা ইয়াসমিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২৩ সালের ১৩ মে অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৪, ২৫ ও ২৯ ধারায় মামলাটি করেন রাজারবাগ পীর সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা শাকেরুল কবির।মামলার বাদী রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর দিল্লুর রহমানের মামলাবাজ সিন্ডিকেটের অন্যতম প্রধান সহযোগী শাকেরুল কবির। তার বিরুদ্ধে মামলাবাজি, জমি দখল, নারীপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে তাকে কয়েকবার আটক হয়ে কারাগারেও যেতে হয়। এর আগে, এই পীর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় অন্তত ডজনখানেক সাংবাদিককে হয়রানির অভিযোগ ওঠে।ভুক্তভোগীদের দাবি, মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে চরম হয়রানি করে আসছে এই ‘মামলাবাজ সিন্ডিকেট’। সিআইডির তদন্তেও মিলেছে সেই প্রমাণ। মূলত, হাইকোর্টের বিভিন্ন আদেশ, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও সিআইডির তদন্তের সূত্র ধরেই প্রতিবেদন করেন সাংবাদিকরা। আর তাতেই রোষানলে পড়তে হচ্ছে শক্তিশালী এই সিন্ডিকেটের।এদিকে, অধরার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার ঘটনায় সেই সময় সাংবাদিকরা ছাড়াও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশে-বিদেশী বিভিন্ন সংগঠন। তারা মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল।

রহস্যজনক কারণে বিচার বিভাগের সংস্কার হচ্ছে না: ব্যারিস্টার খোকন
রহস্যজনক কারণে এখনও বিচার বিভাগের সংস্কার হচ্ছে না। এ অভিযোগ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তার দাবি, দ্রুত বিচার বিভাগের সংস্কারের।আজ বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।ব্যারিস্টার খোকন বলেন, সুপ্রিম কোর্টসহ সারা দেশের অধস্তন আদালতে এখনও সিন্ডিকেট রয়েছে। কিন্তু তা সংস্কারে এই সরকার চলছে ধীরগতিতে। বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণকারী আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানান ব্যারিস্টার খোকন।তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৬ বছরে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমনে ব্যবহৃত হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আইনজীবীরা আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে সংস্থাটির সংস্কার চান তিনি। একইসঙ্গে, নির্বাচন কমিশনেরও সংস্কার চেয়েছেন ব্যারিস্টার খোকন।

সাবেক ১৮ মন্ত্রী ও ৮ এমপির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১৮ মন্ত্রী ও ৮ সংসদ সদস্যের (এমপি) ওপর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।দুদকের কোর্ট ইন্সপেক্টর আমির হোসেন এ তথ্য জানান।দেশত্যাগে যাদের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তারা হলেন- সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, সাবেক প্রবাসী ও কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ, সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল হক, সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, সাবেক ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী ফরিদুল হক খান, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান, সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।এছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ, কাজী নাবিল আহমেদ, শহিদুল ইসলাম বকুল, এ কে এম সরওয়ার জাহান, শেখ আফিল উদ্দিন, মেহের আফরোজ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ ও শেখ হেলাল উদ্দিন।এদিন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম সাবেক ১০ মন্ত্রী ও তিন সংসদ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহাম্মদ আলী সালাম শুনানি করেন।এছাড়া দুদকের উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান সাবেক আট মন্ত্রী ও পাঁচ সংসদ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন।

স্কুলছাত্র হত্যায় পুলিশসহ ৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গত ৫ আগস্ট রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্দেশ্যে একদফা দাবিতে আন্দোলনরত অবস্থায় পুলিশের গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত স্কুলছাত্র ছাবিদ হোসেনের (১৫) পরিবারের দায়ের করা হত্যা মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ওবায়দুল কাদেরসহ মোট ৭৫ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল আসামিকে শ্রেণিভুক্ত করে হত্যা মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন।বাদী পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ মামলাটি দায়ের করেন। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মিল্টন আলী।এই মামলায় সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক ও এম এ আরাফাতসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য, স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও পুলিশের উর্ধ্বতন অফিসারসহ আওয়ামী লীগের এবং অঙ্গ সংগঠনের ৭৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।এর আগে গতকাল এই মামলাটি গ্রহণ না করে ফেরত দিয়েছিল আদালত। আইনজীবী সমিতির অনুমতি ব্যাতীত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা নেয়া যাবে না মর্মেও জানান আদালত। গতকাল মামলা দায়েরের পর পুলিশ সদস্যদের নাম বাদ দেয়ার জন্য বেশ কয়েকবার চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল।উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে উত্তরায় ছাত্রদের সঙ্গে থাকাবস্থায় মাথায় গুলি করে পুলিশ হত্যা করে ছাবিদকে। তারপর পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে শনাক্ত করে। ছাবিদ টঙ্গী রেনেসাঁ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

আরও তিনদিনের রিমান্ডে গোলাপ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পোশাকশ্রমিক রুবেল হত্যার অভিযোগে রাজধানীর আদাবর থানার মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপকে তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এছাড়া একই আদালতে রাজধানীর বাড্ডা থানায় দায়ের করা সুমন শিকদার নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগের মামলায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির চারদিনের রিমান্ড শেষে জামিন আবেদন করা হলে আদালত জামিন নামুঞ্জর করে কারাবিধি অনুযায়ী সুচিকিৎসার নির্দেশ দেন।এর আগে, গত ২২ আগস্ট নিহত পোশাক শ্রমিক রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে ২৫ আগস্ট রাজধানীর রাজধানীর ১২/১ পশ্চিম নাখালপাড়ার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ৫ আগস্ট আদাবর এলাকার রিং রোডে আন্দোলনরত রুবেলসহ শতাধিক শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় কয়েকজন আসামি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশ নেয়। রুবেল গুলিবিদ্ধ হন এবং দুইদিন পর হাসপাতালে মারা যান।

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আবেদনের শুনানি ২১ অক্টোবর
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খারিজ হওয়া আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে আবেদনের শুনানি আগামী ২১ অক্টোবর। আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।রোববার (১ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম শুনানির জন্য এ দিন ধার্য করেন।আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। এর আগে, সকালে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খারিজ হওয়া আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করে দলটি।এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী।তবে, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় গত বছরের নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল খারিজের আদেশ দেন। এতে করে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল থাকে।এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে শেখ হাসিনা সরকার। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারায় জামায়াত, ছাত্রশিবিরসহ তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে, গত ২৮ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।